ছাত্রলীগ নেতা হত্যা
মহিউদ্দিন সোহেল হত্যা: পরিবারের সংবাদ সম্মেলন
চট্টগ্রামের পাহাড়তলী এলাকায় প্রকাশ্যে গণপিটুনি দিয়ে ছাত্রলীগ নেতা মহিউদ্দিন সোহেলকে হত্যার পরিকল্পনাকারী ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাবের আহমেদকে গ্রেফতার করার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করেছে। গত ৩ এপ্রিল বার্তা২৪.কম মহিউদ্দিন সোহেল হত্যার মুল হোতা ধরাছোঁয়ার বাইরে শিরোনামে সংবাদ পরিবেশন হয়।
বুধবার (১০ এপ্রিল) সাড়ে ৩টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে মহিউদ্দিন সোহেলের মা-বাবা, স্ত্রী সন্তানও ভাই উপস্থিত ছিলেন। পরিবারের পক্ষ থেকে প্রধান আসামি কাউন্সিলর সাবের আহমেদকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানান তারা। এছাড়া ২ নং আসামি হাইকোর্ট থেকে এক বছরের জন্য জামিন পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। মহিউদ্দিন সোহেল হত্যা মামলায় পুলিশ এ যাবৎ ১৯ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মামলার আসামিরা জামিনে এসে পরিবারকে হুমকি দিচ্ছেন বলে জানানো হয়।
মহিউদ্দিন সোহেলের ভাই শাকিরুল ইসলাম শিশির বলেন, ‘কৌশলে হত্যা করে গণপিটুনি হিসেবে চালিয়ে দিতে চেয়েছিল সাবের আহমেদ এবং ওসমান খান।’
গত ৭ জানুয়ারি পাহাড়তলী বাজারে খুন হন সরকারি কমার্স কলেজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন সোহেল। চাঁদাবাজির অভিযোগে তাকে গণপিটুনিতে মেরে ফেলা হয়েছে বলে প্রচার করা হলেও লাশ উদ্ধারের পর দেখা যায় লাশের শরীরে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন। পরবর্তীতে পরিবারের পক্ষ থেকে দায়ের করা হত্যা মামলায় তা ভিন্ন রূপ নেয়। পুলিশ শুরু করে তদন্ত।
জানা গেছে, পাহাড়তলী এলাকায় একটি জায়গা দখল করে দোকানপাট তোলাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ সাবের-ওসমান গংদের সাথে মহিউদ্দিন সোহেলের বিরোধ তৈরি হয়েছিল। সেই বিরোধ থেকেই প্রতিপক্ষরা মহিউদ্দিন সোহেলের ওপর ক্ষুব্ধ ছিল। এরপরই তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়।
উক্ত হত্যার পরিকল্পনাকারী হিসেবে ১২নং সরাইপাড়া ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও পাহাড়তলী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির আহ্বায়ক সাবের আহমেদকে ওই মামলার প্রধান আসামি করা হয়। বাজারে সাধারণ সম্পাদক ওসমানখানকে ২নং আসামি করা হয়েছে।
সোহেলের ছোট ভাই শিশির বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছিলেন। ওই মামলায় ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও দেড়শো জনকে আসামি করা হয়েছে।
পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে এ পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, ১ মো. ওসমান খান (৫৫), ২.মো.শাহাদাতৎ খান রাসেল (৩৩), ৩. মোহাম্মদ শওকত খান রাজু (৩৫), ৪. মো. আজাদ হোসেন (২৯),৫.দিদারুল আলম প্র. টেডি দিদার (৩৫), ৬. মো. মামুন (২৩), ৭. মো. মাকসুদুর রহমান প্র.বাবু (৩৩), ৮.মো. নুর নবী তালুকদার (৫৫), ৯.আলাউদ্দিন প্র. মনা (৩১), ১০.মোবারক হোসেন (২২), ১১.মোঃ সাহাবুদ্দিন (৩৫), ১২.মোঃ রেদোয়ান ফারুক (৩৯), ১৩. মো. খাজা খাইরুদ্দিন খান ছোটন (৩০), ১৪. সিরাজ প্র. মাঝি (২৫), ১৫.মো. রমজান আলী প্র. কিরণ (৩০), ১৬.মো. ইকবাল (২১), ১৭.মোঃ লালন (৫০), ১৮.মো. শাকিল খান শামীম (১৯), পিতা- মো. লালন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, মহিউদ্দিন সোহেলের বাবা, মুক্তিযোদ্ধা আবদুল বারিক, মা- শেফালী বেগম, স্ত্রী নিগার সোলতানা, ভাই- শাকিরুল ইসলাম শিশির, বোন-সোলতানা রাজিয়া , একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির আহ্বায়ক শওকত বাঙ্গালী, মহিউদ্দিন সোহেলের দুই শিশু সন্তান মাশরিফ ও মাহাতিফ।