জঙ্গিবিরোধী সচেতনতায় ডিএমপি’র সপ্তাহব্যাপী গণসংযোগ
জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে রাজধানীতে সপ্তাহব্যাপী জঙ্গিবিরোধী গণসংযোগ সপ্তাহ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। রোববার (২৮ এপ্রিল) থেকে শুরু হওয়া এই সপ্তাহব্যাপী কার্যক্রম চলবে আগামী ৪ মে পর্যন্ত।
ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, গণসংযোগ সপ্তাহ সফল করতে ডিএমপি’র ৫০টি থানায় সংশ্লিষ্ট বিট অফিসার এলাকাবাসীকে নিয়ে উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। কমিউনিটি পুলিশের মাধ্যমে সভার আয়োজন করা হবে। পাড়া-মহল্লার পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উক্ত সভার আয়োজন করবেন। সভায় সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদক নির্মূলে পুলিশের পদক্ষেপ ও জনগণের করণীয় বিষয়ের ওপর আলোচনা চলবে।
এ বিষয়ে ডিএমপি’র মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগ উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান জানান, সম্প্রতি শ্রীলঙ্কায় সংঘটিত সন্ত্রাসী কার্যক্রম এবং বাংলাদেশে ইতোপূর্বে সংঘটিত সন্ত্রাসী ঘটনার পেছনে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন অনুষঙ্গ রয়েছে যার ব্যাপ্তি ও পরিধি ব্যাপক ও বিস্তৃত। এ রকম একটি সমস্যা শুধুমাত্র আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা নিরসন করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, 'সর্বসাধারণের ব্যাপক এবং সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমেই একটি রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বজায় রাখা সম্ভব। এ লক্ষে ডিএমপিতে ৩০২টি বিটকে সক্রিয় রেখে ও ধারাবাহিকভাবে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করার জন্য এ গণসংযোগ চলবে আজ থেকে সপ্তাহব্যাপী। উগ্রবাদ প্রতিরোধে পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ, গণমাধ্যম, এনজিও ও সিভিল সোসাইটির সদস্যগণসহ কমিউনিটির প্রত্যেকের কার্যকর ভূমিকা পালনের সুযোগ রয়েছে।'
নগরবাসীর কর্তব্য:
১. পরিবার থেকে সন্তানদের নৈতিকতা, মানবিকতা, সহনশীলতা ও সহাবস্থানের চর্চা শেখানো।
২. দেশপ্রেম, বাঙালি সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় তরুণদের উদ্বুদ্ধ করা।
৩. সকল মাধ্যমের শিক্ষা ব্যবস্থায় বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনা, ঐতিহ্য ও ইতিহাসকে অন্তর্ভুক্ত করা।
৪. খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও উগ্রবাদ বিরোধী বিভিন্ন কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা।
৫. পাড়া-মহল্লায় ক্লাব, পাঠাগার, ক্রীড়ানুষ্ঠান ও বিনোদনমূলক কার্যক্রমের সুবিধা নিশ্চিত করা।
৬. প্রাপ্ত বয়স্ক না হলে সন্তানদেরকে ব্যক্তিগতভাবে ইন্টারনেট ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করা।
৭. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের আচরণগত পরিবর্তনের প্রতি লক্ষ্য রাখা ও অভিভাবকের সাথে মতবিনিময়।
৮. পরিবারের সদস্য বিশেষ করে সন্তানের সাথে বন্ধুসুলভ আচরণ করা, ছোটবেলা থেকেই ধর্মের সঠিক ব্যাখ্যা নিয়ে আলোচনা ও ধর্মের ইতিবাচক দিক তুলে ধরা।
৯. মিডিয়াতে ব্যাপক হারে উগ্রবাদ বিরোধী প্রচারণা চালানো এবং টিভি চ্যানেলসমূহে শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান প্রচার।
১০. ইমাম ও খতিবদের উগ্রবাদের বিপক্ষে বক্তব্য প্রদানে উদ্বুদ্ধকরণ।
১১. আন্তঃধর্মীয় মানুষের পারস্পরিক সম্প্রীতি বৃদ্ধি ও অভিজ্ঞতা বিনিময়।
ডিএমপির অনুরোধ আরও করা হয়, নিজ পরিবারের কোনো সদস্যের বা সন্তানের বিশেষ কোন পরিবর্তন ঘটছে কিনা খেয়াল রাখার। এছাড়া বাসাবাড়ির মালিকদের ভাড়াটিয়াদের সম্পর্কে সজাগ থাকার অনুরোধ করা হয়।