ফণীর ঝুঁকি খাটো করে না দেখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
ঘূর্ণিঝড় ফণী সম্পর্কে সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি লন্ডন থেকে সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ্যে বলেছেন ‘কোনোক্রমেই ঘূর্ণিঝড় ফণীকে খাটো করে দেখা ঠিক হবে না। জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে রাখা যাবে না।’
শুক্রবার (৩ মে) দুপুরে সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘আবহাওয়া অফিস নিদন্তর অনুসরণ করছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে কোনোক্রমেই আমাদের উপর যে ঝুঁকি ছিল সেটাকে খাটো করে দেখা সমীচিন হবে না। উপকূলীয় লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়স্থলে নেওয়ার তৎপরতা অব্যহত রাখতে হবে এবং স্থানীয় মানুষকে উৎসাহিত করতে হবে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়া জন্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সার্বিকভাবে প্রস্তুত আছি। আমাদের স্বাস্থ্য বিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সব বিভাগ প্রস্তুত রয়েছে। বিষয়টি মানুষকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। লন্ডন থেকে প্রধানমন্ত্রী এই বার্তাই দিয়েছেন। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, কোনক্রমেই এই সাইকোলনকে খাটো করে দেখা ঠিক হবে না। জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে রাখা যাবে না। তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে হবে।’
নজিবুর রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের বিষয়ে সেখানকার স্থানীয় প্রশাসনকে সেনাবাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। সেখানে ভূমি ধ্বসের সম্ভাবনা আছে কি না তা খতিয়ে দেখতে বলেছেন।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি তাজিল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ফণীর প্রভাবে মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে এবং কক্সবাজার সমূদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
সমুদ্রবন্দরের সতর্ক বার্তায় বলা হয়েছে, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি শুক্রবার (৩ মে) ভোররাত ৩টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭০০ কিলোমিটার, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯০ কিলোমিটার, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯৫ কিলোমিটার এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর অথবা উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ৩ মে বিকেল নাগাদ ভারতের ওড়িশায় উপকূলে অতিক্রম করতে পারে। পরবর্তীতে পশ্চিমবঙ্গ হয়ে সন্ধ্যা নাগাদ খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় পৌঁছাতে পারে। খুলনা ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় শুক্রবার সকাল নাগাদ অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী’র অগ্রবর্তী অংশের প্রভাব শুরু হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারে এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।