৮ ঘণ্টা যাত্রার টিকিটের অপেক্ষায় ১৮ ঘণ্টা!
স্বস্তি এবং আরামদায়ক যাত্রার জন্য যাত্রীদের কাছে ট্রেন গুরুত্বপূর্ণ একটি বাহন। ঈদে ঘরমুখো মানুষের ট্রেনে যাত্রা করার আগ্রহ থাকে বেশি। তবে টিকিট পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয় যাত্রীদের। আট ঘণ্টা যাত্রার টিকিটের জন্য ঈদের আগে অপেক্ষা করতে হয় ১৮ থেকে ২০ ঘণ্টা।
শনিবার (২৫ মে) সকালে কমলাপুর রেলস্টেশনে এমন অভিযোগ করেন টিকিটপ্রত্যাশীরা।
পঞ্চগড়ের টিকিট কাটার জন্য এসেছেন ফয়সাল রহমান। বার্তা২৪.কমের কাছে তিনি অভিযোগ করেন, শুক্রবার (২৪ মে) দুপুরে কমলাপুর স্টেশনে এসেছি অগ্রিম টিকিট কাটার জন্য। ঢাকা থেকে ট্রেনে পঞ্চগড় যেতে সময় লাগে আট ঘণ্টার মত। কিন্তু এই টিকিট কাটার জন্য আমি প্রায় ২০ ঘণ্টা যাবৎ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছি। এতে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ সময় নষ্ট হচ্ছে, শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছি। এমনটা পৃথিবীর কোনো দেশে হয় কি-না, আমার সন্দেহ আছে।
বেসরকারি চাকরিজীবী সুমি আক্তার বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমি ঠাকুরগাঁও যাওয়ার জন্য অগ্রিম টিকিট কাটতে এসেছি শুক্রবার সন্ধ্যায়। এটা অবশ্যই দেশের জন্য লজ্জার। আমরা নারী হয়ে প্রায় ১৭ থেকে ১৮ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে আছি টিকিটের জন্য! প্রতি বছরই তো ট্রেনের টিকিট পেতে এরকম ভোগান্তি পোহাতে হয়। কর্তৃপক্ষের উচিৎ ট্রেনের টিকিট ব্যবস্থা পুরোপুরি অটোমেশন করে দেওয়া।
গার্মেন্টসে চাকরি করা ইউসুফ আলী বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রায় ১৬ ঘণ্টা যাবৎ কমলাপুর স্টেশনে আছি। তবে আমরা চারজন গ্রুপ ধরে এসেছি। টিকিট দেওয়ার লাইন ধরে রাখার জন্য একজন একজন করে লাইনে থাকছি। আবার আরেকজন বাইরে যাচ্ছি। আবার সে উঠে গেলে আরেকজন এসে লাইনে বসে থাকছি টিকিটের জন্য। এইভাবে সময় পার করছি।
টিকিটের অপেক্ষায় আরেক যাত্রী মো. মানিক বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমরা এতক্ষণ যে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি, শুক্রবার রাতে পুলিশ মাঝে লাইন তুলে দেওয়া জন্য আমাদের লাঠি দিয়ে আঘাত করে। বলে, এখন চলে যান, সকালে এসে লাইনে দাঁড়াবেন। এসব বিষয়ে কর্তৃপক্ষের আরো নজর দেওয়া উচিৎ। সাথে আরো কোনো বড় জায়গায় টিকিট দিলে মানুষের এই চাপ কিছুটা কম হতো।
উল্লেখ্য, শনিবার দেওয়া হচ্ছে ৩ জুনের আগাম টিকিট। এবার ঈদুল ফিতর উপলক্ষে কমলাপুর স্টেশন থেকে ঈদ স্পেশাল সার্ভিসসহ বিভিন্ন রুটে আন্তঃনগর ১৬টি ট্রেন ছেড়ে যাবে।