নিউমার্কেট এলাকায় হকার-পুলিশ খেলা!
আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় বেচাকেনা জমে উঠেছে।
ঈদকে সামনে রেখে নিউমার্কেট এলাকায় এখন ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। সাধারণ জনগণের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে ফুটপাত দখল করে বসা হকারদের সরাতে ব্যাপক তৎপর পুলিশ। কিন্তু কিছু হকার পুলিশের নিষেধ অমান্য করে ফুটপাতে বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসে। কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ এসে তাদের উঠিয়ে দেয়। পুলিশ গেলে আবার যা তাই। এভাবেই চলছে। এ যেন চোর-পুলিশ নয়, হকার-পুলিশ খেলা!
সোমবার (২৭ মে) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত নিউমার্কেট এলাকা ঘুরে চোখে পড়ে এমন দৃশ্য।
দেখা যায়, সাইন্সল্যাব থেকে নীলক্ষেত মোড় পর্যন্ত কোনো হকারকে ফুটপাতে বসতে দিচ্ছে না পুলিশ। কেউ বসলেই তাদের মালপত্রসহ প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় পুলিশ কন্ট্রোল রুমে, এরপর কাউন্সেলিং বা আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বলাকা সিনেমা হলের সামনে পুলিশের নিষেধাজ্ঞা না মেনেই থ্রি-পিস, ওড়না, রেডিমেড জামা নিয়ে বসেছিলেন লিটন নামে এক হকার। একটু পরেই নিউমার্কেট থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মাসুম এসে তার গায়ের গেঞ্জির কলার ধরে গাউছিয়া মার্কেটের সামনে স্থাপিত কন্ট্রোল রুমে নিয়ে যান। এরপর লিটন ফুটপাতে আর না বসার প্রতিশ্রুতি দিলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এএসআই মাসুম বার্তা২৪.কমকে বলেন, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ও ফুটপাতে যাতায়াতে যেন অসুবিধা না হয় সেজন্য আমরা কাজ করছি। কোনো হকারকেই আমরা রাস্তায় দাঁড়াতে বা বসতে দিচ্ছি না।
নিলক্ষেত বইয়ের মার্কেটের সামনের ফুটপাতেও কেউ বই নিয়ে বসলে পুলিশ এসে সরিয়ে দিচ্ছে।
সাইন্সল্যাব থেকে নীলক্ষেত মোড় পর্যন্ত গত ঈদের সময় ছিল অসংখ্য হকার। গাউছিয়া মার্কেটের সামনের ওভারব্রিজের নিচে, মেঘনা পেট্রোলিয়াম ও রাফিন প্লাজার সামনের ফুটপাতসহ মিরপুর রোডের ফুটপাতও ছিল হকারদের দখলে। কিন্তু এবারের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। এবার হকারদের বসতেই দেওয়া হচ্ছে না। তবে নিউমার্কেটের মিরপুর রোড থেকে বাটা সিগন্যালের দিকে যাওয়া রাস্তায় অনেক হকারকে দেখা গেছে। পুলিশের দাবি, তাদের সরিয়ে দেওয়ার পর আবার চলে আসে।
ফুটপাত ফাঁকা করায় খুশি সাধারণ ক্রেতারা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ছাত্রী আনিশা খান। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, কিছুদিন আগে থেকেই পুলিশ হকারদের বসতে বাধা দিচ্ছিল। কিন্তু আজ এসে দেখছি, হকার নেই বললেই চলে। এটা ভালো লেগেছে। আমাদের চলাচল সহজ হয়েছে। এ ধারাবাহিতা বজায় রাখা উচিত।
নিউমার্কেট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মিজানুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, রমজান মাস, সবাই যাতে নিরাপদে ঈদের কেনাকাটা করতে পারে সেজন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।