রংপুরে দুস্থদের চাল কালোবাজারে, চেয়ারম্যানসহ আটক ৩
রংপুর দুস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত বিপুল চাল গোডাউন থেকে উদ্ধার করে র্যাব, ছবি: বার্তা২৪.কম
দুস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত ভিজিএফ ও ভিজিডির চাল কালোবাজারে বিক্রি করার অভিযোগে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানসহ তিন জনকে আটক করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে ৬০০ বস্তা চাল।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) ভোরে রংপুর সদর উপজেলার সদ্যপুস্করণী ইউনিয়নের পালিচড়া থেকে এসব চাল উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাজী সোহেল রানা ও ব্যবসায়ী আনছারুল ইসলাম, আকমাল হোসেনসহ তিন জনকে আটক করা হয়েছে।
এর আগে বুধবার (২৯ মে) রাতে পালিচড়া থেকে চাল নিয়ে যাওয়ার সময় নগরীর দর্শনা এলাকা থেকে ২১ বস্তা চালসহ এক অটো রিকশাচালককে আটক করে তাজহাট থানা পুলিশ।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার ওই এলাকায় চাল বিতরণ শেষে অর্ধ শতাধিকের বেশি কার্ডধারী নারী চাল না পেয়ে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে বিক্ষোভ করেন। চাল বিতরণ শেষ হয়েছে জানিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সোহেল রানা পরবর্তীতে তাদেরকে চাল দেওয়ার আশ্বাস দেন।
এদিকে রাতে ২১ বস্তা চাল স্টেশন এলাকায় নিয়ে যাওয়ার সময় নগরীর দর্শনা থেকে অটোচালক উজ্জ্বল ও আকমালসহ ওই চালগুলো আটক করে তাজহাট থানা পুলিশ।
বিষয়টি জানাজানি হলে তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে আসে। বুধবার রাত থেকে তারা কালোবাজারে বিক্রি হওয়া চাল উদ্ধারে অভিযান চালায়।
রংপুর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাসুদার রহমান মিলন বার্তা২৪.কমকে বলেন, মাহে রমজান ও আসন্ন ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে দুস্থদের জন্য সরকার থেকে জনপ্রতি ১৫ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। সদর উপজেলার সদ্যপুস্করণী ইউনিয়নের প্রায় ৬ হাজার ৩০০ জন সুবিধাভোগীর মাঝে বিতরণের জন্য গত মঙ্গলবার ৩ হাজার ১৪৫ বস্তা চাল ইউনিয়ন পরিষদে আনা হয়।
তিনি আরও জানান, এদিকে রাতেই চাল উদ্ধারে অভিযানে নামে র্যাব। রাত থেকে পালিচড়া বাজারের একাধিক গোডাউনে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৭ শতাধিক চালের বস্তা উদ্ধার করা হয়েছে এবং এ ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সোহেল রানা ও ব্যবসায়ী আনছারুল ইসলাম, আকমালকে আটক করা হয়েছে। এসব চাল কালোবাজারে বিক্রির জন্য মজুদ করা হয়েছিল বলে তিনি দাবি করেন।
এদিকে ঈদে দুস্থদের জন্য সরকারের দেয়া উপহার স্বরুপ ভিজিএফ-ভিজিডির চাল কালোবাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে মজুদ করে রাখার বিষয়টিকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নাছিমা জামান ববি। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া দরকার। নইলে এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতেই থাকবে।’
র্যাব-১৩ এর রংপুর সদর দপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভিযানের সময় ঘটনাস্থল থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সোহেল রানা ও ব্যবসায়ী আনছারুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে।
