ভুয়া খবরে নির্ঘুম রাত

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম রংপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

 

রাত সোয়া ১২টা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চোখ বুলাতেই নজরে এলো সড়ক দুর্ঘটনার পোস্ট। তাতে লেখা- "মিঠাপুকুরে শ্যামলী পরিবহন এক্সিডেন্ট। ড্রাইভারসহ নিহত কয়েকজন। আহতদের রক্তের প্রয়োজন রংপুর মেডিকেলে"। এই খবরে চমকে উঠলাম। ঈদের সময় এমন দুর্ঘটনার খবর তো গুরুত্বপূর্ণ। তাই দ্রুত ফোন হাতে খোঁজখবর নিতে লাগলাম। কেউই দুর্ঘটনার বিষয়ে সঠিক তথ্য দিতে পারল না।

বিজ্ঞাপন

অবশেষে সহকর্মী  সিনিয়র সাংবাদিকদের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ বাড়ালাম। তারাও খানিকটা চমকে উঠলো। জানতে চাইল সড়ক দুর্ঘটনাটি কোথায় ঘটেছে। উত্তরে আমি কিছুই বলেতে পারলাম না। শুধু বললাম, ফেসবুকে  পোস্টটা দেখলাম। এরপর আমার মত তারা ব্যস্ত হলেন দুর্ঘটনার খবর জানতে। কিন্তু কোথাও থেকে খবর আসছে না।

বরং এক ঘণ্টারও বেশি সময় পার হয়ে গেল সাংবাদিক আর থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে। এরই মধ্যে ফেসবুকে ওই দুর্ঘটনার শিরোনামটি বেশ সাড়া ফেলে। অনেকেই মানবিক দিক চিন্তা করে পোস্টের পর পোস্ট দিয়েছে। অথচ সত্যতার যাচাই কেউ করেনি। পর্যবেক্ষণে এক সহকর্মী জানালেন আর একবার থানায় যোগাযোগ করার জন্য।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/30/1559207806184.jpg

কথা মত কাজ। অপর প্রান্ত থেকে মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাফর আলী বিশ্বাস জানালেন,  সড়ক দুর্ঘটনার খবর তাদের জানা নেই। চারটি পেট্রোল টিম নাইট ডিউটি করছে। কেউই তো এই সংবাদ জানে না। এবার কথা না বাড়িয়ে ফোন করলাম বড়দরগা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে। একই সুর বাজাল সেখান থেকে।

বুঝলাম ফেসবুকে ছড়ানো এ তথ্যটি ভুয়া। আর এই ভুয়া সংবাদটি ততক্ষণে কয়েক হাজার মানুষের চোখে পড়েছে। তিন লাইনের বিভ্রান্তি কেউ না বুঝে আর কেউবা মানবিক দৃষ্টিতে শেয়ার ও পোস্ট করেছেন। যা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক নেতা, সংস্কৃতিকর্মীও বাদ পড়েনি।

এই একটি পোস্টের সত্যতা জানতে গিয়ে ঘড়ির ঘণ্টার কাটাটা বারোটা থেকে সোয়া তিনটায় পৌঁছে গেছে। তখনও অনেকের ফেসবুকে অ্যাকাউন্টে ঝুলে আছে ওই গুজব ছড়ানো পোস্টটি। অবশ্যই এই বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য অনেকে আবার দুঃখ প্রকাশও করেছে।

তবে বিষয়টিকে ফেসবুকে তথ্য প্রচারের ক্ষেত্রে অপব্যবহার হিসেবে দাবি করছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল ইসলাম বকুল। সে লিখেছেন- "একবার ভাবুন এমন তথ্য রংপুরের সাত জেলার হাজার হাজার পরিবারের ঘুম হারাম করে কি দুঃচিন্তায় ফেলে দিয়েছে?

প্লিজ দায়িত্বশীল জায়গা থেকে নিশ্চিত না হয়ে এমন ধরনের তথ্য ফেসবুকে পোস্ট করবেন না।"