ঈদযাত্রা

রাজধানী ছাড়ছে ঘরমুখো মানুষ



তৌফিকুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
রাজধানী ছাড়ছে ঘরমুখো মানুষ

রাজধানী ছাড়ছে ঘরমুখো মানুষ

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে রাজধানী ছাড়ছে ঘরমুখো মানুষ। গত ( ১৭ মে) যারা অগ্রিম টিকিট কেটেছিল আজ তারাই সড়ক পথে নিজ গন্তব্যে যাওয়ার জন্য ভিড় করছে গাবতলী ও কল্যাণপুর বাস কাউন্টারগুলোতে।

বৃহস্পতিবার ( ৩০ মে) সকাল থেকে গাবতলী ও কল্যাণপুর থেকে একে একে ছেড়ে যাচ্ছে বাসগুলো। এসময় বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার জন্য ঘরমুখো মানুষের ভিড় লক্ষ্য করার মতো ছিল।

গাবতলী ও কল্যাণপুর বাস কাউন্টারগুলো ঘুরে দেখা যায়, সেই চিরচেনা রূপ রাজধানী থেকে উত্তরবঙ্গগামী বাস কাউন্টারগুলোতে বেশি ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ঈদের আগে ঝক্কি ঝামেলা এড়াতে আগেভাগেই পরিবারের সদস্যদের বাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছেন স্বজনরা। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও যেসব চাকরিজীবীরা আগেই ছুটি পেয়েছেন তারা আজ রাজধানী ছাড়ছেন।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইফতেখারুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে রংপুর যাচ্ছেন। আজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঈদের আগে শেষ ক্লাস ছিলো। ঈদের ছুটি হওয়া শুরু হওয়ায় বিকালে গ্রামের উদ্দেশ্যে যাচ্ছি ।

পরিবারকে বাসে তুলে দিতে আসা বেসরকারি চাকুরীজীবী শাহাজাহান মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, আসলে ঈদে রাস্তায় অনেক জ্যাম জট পড়ে আর যেহেতু আমার বাচ্চা ও স্ত্রী দিনাজপুর যাবে সেক্ষেত্রে দীর্ঘসময়ের জার্নি তাই ছোট বাচ্চা এবং পরিবারকে আগেই পাঠিয়ে দিচ্ছি। আমার অফিস বন্ধ হওয়ার পরে ৩ তারিখ আমিও রওনা দেব।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/30/1559223222253.jpg

গ্রামে ঈদ করতে যাওয়া গৃহিণী শাহনাজ পারভীন বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমি রাজশাহি যাচ্ছি। প্রতিবারই ঈদের আগে বাসায় যাওয়া হয়। দুর্ভোগ আর যানজট এড়ানোর জন্য এবারও আগেই যাচ্ছি। আগে গেলে পরিবারের সাথে বেশি দিন থাকা যায়, বাবা, মা, আত্মীয়-স্বজন আছেন দেশের টানে নাড়ির টানে যেতেই হবে।

কল্যাণপুর শ্যামলী পরিবহনের ম্যানেজার শাজাহান সিরাজ বার্তা২৪.কমকে বলেন, আজ থেকে অগ্রিম টিকিট কাটা যাত্রীদের যাত্রা শুরু হয়েছে সকাল থেকে। সকাল থেকে এখন পর্যন্ত আমাদের প্রায়ই বিভিন্ন রুটে ২০ থেকে ২৫ টির মতো গাড়ি ছেড়ে গেছে। সবগুলো গাড়ি সময় অনুযায়ী ছেড়েছে। রাস্তার অবস্থা এখন পর্যন্ত ভালো কোথাও কোনো দুর্ভোগের খবর এখন পর্যন্ত পাইনি। তবে আশা করছি ঘরমুখো যাত্রীরা নির্বিঘ্নে তাদের গন্তব্যে পৌছাতে পারবেন। ঢাকা থেকে বিভিন্ন রুটে ঘরমুখো যাত্রীদের নিয়ে যেতে আমাদের ১০০ টির মত গাড়ি প্রতিদিন ছেড়ে যায়।

উত্তরবঙ্গগামী এস আর পরিবহনের ম্যানেজার আমিননূর নবী বার্তা২৪.কমকে বলেন, সকাল থেকে উত্তরবঙ্গ উত্তরবঙ্গগামী ২৫ টির মত গাড়ি ছাড়ে ঢাকা থেকে । বর্তমানে কোথাও যানজট হয়নি বলে এখন পর্যন্ত খবর পেয়েছি। তবে চন্দ্রা, আমিন বাজার, সিরাজগঞ্জ থেকে চান্দাইকোনা, এবং টাঙ্গাইল মহাসড়কের যে স্থানে চার লেনের কাজ চলছে সেসব জায়গায় যানজট হবার আশঙ্কা করছি।

 

   

কক্সবাজারে তীব্র গরমে স্বস্তির সমুদ্রস্নান



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র গরমে জনজীবন অস্থির। তীব্র গরমের কারণে যখন মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা তখন সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্র-শনিবারকে কেন্দ্র করে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে হাজারো পর্যটকদের সমাগম হয়েছে। এ অবস্থায় সাধারণ মানুষ আর পর্যটকরা সমুদ্র সৈকতে গোসলে নেমে স্বস্তি খুঁজছে।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কলাতলী, সুগন্ধা এবং লাবণী পয়েন্টে গিয়ে দেখা গেছে ৫০ হাজরের অধিক পর্যটক সৈকতের এই তিনটি পয়েন্টে গোসলে নেমেছে।

সিরাজগঞ্জ থেকে আসা পর্যটক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রচণ্ড গরমে ছুটি পেয়েই সমুদ্রস্নান করতে চলে এলাম কক্সবাজারে। খুবই আনন্দ লাগছে। পুরো পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছি। আরও কয়েকদিন ছুটি পেলে ভালো হতো এখানে থেকে যেতাম। সমুদ্রের পানি খুবই ঠান্ডা। অনেক ভালো লেগেছে।

ঢাকার লালবাগ থেকে আসা পর্যটক মুখলেসুর রহমান বলেন, কক্সবাজারে স্বস্তির জন্য আসলাম কিন্তু সবখানে খুবই গরম। এই গরমে সমুদ্রে গোসলে নামলাম খুবই দারুণ অনুভূতি। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও অনেক ভালো। লাইফগার্ড কর্মীরা দূরে গেলেই বাঁশি বাজিয়ে সতর্ক করছে। সবকিছু অনেক ভালো।

সাপ্তাহিক ছুটির দিনকে কক্সবাজারে ঘুরতে এসে যেন নিরাপত্তাজনিত কোন সমস্যা না হয় সেজন্য কাজ করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ এবং জেলা প্রশাসন। এছাড়া সমুদ্র সৈকতে গোসলে নেমে যেন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে সেখানে কাজ করছে সি সেইফ লাইফগার্ড কর্মীরা।


সি সেইফ লাইফগার্ডের সিনিয়র লাইফগার্ড রুহুল আমিন বার্তা২৪.কম-কে বলেন, কলাতলী, সুগন্ধা এবং লাবণী পয়েন্টে প্রায় ৫০ হাজারের অধিক পর্যটক গোসলে নেমেছে। এই তিনটি পয়েন্টই মূলত সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমরা কাজ করি। এই তীব্র গরমের মধ্যে কেউ উপরে থেকে সমুদ্র উপভোগ করছে না। সবাই সমুদ্রে নেমে যাচ্ছে এজন্য আমাদের জন্য একটু কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ঈদের পরদিন থেকে পর্যটক সমাগম শুরু হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ এখনো পর্যন্ত অনেক পর্যটক কক্সবাজারে ঘুরতে আসছে। আমরা পর্যটন ব্যবসায়ীরা খুবই আনন্দিত। আমাদের ভালো ব্যবসা হচ্ছে।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ছাড়াও দীর্ঘ ৮০ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভ, ইনানী-পাটুয়ারটেক সমুদ্র সৈকত, মহেশখালী-সেন্টমার্টিন দ্বীপ এবং রামুর ঐতিহাসিক স্থানগুলো ঘুরতে যাচ্ছেন পর্যটকরা।

;

বরিশালে আগুনে পুড়ে বৃদ্ধার মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বরিশাল জেলার বানারীপাড়া উপজেলার উদয়কাঠি গ্রামের এক কৃষকের বসতঘরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে আমিরুন নেছা নামের শতবর্ষী এক নারীর করুণ মৃত্যু হয়েছে। তবে কিভাবে ঘরে আগুন লেগেছে সে বিষয়ে কেউ বলতে পারছেন না। ফলে অগ্নিকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের দাবি জানিয়েছেন নিহত বৃদ্ধার স্বজন ও স্থানীয়রা।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিকালে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে উদয়কাঠি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাহাদ আহমেদ ননী জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে দশটার দিকে কৃষক মোশাররফ হোসেনের বসত ঘরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। মুহুর্তের মধ্যে ঘরের সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এসময় ঘরের মধ্যে থাকা সবাই দৌঁড়ে বের হতে পারলেও কৃষক মোশাররফ হোসেনের ১২০ বছর বয়সের মা আমিরুন নেছা আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছেন। তবে কিভাবে আগুন লেগেছে সে বিষয়ে কেউ কিছু বলতে পারছেন না।

বরিশাল বানারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাইনুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার পূর্বেই বসতঘরসহ বৃদ্ধা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ওসি আরও বলেন, অগ্নিকাণ্ডের কারণ উদঘাটনে তদন্ত চলছে।

;

থাইল্যান্ডের সঙ্গে ৫ সমঝোতা ও চুক্তি সই



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

থাইল্যান্ড ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক এবং একটি লেটার অব ইনটেন্ট বা অভিপ্রায়পত্র সই হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গভর্নমেন্ট হাউসে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বন্ধুত্ব ঐতিহাসিক, ভাষাগত এবং অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীরে প্রোথিত। আমাদের দুই দেশের মধ্যে উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক সহযোগিতার বহুমুখী ক্ষেত্রে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুই নেতা পারস্পরিক বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রাণবন্ত অর্থনীতির সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে আমরা থাইল্যান্ডকে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং গতিশীল অংশীদার হিসেবে দেখছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি থাই প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ এবং ব্যবসা সহজীকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছি। আমি থাই পক্ষকে আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই-টেক পার্কগুলোতে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগের এবং বিশেষভাবে একটি এসইজেড এই সুযোগ নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) ছয় দিনের সরকারি সফরে থাইল্যান্ডে গেছেন।

দুই পক্ষ ২০২৪ সালের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুই দেশের বাণিজ্য মন্ত্রীরা এই বিষয়ে একটি আগ্রহপত্রে সই করেছেন।

থাই এবং বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের মধ্যে সহজ যোগাযোগের সুবিধার্থে ঢাকা এবং ব্যাংকক অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি সংক্রান্ত চুক্তিতে সই করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে ইতোমধ্যে কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের জন্য একটি চুক্তি রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য থাইল্যান্ড জ্বালানি সহযোগিতায় নিয়োজিত একটি সম্ভাব্য অংশীদার। জ্বালানি সহযোগিতার সম্ভাবনা অনুসন্ধান করতে, শক্তি সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর এখানে স্বাক্ষরিত দ্বিতীয় নথি।

শুল্ক সংক্রান্ত বিষয়ে সহযোগিতা ও পারস্পরিক সহায়তার বিষয়ে তৃতীয় সমঝোতা স্মারকটি সই হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, থাই জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং সেরা পর্যটন অনুশীলন থেকে উপকৃত হওয়ার জন্য আমরা পর্যটন ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই করেছি।

তিনি বলেন, জনগণের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দুই পক্ষ কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ খাতে সহযোগিতার সম্ভাবনা অনুসন্ধান করেছে।

সামুদ্রিক যোগাযোগের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, রানং বন্দর ও চট্টগ্রাম বন্দরের মধ্যে সরাসরি জাহাজ চলাচল নিয়ে দুই পক্ষ আলোচনা করেছে। থাইল্যান্ডের ফ্ল্যাাগশিপ ‘ল্যান্ডব্রিজ প্রকল্প’ বাংলাদেশ অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে অনুসরন করছে।

 

;

বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতে থাই বিনিয়োগ চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশেষ অর্থনৈতিক খাত, হাসপাতাল ও চিকিৎসা খাতে থাইল্যান্ডকে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশি স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি থাই প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসা খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা পরীক্ষা করে দেখারও প্রস্তাব দিয়েছি।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গভর্নমেন্ট হাউসে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।

দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ও একান্ত বৈঠকের পর দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পাঁচটি দ্বিপাক্ষিক নথি-একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক এবং একটি আগ্রহপত্র সই হয়।

বাংলাদেশ একটি নিকট প্রতিবেশী হিসেবে থাইল্যান্ডের সাথে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের বন্ধুত্ব ঐতিহাসিক, ভাষাগত এবং অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীরে প্রোথিত। আমাদের দুই দেশের মধ্যে উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক সহযোগিতার বহুমুখী ক্ষেত্রে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুই নেতা পারস্পরিক বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রাণবন্ত অর্থনীতির সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে আমরা থাইল্যান্ডকে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং গতিশীল অংশীদার হিসেবে দেখছি।

বাণিজ্য সহযোগিতার বিষয়ে তারা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের বর্তমান পরিধি বাড়ানোর জন্য দীর্ঘ পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং শক্তিশালি দ্বিমুখী প্রবৃদ্ধি অর্জনে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি থাই প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ এবং ব্যবসা সহজীকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছি। আমি থাই পক্ষকে আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই-টেক পার্কগুলোতে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগের এবং বিশেষভাবে একটি এসইজেড এই সুযোগ নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছি।

দুই পক্ষ ২০২৪ সালের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুই দেশের বাণিজ্য মন্ত্রীরা এই বিষয়ে একটি আগ্রহপত্রে সই করেছেন।

থাই এবং বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের মধ্যে সহজ যোগাযোগের সুবিধার্থে ঢাকা এবং ব্যাংকক অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি সংক্রান্ত চুক্তিতে সই করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে ইতোমধ্যে কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের জন্য একটি চুক্তি রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য থাইল্যান্ড জ্বালানি সহযোগিতায় নিয়োজিত একটি সম্ভাব্য অংশীদার। জ্বালানি সহযোগিতার সম্ভাবনা অনুসন্ধান করতে, শক্তি সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর এখানে স্বাক্ষরিত দ্বিতীয় নথি।

শুল্ক সংক্রান্ত বিষয়ে সহযোগিতা ও পারস্পরিক সহায়তার বিষয়ে তৃতীয় সমঝোতা স্মারকটি সই হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, থাই জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং সেরা পর্যটন অনুশীলন থেকে উপকৃত হওয়ার জন্য আমরা পর্যটন ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই করেছি।

তিনি বলেন, জনগণের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দুই পক্ষ কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ খাতে সহযোগিতার সম্ভাবনা অনুসন্ধান করেছে।

সামুদ্রিক যোগাযোগের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, রানং বন্দর ও চট্টগ্রাম বন্দরের মধ্যে সরাসরি জাহাজ চলাচল নিয়ে দুই পক্ষ আলোচনা করেছে। থাইল্যান্ডের ফ্ল্যাাগশিপ ‘ল্যান্ডব্রিজ প্রকল্প’ বাংলাদেশ অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে অনুসরন করছে।

তিনি বলেন, আমি থাই পক্ষকে দুই দেশের মধ্যে বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বিশেষ করে কৃষি, মৎস্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছি।

দুই প্রধানমন্ত্রী বিমসটেক কাঠামোর আওতায় আঞ্চলিক সহযোগিতা প্রক্রিয়া নিয়েও আলোচনা করেছেন। চলতি বছরের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া শীর্ষ সম্মেলনে বর্তমান সভাপতি ও আয়োজক হিসেবে থাইল্যান্ড বাংলাদেশের কাছে সভাপতিত্ব হস্তান্তর করবে।

তিনি বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, বিমসটেক মোট ১৮০ কোটি জনসংখ্যার আঞ্চলিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি। রোহিঙ্গা সংকটের একটি স্থায়ী সমাধানে বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের সমর্থন চেয়েছে।

তিনি দুই দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সফরের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন।

এ সময় শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনকে বাংলাদেশে সফরের আমন্ত্রণ জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) ছয় দিনের সরকারি সফরে থাইল্যান্ডে গেছেন।

সূত্র- বাসস

;