যুদ্ধাপরাধী আলী শেখ মারা গেছেন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার কারাবন্দি আসামি মোজাহার আলী শেখ

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার কারাবন্দি আসামি মোজাহার আলী শেখ

  • Font increase
  • Font Decrease

একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের মামলায় কারাবন্দি আসামি মোজাহার আলী শেখ (৭৬) মারা গেছেন।

বুধবার (১৯ জুন) বেলা ১১টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) মো.বাচ্চু মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, গত ১৩ জুন মোজাহারকে বার্ধক্যজনিত নানা রোগের কারণে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আজ (বুধবার) সকালে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

মোজহার আলী শেখের বিরুদ্ধে  অবৈধ আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও হত্যা অভিযোগ ছিলো। তার বাড়ি খুলনা জেলার দাকোপ থানায়।

মোজাহার মুক্তিযুদ্ধের সময় কনভেনশন মুসলিম করতেন। পরবর্তীতে তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না।

   

কক্সবাজারে ২৪ ঘণ্টায় হিট স্ট্রোকে প্রাণ গেল ২ জনের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নে মনির উদ্দিন (৩৫) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে তিনি হিট স্ট্রোকে মারা গেছেন।

৩০ এপ্রিল (মঙ্গলবার) সকাল ১০টায় এ ঘটনাটি ঘটে। মৃত মনির উদ্দিন জালালাবাদ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের পালাকাটা এলাকার মৃত ইলিয়াসের ছেলে।

পরিবারের সদস্যরা জানান, রাতে সবার সাথে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। সকাল ৭ টার দিকে ঘুম থেকে উঠে বুকের ব্যথা অনুভব করার কথা জানালে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা নিরীক্ষা করলে মনির উদ্দিনের শরীরে হিট স্ট্রোকের লক্ষণ ধরা পড়ে। এ সময় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করার মুহূর্তে তার মৃত্যু হয়।

স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার আরমান উদ্দিন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মনির উদ্দিন একদম সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষ ছিলেন। আজ সকালে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁর মৃত্যু হয়। তাই তাঁরা ধারণা করছেন, বৈশাখের এই প্রচণ্ড গরমে হিট স্ট্রোকেই তার মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে সোমবার (২৯ এপ্রিল) সকালে পেকুয়া সদর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের উত্তর মেহেরনামা তেলিয়াকাটা এলাকায় হিট স্ট্রোকে মো. কালু (৫০) নামে এক দিনমজুরের মৃত্যু হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে স্থানীয় ইউপি সদস্য নাছির উদ্দিন বলেন, দিনমজুর মো. কালু সকালে প্রতিবেশী গিয়াস উদ্দিনের বাড়িতে খড়ের স্তুপের কাজ করছিলেন। এসময় সে গরমে অসুস্থ হয়ে মাথা ঘুরে পড়ে যায়। তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত ডাক্তার তাকে মৃত্যু ঘোষণা করে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজিবুর রহমান বলেন, ‘দিনমজুর কালুকে হাসপাতালে আনার আগেই তিনি মারা যান। তবে তার স্বজনদের বক্তব্য শুনে এটা হিট স্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।’

স্থানীয় প্রতিবেশী গিয়াসউদ্দিন জানান, সে সবসময় আমার বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করে। আজ সকালে খড়ের স্তূপে কাজ করার সময় গরমে মাথা ঘুরে পড়ে যায়। তাকে পেকুয়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করে। সে সুস্থ মানুষ, গরমের কারণে তার এই অবস্থা হয়েছে।

;

নকশী হাতপাখায় তিন গ্রামের মানুষের জীবন বদল



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

সারাদেশে তীব্র তাপদাহে বিপর্যস্ত জনজীবন। এর মাঝে বার বার লোডশেডিং যেন অস্বস্তির মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। এমন সময়ে সাধারণ মানুষ স্বস্তি পেতে হাত বাড়ায় হাতপাখার দিকে। হাতপাখার শীতল বাতাস ক্লান্ত শরীরে এনে দেয় প্রশান্তি। একদিন-দুদিন নয়, বাঙালির জীবনের সঙ্গে হাতপাখার তৈরি ও ব্যবহার হাজার বছরের। এখনোও গ্রাম থেকে শুরু করে শহরের প্রতিটি বাড়িতেই দেখা মেলে নানা কারুকাজ আর রঙ-বেরঙের হাতপাখার ব্যবহার।

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার বলদী, মুখী ও দীঘা গ্রামকে এখন অনেকেই চেনে হাতপাখার গ্রাম নামে। সেই সঙ্গে বদলে গেছে ওই সব গ্রামের মানুষের জীবন। নকশি হাতপাখা তৈরি ও বিক্রি করে নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনে এসেছে সচ্ছলতা।

জানা যায়, এ গ্রামগুলোতে নকশি হাতপাখা তৈরির কাজ শুরু হয় প্রায় ৩০-৩৫ বছর পূর্বে জামু নামে এক মহিলার মাধ্যমে। এখন এ হাতপাখা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছে কয়েক হাজার পরিবার। এই গ্রামগুলোতে প্রতি সপ্তাহে লাখ লাখ হাতপাখা তৈরি হয়।


নানা নকশায় শোভিত হাতপাখাকে বলা হয় নকশি হাত পাখা। নকশি হাতপাখা তৈরিতে লাগে বাঁশের চাক,কাপড়, সুই সুতা, ঝালট, ও হাতল।

প্রতিটি হাতপাখা তৈরিতে ৫ জন কাজ করেন। প্রথম জন বাঁশের চাক তৈরি, দ্বিতীয় জন ফুল তোলা বা প্রিন্ট করা, তৃতীয় জন মুড়ি লাগানো, চতুর্থ জন ঝালট লাগানো এবং পঞ্চম জন হাতল লাগান। এখানকার পাখা কাপড় ও বাঁশ দিয়ে তৈরি হয়। পরিবেশ বান্ধব ও দামে সস্তা হওয়ায় বাজারে এর চাহিদাও অনেক বেশি।

বাঁশ কেটে পাখার চাক ও হাতল বানিয়ে দেন পুরুষরা। এর পর অন্য কাজ করেন নারীরা।

এক এক জন নারী নিজের সংসার সামলিয়ে প্রতিদিন ২৫-৩০ টি পাখা বুনন করতে পারে। বুন শেষে তারা প্রতিটি হাতপাখা ৩০-৩৫ টাকায় পাইকারদের কাছে বিক্রি করে। পাইকার তাদের কাছ থেকে কিনে আবার ঝালট ও হাতল লাগিয়ে বাজারে প্রতিটি পাখা বিক্রি করে ৫০-৭০ টাকা ।


উপজেলার মশাখালী ইউনিয়নের বলদি গ্রাম, মুখী গ্রাম ও রাওনা ইউনিয়নের দীঘা গ্রামের ঘরে ঘরে তৈরি এই হাতপাখা শিল্পের সঙ্গে জড়িত কয়েক হাজার নারী কেবল পরিবারের সচ্ছলতাই আনছে না, অনেকে সমাজ ও পরিবারের বোঝা নামের অপবাদ দূর করে হয়েছেন স্বাবলম্বী। অনেক পরিবারের স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া মেয়েরা বাড়তি আয়ের উৎস তৈরি করছে হাতপাখা। গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ বাড়ির উঠানে নারীরা বসে সুইয়ের ফোঁড়ে বাহারি সুতায় হাতপাখার জমিনে তৈরি হচ্ছে নানা নকশা খচিত ফুল, পাখি, লাভ, কদম ফুল, তিনতার, আয়না বসানো, ডালিম, মানুষের নামের ইংরেজি অক্ষর।

নারী-পুরুষ মিলে হাতপাখার কাজ করে আর্থিক অবস্থার উন্নয়ন হচ্ছে গ্রামের বাসিন্দাদের। নকশি হাত পাখার কাজ করেই কেউ কিনেছেন জমিজমা, কেউ করেছে পাকা বাড়ি কিংবা ছেলেকে পাঠিয়েছেন বিদেশে।

দেশের নানা প্রান্ত থেকে পাইকার এসে তিন গ্রাম থেকে হাতপাখা কিনে নিয়ে যায়। পরে ফেরি করে হাত পাখা বিক্রি করেন দেশের নানা জায়গায়। আবার এই হাতপাখা যাচ্ছে পাশের দেশ ভারতে।
বিশেষ করে ট্রেন, বাস ও লঞ্চে গরমের সময়ে হাতপাখার কদর অনেক বেশি। দামও তুলনামূলক অনেক সস্তা।

রাওনা ইউনিয়নের দীঘা গ্রামে গৃহবধূ কুসুম আক্তার বলেন, আমি প্রায় ৩০ বছর ধরে হাতপাখা তৈরি করি । হাতপাখা বিক্রির টাকা সংসারের কাজ লাগাই, ছেলে-মেয়ের হাতখরচ দেই। এর ফলে স্বামীর কাছে হাত বাড়াতে হয় না। আমাদেরকে যদি সরকার একটু সহযোগীতা করতো এবং সহজ শর্তে ঋণ দিতো তাহলে আমাদের আরও ভালো হতো।


দিঘা গ্রামের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী মিম বলেন আমি লেখা পড়ার পাশাপাশি অবসর সময়ে দাদু ও মায়ের কাছ থেকে শিখে আমি ও হাতপাখা তৈরি করি এতে আমার লেখা পড়ার খরচ নিজেই মেটাতে পারছি।

একই এলাকার রীনা বেগম বলেন, সংসার কাজকর্ম শেষে যে সময় টুকু পাই হাতপাখা বানাই। দৈনিক ১০-১২ টা বানাতে পারি। এতে যে টাকা আয় হয় সেটা দিয়ে নিজের বিভিন্ন খরচ ও সংসারে কৃষি কাজসহ বিভিন্ন কাজে লাগাই। স্বামীর কাছে হাত পাততে হয় না উল্টো আমরা প্রয়োজনে টাকা দেই।

মুখী গ্রামের বৃদ্ধা হেলেনা খাতুন বলেন, আমি ৩০ বছর ধরে হাতপাখা তৈরি করি। হাতপাখা বানানোর আয় থেকে ছেলে- মেয়েদের লেখা পড়া করিয়েছি জমি কিনছি এবং পাকা বাড়ি করছি।
হাতপাখার বিক্রেতা আজিজুল হক বলেন, আমি ১৫-২০ লোক দিয়ে আমি নিজে হাতপাখা তৈরি করাই। আমি পাইকারী ও খুচরা হাতপাখা বিক্রি করে থাকি। এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পাইকারদের কাছে বিক্রি করে থাকি। আমাদের এলাকা হাতপাখা দেশের চাহিদা মিটিয়ে পাশ্ববর্তী দেশ ভারতেও রপ্তানি করা হচ্ছে।

হাতপাখা বিক্রেতা শমসের আলী আকন্দ বলেন, আমি ২৬-২৭ বছর ধরে এই হাতপাখার ব্যবসা করি। দেশের বিভিন্ন স্থানে হাতপাখা নিয়ে যাই। হাতপাখার ব্যবসা করে আমি জায়গায় জমিসহ অনেক কিছু করেছি।

;

তেজগাঁওয়ে ছিনতাইকারী হৃদয় গ্রেফতার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তেজগাঁওয়ের তালিকাভুক্ত ছিনতাইকারী হৃদয় মিয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (২৯এপ্রিল) রাতে তেজগাঁও থানার সোঁনারগাও ক্রসিং এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশ জানায়, হৃদয় তেজগাঁও থানার তালিকাভুক্ত ছিনতাইকারী। তিনি দূরপাল্লার বাসের জানালার পাশে বসা যাত্রীদের ব্যাগ, মোবাইল ছিনিয়ে পালিয়ে যান। যেহেতু এ ধরণের মোবাইল, ব্যাগ ছিনিয়ে নিলেও দূরপাল্লার বাসগুলো থামেনা কিংবা যাত্রীরাও আর নামে না, তাই এসব যাত্রীদের টার্গেট করেন হৃদয়। ছিনতাই করতে গিয়ে যদি ধরা পরে যান তখন নিজের বুকে, পেটে ব্লেড মারতে থাকেন। তবুও কেউ ধরতে চাইলে তার গায়ে পায়খানা ছুড়ে মারেন। থানা হাজতে আনলে সেখানেও পায়খানা করে দেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৮ টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি মামলায় তার বিরুদ্ধে পরোয়ানাও রয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল রাতে সোঁনারগাও ক্রসিং এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

;

দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চুয়াডাঙ্গা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

টানা কয়েকদিন ধরে চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিনই তাপমাত্রা বেড়ে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করছে। এবার অতীতের সব রেকর্ড ছাপিয়ে চুয়াডাঙ্গায় ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা রেকর্ড করা হয় ১২ শতাংশ।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বেলা তিনটায় চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার এ তাপমাত্রা রেকর্ড করে।

এর আগে ১৯৭২ সালের ১৮ মে রাজশাহীতে সর্বোচ্চ ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এ হিসেবে ১৯৭২ সালের পর ৫২ বছরের মধ্যে এটিই দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এদিকে, টানা এক মাস ধরে নজিরবিহীন উচ্চ খরতাপে দুঃসহ হয়ে উঠেছে এ অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রা।

চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) এ জেলায় সর্বোচ্চ ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি, শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি, শনিবার (২৭ এপ্রিল) ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি, রোববার (২৮ এপ্রিল) ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বশেষ সোমবার (২৯ এপ্রিল) ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় এ জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ১৪ শতাংশ। বেলা তিনটায় তাপমাত্রার পারদ আরও উপরে উঠে দাঁড়ায় ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ১২ শতাংশ।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান জানান, এপ্রিল মাসের শুরু থেকে চুয়াডাঙ্গা জেলায় কখনো মাঝারি, কখনো তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে। দেশের অন্যান্য অঞ্চলে বৃষ্টি হওয়ার কারণে আগামীকাল থেকে এ জেলার তাপমাত্রা কিছুটা কমে আসবে।

তিনি আরও জানান, আগামী ৪ মে পর থেকে চুয়াডাঙ্গা জেলায়ও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এটি এক সপ্তাহ মতো স্থায়ী হতে পারে। এসময় রোদের সাথে মাঝে মাঝে বৃষ্টি হওয়ায় তাপমাত্রা সহনশীল হবে।

এদিকে, গনগনে সূর্যের কড়া রোদের আগুনে ঝলসে যাচ্ছে চুয়াডাঙ্গার জনবসতি, মাঠ-ঘাট-প্রান্তর। খাল-বিল-পুকুরে পানি শুকিয়ে ফেটে চৌচির অবস্থা। দিনের অতি তীব্র তাপদাহের পাশাপাশি রাতে ভ্যাপসা গরমে স্বস্তি নেই কোথাও। বাতাসে আর্দ্রতা বা জলীয়বাষ্পের পরিমাণ অস্বাভাবিক বেশি রয়েছে। এর ফলে প্রচণ্ড গরমে-ঘামে জনজীবনে কষ্ট-দুর্ভোগ ও অসুস্থতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এছাড়া টানা এক মাস ধরে অব্যাহত থাকা অবিরাম উচ্চ তাপপ্রবাহ, খরার দহন, অনাবৃষ্টিতে ঘরে ঘরে জ্বর-সর্দি-কাশি, ডায়রিয়া, চর্মরোগ, শ্বাসকষ্টসহ নানাবিধ রোগব্যাধিতে অসুস্থ হয়ে পড়েছে মানুষ। টানা তাপদাহে পুড়ছে আম-লিচু-জাম, পেপে, জামরুলসহ মৌসুমী ফল-ফলাদির বাগান, শাক-সবজি খেত, গবাদি পশু-পাখি, প্রাণ-প্রকৃতি, জীববৈচিত্র্য। পোলট্রি খাতে বিপর্যয় চলছে। খামারেই মারা যাচ্ছে প্রতিদিন অসংখ্য ব্রয়লার মুরগি ও বাচ্চা। ডিম উৎপাদন কমে গেছে।

চুয়াডাঙ্গা শহরের মুরগি খামারি আফজালুল হক বলেন, টানা তাপদাহে প্রতিদিনই অসংখ্যা মুরগি মারা যাচ্ছে। খামারের প্রায় সব মুরগিই অসুস্থ হয়ে ঝিমাচ্ছে। মুরগিগুলো বাঁচিয়ে রাখতে রাত-দিন খামারে শ্রম দিচ্ছি। তারপরও মারা যাচ্ছে। আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।

একটি বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজ করছিলেন কিছু শ্রমিক। এদের মধ্যে আব্দুল মজিদ নামের এক রাজমিস্ত্রি বলেন, মাথার ওপর সূর্য দাউদাউ করে জ্বলছে, রোদের তাপে একেবারে পুড়ে যাচ্ছি। তারপরও কিছু করার নেই, কাজ না করলে খাবো কী? মাঝে মাঝে স্বল্প বিরতি দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।

;