প্রতিবন্ধীদের মূল ধারায় আনার জন্য সরকারের প্রচেষ্টা আছে: দীপু মনি
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি বলেছেন, সকল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মূল ধারায় আনার জন্য একটা বড় প্রচেষ্টা রয়েছে। সেই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে নীতিমালা তৈরি করা ও আইন তৈরি করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিকালে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় প্রথম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী শিল্প উৎসব ঢাকা-২৪ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, যারা প্রতিবন্ধীতায় আক্রান্ত তারা শারীরিক মানসিক নানা ধরনের শিকার হলেও বুদ্ধি ও মননশীলতায় স্বাভাবিক মানু্ষদের মত যে তাই নয়, বরং সৃজনশীলতায় অনেক ক্ষেত্রে বেশিও। তিনি বলেন, আমরা সবসময় কথা বলি বৈষম্য হীনতার সেই স্বপ্নের কথা, সেই সমাজ তৈর করার কথা বলি। আমরা যখন জাতির পিতার কথা বলি তখনো বলি তার বৈষম্যহীনতার জন্য সংগ্রাম করেছিলেন সে কথা।
আমরা অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের নীতি অনুসরণ করছি উল্লেখ করে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, আইসিটি, অর্থনীতি থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ে আমরা অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের নীতি অনুসরণ করছি। আমাদের অনেক কিছু আছে আবার অনেক কিছু নেই সেটাও সত্যি। তবে যেটা সবচেয়ে বেশি যেটা দরকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা সেটা আছে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে। সেটা অনেক জায়গায় থাকে না। আমার সর্বস্তরে সচেতনতা তৈরি করাটা এখন প্রয়োজন। আমাদের সরকারি ভবন, কর্মস্থল, পাবলিক স্পেস সব পর্যায়ে আমরা যেন অভিগমনতা নিশ্চিত করতে পারি এটা করা আমাদের জন্য জরুরি।
দীপু মনি বলেন, আমরা চাই বিভিন্নভাবে প্রতিবন্ধকতার শিকার যে শিশুরা রয়েছে তারা যেন সাধারণ সবার সাথে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে সে ব্যবস্থা তৈরি করা। আর যাদের পক্ষে একেবারেই সম্ভব নয় তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করার চেষ্টা করবো। সবার মতই তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য ক্রীড়া চর্চা, সাংস্কৃতিক চর্চা ব্যবস্থা করা। এটা সবার মতই তাদের জন্যও অপরিহার্য।
মানিকগঞ্জে সেলফি তুলতে গিয়ে আগুনে পুড়ে নারীর মৃত্যু
মানিকগঞ্জে বাসন্তী দেবীর কপালে সিদুর দেওয়ার সময় সেলফি তুলতে গিয়ে শাড়িতে আগুন লেগে দগ্ধ হয় মলি রানী (৪৬) নামের এক নারী। এক সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা যান তিনি।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান মলি রানী। মানিকগঞ্জ জেলা শহরের গঙ্গাধর পট্টি এলাকার অশোক্নসাহার স্ত্রী মলি রানী।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, বাসন্তী পূজার দশমীর দিন গত ১৮ এপ্রিল শহরের কালীবাড়ী মন্দিরে বাসন্তী দেবীর কপালে সিদুর দেয়ার সময় দেবীর সাথে সেলফি তুলছিলেন মলি। এ সময় পাশে থাকা প্রদীপের আগুন শাড়িতে লেগে দেহের ৩০ ভাগেরও বেশি পুড়ে যায়।
পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করা হয়। প্রায় ১ সপ্তাহ চিকিৎসা শেষে শুক্রবার সকাল ১০টায় চিকিৎসাধীন মারা যান তিনি।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অনির্বাণ পাল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বাসন্তি পূজার সময় অগ্নিদগ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি ছিলো মলি। এরপর সেখানেই চিকিৎসাদীন তার মৃত্যু হয়।
মানিকগঞ্জে ছাদ থেকে পড়ে মাদরাসা ছাত্রীর মৃত্যু
মানিকগঞ্জে ছাদে খেলার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাটিতে পড়ে মাহিয়া আক্তার (১৭) নামের এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকালে সদর উপজেলার বাসস্ট্যান্ডের আয়েশা সিদ্দিকা মহিলা মাদ্রাসায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত মাহিয়া আক্তার মানিকগঞ্জের সিংগাইরের বড় কালিয়াকৈর এলাকার আল মামুনের মেয়ে। সে আয়েশা সিদ্দিকা মহিলা মাদরাসার হেফজ বিভাগের ছাত্রী ছিল।
মাদরাসার শিক্ষিকা শারমিন আক্তার জানান, সকালে ক্লাসের ফাঁকে মাদরাসার ছাদে খেলাধুলা করার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাদরাসার ভবনের চার তলা থেকে নিচে পড়ে যায় মাহিয়া। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার অবস্থার অবনতি হলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজে রেফার্ড করা হয়। পরে ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিল হোসেন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এঘটনায় কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
থাইল্যান্ড সফরকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক বললেন শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, খাদ্য নিরাপত্তা, পর্যটন, জনস্বাস্থ্য, জ্বালানি ও আইসিটি খাতে সহযোগিতা জোরদারের সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে অনুভব করি- বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, খাদ্য নিরাপত্তা, পর্যটন, জনস্বাস্থ্য, জ্বালানি, আইসিটি, জনগণ থেকে জনগণে যোগাযোগ ও সংযোগের ক্ষেত্রে এবং বিমসটেকের অধীনে আমাদের সহযোগিতা জোরদার করার সুযোগ রয়েছে।
শুক্রবার (২৬ এপিল) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মানে গভর্নমেন্ট হাউজে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে দুই নেতা সেখানে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগে ১৫ মিনিটের জন্য একান্ত বৈঠক করেন।
বৈঠক শেষে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ৫টি দ্বিপক্ষীয় নথি- ১টি চুক্তি, ৩টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও ১টি লেটার অব ইনটেন্ট (এলওআই), সই করা হয়।
মধ্যাহ্নভোজে শেখ হাসিনা বলেন, নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বন্ধুত্ব আমাদের ঐতিহাসিক, ভাষাগত ও অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীরে প্রোথিত। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, টেকসই উন্নয়ন, জনগণ থেকে জনগণে যোগাযোগ ও সংযোগসহ সহযোগিতার বহুমুখী ক্ষেত্রে আমাদের দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী থাভিসিন ও তিনি পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য সব ধরনের প্রচেষ্টা করতে এবং দু'দেশের সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার মধ্যে আরও আলাপ-আলোচনাকে উৎসাহিত করতে সম্মত হয়েছি। একইভাবে, দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগের প্রসার ও সুবিধার্থে আমাদের সবরকম প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, শুক্রবার ঢাকা ও ব্যাংকক যে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই করেছে তা আমাদের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য একটি দৃঢ় কাঠামো প্রদান করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, এই সফরটি 'প্রতিবেশী' নীতির বৃহত্তর ফোকাসের অংশ, যা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গতি আরও নবায়নের জন্য দুই দেশকে চমৎকার সুযোগ করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি যে এই সফর আমাদের দুই দেশের সম্পর্ককে আরও গভীর করতে সাহায্য করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন- এই সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পূর্ণ সম্ভাবনায় অত্যন্ত প্রয়োজনীয় গতি সঞ্চার করবে।
তিনি বলেন, এই সরকারি সফর আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। যা আমাদের দুই দেশের মধ্যে ফলপ্রসূ অংশীদারিত্বের এক নতুন যুগের সূচনা করেছে। আগামীর দিনগুলোয় আমাদের জনগণ ও দেশের পারস্পরিক সুবিধার জন্য আমাদের সম্পর্কের নতুন গতি বজায় রাখতে হবে।
মধ্যাহ্নভোজে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা ও শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা এবং বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক।
সূত্র- ইউএনবি