জলবায়ু পরিবর্তন: হাতে সময় মোটে ৫ বছর!



বার্তা২৪ স্পেশাল রিপোর্ট
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে গলছে বরফ

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে গলছে বরফ

  • Font increase
  • Font Decrease

কথা নয়, কাজে বিশ্বাসী, এই আপ্তবাক্যটি আর যেখানেই খাটুক না কেন, জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুটির সঙ্গে আর খাটবে না। গোটা বিশ্ব জানে, গত অন্তত তিনটি দশক এ নিয়ে কথাই বেশি হয়েছে। কাজ হয়েছে খুবই সামান্য।

আর তার পরিপ্রেক্ষিতে ব্রহ্মাণ্ড এখন যে পরিস্থিতিতে পৌঁছে গেছে, বিশেষত কার্বন নিঃসরণের যে পরিসংখ্যান আজ দেখানো হচ্ছে, তাতে বলা হচ্ছে, বায়ুমণ্ডলে এতটা কার্বনের উপস্থিতি ১২ মিলিয়ন বছর আগেও ছিল না। যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোয় গেল মাসের মাঝামাঝিতে অনুষ্ঠিত এক জলবায়ু সম্মেলনে কথাটি স্পষ্ট করে উচ্চারণ করলেন এক হার্ভার্ড বিজ্ঞানী। তিনি সাফ সাফ বলে দিলেন, এই গতিতে চললে ব্রহ্মাণ্ডকে ৩৩ মিলিয়ন বছর আগের সেই ইয়োসিন যুগে (প্রস্তর যুগের দ্বিতীয় ভাগ যা ৬৬ মিলিয়ন থেকে ২৩ মিলিয়ন বছর আগের সময়টিকেই নির্দেশ করে) নিয়ে যাবে। আর সে অবস্থা থেকে পরিত্রাণে হাতে সময় রয়েছে মোটে পাঁচ বছর।

কথায় কথায় একটি কথাতো খুব বলা হয়, বেশি দেরি হয়ে যাওয়ার আগেই যা করার তা করতে হবে। কিন্তু হার্ভার্ড বিজ্ঞানীর কথায় মনে হচ্ছে, দেরি বুঝি হয়েই গেল। ফোর্বস ম্যাগাজিন হার্ভার্ড অধ্যাপক জেমস এন্ডারসনের কথাগুলোকে খুব গুরুত্ব দিয়ে ছেপেছে। তাতে এন্ডারসনকে উদ্ধৃত করা হয়েছে এভাবে- ‘প্রকৃত অবস্থা কী তা নিয়ে আমাদের কাছে এখন পাক্কা তথ্য, তত্ত্ব আর উপাত্ত রয়েছে। আমরা মিলিয়ন মিলিয়ন বছর আগের সেই প্রস্তর যুগের আবহাওয়া মণ্ডলেই ফেরত যাচ্ছি, যেখানে দুই মেরুর কোথাও কোনো বরফের অস্তিত্ব থাকবে না। আর বিষুবরেখা ও মেরুরেখার আবহাওয়ায় থাকবে না কোনো ভিন্নতা।’

ক্লোরো-ফ্লোরো-কার্বনে ওজন স্তর ছিদ্র হয়ে অকেজো হয়ে পড়ছে- এমন তত্ত্ব এনে এবং তা প্রমাণ করে অনেক আগেই বিশ্বজুড়ে নাম কুঁড়িয়েছেন এই বায়ুমণ্ডলীয় রসায়নবিদ। ফোর্বস ম্যাগাজিন লিখেছে, গত ১৩ জুন শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই আলোচনায় জেমস এন্ডারসন আরও বলেন, ‘ঠিক আজ যতটুকু, তার চেয়ে ১০ সেন্টিগ্রেড উষ্ণতায় বইবে সমুদ্রের পানি। সমুদ্র তলদেশের পানির তাপমাত্রায়ও থাকবে না এমন কিছু ভিন্নতা। আর বাতাসে জলীয়বাষ্প যে হারে বেড়ে যাবে, তাতে ঝড়-ঝঞ্ঝা হয়ে উঠবে এক অনিবার্য পরিণতি। পানির তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে জলীয়বাষ্পে যে গ্যাসের সৃষ্টি হয়, তা ঝড়-ঝঞ্ঝার পুরো প্রক্রিয়াটিকে প্রভাবিত করবে।’

এন্ডারসন বলেন, ‘স্রেফ কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আমরা এই পরিণতি থেকে রেহাই পেয়ে যাব- এমন এক ভ্রান্ত ধারণা মানুষের মধ্যে কাজ করছে। তবে পরিত্রাণ যে একেবারেই অসম্ভব, তা নয়। সে জন্য আমাদের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী শিল্পবিপ্লবের মতোই কিছু একটা করতে হবে। কার্বন দূষণ বন্ধতো করতেই হবে, একই সঙ্গে বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন সরিয়ে ফেলতে হবে। তাতে যদি ওজন স্তর কিছুটা রক্ষা পায়, আর সূর্যের নীল রশ্মিগুলো সেই স্তরের ওপর পড়ে আবার মহাকাশমণ্ডলেই ফিরে যেতে পারে। আর সে জন্য আমাদের হাতে রয়েছে মোটে পাঁচটি বছর।’

আরও যেসব ভয়াবহ তথ্য অধ্যাপক জেমস এন্ডারসন দিলেন, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, ২০২২ সাল নাগাদ আর্কটিকে আর একটিও স্থায়ী বরফখণ্ডের অস্তিত্ব থাকবে না। গেল ৩৫ বছরে এই অঞ্চলের ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ স্থায়ী বরফখণ্ড গলে যেতে শুরু করেছে।

আমরা যদি ভেবে থাকি, ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ স্থায়ী বরফ গলতে শুরু করার পরেও আমাদের পরিণতি ভালো কিছু হবে, তা হলে কী আমরা সঠিক ভাবছি? প্রশ্ন ছিল জেমন এন্ডারসনের। আর উত্তরটিও তিনি নিজেই দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, না।

এই বড় ‘না’ কথাটি আবার প্রধান দু’টি কারণে। প্রথমটির নাম বিজ্ঞানীরা দিয়েছেন পুনঃপ্রত্যবর্তন। আসলে এই বিশ্ব উষ্ণায়নে আমাদের ধরিত্রী নিজেই এক ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখাতে প্রস্তুত। যার অন্যতম হচ্ছে-স্থায়ী বরফাচ্ছন্ন অংশের এবং সমুদ্র তলদেশে যে ভয়াবহ মিথাইন গ্যাস জমাট বেঁধে আছে সেগুলো যে কোনও সময় ছিঁটকে বেরিয়ে আসবে। এতে উষ্ণায়ন তরান্বিতই হবে। অন্যটি হচ্ছে, গ্রিনল্যান্ডের বিপুলকায় বরফখণ্ডটি। যা বেশ আগে থেকেই ভেঙ্গে পড়ি পড়ি করছে। কিন্তু এখনো ভাঙ্গেনি। একবার ভেঙ্গে পড়লে সমুদ্রে পানির স্তর যে বেড়ে যাবে সে কথা বলাই বাহুল্য। অধ্যাপক এন্ডারসন জানাচ্ছিলেন, শুধু বাড়বে বললে কম বলা হবে। কারণ তখন অন্তত সাত মিটার উচ্চতায় বইবে সমুদ্রের পানি। ফুটের হিসাবে যা ২৩ ফুট।

এই যে সমুদ্রের পানির স্তর বেড়ে যাবে বলে পই পই করে বলা হচ্ছে, মানুষ আসলে তার ভয়াবহতা কতটুকু অনুধাবন করতে পারছে? সে প্রশ্নটিই করলেন হার্ভার্ড অধ্যাপক। তিনি অবশ্য কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী। আর সে কারণে একটু সপ্রমাণ উপাত্ত হাজির করলেন তার আলোচনায়। একটি ম্যাপ ডিসপ্লে করে দেখিয়ে দিলেন, এই যে ১০ বিলিয়ন ডলারে নির্মিত হার্ভার্ড ক্যাম্পাসে বসে আমরা কথা বলছি, সেটি সমুদ্র পৃষ্ঠের মোটে তিন মিটার উপরে। ফলে সাত মিটার উচ্চতায় সমুদ্র স্তর এর কি পরিণতি ঘটাবে তা বলাই বাহুল্য। ওদিকে ম্যানহাটান ততক্ষণে পানির দখলে চলে যাবে, আর ফ্লোরিডার দক্ষিণাংশ পুরোপুরি অস্তিত্ব হারাবে।

এখানে জানিয়ে রাখি, আমাদের ঢাকার উচ্চতা সমুদ্র থেকে চার মিটার উপরে। দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল মাত্র ১.২ মিটার উপরে।

‘এসব তথ্য উপাত্ত নিয়ে আপনি যখন কাজ করবেন, তখন রাতে ঘুমাতে পারবেন না। তখন আপনার মগজে এসে হানা দেবে নৈতিক দায়িত্ববোধ,’ বলেন অধ্যাপক জেমস এন্ডারসন। ১৯৮৭ সালে এই কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে এনে ওজন স্তরের ধ্বংস ঠেকানোর যে মন্ট্রিয়ল প্রোটোকল চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, তা সম্ভব করে তুলতে এই হার্ভার্ড অধ্যাপকের বড় ভূমিকা ছিল। সে জন্য ২০১৬ সালে শিকাগোয় তিনি বেনটন মেডাল ফর ডিস্টিংগুইশড পাবলিক সার্ভিস পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।

তবে পুরস্কারই শেষ কথা নয়। এন্ডারসন বলেন, ‘এখন পরিবেশ বিপর্যয় ঠেকাতে বিষয়টি আমাদের পদার্থবিজ্ঞানীদের সেভাবে দায়িত্ব নিতে হবে, ঠিক যেভাবে আমাদের জীববিজ্ঞানীরা ক্যান্সার প্রতিরোধে লড়ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পদার্থবিদ্যার শিক্ষায় জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সরকারের নীতি কৌশল, জননীতি ও অন্যান্য বিষয়গুলো সম্পৃক্ত করতে হবে।’

শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের সে আয়োজনে সেদিন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেও একচোট নিলেন এই অধ্যাপক। বললেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার বন্ধে রাজি নয়। রাজনৈতিক নেতারা তো যখন তখন এর পক্ষে সাফাই গেয়ে চলেছেন। জীবাশ্ম জ্বালানির বেনিয়ারা তো নানাভাবেই তা চালু রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আর সাংবাদিকরাও তাদের বক্তব্য ভুল প্রমাণে যথার্থ তথ্য-উপাত্ত হাজির করতে পারছে না।’

‘আমি বুঝি না এই লোকগুলো তাদের শিশুদের পাশে নিয়ে রাতের খাবার খেতে বসেন কীভাবে, উদ্বেগ ঝরে এন্ডারসনের কণ্ঠে। ‘লোকগুলো তো অশিক্ষিত কিংবা নির্বোধ নয়,’ বলেন তিনি।

   

চট্টগ্রামে ১২ মেট্রিক টন বিটুমিনসহ গ্রেফতার ২



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম নগরীর সদরঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১২ মেট্রিক টন চোরাই বিটুমিনসহ চক্রের ২ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) র‌্যব-৭ পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

র‌্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, চট্টগ্রাম মহানগরীর সদরঘাট থানাধীন দক্ষিণ নালাপাড়া এলাকায় একটি গোডাউনে অবৈধ উপায়ে ক্রয়-বিক্রয় করার উদ্দেশ্যে চোরাই বিটুমিন মজুদ করছে-এমন তথ্যের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার র‌্যাব সাতের একটি বিশেষ আভিযানিক দল অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় র‌্যাব আসামি সুমন চন্দ্র দে (৩৮) ও মোঃ আব্দুল্লাহ আজিজকে (৪০) আটক করতে সক্ষম হয়।

জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তারা স্বীকার করে যে, পরস্পর যোগসাজসে দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন মাধ্যমে অবৈধ উপায়ে বিটুমিন সংরক্ষণ করে এবং পরবর্তীতে অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে পাইকারি ও খুচরা বিক্রয় করে আসছে তারা। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি বিটুমিন পরিবহনে ব্যবহৃত ১টি কাভার্ড ভ্যান জব্দ করা হয়।

জব্দকৃত চোরাই বিটুমিনের আনুমানিক মূল্য ১২ লাখ টাকা বলে জানায় র‌্যাব।

;

বর্জ্যবাহী গাড়ির ধাক্কায় নিহতের ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: তাপস



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪. কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মুগদায় করপোরেশনের বর্জ্যবাহী গাড়ির ধাক্কায় নিহত স্কুল শিক্ষার্থী মাহিন আহমেদের পরিবারের পাশে থাকার এবং এ দুর্ঘটনায় দোষী সকলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস মাহিন আহমেদের পরিবারকে সমবেদনা ও সহমর্মিতা জানাতে নিহতের বাড়িতে যান। পরে তিনি গণমাধ্যমের সাথে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন।

ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, গতকাল রাত আনুমানিক নয়টার সময় মুগদার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র হতে বর্জ্য স্থানান্তরকালে করপোরেশনের বর্জ্যবাহী গাড়িতে দুর্ঘটনা কবলিত হয়ে ছোট্ট বালক মাহিন নিহত হয়। এ দুর্ঘটনায় আমরা অত্যন্ত শোকাহত। আমরা জানাজায় অংশগ্রহণ করেছি। ছোট্ট শিশু হারানোর ঘটনায় বাবা-মাকে কোন ভাষাতেই সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা আমাদের নেই। আমরা নিহতের পরিবারের পাশে থাকব।

এ দুর্ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা হবে জানিয়ে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, এ দুর্ঘটনায় ইতোমধ্যে মামলা নেওয়া হয়েছে। আমরা কঠোর থেকে কঠোরতর শাস্তি চাইছি। এই দুর্ঘটনায় যেন সম্পূর্ণ সুষ্ঠু বিচার হয় সেটা আমরা নিশ্চিত করতে চাই। একটি বিষয় উল্লেখ্য যে, আমাদের নির্ধারিত গাড়িচালক গাড়ি না চালিয়ে অন্যকে দিয়ে ভাড়া খাটিয়ে গাড়িটি চালানো হচ্ছিল। আমরা এ ধরনের অনিয়ম কোনভাবে বরদাশত করবো না। এ ঘটনায় কঠোরতর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ রকম কার্যক্রমে যারা জড়িত তাদের সকলের বিরুদ্ধে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কঠোর ব্যবস্থা নেবে। এ ধরনের ঘটনায় আগেও আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছি। জড়িতদের চাকুরিচ্যুত করেছি, ছাটাই করেছি। আবার অনেক নতুন নিয়মিত গাড়িচালক নিয়োগ দিয়েছি। ফলে বিগত ২ বছর করপোরেশনের গাড়ি দ্বারা কোনো রকম দুর্ঘটনা ঘটেনি। গতকালের এই অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা আমাদেরকে অত্যন্ত শোকাহত করে তুলেছে। এবারও আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিবো। যাতে করে এ ধরনের দুর্ঘটনার আর কোনো পুনরাবৃত্তি না ঘটে।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, পরিবহন মহাব্যবস্থাপক মো. হায়দর আলী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাসিম আহমেদ, অঞ্চল-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম, স্থানীয় ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. সিরাজুল ইসলাম ভাট্টি, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর মাকসুদা শমশের প্রমুখসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

;

৯ মে পর্যন্ত চুয়েট বন্ধ ঘোষণা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
৯ মে পর্যন্ত চুয়েট বন্ধ ঘোষণা

৯ মে পর্যন্ত চুয়েট বন্ধ ঘোষণা

  • Font increase
  • Font Decrease

সড়ক দুর্ঘটনায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে আগামী ৯ মে পর্যন্ত সকল পরীক্ষা ও একাডেকিম কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে তিনটায় শুরু হওয়া জরুরি সিন্ডিকেট সভায় শেষে সন্ধ্যা ৭টার দিকে এক ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জরুরি সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস ও পরীক্ষা আগামী ৯ মে পর্যন্ত বন্ধ থাকবে এবং ১২ মে থেকে যথারীতি চালু হবে।

এতে আরও বলা হয়, গতকাল (বৃহস্পতিবার) শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের বিষয়টি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট না করার শর্তে হলে অবস্থান করতে পারবে শিক্ষার্থীরা।

বিষয়টি বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন চুয়েটের সহকারী রেজিস্ট্রার (সমন্বয়) মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, আগামী ৯ মে পর্যন্ত সকল পরীক্ষা ও একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকব। ১২ মে থেকে যথারীতি ক্লাস ও পরীক্ষা শুরু হবে। দুইজন মেধাবী ছাত্রের অকাল মৃত্যুতে উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

যদিও বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রোর (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরের সই করা চিঠিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক/স্নাতকোত্তর পর্যায়ের সকল একাডেমিক কার্যক্রম (পরীক্ষাসহ) বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। পরে এদিন রাতে প্রশাসনের সাথে বৈঠক শেষে ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করে।

এর আগে, গত সোমবার মোটরসাইকেলে ঘুরতে বের হয়ে বাসের ধাক্কায় প্রাণ হারান চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের দুই শিক্ষার্থী। ওইদিন আনুমানিক বেলা সাড়ে তিনটায় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানার জিয়ানগরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থলে মারা যান চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা এবং গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তৌফিক হোসাইন। এ ছাড়া গুরুতর আহত হন পুরকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জাকারিয়া হিমু। এই ঘটনায় শিক্ষার্থীরা ক্ষোভে মাঠে নামেন। আন্দোলন চলার সময় শিক্ষার্থীরা বাসেও আগুন দেন।

;

চট্টগ্রামের আলোচিত সন্ত্রাসী সাইফুল বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড বগা গ্রেফতার



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার আলোচিত সন্ত্রাসী সাইফুল বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ডখ্যাত দেলোয়ার হোসেন ওরফে বগাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দিবাগত রাতে উপজেলার পশ্চিম আমিলাইশ এলাকা থেকে এই সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করা হয়।

বগার বিরুদ্ধে সাতকানিয়ার কাঞ্চনা গ্রামে ডাকাতি করতে গিয়ে শিশু হত্যা, অপহরণ, ইয়াবা, ছিনতাই, ডাকাতি ও সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনের সময় সাতকানিয়ার সাবেক এমপির স্ত্রী-শ্যালকের ওপর হামলাসহ কমপক্ষে ১০টি মামলা রয়েছে।

বগাকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন সরকার। তিনি বলেন, ইয়াবা মামলায় বগাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সাতকানিয়া ও বাকলিয়া থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

৩ মাসে বগার নেতৃত্বে ২২ হামলা:

৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই প্রতিপক্ষের ওপর হামলা চালিয়েছে সাইফুল বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড বগা। গত তিনমাসে সাতকানিয়ার চরতি-আমিলাইশ এলাকায় অন্তত ২২টি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে এই সাইফুল বাহিনী। এরমধ্যে কমপক্ষে ১০টি ঘটনায় থানায় অভিযোগ জমা পড়েছে এই বাহিনীর বিরুদ্ধে। বাকিরা ভয়ে মুখ খোলেননি।

নতুন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর উপজেলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বদলে যেতেই নির্বাচনের দিন সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় সাইফুল বাহিনীর অত্যাচার। দক্ষিণ চরতিতে নৌকার সমর্থকদের বাড়ি-ঘর ও দোকানে হামলা ও লুটপাট চালায় সাইফুল বাহিনী। এ সময় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য ইলিয়াছ শাহীনের ফার্মাসি ও কৃষক লীগ নেতা ফারুকের বাড়ি ও ডেকোরেশনের দোকানে লুটপাট ও ভাঙচুর চালানো হয়।

নির্বাচনের পরের দিন সোমবার খতিরহাট এলাকায় নৌকা সমর্থক জিল্লুর রহমানকেও মারধর করে সাইফুল বাহিনী। নির্বাচনের আগের দিন শনিবার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার নুরুল আমিন কে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেয় সন্ত্রাসী সাইফুলের বড় ভাই জসিম উদ্দিন।

এছাড়া নির্বাচনের পর ৫ ফেব্রুয়ারি চরতি ইউনিয়ন পরিষদ কার্য়ালয়ে ঢুকে বর্তমান চেয়ারম্যান রুহুল্লাহ চৌধুরীকে মারধর করে সাইফুল বাহিনী। পরে দক্ষিণ চরতি এলাকার ডিশ ব্যবসায়ী নুর মোহাম্মদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে পরিবারসহ বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে সাইফুল বাহিনী। নির্বাচনের পর থেকে এখনো ঘর ছাড়া নুর মোহাম্মদের পরিবার। চরতি ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি মাইনুদ্দিনকে অপহরণ করে মারধর দক্ষিণ চরতির আরাফাত সিকদারকে মারধর করে এই সাইফুল বাহিনী।

নির্বাচনের আগে ২১ ডিসেম্বর দক্ষিণ চরতি কাটাখালী ব্রিজের পাশে নৌকার পথ সভায় অস্ত্র ও লাঠি-সোটা নিয়ে হামলা চালায় সাইফুল ও তার বাহিনী। এই সময় নৌকা সমর্থক চরতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রুহুল্লাহ চৌধুরী, সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান, মিছদাকুল বেসারত চৌধুরী, মোহাম্মদ রফিক, রবিউল ইসলাম ও মোহাম্মদ ফয়সালসহ কমপক্ষে ৮-১০ জন আহত হন।

এর দুইদিন আগে ১৯ ডিসেম্বরও নৌকার পথসভা শেষে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য ইলিয়াছ শাহীনকে মারধর করে সাইফুল বাহিনী। ওইদিনও ইলিয়াছ শাহীনের ফার্মাসি ও কৃষক লীগ নেতা ফারুককে বাড়ি-দোকানে হামলার ঘটনা ঘটে। নির্বাচনের আগে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি নুর হোসেন কেও মারধর করে সাইফুল। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে এমন কোনো দিন নেই যে- সন্ত্রাসী সাইফুল ও তার বাহিনী দ্বারা এলাকার মানুষের উপর হামলার ঘটনা ঘটছে।

এলাকাবাসী জানিয়েছেন, সন্ত্রাসী সাইফুল কোনো পদ পদবিতে না থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের পরিচয়ে এলাকায় সন্ত্রাসী কার্য়াক্রম চালিয়ে আসছেন। এতদিন পর্যন্ত সাবেক এমপি আবু রেজা মোহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীর অনুসারী হিসেবে এলাকায় তার পরিচিতি ছিল। গত বছর প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচনকে ঘিরে ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হলে তখন থেকে এম এ মোতালেবের দিকে ভিড়েন সাইফুল মেম্বার। মোতালেব দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিলে তারপর থেকে আরো হিংস্র হয়ে উঠেন তিনি।

এর আগে ২০১৮ সালে সন্ত্রাসী সাইফুল বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ভিটে-মাটি ছেড়ে যায় দক্ষিণ চরতির ১০ পরিবার। নারী ও শিশুসহ এসব পরিবারের প্রায় অর্ধ শতাধিক লোকজন দীর্ঘ এক বছর নিজেদের ভিটে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ হওয়ার পর উদ্ভাস্তুর মতো দিনযাপন করে। বাড়ি-ভিটে ফিরে পেতে ২০১৯ সালের ২৭ এপ্রিল চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনও করেন উদ্ভাস্তু পরিবারসহ এলাকার বিক্ষুব্ধ লোকজন।

সাইফুল বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ডার হিসেবে এসব মারধর ও হামলার ঘটনায় নেতৃত্ব দিচ্ছে ইয়াবা ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন (বগা)। ইতোমধ্যে দুই-তিন বার জেলেও গিয়েছে এই ইয়াবা ব্যবসায়ী। সাতকানিয়ার পশ্চিম অঞ্চল (চরতি, আমিলাইশ, কাঞ্চনা, এওচিয়া ও নলুয়া) সহ চন্দনাইশের বৈলতলী, আনোয়ারার হাইলধর ও বাঁশখালীর পুকুরিয়া অঞ্চলের অস্ত্র ও ইয়াবা ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করে সাইফুল ও তার বাহিনী। এছাড়া রয়েছে খাল ও সাঙ্গু নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন ও পাহাড় কেটে মাটি ব্যবসা।

সাইফুল বাহিনীর অন্য সদস্যদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন সরকার।

 

;