ভবন খাচ্ছে খোলা জায়গা, বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে ঢাকা



শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ঘনবসতিপূর্ণ ঢাকা, ছবি: সংগৃহীত

ঘনবসতিপূর্ণ ঢাকা, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জনসংখ্যার ঘনত্বের দিক দিয়ে রাজধানী ঢাকা বিশ্বের অনেক শহরের চেয়ে এগিয়ে। ছোট এই শহরে অন্তত কোটি লোকের বসবাস।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী প্রত্যেক মানুষের জন্য নয় বর্গমিটার খোলা জায়গা বা মাঠ থাকা দরকার। তার ধারের কাছেও নেই রাজধানী। বর্তমানে প্রত্যেক লোকের জন্য ১ বর্গ মিটারের কম জায়গা রয়েছে, যা মানুষের স্বাস্থ্যহানি অন্যতম কারণ।

রাজধানীবাসীর জন্য যেটুকু খোলা জায়গা বা মাঠ আছে, তাতেও সাধারণ মানুষের প্রবেশাধিকারে নানা বাঁধা। ফলে ছোট্ট শিশু থেকে সব বয়সী মানুষ গৃহবন্দী হয়ে একঘেয়েমি পীড়াদায়ক জীবন যাপন করছেন।

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নিয়ন্ত্রণাধীন ২৩৫টি খেলার মাঠ রয়েছে। এই মাঠগুলো নানাভাবে দখলে রয়েছে। এরমধ্যে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত মাঠ আছে মাত্র ৪২টি। জনসাধারণের মাঠ হওয়া সত্ত্বেও নানা কারণে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সংগঠনের দ্বারা ওই মাঠের প্রবেশ নিয়ন্ত্রিত থাকে। এরকম মাঠের সংখ্যা ১৬টি। রাজধানীতে প্রাতিষ্ঠানিক মাঠ রয়েছে ১৪১টি। এসব মাঠ ওই প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রিত থাকে। যেখানে চাইলেও কেউ প্রবেশ করতে পারে না। এছাড়া আবাসিক কলোনির মাঠ রয়েছে ২৪টি এবং ১২টি ঈদগাহ মাঠ রয়েছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লানার্স রাজধানীর খেলার মাঠ ও খোলা জায়গা নিয়ে একটি জরিপ চালিয়েছে। এতে এই চিত্র উঠে এসেছে। জরিপে দুই সিটি করপোরেশনকে দখলকৃত খেলার মাঠ ও খোলা জায়গা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করতে বলা হয়েছে।

Dhaka

কিছুদিন আগে এক অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, রাজধানীর যেসব প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে স্কুল কলেজ তাদের মাঠ জনসাধারণের প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত করেছে। ওইসব প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সঙ্গে কথা বলে কীভাবে সেটাকে সবার জন্য উন্মুক্ত করা যায়, সেই চেষ্টা করব।

মহানগরীর এই ভারসম্যহীনতা নিয়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লানার্সের সাধারণ সম্পাদক নগর পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মুহাম্মদ খান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘একটা মান সম্মত শহরের জন্য যে পরিমাণ খোলা জায়গা ও মাঠ দরকার তার ধারের কাছেও নেই রাজধানী ঢাকা। তবে যেগুলো আছে সেগুলোও যদি যথাযথ ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া যায়, তাহলেও সমস্যার কিছুটা হলেও সমাধান বের হবে। বিশেষ বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক মাঠগুলো একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা যেতে পারে। মেয়রগণ চাইলে ওই সব প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সঙ্গে কথা বলে সমাধান করতে পারেন।’

‘মাঠ ও জনসংখ্যার তুলনামূলক চিত্র দেখলেই বোঝা যাবে কতটুক অসুস্থ নগরীতে বাস করছি আমরা। রাজধানীর পশ্চিম রামপুরা, মধুবাগ, চৌধুরী পাড়া এলাকায় পাঁচ লাখ লোকের বসবাস, মানদণ্ড অনুযায়ী এই এলাকার জন্য ৭৯টি মাঠ থাকার কথা, দুঃখের বিষয় একটিও নেই।’

মোহাম্মদপুর ওয়ার্ড-৩০ এ লোক বাস করেন ২ লাখ ৪২ হাজার ৯৩৩ জন। আর ওই এলাকার ৩৩নং ওয়ার্ডে বাস করেন ১ লাখ ৪৯ হাজার ৩৭৯ জন। মোহাম্মদপুর এলাকার আয়তন ১৬৭৭ একর। মানদণ্ড অনুযায়ী ৬৩টি মাঠ থাকার কথা, নেই একটিও।

Dhaka

নতুন শহর হিসেবে পরিচিত উত্তরা ওয়ার্ড-১ মোট বাস করেন ২ লাখ ৪০ হাজার মানুষ। এই এলাকার আয়তন ১৪৩০ একর। মাঠ থাকার কথা ৩৮টি, আছে মাত্র ছয়টি। অর্থাৎ এখানেও মাঠের ঘাটতি রয়েছে। ধানমন্ডির জনসংখ্যা ঘনত্ব ও আয়তন অনুযায়ী ১০টি মাঠ কম রয়েছে। এরকম প্রতিটি এলাকাতেই মাঠের স্বল্পতা রয়েছে।

দিন দিন এভাবে মাঠ দখল ও খোলা জায়গায় ভবন গড়ে ‍ওঠায় রাজধানী ক্রমেই বসবাসের অযোগ্য শহরগুলোর তালিকায় উপরের দিকে উঠে যাচ্ছে। উঠছে উঁচু ভবন বিলিন হচ্ছে খেলার মাঠ-খোলা জায়গা। ভারসাম্য হারাচ্ছে রাজধানী ঢাকা।

তবে আশার কথা হচ্ছে, দুই সিটি করপোরেশনই খেলার মাঠ ও পার্ক উন্নয়নে বড় বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে। সেই সব প্রকল্পের আওতায় চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে বেশ কিছু মাঠ পার্কের উদ্বোধন করা হবে।

এরমধ্যে রয়েছে পান্থকুঞ্জ পার্ক, গুলিস্তানের ওসামানী উদ্যান, আজিমপুরের আব্দুল আলীম খেলার মাঠ। এরকম বেশ কিছু মাঠ পার্কের উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে রাজধানীবাসীর বসবাসে কিছুটা স্বস্তি এনে দিতে পারে দুই সিটি করপোরেশন।

   

চাঁদাবাজির ‘আঁতুড়ঘর’: ১০০ গজের সড়কে রিকশায় চাঁদাবাজি ২১ লাখের বেশি



অভিজিত রায় (কৌশিক) স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর ফার্মগেট থেকে কিছুটা এগিয়ে গেলেই পান্থপথ সিগন্যাল। ফার্মগেট থেকে পান্থপথ সিগন্যাল পর্যন্ত সড়কটির দূরত্ব মাত্র ৭০০ মিটার। তবে ৭০০ মিটার সড়কের মধ্যে পান্থপথ সিগন্যাল থেকে কাজীপাড়ার মোড় পর্যন্ত আনুমানিক মাত্র ১০০ গজ সড়ক থেকেই বছরে ২১ লাখের বেশি অবৈধ চাঁদা আদায় হয় বলে জানা গেছে। জনবহুল সড়কটি এখন পরিণত হয়েছে অবৈধ চাঁদাবাজির ‘আঁতুড়ঘর’ হিসেবে।

রাজধানীর ফার্মগেটে অবস্থিত আনন্দ সিনেমা হলের সামনের সড়ক ধরে কিছুদূর এগিয়ে গেলেই চোখে পড়বে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এশিয়া প্যাসিফিক। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি পার হয়ে সামনে এগোলেই পানি ভবনের পুরাতন গেট সংলগ্ন দেখা মিলবে রাস্তা দখল করে শত শত রিকশা পার্কিং করে রাখা হয়েছে। ফলে নিত্যদিন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন এই সড়কে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ।

সড়কটি দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ রিকশা গ্যারেজের কারণে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগের শিকার হলেও লাভবান হচ্ছেন হাতেগোনা কিছু মানুষ। যার মধ্যে রয়েছেন সরকারদলীয় স্থানীয় কিছু নেতাকর্মীর নামও।

সড়ক দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ রিকশা গ্যারেজের কারণে সাধারণ মানুষেড় দুর্ভোগ।

সরেজমিনে সড়কটি ঘুরে দেখা গেছে, সন্ধ্যার ৭টার পর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে চলাচলকারী রিকশা এসে জমা হয় এই স্থানটিতে। দিনের বেলা ৫০ থেকে ৫০টি রিকশা সব সময় এখানে পার্কিং করে রাখা হলেও রাত যত গভীর হয় ততই লম্বা হতে থাকে রিকশার লাইন। মূলত রিকশাচালকেরা সারাদিনের রোজগার শেষে রিকশাগুলো সারা রাত পার্কিং করে রাখেন এই সড়কটিতে। প্রধান সড়কে রিকশা পার্কিংয়ের ফলে সন্ধ্যার পর থেকে অধিকাংশ সময়ে যানজটও দেখা যায় এই সড়কে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, সড়ক দখল করে গড়ে তোলা এই গ্যারেজে প্রতিদিন আনুমানিক ৩০০ এর বেশি রিকশা পার্কিং করে রাখা হয়। এই পার্কিং বাবদ রিকশা থেকে প্রতিদিন ২০ টাকা করে চাঁদা নেওয়া হয়।

সর্বনিম্ন ৩০০ রিকশার ধরলে হিসাব অনুযায়ী প্রতিদিন এই স্বল্প দূরত্বের জায়গাটিতে গড়ে তোলা রিকশা গ্যারেজ থেকেই চাঁদা আদায় হয় ৬ হাজার টাকা। এই হিসেবে মাসে চাঁদার পরিমাণ দাঁড়ায় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। আর বছর শেষে এই হিসেব দাঁড়ায় ২১ লাখ ৬০ হাজার টাকায়।

এই রিকশা গ্যারেজ থেকেই চাঁদা আদায় হয় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। 

সড়কে চলাচলকারী সাধারণ মানুষের অভিযোগ, লাইনম্যানের মাধ্যমে নিয়মিত চাঁদা নিয়ে এই সড়কের উপরে রিকশা রাখা হয়। আর এই চাঁদার ভাগ পান ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। মূলত তারাই লাইনম্যানের মাধ্যমে টাকা তোলেন।

অভিযোগের সূত্র ধরে অনুসন্ধান চালায় বার্তা২৪.কম। অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে লাইনম্যানের কথিত দায়িত্বে থাকা সোহেল নামের একজনের নাম। তিনিই নিয়মিত চাঁদা তুলেন ও প্রধান সড়ক দখল করে গড়ে তুলেছেন রিকশার গ্যারেজ। এছাড়াও এই রিকশা গ্যারেজ সংলগ্নই ফুটপাতের পাশেই তিনি গড়ে তুলেছেন একটি ভাতের হোটেলও।

এদিকে, গ্যারেজ রাখা বেশ কয়েকজন রিকশাচালকের সঙ্গে কথা বললে তারাও স্বীকার করেন রিকশা-প্রতি ২০ টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে রিকশার মালিকেরা তাদের রিকশার সংখ্যা হিসেব করে সোহেলকে চাঁদা দেন বলেও জানান তারা।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে লাইনম্যান সোহেল বার্তা২৪.কমকে বলেন, এগুলো চাঁদাবাজি না। যারা গরিব মানুষ তারা এখানে রিকশা রেখে যায়। রাতে রেখে যায়, আবার সকালে নিয়ে যায়। আপনারা অন্য সবকিছু দেখেন না কেন? এই রাস্তা নিয়ে আপনাদের এত প্যারা কেন ভাই, অন্য কাজ করেন না? আমি আপনার সঙ্গে পরে কথা বলব।

সড়কের উপরে রাখা রিকশার চাঁদার ভাগ পান ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরাও। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের ডিসি উপ-পুলিশ কমিশনার মোস্তাক আহম্মেদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, যখন দায়িত্বে থাকি তখন মূল রাস্তা (প্রধান সড়ক) আমরা খালি রাখি। আর ফুটপাতগুলো সাধারণত থানা পুলিশ দেখেন।

তিনি বলেন, আমার ট্রাফিক পুলিশ যখন দিনের বেলা ডিউটিতে থাকে, তখন আমরা সব রাস্তাগুলো ফাঁকা রাখার চেষ্টা করি। মেইন সড়ক দখল করে রাখার সুযোগ নেই। আর যদি এমন বিষয় থেকে থাকে, তাহলে আমরা থানা পুলিশকেও ব্যবস্থা নিতে বলব।

তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বার্তা২৪.কমকে বলেন, বেশ কয়েকবার এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নিয়মিত উচ্ছেদও করা হয়। আমরা প্রতিনিয়তই এদের বিরুদ্ধে কাজ করি। এর মাঝেও পুলিশ এনে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা আমাদের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

মাঝেমধ্যে উচ্ছেদ করা হলেও তারা আবার কীভাবে জায়গা দখল করে আবার কার্যক্রম শুরু করে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অভিযান চালালে সবাই ভালো হয়ে যায়, কিন্তু উচ্ছেদ শেষ হলে আবার আগের অবস্থানে ফিরে যায়; কী করার বলেন। যতক্ষণ মানুষ ভালো না হবে, ততক্ষণ এসব কাজ সম্পূর্ণভাবে সম্পন্ন করা কঠিন।

তবে তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন মাঝে মধ্যে উচ্ছেদের তথ্য জানালেও আশপাশে ব্যবসায়ীদের ভাষ্য বলছে, এই এলাকায় অবস্থানরত ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করা হলেও রিকশার গ্যারেজটি উচ্ছেদ করা হয়নি।

নাম না প্রকাশের শর্তে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, এখানে ফুটপাত বা রাস্তার আশেপাশে বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে সব দোকান ভেঙে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রিকশার এই গ্যারেজে কোন দিন অভিযান চালাতে দেখিনি। আজ প্রায় ৪ থেকে ৫ বছর এখানে ব্যবসা করছি, কিন্তু এতদিনের মধ্যে একবারের জন্যও এই গ্যারেজের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে দেখিনি।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বার্তা২৪.কমকে বলেন, আপনি হোয়াটসঅ্যাপে ঠিকানাসহ ডিটেইলস তথ্য দেন, আমরা বিষয়টা দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবো।

;

সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ চলছে: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন, সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ চলছে ৷ গ্যাস পাওয়া গেলে তা সাত থেকে আট বছর পর উত্তোলন করা যাবে।

মঙ্গলবার (৭ মে) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য (এমপি) আহম্মেদ হোসেনের এক সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী এ সব কথা জানান।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০১৬-২০১৭ সালে আমরা গভীর সমুদ্রে খনিজ সম্পদ বা গ্যাস আহরণের মাল্টিপ্লান সার্ভে করার জন্য প্রস্তুতি শুরু করি। তার মধ্যে বিশেষ করে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য আমরা মাল্টিপ্লান সার্ভে করার জন্য প্রস্তুতি নেই। তার আগে আমরা মিয়ানমারের বর্ডারের সঙ্গে তিনটি ব্লক দুটি কোম্পানিকে দিয়েছিলাম। তারা এখানে সার্ভে করার যে পরিমাণ গ্যাস তারা পাবে বলে মনে করেছিল তা ভিজিবল হয়নি, তারা দেখতে পায় কম গ্যাস আছে সেখানে, তারা সরে যায়। ইতোমধ্যে মাল্টিপ্লান সার্ভে শেষ হয়েছে, আমরা টু ডি সার্ভের রেজাল্ট পেয়ে গেছি। ইতোমধ্যে আমরা গভীর সমুদ্রবন্দরে চলে গেছি। প্রায় ১৭টি কোম্পানি ইচ্ছে প্রকাশ করেছে এতে বৃহৎ কোম্পানি শেভরনসহ আরও বেশ কয়েকটি বড় কোম্পানি রয়েছে। তারা বিট করার জন্য টুডি সার্ভের রেজাল্ট নিয়েছে। বুধবার থেকে তাদের সঙ্গে আমাদের মিটিং আছে। বিডিং শেষ হবে সেপ্টেম্বরে।

তিনি বলেন, আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে আমরা কোম্পানিগুলোকে থ্রিডি সার্ভের জন্য বিভিন্ন ব্লকে নিয়োগ দেবো। প্রায় ২০ থেকে ৩০ মিলিয়ন ডলার ইনভেস্টমেন্ট করার পর যদি গ্যাস বা তেল থাকে ৭-৮ বছর পর তাহলে সে গ্যাস বা তেল উত্তোলন করতে পারবো।

বর্তমানে দেশে বিদ্যুতের চাহিদার চেয়েও উৎপাদন ক্ষমতা বেশি জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে বিদ্যুতের চাহিদার চেয়েও উৎপাদন ক্ষমতা বেশি। সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে তাৎক্ষণিক, স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করে নিবিড় তদারকির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। জানুয়ারি ২০০৯ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ২৬ হাজার ২৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। ফলে বিদ্যুতের স্থাপিত ক্ষমতা ক্যাপটিভসহ ৩০ হাজার ২৭৭ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে।

নসরুল হামিদ বলেন, চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতায় ঘাটতি না থাকলেও কভিড-১৯ মহামারি পরবর্তীতে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও বৈশ্বিক জ্বালানি সংকটের কারণে পরিপূর্ণ সক্ষমতায় বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে কিছু কিছু স্থানে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে। এ ছাড়া অত্যধিক গরম ও দেশের কোথাও কোথাও দাবদাহ থাকার কারণে বিদ্যুতের চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় উৎপাদন বৃদ্ধির ওপরও জোর দেওয়া হচ্ছে। আমরা আশা করছি, অচিরেই সবাইকে নিরবচ্ছিন্ন ও মানসম্মত বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দিতে সক্ষম হব।

;

রাত পোহালেই ভোট রংপুরের পীরগাছা ও কাউনিয়া উপজেলায়



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাত পোহালেই রংপুরের পীরগাছা ও কাউনিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট। এর মধ্যে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে নির্বাচনী সরঞ্জাম।

মঙ্গলবার (৭ মে) বিকেলে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার বাদে সকল সরঞ্জাম পাঠানো হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পীরগাছা উপজেলা নির্বাচনে তিনটি পদে লড়াইয়ে মাঠে রয়েছেন ১৪ প্রার্থী। এর মধ্যে ১০ জনই আওয়ামী লীগের। তিনজন জাতীয় পার্টির ও একজন বিএনপির।

চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তছলিম উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ মিলন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনোয়ারুল ইসলাম মাসুদ এবং উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান আবু নাছের শাহ মো. মাহবুবার রহমান।

ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. শারেখ খন্দকার জয় ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাফর ইকবাল, উপজেলা জাতীয় ছাত্র সমাজের সাবেক উপজেলা যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রহিম ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফরহাদ হোসেন অনু।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের শারমীন আখতার, ইসরাত জাহান, জরিনা বেগম, তানজিনা আফরোজ ও মাহমুদা খাতুন এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থী রেহেনা বেগম।

কাউনিয়ায় উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মাঠে থাকা তিনজনের মধ্যে দুজনই আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী। একজন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম মায়া। অপরজন জেলা পরিষদের সদস্য ও ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক।

এই উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ জনের মধ্যে মাহমুদুল হাসান পিন্টু কাউনিয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম-সম্পাদক, মনজুদার রহমান মিলন জেলা কৃষকলীগের সদস্য, সুশান্ত সরকার উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং শফিকুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর কবির আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা। আরেকজন গনেশ কুমার বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মাঠে থাকা চারজনের মধ্যে সেলিনা খাতুন উপজেলা মহিলা লীগের সহ-সভাপতি, রওশন আরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক মহিলা বিষয়ক সম্পাদক এবং রাবেয়া বেগমও মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী। আর আঙ্গুরা খাতুন বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, পীরগাছা উপজেলায় তিনজন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটারসহ ২ লাখ ৮১ হাজার ৬৯৮ ভোটার ১১৩টি কেন্দ্রের ৭৬০টি কক্ষে ভোট দেবেন। এর মধ্যে ১ লাখ ৩৯ হাজার ১৬৭ পুরুষ ও ১ লাখ ৪২ হাজার ৫২৮ জন মহিলা ভোটার রয়েছেন।

কাউনিয়া উপজেলা একটি পৌরসভা ও ৬টি ইউনিয়নের ৬৩টি ওয়ার্ডের ৯৩টি ভোটকেন্দ্রের ৫১৭টি স্থায়ী এবং ১৮টি অস্থায়ী ভোটকেন্দ্রে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। দুইজন তৃতীয় লিঙ্গসহ এখানে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৪০ হাজার ৫৪৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫০৯ এবং মহিলা ১ লাখ ৪ হাজার ৩২ জন।

রংপুর সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল্যাহ্ আল মোতাহসিম জানান, শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণে বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে তার জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও র‌্যাব-পুলিশের পাশাপাশি, বিজিবি, আনসার ও ডিবি পুলিশ মোতায়েন থাকবে।

;

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শ্রমিকলীগ সভাপতি গ্রেফতার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শ্রমিকলীগ সভাপতি নাসির উদ্দিন দিদারকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

মঙ্গলবার (৭ মে) রাত ১০টার দিকে মিরসরাইয়ে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। দিদারের বাড়ি মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ থানার ৩নং জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের পরাগলপুর গ্রামে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সন্ধ্যার পর দিদারের বাড়ি ঘেরাও করে পুলিশ। এ সময় তিনি পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তবে শেষ পর্যন্ত পুলিশের জালে ধরা পড়েন তিনি।

গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন।

তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি নাসির উদ্দিন দিদারকে গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম গ্রেফতার করেছে। তার বিরুদ্ধে নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট (এনআই) অ্যাক্ট আইনে একটি মামলা ছিল। ওই মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিলো।’

জানা গেছে, চলতি বছরের ৪ এপ্রিল নাছির উদ্দিন দিদারের মালিকানাধীন আরশিনগর ফিউচার পার্কে এক ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। সেখানে তিনি মোনাজাত করেন। মোনাজাতের মধ্যে এলোমেলোভাবে একের পর এক নানা কথা বলা শুরু করেন। এক পর্যায়ে আমন্ত্রিত অতিথিরা তার দোয়া-মোনাজাত শুনে হাসি ধরে রাখতে পারেননি। মুহূর্তেই ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোভ প্রকাশ করে নেটিজেনরা বিভিন্ন মন্তব্য করেন।

এর আগে, ২০২৩ সালের ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে গান-বাজনা বাজিয়ে দিবসটি পালন করে ভাইরাল হোন এই শ্রমিক লীগ নেতা। এছাড়া বিভিন্ন সময় ওয়াজ-মাহফিলে আপত্তিকর নানা বক্তব্য দিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মুখে পড়তে দেখা গেছে তাকে।

;