রংপুরে অযত্ন-অবহেলায় ধ্বংসের মুখে বিআরটিসির বাস



ফরহাদুজ্জামান ফারুক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
অযত্নে নষ্ট হচ্ছে বিআরটিসির বাসগুলো, ছবি: বার্তা২৪

অযত্নে নষ্ট হচ্ছে বিআরটিসির বাসগুলো, ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছে ডজনখানেক বিকল গাড়ি। কোনোটাতে চাকা আছে, কোনটাতে নেই। আবার কোথাও নাট বল্টু কিছুই নেই। গ্লাস ভাঙা, লক্কড়-ঝক্কড় বডি। হদিস নেই ইঞ্জিনসহ মূল্যবান অনেক যন্ত্রাংশের।

ময়লা আবর্জনার ভাগাড়ে বছরের পর বছর এমন ক্ষত-বিক্ষত অবস্থায় পড়ে আছে এসব বিআরটিসি বাস। এতে করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলায় ধ্বংস হচ্ছে কোটি কোটি টাকা মূল্যের রাষ্ট্রীয় খরচে কেনা এই বাসগুলো।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/03/1562142769780.jpg
বাসের সিটগুলো হারিয়ে গেছে, মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে গেছে লোহার অংশগুলো, ছবি: বার্তা২৪

 

সরেজমিনে রংপুর মহানগরীর তাজহাট আলমনগর মৌজার রংপুর-কুড়িগ্রাম সড়কের পাশে চৌদ্দটি বিআরটিসি বাস খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এসব বাস চালুর উদ্যোগ তো দূরের কথা, খোয়া যাওয়া যন্ত্রপাতির হিসেবই জানেন না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

সচেতন মহলসহ স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিকল বাসগুলো সচল করতে কর্তৃপক্ষের অবহেলা আর দুর্নীতির ফলে বিআরটিসি লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। একারণে বছরের পর বছর খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকা বাসগুলো সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেই।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/03/1562141351010.jpg
বাসের রং উঠে গেছে, নেই সিটগুলোও, ছবি: বার্তা২৪

 

রংপুর উন্নয়ন ফোরামের সদস্য সচিব রাকিবুল হাসান রাকিব বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘বিআরটিসি লাভজনক একটা সেক্টর। অথচ এই সেক্টরে সব সময়ই লোকসানের হিসেব কষা হয়। এই খাতে লোকসানের কোনো সম্ভাবনা নেই। তারপরও বছরের পর যাত্রীদের অনুন্নত সেবা দিয়ে যাচ্ছে বিআরটিসি।’

একই অভিযোগ পার্কের মোড় এলাকার চঞ্চল মাহমুদের। বার্তা২৪.কম তিনি বলেন, 'অনেক দিন ধরে বাসগুলো পড়ে আছে। এগুলো মেরামত করার পদক্ষেপ নেই। দেখে মনে হচ্ছে, বিআরটিসিতে এসব গাড়ির খোঁজ নেওয়ার মতো কেউ নেই।'

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/03/1562141464909.jpg
বাসের চাকা থেকে শুরু করে গ্লাস, জানালা সব চুরি হয়ে গেছে, ছবি: বার্তা২৪

 

বিকল হয়ে পড়া বাসগুলোর মেরামত না করাসহ দক্ষ জনবল ও উন্নত সেবার অভাব রংপুর বিআরটিসি বাস ডিপোর পুরনো চিত্র। এই অবস্থার পরিবর্তন না হওয়াতে দিন দিন ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে এই সেক্টর। এমনটাই বলছিলেন রংপুরের অন্যতম শ্রমিক নেতা ও সংগঠক খন্দকার গোলাম মোস্তফা বাটুল।

বার্তা২৪.কম-কে সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, 'যখন যে দায়িত্বে আসেন, সেই নিজের পকেট ভারী করেন। বিভাগীয় নগরী হিসাবে রংপুরে বিআরটিসির ভালো সার্ভিস নেই। ভালো ড্রাইভার নাই, অনেক স্টাফ চলে গেছে। এখন যারা রয়েছে তারাই ধ্বংস করছে এই সেক্টরকে।'

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/03/1562141972649.jpg
রাস্তার মাঝে এভাবেই পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে বিআরটিসির বাস, ছবি: বার্তা২৪

 

রংপুর ডিপোতে সর্বমোট ৬২টি বাস রয়েছে। এর মধ্যে কিছু বাস বেসরকারি খাতে চলাচল করছে। বাকি বাসগুলো পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধাসহ বিভিন্ন রুটে চলাচল করে। বর্তমানে অস্থায়ী ডিপোসহ মূল ডিপোর খোলা মাঠে বিকল হয়ে পড়ে আছে ১৫টি গাড়ি।

বিআরটিসি'র বাস সার্ভিসের দুর্দশা আর বিকল হয়ে পড়ে থাকা বাসগুলোর ব্যাপারে রংপুর ডিপোর ব্যবস্থাপক (অপারেশন) গোলাম ফারুক বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'সম্প্রতি দুইটি বিকল বাস মেরামত করা হয়েছে। ধাপে ধাপে সব বাসের কাজ করা হবে। তাছাড়া বিভিন্ন রুটে চলাচলরত বাসগুলোর ছোটখাটো যে সমস্যা রয়েছে, সেগুলোর কাজ করা হচ্ছে। এটা সরকারি প্রতিষ্ঠান। একদিনে সবকিছু করা সম্ভব না। বাজেট পাঠাতে হয়, তা পাস হয়ে বরাদ্দ আসলে তারপর মেরামত। এজন্য বিকল বাসগুলো মেরামত করতে কালক্ষেপণ হচ্ছে।'

   

প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলায় আজ ভোট



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলায় ভোট গ্রহণ আজ বুধবার অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে চলবে টানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত। উপজেলা নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।

ইসি সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনের প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলার মধ্যে ২২টিতে ইভিএম এবং বাকিগুলোতে ব্যালটে ভোট হবে। এই ধাপে মোট ১ হাজার ৬৩৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫৭০, ভাইস চেয়ারম্যান ৬২৫ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৪০ জন প্রার্থী রয়েছেন। প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান পদে ৮, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ জন করে মোট ২৮ জন প্রার্থী ইতোমধ্যে বিনা-প্রতিদ্বন্দ্বিতা বিজয়ী হয়েছেন।

ইসি জানায়, বিনা-প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পাঁচ উপজেলার তিন পদে সবাই নির্বাচিত হয়েছে। তাই ওই পাঁচ উপজেলায় নির্বাচনের প্রয়োজন হবে না। উপজেলাগুলো হলো- নোয়াখালী জেলার হাতিয়া, মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলা ,বাগেরহাট জেলার সদর উপজেলা, ফেনী জেলার পরশুরাম ও মাদারীপুর জেলার শিবচর। যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান থাকায় পার্বত্য জেলা বান্দরবনের তিনটি উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত রেখেছে ইসি।

ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তা

গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ও সাধারণ কেন্দ্র বিবেচনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়ে ইসি। সেই হিসেবে সাধারণ কেন্দ্রে ১৭ জন ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮ বা ১৯ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। এছাড়া দুর্গম এলাকায় সাধারণ কেন্দ্রে ১৯ জন ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ২০ বা ২১ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। উপজেলার আয়তন, ভোটার সংখ্যা ও ভোটকেন্দ্রের গুরুত্ব বিবেচনায় প্রতি উপজেলায় ২ থেকে ৪ প্লাটুন বিজিবি দায়িত্ব পালন করবেন।

উপকূলীয় এলাকার দ্বীপাঞ্চলে কোস্টগার্ড মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। ভোটারদের নিরাপত্তায় পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি'র ভ্রাম্যমাণ ও স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। ভোট কেন্দ্রে আনসার ব্যাটালিয়ন মোবাইল/স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ভোট গ্রহণের আগের দুই দিন, ভোট গ্রহণের দিন ও ভোট গ্রহণের পরের দুইদিন মোট পাঁচদিন নিয়োজিত থাকবেন।

ইসি জানায়, ভোটারের নিরাপত্তায় মাঠে রয়েছে ১৪ হাজার ৬১০ জন বিজিবি সদস্য, ৪১ হাজার ৫৩০ জন পুলিশ এবং পুলিশের ১১ হাজার ৮৮৩ জন ভ্রাম্যমাণ টিম রয়েছে। এছাড়াও স্ট্রাইকিং ফোর্স ও অন্যান্য দায়িত্বে রয়েছে পুলিশের ২৯ হাজার ২২০ জন সদস্য। অন্যদিকে র‌্যাবের দুই হাজার ৬৪৮ জন ও আনসারের এক লাখ ৫৯ হাজার ৮৭৪ জন সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন।

এদিকে নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালন নিশ্চিত করতে ৪০০ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত রয়েছেন। আর বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছেন ১৩৯ জন।

অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্যবস্থা

নির্বাচনের দিন ভোট হওয়া উপজেলাগুলোতে যান চলাচলে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সেই অনুযায়ী, আজ রাত ১২টা থেকে আগামীকাল বুধবার অর্থাৎ ভোট গ্রহণের দিন রাত ১২টা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় ট্যাক্সিক্যাব, মাইক্রোবাস, পিকআপ, ট্রাক, লঞ্চ, ইঞ্জিনচালিত বোটসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এছাড়া ইতোমধ্যে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ রয়েছে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।

তফসিল ঘোষণার পর থেকে ভোট গ্রহণের তিন দিন পূর্ব পর্যন্ত আচরণ বিধি প্রতিপালন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও প্রতিরোধে প্রতি উপজেলায় একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট এবং ভোট গ্রহণের তিনদিন পূর্ব থেকে ভোট গ্রহণের পরের দিন পর্যন্ত প্রতি তিন ইউনিয়নের জন্য একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া ভোট গ্রহণের দুইদিন পূর্ব থেকে ভোট গ্রহণের দুইদিন পর পর্যন্ত প্রতি উপজেলায় একজন করে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন।

মোট ভোট কেন্দ্র

প্রথম ধাপে ১১ হাজার ৫৫৬ কেন্দ্রের ৮১ হাজার ৮০৪ ভোট কক্ষে ৩ কোটি ১৪ লাখ ৬৮ হাজার ১০২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এরমধ্যে পুরুষ ১ কোটি ৬০ লাখ ২ হাজার ২২৪, নারী ১ কোটি ৫৪ লাখ ৬৫ হাজার ৬৯০ এবং ১৮৮ জন হিজড়া ভোটার রয়েছেন।

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আওয়াল জানান, দলীয় প্রতীকে উপজেলা নির্বাচনের সুযোগ থাকলেও দলীয় মনোনয়ন না থাকায় স্বতন্ত্র হয়ে লড়ছেন প্রার্থীরা। এতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে। স্থানীয় সরকারের ভোট হওয়ায় মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব বিস্তার প্রতিরোধে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি। প্রভাব বিস্তারের কারণে কিছু কিছু অ্যাকশন নিয়েছি।

সিইসি জানান, মাঠ পর্যায়ের পরিস্থিতি প্রতিদিনই সব সময় খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারদের সঙ্গে কথা হচ্ছে। এটা নিশ্চিত করতে হবে নির্বাচনটা যেন অবাধ, নিরপেক্ষ হয়। বিশেষ করে নির্বাচনের দিন কেউ যেনো ভোটকেন্দ্রে অনুপ্রবেশ করতে না পারে এবং সেখানে যেন অনিয়ম না হয়-সে বার্তাটি রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের দেওয়া হয়েছে।

দেশের ৪৯৫টি উপজেলার মধ্যে চার ধাপে ৪৭৬টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে কিছু উপজেলায় তফসিল ঘোষণার মামলা জটিলতা ও বৈধ প্রার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। বাকি ১৯টি উপজেলা পরিষদে নির্বাচনের সময় হয়নি, পরবর্তীতে সে সব পরিষদে ভোট নেওয়া হবে জানিয়েছে সাংবিধানিক সংস্থাটি।

এদিকে ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলায় ৮ মে ভোট অনুষ্ঠিত হবে, দ্বিতীয় ধাপে ১৬০ উপজেলায় ২১ মে, তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলায় ২৯ মে ও চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ৫ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার। প্রথম ধাপে ২২টি, দ্বিতীয় ধাপে ২৪টি, তৃতীয় ধাপে ২১ ও চতুর্থ ধাপে দুটি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হবে।

;

৬ষ্ঠ উপজেলা নির্বাচন: রাজবাড়ীর দুটি উপজেলায় ভোটগ্রহণ আজ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজবাড়ী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে আজ বুধবার (৮ মে) রাজবাড়ী জেলার পাংশা ও কালুখালী উপজেলা পরিষদের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোট গ্রহণ সুষ্ঠু করতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন, জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

বুধবার (৮ মে) সকাল ৮টায় ব্যালট পেপারের মাধ্যমে শুরু হবে ভোটগ্রহণ। একটানা বিরতহীনভাবে চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

পাংশা: পাংশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ফরিদ হাসান ওদুদ (আনারস) ও মাছপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার সাইফুল ইসলাম বুড়ো (মোটর সাইকেল) প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।

এছাড়াও,ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান সহ মোট ৫ জন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।এদের মধ্যে খান মোঃ ওবায়দুল হক(চশমা), এ কে এম সাইফুল মোর্শেদ (তালা),রফিকুর ইসলাম (টিউবওয়েল), মোঃ হোসেন আলী সরদার (টিয়া পাখি) ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান জালাল উদ্দীন বিশ্বাস (উড়োজাহাজ) প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়ছেন।

অপরদিকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন অংশগ্রহণ করছেন। এদের মধ্যে দিলরুবা পারভীন ইতি (ফুটবল),আসমা খাতুন (হাসঁ) ও সাবরিনা পারভিন (কলস) প্রতিকে নির্বাচন করছেন।

পাংশা উপজেলা ১ টি পৌরসভা ও ১০ টি ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে গঠিত। মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৭৫ টি। মোট ভোট কক্ষের সংখ্যা ৫৪৫ টি।এর মধ্যে স্থায়ী ৫২২ ও অস্থায়ী ২৩টি। মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ১৬ হাজার ১০০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ১০ হাজার ১৮৭ ও মহিলা ১ লাখ ৫ হাজার ৯১১ জন।

কালুখালী: কালুখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে অলিউজ্জামান চৌধুরী টিটু (আনারস), এবিএম রোকনুজ্জামান (কাপ-পিরিচ),মোঃ এনায়েত হোসেন (মোটর সাইকেল) ও মোঃ মাসুদুর রহমান (দোয়াত-কলম) প্রতীক নিয়ে লড়ছেন।

এছাড়াও, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।এদের মধ্যে মোঃ রিপন শেখ (টিউবওয়েল), রেজাউল করিম (টিয়া পাখি),মাহমুদ হাসান সুমন (তালা) ও মুহাম্মদ ফজলুল হক (মাইক) প্রতীক নিয়ে লড়ছেন।

অপরদিকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এদের মধ্যে মোছাঃ শিল্পী আক্তার (কলস),মোছাঃ ডলি পারভীন (ফুটবল) ও মোছাঃ শারমিন আক্তার (হাঁস) প্রতীক নিয়ে।

কালুখালী উপজেলা ৭ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৫০ টি। মোট ভোট কক্ষের সংখ্যা ৩২১টি। এর মধ্যে স্থায়ী ৩০৬ ও অস্থায়ী ১৫ টি। মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৩৭ হাজার ২০০। এর মধ্যে পুরুষ ৭০ হাজার ২৮৪ ও মহিলা ৬৬ হাজার ৯১৫ জন।

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের রিটার্নিং অফিসার ও রাজবাড়ী জেলা নির্বাচন অফিসার মো: অলিউল ইসলাম জানিয়েছেন, প্রথম ধাপের নির্বাচনে পাংশা ও কালুখালী দুই উপজেলার মোট ১২৫টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। পাংশা উপজেলায় ৫৭টি ও কালুখালী উপজেলায় ৩১টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ বা গুরুত্বপূর্ণ। গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যেকটি কেন্দ্রে ৪ জন পুলিশ ও ১৪ জন আনসার সদস্য থাকবেন। এছাড়াও পাংশা উপজেলায় ১১ জন ম্যাজিস্ট্রেট ১১টি পুলিশের টহল টিম ও ১ প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন থাকবে। এছাড়াও কালুখালী উপজেলায় ৭ জন ম্যাজিস্ট্রেট ৭টি পুলিশের টহল টিম সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে।

এছাড়াও পাংশা ও কালুখালী উপজেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ২ প্লাটুন বিজিবি সদস্য ও র‍্যাবের ৪টি টহল টিম মোতায়েন থাকবে।

রাজবাড়ী জেলা পুলিশ সুপার জি.এম আবুল কালাম আজাদ পিপিএম (সেবা) বলেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে জেলা পুলিশ সবসময় বদ্ধপরিকর।নির্বাচনের দিন জেলা পুলিশের পাশাপাশি প্রতিটি কেন্দ্রে আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে।পাংশা ও কালুখালী উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ৬৫০ জন পুলিশ ও ১৮০০ জন আনসার সদস্য কাজ করবে।পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে ও গোয়েন্দা পুলিশও মাঠে কাজ করবে।

;

ভোটের আগের রাতে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভাই ও ভাগ্নেকে অপহরণ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুড়িগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কুড়িগ্রামের চর রাজিবপুর উপজেলার এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর চাচাতো ভাই ও ভাগ্নেকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। তারা হলেন, ঘোড়া মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আরিফুল কবির তালুকদার রানা এর চাচাতো ভাই রিফাত তালুকদার (১৮) ও ভাগ্নে নাজমুল হাসান(২৫)। অপহরণের প্রায় দুই ঘন্টা পর মুক্তিপণ আদায় করে ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা।

বুধবার (৮ মে) রাতে এই ঘটনা ঘটে। অপহরণের শিকার দুজন হলেন মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামের আবুল কালাম তালুকদার এর ছেলে রিফাত তালুকদার এবং একই গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিক এর ছেলে নাজমুল হাসান।

চর রাজিবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আশিকুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। অপহরণের খবর পেয়ে ঐ দুজনকে খুঁজতে বের হলে রাস্তা থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।

অপহরণের শিকার নাজমুল হাসান বলেন, আমরা ৩ জন রাত সাড়ে ১২ টার দিকে রাজিবপুরে এসেছিলাম পোস্টার ও লিফলেট নিতে। একজনকে পোস্টার সহ ভ্যানে পাঠিয়ে দেয়ার পর আমি ও রিফাত হাতে কিছু লিফলেট নিয়ে থানার সামনের রোড দিয়ে বাইকে বাড়ি ফিরছিলাম। কিছুদুর এগিয়ে যাওয়ার পর কাচারি পাড়া এলাকায় আমাদের বাইক থামায় ৪ জন যুবক। তারপর বাইকের চাবি কেড়ে নিয়ে আমাদের বাইক ছিনিয়ে নেয়৷ তারপর রাস্তার পাশের ক্ষেতে নামিয়ে বলে, 'আমরা আলম চেয়ারম্যান (আনারস মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী) এর লোক। বেশি কথা বললে চেয়ারম্যানের কাছে নিয়ে যাবো। সেখানে গিয়ে তোদের পেটাবো। রাতে পোস্টার নিয়ে কই যাস। পরে তাদের একজন আমার বাইক নিয়ে যায় এবং অপর ৩ জন আমাদের টেনে নিয়ে একটি অপরিচিত যায়গায় যায়। তাদের (অপহরণকারী) একজন বলে যে, 'কিছু টাকা পয়সা ম্যানেজ কর, তোদের ছেড়ে দেয়া হবে।' টাকা না পেয়ে তারা আমাদের বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছিলো। তারপর রিফাতের ফোন দিয়ে বাড়িতে যোগাযোগ করে ২০ হাজার টাকা বিকাশে নেয়ার পর তারা নিজেদের একটি নম্বরে ১৯ হাজার ৯ শত টাকা সেন্ড মানি করে নেয়। তারপর রাত ৩ টার দিকে আমাদের অপরিচিত একটি রাস্তায় ছেড়ে দেয়া হয়। এরপর একটি পুলিশের ভ্যান দেখে মোবাইলের আলো জ্বলালে পুলিশ আমাদের বাইকে তুলে থানায় নিয়ে আসে।

তবে অপহরণকারীদের চিনতে পারেনি অপহরণের শিকার ঐ দুই যুবক।

পুলিশ জানায়, অপহরণের শিকার ঐ দুই যুবকের ব্যবহৃত বাইকটি রাজিবপুর সদর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের কাচারি পাড়ায় ঘটনাস্থল থেকে কিছু দূরে রাস্তার পাশে থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, অপহরণের শিকার রিফাতের বিকাশ নম্বর থেকে যে নম্বরে রাত ২টা ৫৭ মিনিটে টাকা পাঠানো হয়েছে সেই নম্বরটি কাচারি পাড়া এলাকার রঙ মিস্ত্রী এমদাদুল হক নামে এক ব্যক্তির। তিনি চেয়ারম্যান প্রার্থী শফিউল আলমের সমর্থক।

ঘোড়া মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আরিফুল কবির তালুকদার রানা বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। ভোটের আগের রাতে এমন কিছু হবে সেটা আমি ধারণা করতে পারিনি। প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের আশা করছি। আর যেন এই ধরনের ঘটনা না ঘটে সেব্যাপারে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

উল্লেখ্য, বুধবার (৮ মে) ৬ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে রৌমারী, রাজিবপুর ও চিলমারী উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

চর রাজিবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আশিকুর রহমান বলেন, রাত দেড়টার দিকে ঘোড়া মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আরিফুল কবির তালুকদার রানা আমাকে অপহরণের ঘটনাটি জানান। সাথে সাথে আমি নিজেও বের হই টহল দলের সাথে। এমন ঘটনা যেন আর না ঘটনা এজন্য টহল দলের সংখ্যা বৃদ্ধি করি। উদ্ধার হওয়ার পর আমি তাদের কাছে ঘটনা শুনেছি। অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ভুক্তভোগীদের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে।

;

চাঁদাবাজির ‘আঁতুড়ঘর’: ১০০ গজের সড়কে রিকশায় চাঁদাবাজি ২১ লাখের বেশি



অভিজিত রায় (কৌশিক) স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর ফার্মগেট থেকে কিছুটা এগিয়ে গেলেই পান্থপথ সিগন্যাল। ফার্মগেট থেকে পান্থপথ সিগন্যাল পর্যন্ত সড়কটির দূরত্ব মাত্র ৭০০ মিটার। তবে ৭০০ মিটার সড়কের মধ্যে পান্থপথ সিগন্যাল থেকে কাজীপাড়ার মোড় পর্যন্ত আনুমানিক মাত্র ১০০ গজ সড়ক থেকেই বছরে ২১ লাখের বেশি অবৈধ চাঁদা আদায় হয় বলে জানা গেছে। জনবহুল সড়কটি এখন পরিণত হয়েছে অবৈধ চাঁদাবাজির ‘আঁতুড়ঘর’ হিসেবে।

রাজধানীর ফার্মগেটে অবস্থিত আনন্দ সিনেমা হলের সামনের সড়ক ধরে কিছুদূর এগিয়ে গেলেই চোখে পড়বে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এশিয়া প্যাসিফিক। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি পার হয়ে সামনে এগোলেই পানি ভবনের পুরাতন গেট সংলগ্ন দেখা মিলবে রাস্তা দখল করে শত শত রিকশা পার্কিং করে রাখা হয়েছে। ফলে নিত্যদিন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন এই সড়কে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ।

সড়কটি দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ রিকশা গ্যারেজের কারণে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগের শিকার হলেও লাভবান হচ্ছেন হাতেগোনা কিছু মানুষ। যার মধ্যে রয়েছেন সরকারদলীয় স্থানীয় কিছু নেতাকর্মীর নামও।

সড়ক দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ রিকশা গ্যারেজের কারণে সাধারণ মানুষেড় দুর্ভোগ।

সরেজমিনে সড়কটি ঘুরে দেখা গেছে, সন্ধ্যার ৭টার পর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে চলাচলকারী রিকশা এসে জমা হয় এই স্থানটিতে। দিনের বেলা ৫০ থেকে ৫০টি রিকশা সব সময় এখানে পার্কিং করে রাখা হলেও রাত যত গভীর হয় ততই লম্বা হতে থাকে রিকশার লাইন। মূলত রিকশাচালকেরা সারাদিনের রোজগার শেষে রিকশাগুলো সারা রাত পার্কিং করে রাখেন এই সড়কটিতে। প্রধান সড়কে রিকশা পার্কিংয়ের ফলে সন্ধ্যার পর থেকে অধিকাংশ সময়ে যানজটও দেখা যায় এই সড়কে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, সড়ক দখল করে গড়ে তোলা এই গ্যারেজে প্রতিদিন আনুমানিক ৩০০ এর বেশি রিকশা পার্কিং করে রাখা হয়। এই পার্কিং বাবদ রিকশা থেকে প্রতিদিন ২০ টাকা করে চাঁদা নেওয়া হয়।

সর্বনিম্ন ৩০০ রিকশার ধরলে হিসাব অনুযায়ী প্রতিদিন এই স্বল্প দূরত্বের জায়গাটিতে গড়ে তোলা রিকশা গ্যারেজ থেকেই চাঁদা আদায় হয় ৬ হাজার টাকা। এই হিসেবে মাসে চাঁদার পরিমাণ দাঁড়ায় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। আর বছর শেষে এই হিসেব দাঁড়ায় ২১ লাখ ৬০ হাজার টাকায়।

এই রিকশা গ্যারেজ থেকেই চাঁদা আদায় হয় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। 

সড়কে চলাচলকারী সাধারণ মানুষের অভিযোগ, লাইনম্যানের মাধ্যমে নিয়মিত চাঁদা নিয়ে এই সড়কের উপরে রিকশা রাখা হয়। আর এই চাঁদার ভাগ পান ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। মূলত তারাই লাইনম্যানের মাধ্যমে টাকা তোলেন।

অভিযোগের সূত্র ধরে অনুসন্ধান চালায় বার্তা২৪.কম। অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে লাইনম্যানের কথিত দায়িত্বে থাকা সোহেল নামের একজনের নাম। তিনিই নিয়মিত চাঁদা তুলেন ও প্রধান সড়ক দখল করে গড়ে তুলেছেন রিকশার গ্যারেজ। এছাড়াও এই রিকশা গ্যারেজ সংলগ্নই ফুটপাতের পাশেই তিনি গড়ে তুলেছেন একটি ভাতের হোটেলও।

এদিকে, গ্যারেজ রাখা বেশ কয়েকজন রিকশাচালকের সঙ্গে কথা বললে তারাও স্বীকার করেন রিকশা-প্রতি ২০ টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে রিকশার মালিকেরা তাদের রিকশার সংখ্যা হিসেব করে সোহেলকে চাঁদা দেন বলেও জানান তারা।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে লাইনম্যান সোহেল বার্তা২৪.কমকে বলেন, এগুলো চাঁদাবাজি না। যারা গরিব মানুষ তারা এখানে রিকশা রেখে যায়। রাতে রেখে যায়, আবার সকালে নিয়ে যায়। আপনারা অন্য সবকিছু দেখেন না কেন? এই রাস্তা নিয়ে আপনাদের এত প্যারা কেন ভাই, অন্য কাজ করেন না? আমি আপনার সঙ্গে পরে কথা বলব।

সড়কের উপরে রাখা রিকশার চাঁদার ভাগ পান ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরাও। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের ডিসি উপ-পুলিশ কমিশনার মোস্তাক আহম্মেদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, যখন দায়িত্বে থাকি তখন মূল রাস্তা (প্রধান সড়ক) আমরা খালি রাখি। আর ফুটপাতগুলো সাধারণত থানা পুলিশ দেখেন।

তিনি বলেন, আমার ট্রাফিক পুলিশ যখন দিনের বেলা ডিউটিতে থাকে, তখন আমরা সব রাস্তাগুলো ফাঁকা রাখার চেষ্টা করি। মেইন সড়ক দখল করে রাখার সুযোগ নেই। আর যদি এমন বিষয় থেকে থাকে, তাহলে আমরা থানা পুলিশকেও ব্যবস্থা নিতে বলব।

তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বার্তা২৪.কমকে বলেন, বেশ কয়েকবার এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নিয়মিত উচ্ছেদও করা হয়। আমরা প্রতিনিয়তই এদের বিরুদ্ধে কাজ করি। এর মাঝেও পুলিশ এনে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা আমাদের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

মাঝেমধ্যে উচ্ছেদ করা হলেও তারা আবার কীভাবে জায়গা দখল করে আবার কার্যক্রম শুরু করে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অভিযান চালালে সবাই ভালো হয়ে যায়, কিন্তু উচ্ছেদ শেষ হলে আবার আগের অবস্থানে ফিরে যায়; কী করার বলেন। যতক্ষণ মানুষ ভালো না হবে, ততক্ষণ এসব কাজ সম্পূর্ণভাবে সম্পন্ন করা কঠিন।

তবে তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন মাঝে মধ্যে উচ্ছেদের তথ্য জানালেও আশপাশে ব্যবসায়ীদের ভাষ্য বলছে, এই এলাকায় অবস্থানরত ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করা হলেও রিকশার গ্যারেজটি উচ্ছেদ করা হয়নি।

নাম না প্রকাশের শর্তে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, এখানে ফুটপাত বা রাস্তার আশেপাশে বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে সব দোকান ভেঙে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রিকশার এই গ্যারেজে কোন দিন অভিযান চালাতে দেখিনি। আজ প্রায় ৪ থেকে ৫ বছর এখানে ব্যবসা করছি, কিন্তু এতদিনের মধ্যে একবারের জন্যও এই গ্যারেজের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে দেখিনি।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বার্তা২৪.কমকে বলেন, আপনি হোয়াটসঅ্যাপে ঠিকানাসহ ডিটেইলস তথ্য দেন, আমরা বিষয়টা দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবো।

;