গণধর্ষণের পর বাবাকে ফোন করে খবর দেয় ধর্ষকরাই!
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক কিশোরী। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বুধবার (৩ জুলাই) রাত ৯টায় উপজেলার চাতুরী চৌমুহনী এলাকায় গণধর্ষণের এ ঘটনা ঘটে। ওই কিশোরী স্থানীয় জুতা তৈরির কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।
পুলিশ জানায়, কর্মস্থলের উদ্দেশ্য প্রতিদিন সাড়ে ৬টায় ঘর থেকে বের হতেন। সন্ধ্যায় ৭টায় অফিস শেষে সিএনজি যোগে রাত ৯টায় বাসায় ফিরতেন। বুধবার (৩ জুলাই) সন্ধ্যায় সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশায় ওঠেন তিনি। এসময় হঠাৎ তিন যুবক ওই অটোরিকশায় উঠে তার মুখ ও গলা চেপে ধরে। অটোরিকশার চালক নীরব থাকে। ওই কিশোরী অনেক চেষ্টা করেও আওয়াজ করতে ব্যর্থ হন। পরে তাকে তুলে নিয়ে চায়না রোডের নির্জন স্থানে গণধর্ষণ করে।
এক পর্যায়ে ওই কিশোরী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তাকে চাতুরী চৌমুহনী এলাকায় ফেলে যায়। এসময় ওই কিশোরীর মুঠোফোন থেকে তার বাবাকে জানানো হয় গণধর্ষণের কথা। খবর পেয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ঘটনাস্থলে গিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় মেয়েকে দেখতে পান বাবা। আশঙ্কাজনক অবস্থা হওয়ায় তাকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। কিন্তু পরে সেখান থেকে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ব্যথায় বেডে ছটফট করছেন ওই কিশোরী। তার পরিবারের সদস্যরা সেখানে কান্নারত। তথ্য নিচ্ছে পুলিশ।
ভুক্তভোগীর বড় বোন বার্তা২৪.কমকে জানান, রাতে অজ্ঞাত কয়েকজন আমার বোনের নম্বর থেকে ফোন করে জানায়- সে রাস্তায় পড়ে আছে। ঘটনাস্থল গিয়ে দেখি তার শরীরে রক্ত। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্রেক্স থেকে এখানে নিয়ে আসি।
‘দুই ভাই আর তিন বোনের মধ্যে সে সবার ছোট। ২০১৮ সালে রাম কৃষ্ণ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান শাখা থেকে গোল্ডেন ফাইভ পান। পড়ালেখার প্রতি প্রবল আগ্রহ থাকার পরও পারিবারের হাল ধরতে নেমে পড়েন জীবনযুদ্ধে। আর্থিক অনটনের কারণে কারখানায় কাজ করতে হতো তাকে।’
আনোয়ারা থানার (তদন্ত) পরিদর্শক মাহবুব মিলকী বার্তা২৪.কমকে জানান, গণধর্ষণের ঘটনায় মামলা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকেও একটি মামলা হয়েছে। পুলিশ তদন্তে নেমেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে- সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকরা এর সাথে জড়িত। পাশাপাশি লোকেশন অনুযায়ী তথ্য নেওয়া হচ্ছে।