দক্ষিণ চট্টগ্রামে আরেকটি শহর গড়ে উঠবে
ক্রমবর্ধমান ব্যবসা-বাণিজ্য ও জনগণের জীবন মান উন্নয়নে 'ভাণ্ডালজুরী' মেগা প্রকল্প কর্ণফুলী নদীর ওপারে দক্ষিণ চট্টগ্রামে আরেকটি নতুন শহর প্রতিষ্ঠা করবে বলে জানিয়েছে ওয়াসা।
সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরে নগরের একটি অভিজাত হোটেলে মেগা প্রকল্পের চুক্তি সম্পন্ন শেষে এমন কথা জানানো হয়। আগামী তিন বছরের জন্য পরিকল্পিত মেগা প্রকল্পে কাজ করবে দক্ষিণ কোরিয়ান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাইয়োং ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন।
চুক্তি অনুষ্ঠানে দক্ষিণ কোরিয়ান প্রতিনিধি দল অংশ নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার আশ্বাস দেন। এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে মুখোমুখি হন চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম ফয়জুল্লাহ।
তিনি জানান, কর্ণফুলী নদীর এক পাশে পানি না থাকায় কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ওই এলাকায় মানুষ বাড়ি ঘর নির্মাণ করতে পারছে না। অথচ ক্রমশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা, বসতি, ইকোনমিক জোন তৈরি হচ্ছে। বিষয়টি চিন্তা করে আমরা বোয়ালখালী, পটিয়া ও আনেয়ারা উপজেলায় সুপেয় পানির ব্যবস্থার পরিকল্পনা হাতে নেই। এটি হয়ে গেলে ওই এলাকায় অর্থনৈতিক গুরুত্ব বৃদ্ধি পাবে, দক্ষিণ চট্টগ্রামে আরেকটি শহর গড়ে উঠবে।
ভাণ্ডালজুরী প্রকল্পের বিষয়ে তিনি জানান, এ প্রকল্পের মাধ্যমে ছয় কোটি লিটার পানি শোধনাগার নির্মাণ করা হবে। এছাড়া ১৩৩ দশমিক ৩০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ট্রান্সমিশন ও ড্রিস্টিবিউশন পাইপ লাইন, দুটি স্থানে এক হাজার কিউবিক ও ৩০০ মিটার কিউবিক মিটার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন জলাধার ও ৪৩৮ মিটার টানেলিং রিভার ক্রসিং কাজ করা হবে।
কোরিয়ান ও বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে নির্মিত প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে এক হাজার ১৯৫ কোটি ৪৪ হাজার ৯৮১ টাকা। ভবিষ্যতে এর পরিমাণ আরও বেড়ে যেতে পারে সেটি মাথায় রেখে সেখানে আর একটি প্রকল্প নির্মাণের জন্য জায়গা রেখে দেওয়া হয়েছে। সাড়ে তিন বছর ধরে এর কাজ চললেও তিন বছরে কাজ শেষ করার আশ্বাস দেন ওয়াসা পরিচালক।
এদিকে টানা বর্ষণের মুখে জলাবদ্ধতায় নগরবাসীকে নাকাল হতে হয়েছে। এর পেছনে সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতার কথা জোরে শোনা যায়। কোনো একটি সড়ক সিটি করপোরেশন মেরামতের পরে, কয়েকদিনের মধ্যে ওই সড়কে ওয়াসা, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, সিডিএ খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করে বলেও নাগরিকদের মধ্যে একটি কথা প্রচলন রয়েছে।
এ বিষয়ে ওয়াসার ব্যবস্থাপনার মনোযোগ আকর্ষণ করেন সাংবাদিকরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি জানান, বর্তমানে চট্টগ্রামের সুয়ারেজ ব্যবস্থা ১০০ বছরেও কিছু হবে না। তবে নগরীর শৌচাগার ব্যবস্থা সচল রাখার স্বার্থে খোঁড়াখুঁড়ি চলবে, এটি চলমান থাকবে।
একই সঙ্গে তিনি জানান প্রতিটি সেবা সংস্থাই আলাদা মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত হয়। এখানে প্রকল্প অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ ও কাজ চলে। কেউ চাইলেও এক সঙ্গে কাজ করতে পারে না।