মহব্বত আলী খান আর নেই
ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সাবেক হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. মহব্বত আলী খান মারা গেছেন। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে স্ত্রী, তিন পুত্র, ১ কন্যা ও নাতি নাতনীসহ অসংখ্য শুভাকাঙ্খী রেখে গেছেন।
বাদ আসর মেয়র হানিফ মসজিদে নামাযের জানাজা শেষে আজিমপুর করবস্থানে দাফন করা হয়। তার পরিবারের পক্ষ থেকে বিদেহী আত্মার শান্তি ও মাগফেরাত কামনা করে সকলের নিকট দোয়া চেয়েছেন।
মরহুমের বড় ছেলে তারিকুল ইসলাম খান ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশ সহযোগী সদস্য। তিনি পেট্রোবাংলার জনসংযোগ ডিপার্টমেন্টে উপমহাব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত।
মো. মহব্বত আলী খানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান শামীম জাহাঙ্গীর ও নির্বাহী পরিচালক সেরাজুল ইসলাম সিরাজ।
তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে কুপিয়ে আসামি ছিনতাই: ২ ছেলেসহ মা গ্রেফতার
ময়মনসিংহের ত্রিশালে তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে কুপিয়ে আসামি ছিনতাইয়ের মামলায় মা ও দুই ছেলেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বিকালে জেলা গোয়েন্দা শাখার কার্যালয় থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
সোমবার (১৮ মার্চ) রাতে জেলা গোয়েন্দা শাখা ও ত্রিশাল থানা পুলিশের যৌথ অভিযান চালিয়ে ত্রিশাল ও ভালুকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, ত্রিশাল উপজেলার ধানিখলা ইউনিয়নের মৃত ফজলুল হকের স্ত্রী বেদেনা আক্তার (৫৯), তার দুই ছেলে হারুন মিয়া (৪৪) ও মো. নাঈম (২৫)।
জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফারুক হোসেন বলেন, গত রোববার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে ত্রিশাল থানা পুলিশ আদালতের ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি বেদেনা আক্তার (৫৯) ধরতে উপজেলার ধানীখোলার শিমুলিয়া গ্রামে অভিযান চালায়। এসময় সাথে থাকা নারী কন্সটেবল দিয়ে আসামিকে গ্রেফতার করার পর আসামীর দুই ছেলে হারুন মিয়া ও নাঈম মিয়া দা নিয়ে পুলিশের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে কুপিয়ে এএসআই ইসমাঈল ও এএসআই গোলাম রসুলকে আহত করে আসামিকে নিয়ে পালিয়ে যায়।
পরে ত্রিশাল থানা পুলিশ খবর পেয়ে আরও একাধিক টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে। এসময় এএসআই রকিবের নেতৃত্বে একটি টিম সিএনজি যোগে ঘটনাস্থলে পৌঁছার জন্যে রাস্তায় আসামিদের কাছেই ঠিকানা জানতে চাইলে আসামিরা সিএনজিতেই এএসআই রকিবের পেটে ছুরিকাঘাত করে আবারও পালিয়ে যায়। পরে আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে ত্রিশাল থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এই ঘটনার পর ত্রিশাল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হুমায়ুন কবির বাদি হয়ে বেদেনা আক্তার, তার দুই ছেলে হারুন মিয়া ও মো. নাঈমকে আসামি মামলা দায়ের করেন।
মামলার পর জেলা গোয়েন্দা শাখা ও ত্রিশাল থানা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে ত্রিশাল ও ভালুকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
ত্রিশাল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) চাঁদ মিয়া বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। আহত পুলিশ সদস্যরা চিকিৎসাধীন আছেন।
চট্টগ্রামে কারাগারে বন্দির ‘অস্বাভাবিক’ মৃত্যু, তদন্তে কমিটি গঠন
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে সাজাপ্রাপ্ত ইব্রাহীম নেওয়াজ (৩০) নামের এক বন্দির অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। কারা কর্তৃপক্ষ ওই বন্দি আত্মহত্যা করেছেন উল্লেখ করে থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছে। মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (১৮ মার্চ) সন্ধ্যায় কারাগারের ভেতরে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়। কারা কর্তৃপক্ষের ভাষায়, আত্মহত্যার ‘অপচেষ্টারত’ অবস্থায় তাকে উদ্ধারের পর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত ইব্রাহীম নেওয়াজ (৩০) রাঙামাটি পৌর সদরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি গত ছয় মাস ধরে কারাগারে ছিলেন।
জেলারের পক্ষ থেকে একজন কারা কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, সোমবার সন্ধ্যায় কারাভ্যন্তরে তালাবন্দি করার সময় বন্দি গণনা করতে গিয়ে একজন কম পাওয়া যায়। খোঁজাখুঁজির পর তাকে কারাগারের খাদ্য গুদামের সামনে চৌবাচ্চার টিনশেডের রডের সঙ্গে প্লাস্টিকের বস্তা ও কম্বলের বর্ডারের অংশ দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে কারা কর্তৃপক্ষ নগরীর কোতোয়ালি থানায় একটি ইউডি (অপমৃত্যু) মামলা দায়ের করেছে। এতে ‘সাজাপ্রাপ্ত বন্দি মৃত্যুর’ বিষয়ে সিনিয়র জেল সুপার মুহাম্মদ মঞ্জুর হোসেনের একটি প্রতিবেদন সংযুক্ত করা হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আত্মহত্যার অপচেষ্টারত অবস্থায় বন্দিকে তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করে কারা হাসপাতালের সহকারী সার্জনের পরামর্শে চমেক হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের প্রতিবেদনে ‘ফাঁসিতে ঝুলে’ মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম ওবায়দুল হক বলেন, ‘কারাগারের অভ্যন্তরে একজন বন্দি আত্মহত্যা করেছেন উল্লেখ করে থানায় একটি অপমত্যু মামলা দায়ের হয়েছে।’
সিনিয়র জেল সুপারের প্রতিবেদনে বন্দির বিষয়ে আরও উল্লেখ আছে, রাউজান থানার একটি মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত ছিলেন ইব্রাহীম নেওয়াজ। চট্টগ্রামের সপ্তম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সাজা পরোয়ানামূলে গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে কারাগারে বন্দি ছিলেন তিনি।
এদিকে কারা অভ্যন্তরে বন্দির মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে চট্টগ্রাম বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি-প্রিজন) টিপু সুলতানকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষ।
ডিআইজি-প্রিজন টিপু সুলতান বলেন, ‘কারাগারে অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন হয়েছে। আমাকে প্রধান করে বিভাগের আরও তিন জেলা কারাগারের তিন জেল সুপারকে এতে সদস্য করা হয়েছে। তদন্ত শেষের সময়সীমা অবশ্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়নি।’
বিদেশি অস্ত্র ও ২ লাখ ইয়াবাসহ র্যাবের হাতে আটক ৪
২ লাখ ইয়াবাসহ ইয়াসিন আরাফাত ওরফে কালু নামক এক চোরাকারবারিকে আটক করেছে র্যাব। এছাড়াও পৃথক অভিযানে অস্ত্র ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের ৩ সদস্যকে আটক করা হয়েছে। এসময় তাদের কাছ থেকে ২ লাখ ইয়াবা, ১টি বিদেশি পিস্তল ও ২ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করেছে বলে জানায় র্যাব।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দুপুরে কক্সবাজারের র্যাব-১৫ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১৫ অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন এসব তথ্য জানিয়েছেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, টেকনাফের জাদিমুড়া এলাকার ইমান হোসেনের হোসেনের ছেলে ইয়াসিন আরাফাত ওরফে কালু (২১), হোয়াইক্যংয়ের উনছিপ্রাং এলাকার মো. হোসাইনের ছেলে আবুল কাশেম (৩৮), খুলনার দাকোপ উপজেলার সুতারখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা নওশের মোড়লের ছেলে নুরুজ্জামান (২৮), খুলনা সদর উপজেলার আবুল কালামের ছেলে সাকির আহাম্মদ সাগর (২৬)।
সংবাদ সম্মেলনে সাজ্জাদ হোসেন বলেন, সোমবার রাতে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের রইক্ষ্যং এলাকায় অস্ত্রের বিনিময়ে মাদকের চালান লেনদেনের জন্য কিছু লোকজন অবস্থান করছে, এমন খবর পেয়ে র্যাবের একটি দল অভিযান চালায়। র্যাব সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে চার-পাঁচজন সন্দেহজনক লোক দৌড়ে পালানোর চেষ্টা চালায়। তিনজনকে আটক করতে সক্ষম হলেও অন্যরা পালিয়ে যায়। পরে আটকদের হেফাজত থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও দুটি গুলি পাওয়া যায়।
র্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, আটকরা স্বীকারোক্তি দিয়েছে, তারা তিনজনই মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায়ী। তারা খুলনা থেকে অস্ত্রের চালান এনে টেকনাফের বিভিন্ন অপরাধী চক্রের কাছে তুলে দিত। চক্রটি নগদ টাকার পাশাপাশি মাদকের বিনিময়েও এসব অস্ত্র লেনদেন করত।
এদিকে সোমবার রাতে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের পূর্ব জাদিমুরা এলাকায় নাফ নদ সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার থেকে মাদকের বড় একটি চালান পাচারের খবর পাওয়া যায়। পরে পৃথক অভিযান চালিয়ে ২ লাখ ইয়াবাসহ ইয়াসিন আরাফাত ওরফে কালুকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।
তিনি বলেন, আটক ব্যক্তির দেওয়া তথ্য মতে, তার বসত ঘরে বিশেষ কৌশলে লুকিয়ে রাখা ২ লাখ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাবের দাবি, গ্রেফতারকৃত ইয়াসিন আরাফাত ওরফে কালু জানায় যে, পার্শ্ববর্তী দেশ হতে ক্রয়কৃত মাদকের মূল্য বাবদ নগদ অর্থ প্রদান এবং কখনো কখনো হুন্ডি ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করতো। এছাড়াও গ্রেফতারকৃত আবুল কাশেম একজন সন্ত্রাসী। সে তার আধিপত্য বিস্তারের জন্য দেশি-বিদেশি অস্ত্র-শস্ত্রের ভয়-ভীতি দেখিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি, চাঁদা আদায় ও পরিকল্পিত হামলাসহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত। একই সাথে সে দীর্ঘদিন ধরে মাদকের ব্যবসা করে আসছিল।
এছাড়াও গ্রেফতারকৃত নুরুজ্জামান ও সাকির আহাম্মদ সাগর দু’জনই অস্ত্র ব্যবসায়ী। তারা খুলনা থেকে দেশী, বিদেশি অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে কক্সবাজারের হোয়াইক্যং এর উনচিপ্রাং এলাকায় এসে সন্ত্রাসীদের কাছে অস্ত্র বিক্রি করতো।
তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেেও জানানো হয় র্যাবের পক্ষ থেকে।