আসামে বাদ পড়াদের বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে



খুররম জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
আসামের তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন ১৯ লাখ মানুষ, ছবি: সংগৃহীত

আসামের তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন ১৯ লাখ মানুষ, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারতের আসাম রাজ্য শনিবার (৩১ আগস্ট) চূড়ান্ত নাগরিকত্বের তালিকা প্রকাশ করে স্বীকৃতি দিয়েছে ৩ কোটি ১১ লাখ বাসিন্দাকে। কিন্তু সেই রাজ্যে বসবাসরত ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জন বাঙালিকে চূড়ান্ত নাগরিকত্বের তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে তারা। এর ফলে এসব নাগরিক রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে কূটনীতিক বিশ্লেষকরা বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে শনিবার (৩১ আগস্ট) জানান, আসলে যতক্ষণ পর্যন্ত ভারত বলছে, এটি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়, ততক্ষণ সরকারেরও কিছুই করার নেই। তবে আমাদের সজাগ থাকতে হবে, কারণ এটিকে বোঝা হিসেবে বাংলাদেশের ঘাড়ে ফেলার চেষ্টা হতে পারে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে আশ্বাস দিয়ে গেছেন, এটি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়, সে কথায় আস্থা রাখতে হবে। আমাদেরও সজাগ থাকতে হবে।

কিন্তু ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ প্রায়ই তার বক্তব্যে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারীরা ভারতে ঢুকে পড়ে জাতীয় নিরাপত্তা নষ্ট করছে এবং এদের ঠেকানোর জন্যই নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) মতো পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।’ তিনি এও বলেছেন, ‘বাংলাদেশিদের খুঁজে খুঁজে বের করে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে।’

এ সম্পর্কে বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব, রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক বিশ্লেষক মো. তৌহিদ হোসেন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘ভারতের চূড়ান্ত নাগরিকত্বের তালিকা থেকে প্রায় ১৯ লাখ বাসিন্দাকে বাদ দেওয়ার ঘটনা বাংলাদেশের জন্য অবশ্যই চাপ সৃষ্টি করতে পারে। যদি বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশেই বলে যাচ্ছে, এটি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। যতক্ষণ পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ বিষয় থাকছে, ততক্ষণ ভালো কথা। কিন্তু এ বাদ দেওয়া লোকগুলো কোথাকার?’

তিনি বলেন, ‘ভারত যদি বলে থাকে, এ মানুষগুলো বাংলাদেশের, তাহলে আমাদের তো এ বিষয়টা নিয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্প্রতি বাংলাদেশ এসে বলে গেলেন, এটি তাদের দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু বাংলাদেশের উদ্বেগ হল ভারত বাদ দেওয়া এ নাগরিকদের বিদেশি বলে অভিহিত করছে। তাহলে প্রশ্ন হল- এ মানুষগুলো তো আমেরিকা থেকে উড়ে আসেনি। ভারতের দাবি অনুযায়ী, তারা অবশ্যই পার্শ্ববর্তী কোনো দেশ থেকে এসেছে। শেষ পর্যন্ত ভারত তাদের বাংলাদেশের ঘাড়ে ফেলার চেষ্টা করবে। অমিত শাহ এর আগে বলেছেন, ‘বাংলাদেশিদের খুঁজে খুঁজে বের করে দেশে ফেরত পাঠানো হবে।’

আরো পড়ুন: আসামে রাষ্ট্রহীন ১৯ লাখ বাঙালি

সাবেক এ পররাষ্ট্র সচিব আরো বলেন, ‘সবকিছু দেখে মনে হচ্ছে, বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে কোনো কিছু না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আসলে যতক্ষণ পর্যন্ত ভারত বলছে, এটি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়, ততক্ষণ সরকারেরও কিছুই করার নেই। তবে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। যাতে তাদের বোঝা হিসেবে বাংলাদেশের ঘাড়ে ফেলে দিতে না পারে।’

‘এ ঘটনার পর আসামে নাগরিক ও নাগরিকত্বহীন দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে কেউ যাতে বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে, সেদিকে সরকারকে সজাগ থাকতে হবে। প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা নিয়ে এমনিতেই সঙ্কটে রয়েছি। আরো ২০ লাখ মানুষের ভার আমরা সইতে পারব না,’ যোগ করেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘২০ আগস্ট ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ঢাকা সফরে এসে স্পষ্ট করে গেছেন, জাতীয় নাগরিকপুঞ্জি (এনআরসি) ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমাদের উদ্বিঘ্ন হওয়ার কারণ নেই। সে হিসেবে ১৯ লাখ মানুষকে যে তারা নাগরিকত্ব দেয়নি সেটা তাদের বিষয়। তাহলে এ ১৯ লাখ মানুষ নিয়ে কি হবে? হিসেব অনুযায়ী ১১ লাখ হিন্দু এবং ৮ লাখ মুসলিম এ তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। বিজেপি এর আগে অনেক জায়গায় বলেছে, হিন্দু যদি হয়ে থাকে, তাহলে তাদের তারা নাগরিকত্ব দেবে। এ হিসেবে আমি ধরতে পারি সঙ্কটটা ৮ লাখে এসে দাঁড়াবে। তাহলে সমাধান কি হতে পারে? ভারতে বিভিন্ন আলোচনায় আমরা শুনেছি, বাদ পড়া লোকদের তারা ওয়ার্ক পারমিট দেবে, কিন্তু ভোটাধিকার থাকবে না। এমন পদক্ষেপ নিলে যারা বছরের পর বছর ভারতে আছে, তারা এটা মেনে নেবে কিনা বা ভারতের সুপ্রিমকোর্ট, সুশীল সমাজ, মানবাধিকার সংস্থাগুলো মেনে নেবে কিনা আমার জানা নেই। ভারত বিশ্বের একটা বড় গণতন্ত্রিক দেশ যেখানে নিয়মিত নির্বাচন হয়। তাদের সুপ্রিমকোর্ট, সুশীল সমাজ, মানবাধিকার সংস্থাগুলোই এ সিদ্ধান্ত নেবে। আমাদের সাবধান থাকতে হবে। তবে বাংলাদেশের আগ বাড়িয়ে কিছু করার নেই। যখনই আমরা আগ বাড়িয়ে কিছু বলতে যাব, তখন বাংলাদেশে ভারতবিরোধী শক্তি অস্থীতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করার সুযোগ পেয়ে যাবে। জেনে শুনে এটা করতে দেওয়া ঠিক হবে না। ভারতও চাইবে না, এখানে ভারতবিরোধী শক্তি মাথা চাড়া দিয়ে উঠুক। তাই ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে আশ্বাস দিয়ে গেছেন, এটি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়, সে কথায় আস্থা রাখতে হবে। আমাদেরও সজাগ থাকতে হবে।’

   

খাগড়াছড়িতে বজ্রপাতে স্কুল শিক্ষার্থী নিহত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম,খাগড়াছড়ি
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খাগড়াছড়ি মাটিরাঙ্গায় বজ্রপাতে এক স্কুল শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ মে) সকালে মাটিরাঙ্গার বড়নালের ইব্রাহিম পাড়ায় বৃষ্টির সময় বজ্রপাতে স্কুল শিক্ষার্থী ইয়াছিন আরাফাতের মৃত্যু ঘটে।

নিহত ইয়াছিন আরাফাত ওই এলাকার ইউসুফ মিয়ার বড় ছেলে।

জানা যায়, বৃষ্টির আগে দমকা হাওয়ার সময় বাড়ির পাশের গাছ থেকে আম কুড়াঁতে যায় আরাফাত। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাতে তার মৃত্যু ঘটে।
মাটিরাঙ্গার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডেজী চক্রবর্তী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বজ্রপাতে একজনের মৃত্যুর খবর দিয়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতের পরিবারকে বিধি মোতাবেক সহযোগীতা করা হবে।

;

উপজেলা নির্বাচনে ছেলে, মেয়ে ও স্ত্রীই ‘স্বজন’: প্রধানমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

উপজেলা নির্বাচনে ‘স্বজন’ সংজ্ঞায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘পারিবারিক ফর্মূলা কী- নিজের ছেলে, মেয়ে ও স্ত্রী! এর বাইরে তো পরিবার হয় না! আমরা চাচ্ছি, ইলেকশনটা (নির্বাচন) যেন প্রভাবমুক্ত হয়! মানুষ যেন স্বাধীনভাবে ভোটটা দিতে পারেন’!

বৃহস্পতিবার (২ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে থাইল্যান্ড সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ সব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের পরিবারের অনেকে তো দীর্ঘদিন ধরে একটা জায়গায় আগে থেকেই নির্বাচন করেন। যিনি এমপি হয়েছেন, তার বহু আগে থেকেই হয়ত ইউনিয়ন বা উপজেলা চেয়ারম্যান তার স্ত্রী। তবে এটা ঠিক, এক জায়গায় বউকে দিলো, আরেক জায়গায় ছেলেকে দিলো, সেটা ঠিক না! কর্মীদেরও মূল্যায়ন করা উচিত। সবকিছু নিজেরাই নিয়ে নেবো, আমার নেতাকর্মীদের জন্য কিছু রাখবো না, সেটা তো হয় না!

তিনি বলেন, সবাই দাঁড়াচ্ছে। দাঁড়িয়েছে। ইলেকশন করছে, এটার অর্থ হলো- নির্বাচনটা অর্থবহ করা।

কয়েকটি দলের নির্বাচন বর্জনের প্রসঙ্গে টেনে শেখ হাসিনা বলেন, অনেকগুলি রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করছে। বর্জন করে কেন! কারণ, নির্বাচন করার মতো সক্ষমতায় তারা নেই। ‘পার্লামেন্ট ইলেকশন’ করতে হলে জনগণকে তো দেখাতে হবে, পরবর্তী নেতা বা প্রধানমন্ত্রী কে হবেন! আপনার কাছে যদি উপযুক্ত নেতা না থাকে, তখন তো ছুতো খুঁজতে হয়। ইলেকশন করলাম না, বাস্তবতা তো সেটাই! আমাদের দেশে তো সেটাই হচ্ছে! সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে যদি জনগণকে দেখান, জনগণ তো নেবে না। রাজনীতি করতে হলে তো ঝুঁকি নিতেই হয়!

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ’৭৫-এর পরে আমাকে দেশে আসতে দেবে না। রেহানাকে তো পাসপোর্টটাও দেয়নি! যুদ্ধাপরাধী যাদের বিচার শুরু করেছিলেন জাতির পিতা, যারা সাজাপ্রাপ্ত আসামি, তাদের ছেড়ে দিয়ে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছিল, তারাই মন্ত্রী, উপদেষ্টা, ক্ষমতায়। খুনিরা ক্ষমতায়! ওই অবস্থায় তো আমি দেশে ফিরে এসেছি। আমার জীবন ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। বার বার আঘাত এসেছে কিন্তু আমি বেঁচে গেছি। এটাই অনেকের কষ্ট। এতবার মারবার চেষ্টার পরও বেঁচে গেলাম কেন!

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে বলেই ‘উন্নয়ন’ হয়েছে, এ মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার বা কথা বলার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বাঙালিদের। আগে তো নাম শুনলেই বলতো ‘গরিব’, ‘ভিক্ষুকের জাত’, সেই দুর্নামটা ঘোচাতে পেরেছি কি না, সেটাই বড় কথা!

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আরো অনেক দেশেই নির্বাচন হচ্ছে। আমরা দেখবো, সেখানকার মানুষ কী রকম ভোট দেয়। আমরা সেটাও দেখবো। আমাদের প্রচেষ্টা হচ্ছে, প্রক্রিয়াটাকে আরো গণমুখী ও স্বচ্ছ করা!

আমরা এই প্রথম আইন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছি। আর্থিকভাবে এটি প্রধানমন্ত্রী দপ্তরনির্ভর ছিল। সেখান থেকেও মুক্ত করে স্বায়ত্তশাসিত করে দিয়েছি। আলাদা বাজেট করে দিয়েছি।

;

নীলফামারীতে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
নীলফামারীতে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু

নীলফামারীতে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় ফুস বালা (৮০) নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ঘাতককে আটক করতে না পারলেও মোটরসাইকেলটি জব্দ করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২ মে) সকালে উপজেলার ব্রাক অফিসের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত বৃদ্ধা কেশবা জুগিপাড়ার মৃত শুরেন চন্দ্র রায়ের স্ত্রী।


প্রদক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, নিহত বৃদ্ধা সকালে গাছের ডাল কুড়ানোর সময়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এসময়ে দ্রুত গতিতে আসা মোটরসাইকেলটি ধাক্কা দিলে বৃদ্ধা ছিটকে পড়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।


কিশোরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পলাশ চন্দ্র মন্ডল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় মোটরসাইকেলটি জব্দ করা হয়েছে। এবিষয়ে আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

;

চলতি মাসেই শুরু হচ্ছে খুলনা-মোংলা রুটে ট্রেন চলাচল



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বাগেরহাট
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গত বছরের নভেম্বরে উদ্বোধন হলেও স্থায়ী জনবল নিয়োগসহ নানা জটিলতায় খুলনা-মোংলা রুটে ট্রেন চালু করা যায়নি। কবে নাগাদ রেল চালু হবে সেটি নিয়েও ধোয়াশা কাটছিল না। ফলে খুলনা-মোংলা রুটে রেল চালুতে জট দেখা দেয়। তবে সমস্যার জটিলতা অবসান এবং আপাতত অস্থায়ী জনবল দিয়ে এ মাসেই খুলনা-মোংলা রুটে বাণিজ্যিকভাবে রেল চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এজন্য মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে খুলনা থেকে মোংলা রেলপথের চূড়ান্ত পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়। খুলনা-মোংলা রেললাইন প্রকল্পের পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান ও রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের (পাকশী) বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ বীর বল মন্ডল বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) চূড়ান্ত পরীক্ষা সম্পন্নের সময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ রেলওেয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) ও প্রকল্প পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান, মহা-ব্যবস্থাপক (পশ্চিম) অসীম কুমার তালুকদার, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) এ এম সালাহ উদ্দীন, প্রধান যান্ত্রিক প্রজেক্ট (পশ্চিম) মুহাম্মদ কুতরত- ই- খুদা, প্রধান বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী (পশ্চিম) মুহাম্মদ শফিকুর রহমান, প্রধান সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী টেলিকম (পশ্চিম) সৈয়দ মো. শহিদুজ্জামান, পশ্চিমাঞ্চলের (পাকশী) বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ বীর বল মন্ডল ও নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম।

রেল লাইনের প্রকল্প পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান বলেন, রেল লাইনে বিভিন্ন ধাপের ফিনিশিংয়ের কাজ বাকি ছিল, সেটি সম্পন্ন করা হয়েছে। চূড়ান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষাও শেষ। বাণিজ্যিকভাবে রেল চালুর জন্য খুলনা-মোংলা রুট পুরোপুরি উপযোগী করে দেওয়া হয়েছে। তবে স্থায়ী জনবল নিয়োগের বিষয়টি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আটকে থাকায় অস্থায়ী জনবল দিয়ে আপতত রেল চালানোর জন্য রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের (পাকশী) কাছে সবকিছু বুঝিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।


এ বিষয়ে খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ফিনিশিংয়ের কাজ শেষ করে মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) চূড়ান্ত পরীক্ষা করা হয়েছে। লাইন চালুতে দরকার প্রয়োজনীয় জনবল। এই রুটে আটটি স্টেশন ও লাইন ক্লিয়ারিংয়ে ৫৭৬ জন জনবলের অর্গানোগ্রাম করা হয়েছে। সেটিও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। তবে আপাতত অস্থায়ী জনবল নিয়োগ দিয়ে রেল চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

নির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ না করে এমাসের যেকোন দিন রেল চালুর বিষয়টি মাথায় রেখে স্টেশনের আসবাবপত্র, রেলস্টেশন ও রেলক্রসিংগুলোতে অস্থায়ী জনবল নিযুক্ত, রুটে চলাচলকারী রেলের সময়সূচি, ভাড়া ও শিডিউল চূড়ান্ত করা হচ্ছে। এসব প্রক্রিয়া শেষ করে খুলনা-মোংলা রুটে এ মাসেই বাণিজ্যিকভাবে রেল চলানো হবে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের (পাকশী) বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ (ভারপ্রাপ্ত) বীর বল মন্ডল।

প্রকল্প কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটির অনুমোদন হয়। জমি অধিগ্রহণ, রেললাইন, রেলসেতু নির্মাণসহ পুরো প্রকল্পের ব্যয় তখন ধরা হয়েছিল এক হাজার ৭২১ কোটি টাকা। এরপর ২০১৫ সালে সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৮০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এরপর ২০২১ সালে ফের সময় ও ব্যয় বাড়ে। তখন ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ২৬০ কোটি ৮৮ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। সেই মেয়াদ ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত করা হয়।

অন্যদিকে, প্রকল্পের কাজ রূপসা নদীর ওপর ৫ দশমিক ১৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে রেলসেতু, ফুলতলা থেকে মোংলা পর্যন্ত ৬৪ কিলোমিটার পথ হলেও স্টেশনগুলোর ডাবল লাইন হিসাব করে ৯১ কিলোমিটার রেলপথ, নয়টি প্ল্যাটফর্ম এবং ১০৭টি ছোট সেতু ও ৯টি আন্ডারপাস নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। সেই সঙ্গে সিগনালিং ও টেলিকমিউনিকেশনের কাজও শেষ করা হয়।

জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১লা নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যৌথভাবে ভার্চুয়ালি খুলনা-মোংলা রেললাইন প্রকল্প উদ্বোধন করেন। এর আগে ৩০ অক্টোবর ফুলতলা থেকে মোংলা পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে রেল চালানো হয়।

এদিকে, রেল চলাচল শুরু হলে এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ এবং ব্যবসায়ীরা মোংলা বন্দর দিয়ে দ্রুত ও কম খরচে মালামাল নিতে পারবে। মোংলার সঙ্গে রেলপথে যাতায়াত সুবিধার পাশাপাশি আরও গতিশীল হবে মোংলা বন্দর। ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে। সুন্দরবন কেন্দ্রীক পর্যটন বিকাশে আরো সহায়ক হবে এ রুট।

;