আগের চেহারায় নেই চাঁপাইনবাবগঞ্জের ছয় গম্বুজ জামে মসজিদ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের প্রায় এক কিলোমিটার দক্ষিণে মাঝপাড়া বালিগ্রামে আড়াইশ’ বছরের পুরনো ছয় গম্বুজ জামে মসজিদ অবস্থিত।
১৭৭৫ খ্রিস্টাব্দে মসজিদটি নির্মিত হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জের দানবীর হাজি আহমদ আলী খান এ মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন।
কথিত আছে, কলকাতা থেকে স্থপতি এনে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়।
দুই কক্ষ বিশিষ্ট মসজিদের পশ্চিম পাশের কক্ষটি অপেক্ষাকৃত বড়। সেখানে দুই কাতারে ৪০ জন মুসল্লি নামাজ পড়তে পারেন। পূর্ব পাশের কক্ষটি অপেক্ষাকৃত ছোট। এটিতে এক কাতারে ২০ জন লোক নামাজ পড়তে পারেন।
পশ্চিমের কক্ষটির ছাদে তিনটি গম্বুজ আছে। মাঝের প্রধান গম্বুজটি বড়। গম্বুজটির দুই পাশের দু’টি গম্বুজ ক্যাপসুল আকৃতির। পূর্বের কক্ষটির ছাদে অবস্থিত তিনটি গম্বুজ সমান আকৃতির।
মসজিদটির পূর্বের রং ছিল কালো। দীর্ঘদিন অবহেলিত ছিল এ মসজিদ। আড়াইশ’ বছরের পুরনো হলেও প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর কিংবা জেলা প্রশাসন কেউই মসজিদটি অবিকল সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়নি।
মাত্র কয়েক বছর আগে মসজিদটি সংস্কারের উদ্যোগ নেন স্থানীয়রা। তারা পুরো মসজিদটিতে পলেস্তারা দিয়ে রং করেন। মসজিদের চার কোণার গোলাকৃতির পিলারকে ষড়ভূজাকৃতির করে নকশা আঁকা হয়। ভেতরে বসানো হয় আধুনিক টাইলস। মসজিদটি পূর্বদিকে বাড়িয়ে দোতলা করা হয়।
পুরো মসজিদটিতে বর্তমানে চার শতাধিক মুসল্লি এক সঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন।
মসজিদটির পার্শ্ববর্তী বাড়ির মালিক শতবর্ষী ফরমান আলী বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘হামি হাঁর বাপের মুখে শুইন্যাছি যে হাজি আহমদ আলী খানি এ মসজিদটি বানালছে। মসজিদটির রং আগে কালো ছিল। পরে রংটং করা হয়্যাছে।’
মসজিদের মোতওয়াল্লি হাজি আবুল বাশার খান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, ‘সিএস খতিয়ানে জমির মালিক হাজি আবকন খানের স্ত্রী আজিজা খানম। হাজি আবকন খান ছিলেন মসজিদটির প্রতিষ্ঠাতা হাজি আহমদ আলী খানের দাদা। হাজি আহমদ আলী খানের বাবার নাম হাজি আলী হোসেন খান।’
তিনি আরও জানান, হাজি আলী হোসেন খানের মৃত্যুর পর মসজিদ, পার্শ্ববর্তী ঈদগাহ, কবরস্থান, স্কুলসংলগ্ন জমির মালিক হন হাজি বাতেন খান। বাতেন খান এসব জমি পরে মসজিদ-ঈদগাহর নামে ওয়াকফ করে দেন। তিনি নিজে মোতওয়াল্লি নিযুক্ত হন। বাতেন খানের মৃত্যুর পর তার ছেলে হাজি বদরুল আহসান খান ও বর্তমানে তিনি (আবুল বাশার খান) এ ওয়াকফ সম্পত্তির মোতওয়াল্লি হিসেবে নিযুক্ত আছেন।
শহরের কাছে হওয়ায় কিছু কিছু দর্শনার্থী এ মসজিদ দেখতে আসেন বলেও জানান তিনি।
তিনি জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার দর্শনীয় স্থান হিসেবে জেলার ওয়েবসাইটে এ মসজিদের নাম থাকলেও এতদিন মসজিদটি অবহেলিত অবস্থায় ছিল। তবে সম্প্রতি মসজিদের উন্নয়নে কিছু টাকা দেওয়া হয়েছে। যা দিয়ে মসজিদের সংস্কার করা হয়েছে।