বিমানবন্দরে যত্রতত্র আবর্জনা, কর্তৃপক্ষ উদাসীন
বিদেশিদের বাংলাদেশে আসার অন্যতম প্রবেশদ্বার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। প্রতিদিন এই বিমানবন্দর দিয়ে হাজারও যাত্রী যাতায়াত করেন। কিন্তু বিমানবন্দরের টার্মিনাল দিয়ে বের হয়ে কিছুটা সামনে গেলেই চোখে পড়বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ময়লা আবর্জনা। যা দেখে বিমানবন্দর সম্পর্কে খারাপ ধারণা হতে পারে বিদেশিদের।
জানা গেছে, বিমানবন্দরে ডাস্টবিন থাকা সত্ত্বেও যত্রতত্র পানির বোতল, বিস্কুটের প্যাকেট, চিপসের প্যাকেট, কোকের বোতল ফেলে রাখেন বিমানবন্দরে আগত যাত্রীদের জন্য অপেক্ষারত স্বজনরা। ফলে তাদের উদাসীনতায় সুনাম খোয়াতে বসেছে বিমানবন্দরটি। কারণ, ঢাকার এই বিমানবন্দর বহির্বিশ্বে বাংলাদেশকে তুলে ধরছে।
গত সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ঘুরে দেখা গেছে, বিদেশ থেকে আসা যাত্রীর জন্য অপেক্ষায় থাকা স্বজনরা খাবার খেয়ে টার্মিনালের সামনে যেখানে সেখানে আবর্জনা ফেলে রাখছেন। এসব বিষয়ে কর্তৃপক্ষের দেওয়া সাইনবোর্ড দেখা গেলেও কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।
এদিকে, বিমানবন্দরে ১ ও ২ নম্বর টার্মিনালের সামনে সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য গোলাকৃতি করে ব্যারিকেড দিয়ে বিভিন্ন ধরনের গাছ লাগানো রয়েছে। এসব স্থানেই ময়লার স্তূপ জমে আছে। ধুলাবালি ছাড়াও পলিথিন, খাবারের পানি, বিস্কুট, চিপসের প্যাকেটসহ নানা আবর্জনা জমে রয়েছে।
তাছাড়া বিমানবন্দরের তিনতলা বিশিষ্ট কার পার্কিংয়ের ভবনের সামনের রাস্তার মুখে খানাখন্দও আছে। পার্কিংয়ের দ্বিতীয় তলায় অনেক জায়গায় ঢালাই উঠে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কার পার্কিং জোনেও জমে আছে অনেকদিনের ময়লা আবর্জনা। যেমন- সিগারেটের শেষ অংশ, সিগারেটের প্যাকেট ও ধুলাবালি।
বিমানবন্দরে ঘুরে একটা সতর্কবাণী নজরে আসে যেখানে লেখা আছে, নির্ধারিত স্থান ব্যাতীত, যেখানে সেখানে ময়লা ফেলা ও ধূমপান করার অপরাধে (সিএএবি CAAB) ৫০০০ টাকা জরিমানা বা এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড প্রদান করা হবে। কিন্তু বিমানবন্দরে আগত মানুষজন যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেললেও কর্তৃপক্ষের নেই কোনো উদ্যোগ।
দুবাই থেকে আসা এক যাত্রীর জন্য অপেক্ষারত মাসুদ মিয়া বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘কোথায় ময়লা ফেলতে হবে সেটা না জানার কারণে রাস্তায় বোতল ফেলেছি। আমরা গ্রাম থেকে এসেছি তেমন কিছু এখানে চিনি না, ফলে এখানেই ময়লা ফেলেছি।’
মো. সোহেল হোসেন নামে এক ব্যক্তি বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘আমি আসলে কাছাকাছি কোনো ডাস্টবিন পাইনি। তাই বিস্কুট খেয়ে সেখানেই প্যাকেটটা ফেলেছি। আমি অসচেতনভাবে এই কাজ করেছি।’
মালয়েশিয়া থেকে আসা যাত্রী রহমান বিশ্বাস বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, 'বাইরের দেশের বিমানবন্দর অনেক সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন। আর আমাদের দেশের বিমানবন্দরের যেখানে সেখানে পড়ে আছে ধুলাবালি, ময়লা, আবর্জনা।’
এ ব্যাপারে বিমানবন্দর এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশনস অ্যান্ড মিডিয়া) আলমগীর হোসেন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘বিমানবন্দরে টার্মিনালের বাইরে প্রতিটা জায়গায় ডাস্টবিন দেওয়া আছে। সাধারণ জনগণের উদাসীনতা ও সচেতনতার অভাবে যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা পড়ে থাকে। আমাদের লোকজন নিয়মিত এসব আবর্জনা পরিষ্কার করে। তবে সেটি আরও বেশি কার্যকর করার জন্য সাধারণ মানুষের সচেতন হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। বিমানবন্দরের যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেললে বিদেশিদের কাছে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে।’