রেজিস্ট্রেশন নেই, ৭ বছরেও চালু হয়নি ‘নতুন’ অ্যাম্বুলেন্স 



কান্ট্রি ডেস্ক, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease
মেহেরপুর: রেজিস্ট্রেশনের অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের (উপজেলা হাসপাতাল) নতুন অ্যাম্বুলেন্সটি গত সাত বছরেও চালু করা সম্ভব হয়নি। হাসপাতালের গ্যারেজে পড়ে থেকে অ্যাম্বুলেন্সের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও ব্যাটারি অকেজো হতে বসেছে।
 
অপরদিকে পুরাতন অ্যাম্বুলেন্সে জোড়াতালি দিয়ে চলছে রোগী পরিবহন সেবা। 
 
গাংনী হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গাংনী উপজেলার প্রায় সাত লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা দেয় এই হাসপাতালটি। ইনডোর ও আউটডোরে প্রতিদিন প্রায় ৪৫০ থেকে ৫০০ জন চিকিৎসা নেয়। উন্নন চিকিৎসার জন্য প্রায় প্রতিদিনই কুষ্টিয়া, রাজশাহী ও ঢাকায় রোগী পরিবহন করতে হয় এই হাসপাতাল থেকে। বর্তমানে দীর্ঘ ১৫ বছরের আগের অ্যাম্বুলেন্স জোড়াতালি দিয়ে রোগী পরিবহন করা হচ্ছে। যন্ত্রপাতি বিকল ও জ্বালানি তেল বরাদ্দের অভাবে মাঝেমধ্যেই অ্যাম্বুলেন্সটি বন্ধ থাকে।
 
গাংনী হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালক আব্দুল মালেক জানান, অ্যাম্বুলেন্সে রোগী পরিবহনের ভাড়ার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হয়। বিপরীতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জ্বালানি তেল ক্রয় করার জন্য বরাদ্দ দেয়। বরাদ্দ পেতে দেরি হওয়ায় গত ১৬ মে থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত এ সেবা বন্ধ ছিল। বরাদ্দ প্রাপ্তির পর ১৯ জুন থেকে সেবা শুরু হয়েছে। নতুন অ্যাম্বুলেন্সটির রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন না হওয়ায় চালানো যাচ্ছে না। গ্যারেজে পড়ে থেকে এর ব্যাটারি ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি বিকল হতে পারে।
  
গাংনী হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে ২০১১ সালের ১৭ জানুয়ারি ‘নিশান আরভান’ মাইক্রো টাইপের একটি আধুনিক অ্যাম্বুলেন্স পায় গাংনী হাসপাতাল। যার দাম ২৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। এর রেজিস্ট্রেশনের জন্য প্রয়োজন ৭১ হাজার ২৭০ টাকা। কিন্তু অদ্যাবধি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে অর্থ বরাদ্দ হয়নি। ২০১৬ সালের ২৪ মার্চ, ২০১৭ সালের ২৯ মে এবং সর্বশেষ চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি অর্থ বরাদ্দ চেয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (অর্থ) বরাবর আবেদন করলেও কোনো উত্তর মেলেনি। 
 
হাসপাতাল সূত্র জানায়, ১৯৯৩ সালের ৫ অক্টোবর ‘ল্যান্ড রোভার’ নামে জিপ টাইপের একটি অ্যাম্বুলেন্স প্রাপ্তির মধ্য দিয়ে গাংনী হাসপাতালে এ সেবা শুরু হয়। দশ বছর ব্যবহারের পর সেটি অকেজো ঘোষণা করে ২০০৩ সালের ১১ মে ‘ইসুজু ট্রুপার’ জিপ টাইপের আরেকটি অ্যাম্বুলেন্স বরাদ্দ পায়। এই অ্যাম্বুলেন্সটিই এখন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। 
 
রোগী সূত্রে জানা গেছে, সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে রোগী পরিবহন খরচ বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের চেয়ে অর্ধেক। কিন্তু হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স মাঝে মাঝে বন্ধ থাকায় রোগী সাধারণকে বাড়তি অর্থ ব্যয়ে বাইরে থেকে সেবা নিতে হচ্ছে। তাছাড়া রোগীর তুলনায় একটি অ্যাম্বুলেন্স যথেষ্ট নয়।  
 
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘রেজিস্ট্রেশন বিহীন অ্যাম্বুলেন্স সড়কে নামিয়ে কোনো সমস্যা হলে কেউ এর দায় নেবে না। তাই রেজিস্ট্রেশনের অর্থ প্রাপ্তির দিকে চেয়ে আছি।’   
   

হাসপাতালের এক্সরে মেশিন নষ্ট, ভোগান্তিতে রোগীরা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী 
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীর সৈয়দপুরের ১০০ শস্যাবিশিষ্ট সরকারি হাসপাতালে হাত এক্সরে করাতে এসে মমতা বেগম শুনেন, সরকারি হাসপাতালে এক্সরে মেশিন নষ্ট হয়ে গেছে। বাইরের হাসপাতালে এক্সরে করাতে বেশি টাকা লাগে যা বহন করা কষ্টসাধ্য।

হাসপাতালটিতে এক্সরে মেশিন টানা ২০ দিন ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে থাকায় সেবা-বঞ্চিত হচ্ছেন কয়েকশত মানুষ৷ বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ফি দিয়ে প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এক্সরে করছেন রোগীরা। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রোগী ও স্বজনদের।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন শহর ছাড়াও জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রায় ২০০ মানুষ চিকিৎসা নিতে আসেন এ হাসপাতালে। একদিনে দুর্ঘটনাসহ হাত-পা ভাঙা নিয়ে চিকিৎসা করাতে আসেন গড়ে ২০-২৫ জন। গত ১৬ এপ্রিল হঠাৎ এক্সরে মেশিনের ইউপিএস নষ্ট হওয়ার কারণে অচল হয়ে যায়। এখন পর্যন্ত মেশিনটি অচল হয়ে আছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এক্সরে করতে আসা রোগীরা মেশিন নষ্ট হওয়ায় ফেরত যাচ্ছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রুমের দরজায় একটি চিরকুটে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সাময়িক সময়ের জন্য এক্সরে বন্ধ আছে লিখে রেখেছেন। বিশেষ করে দূর থেকে আসা রোগীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।  

চিকিৎসা নিতে আসা রোগী হালিম বলেন, আমার ছোট বাচ্চা অসুস্থ। বাসায় খেলার সময়ে পড়ে গিয়েছিলো খুব কান্নাকাটি করছে। হাসপাতালে ডাক্তারের পরামর্শে এক্সরে করাতে আসলাম  এসে শুনি মেশিন নষ্ট এখন বাইরে বেশি টাকা দিয়ে এক্সরে করাতে হবে। 

আরেক রোগী জিয়ারুল হক বলেন, এখানে এক্সরে করতে আসলাম এসে শুনি মেশিন নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। পরশুদিন এসেও আমি ঘুরে গেছি; আজকেও মেশিন ঠিক হয়নি ৷ এখানে করলে আমারা সুবিধা পাই। বাইরে করাতে গেলে বেশি টাকাও লাগে কষ্টও হয়।

এ বিষয়ে সৈয়দপুর ১০০ শস্যা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার নাজমুল হুদা বলেন, এক্সরে মেশিন নষ্ট হয়েছে। আমরা এটি দ্রুত চালু করার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। 

;

শ্রমিক দিবসে স্বামীর হাতে নারী শ্রমিকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মহান মে দিবসে পারিবারিক কলহের জেরে সাভারের আশুলিয়ায় স্বামীর বেধরক মারধরে পোশাক শ্রমিক স্ত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। 

বুধবার(০১ মে) সন্ধ্যায় আশুলিয়ার নারী ও শিশু হাসপাতাল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। 

নিহত ময়না বেগম(৬০) আশুলিয়ার উত্তর গাজীরচট এলাকায় পরিবারের সাথে ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। তিনি স্থানীয় গ্রামীণ নিটওয়্যার লি. পোশাক কারখানায় ক্লিনার পদে চাকরি করতেন ।

গ্রেফতারকৃত স্বামী তৈমুর রহমান(৬৫) পেশায় দিনমজুর। তাদের গ্রামের বাড়ি নওগা জেলার নিয়ামতপুর থানার নিরাপাড়া গ্রামে।

নিহতের পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বিকালে পারিবারিক কলহের জেরে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে ময়না বেগমকে মারধর করে তার স্বামী। পরে আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের শরীরে কিল-ঘুষির আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলেও জানায় পুলিশ।

আশুলিয়া থানার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. বদিউজ্জামান বার্তা ২৪.কমকে বলেন, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পরিবারে আর্থিক অনটন নিয়ে তাদের মধ্যে কলহ চলে আসছিল। নিহতের পরিবার বাদি হয়ে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।



;

ফেসবুকে কম দামে ইলিশ বিক্রির প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা



মোস্তাফিজ মুরাদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ফেনীসহ সারাদেশে অনলাইনে কমদামে ইলিশ মাছ বিক্রির নামে চলছে অভিনব প্রতারণা। সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নামে-বেনামে পেইজ খুলে বাজার-মূল্যের চেয়ে অস্বাভাবিক ও অকল্পনীয় কমদামে ইলিশ মাছ বিক্রির নামে প্রতারণার নতুন কৌশল শুরু করেছে একটি চক্র।

বাজারে এক কেজি ওজনের যে মাছের দাম ২ হাজার থেকে ২২শ টাকা; ‘ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর’, ‘চাঁদপুরের ইলিশ’, ‘ইলিশ বাজার’, ‘মাছের আড়ত চাঁদপুর’ নামে বিভিন্ন পেইজে তেমন ৬ পিসের ৬ কেজি ওজনের মাছের মূল্য দেখাচ্ছে ৩ হাজার থেকে ৩৩শ টাকা।

পেইজগুলোর চটকদার বিজ্ঞাপন আর লোভনীয় অফারে প্রলুব্ধ হয়ে প্রতারিত হচ্ছেন ক্রেতারা। অর্ডার কনফার্ম করার নামে ডেলিভারি চার্জ ও মাছের বাক্সের খরচ বাবদ ৩৫০ থেকে ৫৫০ টাকা অগ্রীম আদায় করছে পেইজগুলো। এরপর নির্দিষ্ট সময় পার হলেও মাছ পাঠানো দূরে থাক, ক্রেতাদের সাথে যোগাযোগ পর্যন্ত বন্ধ করে দেয় প্রতারক চক্রগুলো। এমন তথ্যের অনুসন্ধানে বের হয়েছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ইলিশ মাছ লিখে সার্চ দিলেই ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর, ইলিশ বাজার, চাঁদপুরের ইলিশসহ বিভিন্ন নামে একাধিক পেইজের সন্ধান পাওয়া যায়। এতএত পেইজের ভিড়ে কোনটি আসল কোনটি নকল বুঝে উঠা দায়! তবে অধিকাংশ পেইজের বিক্রির কৌশল ও ধরণ একই।

ক্রেতাদের বিশ্বাস যোগাতে একই ধরনের পোস্ট ও সে পোস্টে নিজেদের লোকজন দিয়ে পণ্য বুঝে পাওয়ার কমেন্ট বা ভালো রিভিউ করায় পেইজগুলো। এসব রিভিউ দেখে তাদের ফাঁদে পা দিলেই ক্রেতার কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হয় অর্ডার কনফার্মের অগ্রিম টাকা।

পেইজগুলো ঘুরে দেখা যায়, সাইজ ও পরিমাণের ভিত্তি করে ৬ কেজি ইলিশ মাছের দাম দেখানো হয় ১৬শ টাকা থেকে ৩৩শ টাকা পর্যন্ত। সে হিসেবে কেজি প্রতি ২৬৬ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা দাম দেখানো হচ্ছে; যা কোনভাবেই বাজার মূল্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

পেইজগুলোতে ১কেজি ওজনের ৬টি মাছের মূল্য ৩৩শ টাকা, ৭৫০ গ্রাম ওজনের ৮ টি মাছের মূল্য ২৯শ টাকা, ৫০০ গ্রাম ওজনের ১২টি মাছের মূল্য ১৯শ টাকা, ৩৩০ গ্রাম ওজনের ১৮ টি মাছের মূল্য ১৬শ টাকা দেখানো হচ্ছে। এছাড়াও ৬ কেজি ইলিশ মাছের ডিমের মূল্য ২৯শ টাকা উল্লেখ করা হয়।

সম্প্রতি অনলাইন থেকে মাছের অর্ডার করে প্রতারিত হয়েছেন ফেনী শহরে বাসিন্দা বদরুল আলম। বার্তা২৪ কে তিনি বলেন, ‘পরিবারের সদস্যরা ইলিশ মাছ খেতে পছন্দ করে। বাজারে ইলিশ মাছের দামের তুলনায় অনলাইনে কমদামে ইলিশ বিক্রির পোস্ট দেখে ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর পেইজে দেয়া নম্বরে কল করে ১০ কেজি মাছের অর্ডার করি। কুরিয়ার চার্জ ও বাক্সের বাবদ ৫৫০ টাকা বিকাশে পেমেন্ট করি। দুদিন পর হঠাৎ কল করে বলে আপনার মাছ ফেনীতে এসে পৌঁছেছে। ৫ মিনিটের মধ্যে বিকাশ বা নগদে মাছের মূল্য পরিশোধ করুন। কুরিয়ার সার্ভিস ম্যানের কাছে দাম পরিশোধ করে মাছ বুঝে নেব বললে সে গরম হয়ে ফোন কেটে দেয়। এরপর একাধিকবার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি।’

আরাফাত হোসেন নামে আরেক ক্রেতা বলেন, ‘বাজারে যে মাছ কেজি ২ হাজার টাকা অনলাইন সে মাছ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১২শ টাকায়। কমদাম দেখে ৬ কেজি ইলিশ মাছ অর্ডার করেছিলাম। ডেলিভারি চার্জের বাবদ বিকাশে ৫৫০ টাকা দেয়ার পর ওই নাম্বারে আর যোগাযোগ করা যাচ্ছে  না। পেইজে মেসেজ দিলেও কোনো উত্তর মিলছে না। পরে বুঝলাম প্রতারকের খপ্পরে পড়েছি।’

তাসমি আক্তার নামে এক গৃহিণী বলেন, ‘বেশ কয়েক মাসে আগে এরকম একটি পেইজে মাছের অর্ডার করে মাছও পেলাম না অগ্রীম পাঠানো ৪০০ টাকাও ফেরত পাইনি।’

ফেনী ডাক্তার পাড়ার বাসিন্দা বাবু ভুঁইয়া নামে আরেক ক্রেতা বলেন, এদের প্রতারণার ধরণও খুব ইউনিক। আপনি যখন পেইজের নাম্বারে কল দিবেন। প্রথম কয়েকবারে এরা কল ধরবে না। পরে কল ব্যাক করে সুকৌশলে কাস্টমার থেকে ডেলিভারি চার্জ বাবদ টাকা হাতিয়ে নেয়। দ্বিতীয় ধাপে মাছ নির্দিষ্ট এলাকায় এসে গেছে বলে টাকা দাবি করে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ক্রেতারা দ্বিতীয় ধাপে টাকা দিতে রাজি হন না। তবে ডেলিভারি চার্জের টাকাও আর ফেরত পান না।

এ বিষয়ে ফেনী বড় বাজারের মাছ ব্যবসায়ী রহিম উল্ল্যাহ বলেন, ‘অনলাইন সম্পর্কে আমার ধারণা কম। তবে মাঝে মাঝে কিছু ক্রেতা বলেন অনলাইনে আমাদের থেকে অনেক কমে ইলিশ মাছ পাওয়া যায়। ২২শ টাকায় মাছ বিক্রি করে দুই একশ টাকা লাভ করতে কষ্ট হয় আমাদের। আমার বুঝে আসে না এরা ৫শ টাকায় কেমনে ইলিশ মাছ বিক্রি  করে।’

অনলাইনে কম দামে মাছ বিক্রির পোস্ট দেখে প্রতারিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন পৌর হকার্স মার্কেটের মাছ ব্যবসায়ী মিলন। তিনি বলেন, অনলাইনে কমদামে মাছ বিক্রির পোস্ট ক্রেতাদের সাথে প্রতারণা করে এক শ্রেণির প্রতারক চক্র। তাদের ফাঁদে পা না দিয়ে বাজারে এসে দেখে-শুনে মাছ ক্রয় করা উত্তম।

অনলাইনে পণ্য কিনে মানহীন পণ্য সরবরাহ ও সঠিক পণ্য না পাওয়ার অভিযোগ বেশ পুরোনো।  তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সাম্প্রতিক শুরু হওয়া কম দামে ইলিশ কিংবা সাগরের মাছ বিক্রির প্রতারণা রোধে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন সচেতন নাগরিকরা।

;

চাকমা তরুণীকে চীনে পাচারের অভিযোগে মামলা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাঙামাটি
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পাহাড়ি চাকমা তরুণীকে তুলে নিয়ে রাজধানীতে আটকে রেখে চীনে পাচারের অপচেষ্ঠা করছে উল্লেখ করে এবার পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন ভুক্তভোগীর বোন। বুধবার (১ মে) বিকেলে তরুণীকে উদ্ধারের আকুঁতি জানিয়ে রাঙামাটির নানিয়ারচর থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলাটি দায়ের করা হয়।

এই মামলায় পাহাড়ি চার নারী পাচারকারী ও চারজন পুরুষ পাচারকারিসহ মোট আটজনের নাম উল্লেখ করে আরো ৪/৫ জন অজ্ঞাতনামাকে আসামি করা হয়েছে। নানিয়ারচর থানা পুলিশ মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছে। তদন্তের স্বার্থে আসামিদের বিস্তারিত জানাতে অপারগতা জানিয়েছে থানা পুলিশ।

মামলার এজাহারে ভিকটিমের বোন উল্লেখ করেন, তারই ছোট বোন ২১ বছর বয়সী বিউটি চাকমাকে (ছদ্মনাম) নার্সিংয়ে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার নাম করে গত ১ এপ্রিল  ঢাকায় নিয়ে যায়। প্রথমে রাঙামাটির নানিয়ারচর থানাধীন বুড়িঘাট ইউনিয়নের গর্জণতলী গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে বের করে নানিয়ারচরের ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের জুরাছড়ি বেনুবন এলাকায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তাকে সেখান থেকে তাকে মাইক্রোবাস যোগে ঢাকা নিয়ে যাওয়া হয়।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, মাইক্রোবাসে যাওয়ার সময় আসামিদের কথাবার্তায় নার্সিং পড়তে যাওয়া বিউটি চাকমা বুঝতে পারেন তিনি নারী পাচারকারীদের খপ্পড়ে পড়েছেন।

মামলার এজাহারে তরুণীর বড়বোন বলেন, জনৈক রিকা চাকমার নেতৃত্বে একদল নারী পাচারকারি বিউটিকে চীনের নাগরিকের সাথে জোর করে বিয়ে দেয় এবং তার সাথে আপত্তিকর ছবিও তোলে। রাজধানীর অজ্ঞাতস্থানে বন্দি অবস্থা থেকে যেকোনো সময় তাকে চীনে পাচার করে দেওয়া হতে পারে।

গত ৭ এপ্রিল বিউটি তার বড়বোনকে ফোনে এসব তথ্য জানিয়ে তাকে উদ্ধারের আঁকুতি জানায়। বিষয়টি লিখিত আকারে নানিয়ারচর থানা পুলিশকে অবহিত করে মানবপাচার মামলা করে ভুক্তভোগীর বড় বোন।

নানিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ আজম উদ্দিন মাহমুদ মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে প্রতিবেদককে জানান, ভুক্তভোগীর বোনের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে মানবপাচার ও প্রতিরোধ আইন ২০১৮ এর ৬/৭/৮ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলা নং-১ তারিখ: ০১/০৫/২০২৪ইং। এই বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে, রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফ আহাম্মেদ জানিয়েছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে পাহাড়ি নারীদের চীনে পাচারের খবরে টনক নড়েছে স্থানীয় প্রশাসনের। ইতিমধ্যে পাচার চক্রের সদস্যদের ধরতে কাজ শুরু করেছে রাঙামাটির পুলিশ।

প্রতিবেদকের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সংবাদ মাধ্যমে পাহাড় থেকে নারীদের চীনে পাচারের বিষয়টি রাঙামাটির পুলিশের নজরে এসেছে। বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর মন্তব্য করে এই বিষয়ে আমলে নিয়ে পুলিশ নিষ্ঠার সাথেই তদন্ত করছে বলেও জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

এদিকে মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, পাহাড়ি চাকমা তরুণীকে চীনে পাচারের মূল হোতা ঢাকা উত্তরার ১৪ সেক্টরে বসবাস করা রিকা চাকমা নামের একজন চাকমা নারী। তার বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলাধীনর রাঙ্গাপানি ছড়া গ্রামে। এই মামলায় তার সাথে রাঙামাটি সদর উপজেলাধীন সাপছড়ি ইউনিয়নের কামারপাড়ার এক পুরুষ ও একজন নারী, খাগড়াছড়ির দীঘিনালার উদাল বাগান এলাকার দুই নারীসহ অজ্ঞাত ঠিকানার দু’জন পুরুষের নাম মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

;