অপরাধ নির্মূলে বন্দুকযুদ্ধ কতটা কার্যকর?



শাহরিয়ার হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা: মাদকবিরোধী অভিযান চলছে দুই মাস ধরে। এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছে প্রায় ১৫০ জন। গত ১৫ বছরে র‍্যাব-পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মোট নিহতের সংখ্যা ২ হাজার ১৮৫। দীর্ঘ সময়ের মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে বন্দুকযুদ্ধের পরিসংখ্যান টেনে এমন তথ্য দিচ্ছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো 'ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধকে' 'বিচারবহির্ভুত হত্যাকাণ্ড' হিসেবে উল্লেখ করে এর তীব্র সমালোচনা করছেন। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার সঙ্গে প্রশ্ন তুলেছেন অপরাধ নির্মূলে বন্দুকযুদ্ধের কার্যকারিতা নিয়েও।

আসকের (আইন ও সালিশ কেন্দ্র) সাবেক ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক ও মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন বার্তা২৪.কমকে বলেন, বন্দুকযুদ্ধ বা ক্রসফায়ার করে চলমান বিচারহীনতা সংস্কৃতিকে বেগবান করছে রাষ্ট্রীয় বাহিনী গুলো। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী এই বাহিনীগুলো নিয়মিতভাবে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে। যদি এ ভাবে চলতে থাকে সমাজ, রাষ্ট্র, গণতন্ত্র, সব কিছু ধ্বংস হয়ে যাবে। বন্দুকযুদ্ধ এখনই বন্ধ হওয়া উচিত। অপরাধ নির্মূলের সঙ্গে মানুষ হত্যার কোন সম্পর্ক নেই।

র‍্যাব-পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, জঙ্গি নির্মূলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবশ্যই কঠোর অবস্থানেই থাকতে হবে, এই জায়গায় দ্বিতীয়বার ভাবার অবকাশ নেই। আর মাদকের সঙ্গে অস্ত্রের সম্পর্ক আছে। আছে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতির মতো অনেক অপরাধেরও সম্পর্ক। বিশ্বে জুড়ে মাদককে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ধরনের বড় বড় গ্যাং কাজ করছে। সেক্ষেত্রে মাদকবিরোধী অভিযানে এমন কিছু ঘটনা ঘটতে পারে।

অপরাধ বিজ্ঞানীদের অনেকে বলছেন, 'বন্দুকযুদ্ধ' বা 'ক্রসফায়ার' এ ধরণের ব্যবস্থায় সাময়িকভাবে লাভ হচ্ছে বলে মনে হতে পারে। কিন্তু অপরাধ দমনে স্থায়ীভাবে প্রভাব ফেলবে না।

টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞানের শিক্ষক সুব্রত ব্যানার্জি বার্তা ২৪.কমকে বলেন, বন্দুকযুদ্ধ করে অপরাধ নির্মূল করতে গেলে সমাজের একটা অংশ সমর্থন করবে। অন্য অংশ নেতিবাচক ভাবেই বিষয়টা দেখবে বলে আমার ধারণা।

এদিকে আইন ও সালিশ কেন্দ্র থেকে পাওয়া তথ্যে বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বন্দুকযুদ্ধে সবচেয়ে বেশি নিহত হয়েছে ২০০৫ সালে ৩৫৪ জন, ২০১৬ সালে ১৫৯ জন, চলতি ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ২৩৯ জন।

২০০৪ সালে সন্ত্রাসসহ বিভিন্ন গুরুতর অপরাধ দমনের উদ্দেশ্যে বন্দুকযুদ্ধ শুরু হয়। ২০০৫ সাল শেষ হতে না হতেই নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৫৪ জনে। ২০১৬ সালে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারি ও রেস্তোরাঁতে জঙ্গি হামলার পর, জঙ্গি নির্মূল করতে টানা অভিযানে এক বছরে বন্দুকযুদ্ধে নিহত ১৫৯ জন। চলমান মাদক বিরোধী অভিযানকে কেন্দ্র করে বন্দুকযুদ্ধে নিহতের ঘটনা ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে।

মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, কথিত বন্দুকযুদ্ধের প্রতিটি ঘটনার স্বাধীন তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনা উচিত। অপরাধ নির্মূলে বন্দুকযুদ্ধ সমাধান হতে পারে না।

বন্দুকযুদ্ধ সম্পর্কে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বার্তা২৪.কমকে বলেন, যে কোন অভিযান আইনি ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। মাদক বা সন্ত্রাসের সাথে যেমন অস্ত্রের সম্পর্ক আছে, তেমনি আছে টাকার সম্পর্ক। এই সব অভিযান গুলোতে তারাও (সন্ত্রাসী) তাদের রক্ষা করতে চেষ্টা করে। বেশিভাগ ক্ষেত্রে পাল্টা আক্রমণ করে। যার ফলে গোলাগুলির মত ঘটনা ঘটে, উভয় পক্ষই আহত নিহত হয়।

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে যারা মারা যাচ্ছেন, তারা কি ভাল মানুষ ? এক একজনের বিরুদ্ধে ৫/১০ টা করে মামলা রয়েছে। তাছাড়া পুলিশ বা র‍্যাবের সঙ্গে বন্দুক যুদ্ধের ঘটনার পর একজন ম্যাজিস্ট্রেট সেটি তদন্ত করে দেখেন। ঐ প্রতিবেদনে বিস্তারিত দেওয়া থাকে। এখানে লুকিয়ে রাখার কিছু নেই।

এদিকে সরকারি দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা মাদকবিরোধী অভিযানে বন্দুকযুদ্ধের পক্ষে বক্তব্য দিচ্ছেন। তারা তরুণ সমাজকে ধ্বংসের পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এমন কঠোর অবস্থানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।

অপরাধ নিয়ে কাজ করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের শিক্ষক সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজানও মনে করেন, বন্দুকযুদ্ধে সাময়িক ভাবে সফলতা দেখা দিলেও, পরবর্তীতে সন্ত্রাসীরা আবার মাথা চাঁড়া দিয়ে উঠে। যে কোন অপরাধ দমনে সব সময় সামাজিক আন্দোলন কার্যকারী ভূমিকা রাখে। মাদকের ক্ষেত্রেও সামাজিক আন্দোলনের  উপর জোর দেওয়া উচিত।

তবে বাদ প্রতিবাদ যাই হোক-থেমে নেই মাদকবিরোধী অভিযানে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা। র‍্যাব পুলিশ নিজেরাই ঘটনা গুলোকে 'বন্দুকযুদ্ধ' বলছেন। বুধবার (১০ জুলাই) বন্দুকযুদ্ধে দেশের চার জেলায় পাঁচজন নিহত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিহতদের শীর্ষ মাদক বিক্রেতা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।

   

বরিশালে আগুনে পুড়ে বৃদ্ধার মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বরিশাল জেলার বানারীপাড়া উপজেলার উদয়কাঠি গ্রামের এক কৃষকের বসতঘরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে আমিরুন নেছা নামের শতবর্ষী এক নারীর করুণ মৃত্যু হয়েছে। তবে কিভাবে ঘরে আগুন লেগেছে সে বিষয়ে কেউ বলতে পারছেন না। ফলে অগ্নিকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের দাবি জানিয়েছেন নিহত বৃদ্ধার স্বজন ও স্থানীয়রা।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিকালে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে উদয়কাঠি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাহাদ আহমেদ ননী জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে দশটার দিকে কৃষক মোশাররফ হোসেনের বসত ঘরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। মুহুর্তের মধ্যে ঘরের সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এসময় ঘরের মধ্যে থাকা সবাই দৌঁড়ে বের হতে পারলেও কৃষক মোশাররফ হোসেনের ১২০ বছর বয়সের মা আমিরুন নেছা আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছেন। তবে কিভাবে আগুন লেগেছে সে বিষয়ে কেউ কিছু বলতে পারছেন না।

বরিশাল বানারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাইনুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার পূর্বেই বসতঘরসহ বৃদ্ধা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ওসি আরও বলেন, অগ্নিকাণ্ডের কারণ উদঘাটনে তদন্ত চলছে।

;

থাইল্যান্ডের সঙ্গে ৫ সমঝোতা ও চুক্তি সই



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

থাইল্যান্ড ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক এবং একটি লেটার অব ইনটেন্ট বা অভিপ্রায়পত্র সই হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গভর্নমেন্ট হাউসে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বন্ধুত্ব ঐতিহাসিক, ভাষাগত এবং অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীরে প্রোথিত। আমাদের দুই দেশের মধ্যে উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক সহযোগিতার বহুমুখী ক্ষেত্রে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুই নেতা পারস্পরিক বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রাণবন্ত অর্থনীতির সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে আমরা থাইল্যান্ডকে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং গতিশীল অংশীদার হিসেবে দেখছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি থাই প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ এবং ব্যবসা সহজীকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছি। আমি থাই পক্ষকে আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই-টেক পার্কগুলোতে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগের এবং বিশেষভাবে একটি এসইজেড এই সুযোগ নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) ছয় দিনের সরকারি সফরে থাইল্যান্ডে গেছেন।

দুই পক্ষ ২০২৪ সালের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুই দেশের বাণিজ্য মন্ত্রীরা এই বিষয়ে একটি আগ্রহপত্রে সই করেছেন।

থাই এবং বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের মধ্যে সহজ যোগাযোগের সুবিধার্থে ঢাকা এবং ব্যাংকক অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি সংক্রান্ত চুক্তিতে সই করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে ইতোমধ্যে কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের জন্য একটি চুক্তি রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য থাইল্যান্ড জ্বালানি সহযোগিতায় নিয়োজিত একটি সম্ভাব্য অংশীদার। জ্বালানি সহযোগিতার সম্ভাবনা অনুসন্ধান করতে, শক্তি সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর এখানে স্বাক্ষরিত দ্বিতীয় নথি।

শুল্ক সংক্রান্ত বিষয়ে সহযোগিতা ও পারস্পরিক সহায়তার বিষয়ে তৃতীয় সমঝোতা স্মারকটি সই হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, থাই জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং সেরা পর্যটন অনুশীলন থেকে উপকৃত হওয়ার জন্য আমরা পর্যটন ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই করেছি।

তিনি বলেন, জনগণের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দুই পক্ষ কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ খাতে সহযোগিতার সম্ভাবনা অনুসন্ধান করেছে।

সামুদ্রিক যোগাযোগের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, রানং বন্দর ও চট্টগ্রাম বন্দরের মধ্যে সরাসরি জাহাজ চলাচল নিয়ে দুই পক্ষ আলোচনা করেছে। থাইল্যান্ডের ফ্ল্যাাগশিপ ‘ল্যান্ডব্রিজ প্রকল্প’ বাংলাদেশ অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে অনুসরন করছে।

 

;

বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতে থাই বিনিয়োগ চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশেষ অর্থনৈতিক খাত, হাসপাতাল ও চিকিৎসা খাতে থাইল্যান্ডকে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশি স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি থাই প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসা খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা পরীক্ষা করে দেখারও প্রস্তাব দিয়েছি।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গভর্নমেন্ট হাউসে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।

দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ও একান্ত বৈঠকের পর দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পাঁচটি দ্বিপাক্ষিক নথি-একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক এবং একটি আগ্রহপত্র সই হয়।

বাংলাদেশ একটি নিকট প্রতিবেশী হিসেবে থাইল্যান্ডের সাথে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের বন্ধুত্ব ঐতিহাসিক, ভাষাগত এবং অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীরে প্রোথিত। আমাদের দুই দেশের মধ্যে উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক সহযোগিতার বহুমুখী ক্ষেত্রে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুই নেতা পারস্পরিক বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রাণবন্ত অর্থনীতির সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে আমরা থাইল্যান্ডকে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং গতিশীল অংশীদার হিসেবে দেখছি।

বাণিজ্য সহযোগিতার বিষয়ে তারা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের বর্তমান পরিধি বাড়ানোর জন্য দীর্ঘ পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং শক্তিশালি দ্বিমুখী প্রবৃদ্ধি অর্জনে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি থাই প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ এবং ব্যবসা সহজীকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছি। আমি থাই পক্ষকে আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই-টেক পার্কগুলোতে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগের এবং বিশেষভাবে একটি এসইজেড এই সুযোগ নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছি।

দুই পক্ষ ২০২৪ সালের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুই দেশের বাণিজ্য মন্ত্রীরা এই বিষয়ে একটি আগ্রহপত্রে সই করেছেন।

থাই এবং বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের মধ্যে সহজ যোগাযোগের সুবিধার্থে ঢাকা এবং ব্যাংকক অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি সংক্রান্ত চুক্তিতে সই করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে ইতোমধ্যে কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের জন্য একটি চুক্তি রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য থাইল্যান্ড জ্বালানি সহযোগিতায় নিয়োজিত একটি সম্ভাব্য অংশীদার। জ্বালানি সহযোগিতার সম্ভাবনা অনুসন্ধান করতে, শক্তি সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর এখানে স্বাক্ষরিত দ্বিতীয় নথি।

শুল্ক সংক্রান্ত বিষয়ে সহযোগিতা ও পারস্পরিক সহায়তার বিষয়ে তৃতীয় সমঝোতা স্মারকটি সই হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, থাই জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং সেরা পর্যটন অনুশীলন থেকে উপকৃত হওয়ার জন্য আমরা পর্যটন ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই করেছি।

তিনি বলেন, জনগণের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দুই পক্ষ কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ খাতে সহযোগিতার সম্ভাবনা অনুসন্ধান করেছে।

সামুদ্রিক যোগাযোগের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, রানং বন্দর ও চট্টগ্রাম বন্দরের মধ্যে সরাসরি জাহাজ চলাচল নিয়ে দুই পক্ষ আলোচনা করেছে। থাইল্যান্ডের ফ্ল্যাাগশিপ ‘ল্যান্ডব্রিজ প্রকল্প’ বাংলাদেশ অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে অনুসরন করছে।

তিনি বলেন, আমি থাই পক্ষকে দুই দেশের মধ্যে বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বিশেষ করে কৃষি, মৎস্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছি।

দুই প্রধানমন্ত্রী বিমসটেক কাঠামোর আওতায় আঞ্চলিক সহযোগিতা প্রক্রিয়া নিয়েও আলোচনা করেছেন। চলতি বছরের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া শীর্ষ সম্মেলনে বর্তমান সভাপতি ও আয়োজক হিসেবে থাইল্যান্ড বাংলাদেশের কাছে সভাপতিত্ব হস্তান্তর করবে।

তিনি বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, বিমসটেক মোট ১৮০ কোটি জনসংখ্যার আঞ্চলিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি। রোহিঙ্গা সংকটের একটি স্থায়ী সমাধানে বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের সমর্থন চেয়েছে।

তিনি দুই দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সফরের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন।

এ সময় শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনকে বাংলাদেশে সফরের আমন্ত্রণ জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) ছয় দিনের সরকারি সফরে থাইল্যান্ডে গেছেন।

সূত্র- বাসস

;

টাঙ্গাইলে ছুরিকাঘাতে কিশোর নিহত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, টাঙ্গাইল
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার গোসাই জোয়াইর এলাকায় ছুরিকাঘাতে মো. সাইম (১৪) নামে এক কিশোর নিহত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাতে সদর উপজেলার ঘারিন্দা ইউনিয়নের রানাগাছা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যার দিকে বাড়ির পাশে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয় সাইম। পরে তার বন্ধুরা সাইমকে ধরাধরি করে বাড়িতে নিয়ে আসে। এসময় সাইমের মা ছেলের কি হয়েছে জানতে চাইলে তারা বলে মাচায় (বাঁশ দিয়ে তৈরি বসার স্থান) থেকে পড়ে গিয়ে ব্যথা পেয়েছে। পরে সাইমের মাথায় পানি ঢালতে গিয়ে স্বজনরা দেখে তার বুক থেকে রক্ত বের হচ্ছে। পরে তাড়াতাড়ি টাঙ্গাইল ২৫০ শয্যার হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাইমকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘারিন্দা ইউনিয়নের মেম্বার সাদ্দাম হোসেন বলেন, খবর পেয়ে আমি দ্রুত সাইমকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলি।

টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শরফুদ্দীন বলেন, সাইম সারা দিন রোজা ছিলো। ওর বন্ধুর ডাকে সাইমরা চার বন্ধু ওই গ্রামের ওবায়দুল পাগলার বাড়িতে যান। ওবায়দুল পাগলার বাবার সাথে তাদের কোন এক বন্ধুর পরিবারের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ ছিলো। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ওবায়দুল ছুরিকাঘাত করে। তখনই সাইমের মৃত্যু হয়। পরে ওবায়দুল পাগলাকে পালিয়ে যেতে দেখে স্থানীয়রা। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

;