দুই বাসের রেষারেষিতে ঘরে ফেরা হলো না দিয়া-করিমের



সাব্বির আহমেদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা: দুপুর সাড়ে ১২টা। ক্যান্টনমেন্ট রমিজ উদ্দিন কলেজের ছুটি। দলে দলে বাসায় ফিরছে শিক্ষার্থীরা। সহপাটিদের সঙ্গে দিয়া ও করিমও ফিরছিলেন ঘরে। ফুটপাত দিয়ে হেঁটে কালসী থেকে নামা ফ্লাইওভারের গোড়ায় দাঁড়িয়ে তারা। অপেক্ষা ছিলো বাসের। এর মধ্যে জাবালে নূর ও নূরে মক্কা মিরপুর কালসী থেকে অসুস্থ প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়ে ফ্লাইওভার থেকে নামতে থাকে।

দুই বাসের রেষারেষিতে শিক্ষার্থীদের উপর এসে পড়ে জাবালে নূর। এতে দাঁড়িয়ে থাকা প্রায় ১৬ জন শিক্ষার্থী বাসার চাকায় পিষ্ট হয়। অনেকেই আহত হলেও  এদের মধ্যে ঘরে ফেরা হয়নি  দিয়া আর করিমের।  

/uploads/files/jhKb1Lqxz4pO3i6VqWMQoivAlD3ZnLDDp5p31UtP.jpeg

রোদ থেকে বাঁচার জন্য দিয়ার হাতে হয়ত তার মা দিয়েছিল বাহারি রঙের ছাতা। ফ্লাইওভারে গা ঘেষে দিয়ার পিষ্ট দেহের সঙ্গে তার মায়ের দেওয়া সেই ছাতাটাও পড়ে ছিল। আর দিয়ার অদূরেই সুর্দশন তরুণ করিমের নাড়িভুঁড়ি বের হওয়া লাশ।

দৃশ্যটি বিমানবন্দর সড়কের দুপুরে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক দুর্ঘটনার। ঘটনাস্থলের মাত্র ৫০ হাত ধরে যাত্রী ছাউনিতে দাঁড়ানো ছিলেন মামুন নামে একজন প্রাইভেটকার চালক। প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে বার্তা২৪কে ঘটনার বর্ণনা দেন।

/uploads/files/O09THp8wl0kcQDE2rwaqGNAuaqvsvUCs01t2zCJW.jpeg

মামুনের ভাষ্যে, শিক্ষার্থীরা ফ্লাইওভারের গোড়া পার হয়ে রাস্তার ঠিক সাইডে কুর্মিটোলা হাসপাতালের দেওয়াল ঘেষে দাঁড়িয়ে ছিল। আর কালসী থেকে ফ্লাইওভার হয়ে নূরে মক্কা ও জাবালে নূর দুই বাস একসঙ্গে নামার প্রতিযোগিতায় ছিল। দুই সিটিং বাস কয়েকবার ঘেষাঘেষি করে ধাক্কাও খায়। এক পর্যায়ে দেওয়াল ঘেষে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের পিষে নিয়ে যায় জাবালে নূর। দুই বাসের গতি এত বেশি ছিলো যে দেওয়াল ঘেষে থাকা একটি গাছ উপড়ে ফেলে।

এই প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বাসের ধাক্কায় শিক্ষার্থীদের একজনের নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে যায়। আরেকজনের মাথা থেতলে যায়। দুজনই ঘটনাস্থলে নিথর হয়ে পড়ে থাকে। সঙ্গে সঙ্গে পাশ্ববর্তী হাসপাতালে নেওয়া হলেও  ডাক্তার তাদের  মৃত ঘোষণা করে।

/uploads/files/2c91FexsZTInZs4SFKVZiWUmcwuGePZ8SlhnK4hB.jpeg

নিহত দুইজন রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী। এর মধ্যে দিয়া খানম এইচএসসি‘র প্রথমবর্ষের মানবিকের শিক্ষার্থী ও করিম দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

কুর্মিটোলা হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ছগির উদ্দিন জানান, নিহত দুইজনসহ ১৪ জন আহত শিক্ষার্থীকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে আনা হয়। এর মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক ও নয় জনকে তাৎক্ষণিক সিএমএইচ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ঘটনার পর পর রমিজ উদ্দিন কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। তারা ফ্লাইওভার দিয়ে আসা প্রায় ১২টি বাসে ভাংচুর চালায়। এরমধ্যে ৩টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এ দুটিসহ ৮টি বাস ঘটনাস্থলে ব্যাপক ভাংচুরের শিকার হয়।

ক্যান্টনমেন্ট থানা পুলিশ জানায়, নূরে মক্কা (ঢাকা মেট্রো ব -৭৬৫৭) আর জাবালে নূর (ঢাকা মেট্রো ব-৯২৯৭) বাস অনিয়ন্ত্রিত গতিতে রেষারেষি করে শিক্ষার্থীদের চাপা দেয়। দুটি বাসকে ঘটনাস্থলে পাওয়া গেছে।

/uploads/files/On6HObZu8AUZ8DgSk77VyGqgeciz0lmqSO9AIQ5g.jpeg

সরজিমনে দেখা যায়, ঘটনাস্থলে শিক্ষার্থীদের ছোপ ছোপ রক্তের দাগ পড়ে রয়েছে। আর ঘাতক বাসটি উপড়ে ফেলা গাছের সঙ্গে লাগানো অবস্থায় আছে।

কুর্মিটোলা হাসপাতালের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার শেখ মুজিবুর রহমান জানান, আহতদের মধ্যে গুরুতর দু’জনকে সিএমএইচ-এ নেওয়া হয়েছে। নিহত দুজনের লাশ কুর্মিটোলা হাসাপাতালে নেওয়া হয়েছে। তাদেরর পরিচয় পাওয়া গেছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নিহত দিয়ার বন্ধু সাব্বির ইসলাম জোজো জানায়, মিরপুর থেকে কালসী ফ্লাইওভারে জাবালের নুর এবং নুর এ মক্কা বাস রেষারষি করে বিমানবন্দর সড়কে নামার পথে তাদের চাপা দেয়।

নিহত করিমের বাড়ি নোয়াখালির হাতিয়া, এবং দিয়া খানম মিমের বাড়ি নোয়াখালি জেলার দক্ষিণপাড়া বলে জানা যায়।

এদিকে দুপুর ১ টা থেকে ৩টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা কিছুক্ষণ পর পর সড়ক অবরোধ করে রাখে। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ভাংচুর করে বসুমতি, পারিস্থান, জাবালে নূর, প্রজাপতি, নূরে মক্কা বাসগুলো।

 

   

ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগের বিধান রেখে বিল পাসের সুপারিশ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

স্থানীয় সরকারের ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) প্রশাসক নিয়োগের বিধান রেখে বিল পাসের সুপারিশ করেছে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটির পক্ষ থেকে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে এসংক্রান্ত সুপারিশসহ বিলের উপর প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (৮মে) রাতে ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে অধিবেশনে বিল উপর প্রতিবেদন উত্থাপন করেন সংসদীয় কমিটির সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম।

সংসদে উপস্থাপিত বিলে বলা হয়েছে, ‘স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ৬১ নং আইন), অতঃপর উক্ত আইন বলে উল্লিখিত, এর সর্বত্র উল্লিখিত ‘সচিব’ শব্দের পরিবর্তে ‘ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তা’ শব্দসমূহ এবং ‘সচিবের’ শব্দের পরিবর্তে ‘ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তার’ শব্দসমূহ প্রতিস্থাপিত হবে।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহকে আর্থিকভাবে শক্তিশালীকরণ, সরকার প্রদত্ত বরাদ্দের উপর নির্ভরশীলতা কমানোর উপায় নির্ধারণ এবং ইউনিয়ন পরিষদ আইনকে আরো যুগোপযোগী ও সেবা সহজীকরণের লক্ষ্যে ‘স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) (সংশোধন) আইন-২০২৪’ সংশোধনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সম্মানী প্রদানের বিধান যুক্ত করা হয়েছে। ইহার মাধ্যমে কোনো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বরখাস্তকালীন সময়ে ভাতা প্রদানের বিষয়ে কোনো আইনগত জটিলতা থাকিবে না।

এতে আরো বলা হয়েছে, কোনো এলাকাকে ইউনিয়ন ঘোষণা বা পরিষদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য সরকার একজন উপযুক্ত কর্মকর্তা বা উপযুক্ত ব্যক্তিকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করবে। গ্রাম আদালত পরিচালনা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারের অর্পিত দায়িত্ব পালন ও প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ ইউনিয়ন পরিষদের কার্যাবলীর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হলে গ্রাম আদালতের কার্যক্রমকে আরো বিস্তৃত ও কার্যকর হবে। এছাড়া বিলে ‘ইউনিয়ন পরিষদ সচিব’ নাম পরিবর্তন করে ‘ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তা’ করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে।

;

দাগনভূঞায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মো. আরাফাত (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার (০৭ মে) রাত নয়টার দিকে সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ আলীপুর (৫ নম্বর ওয়ার্ড) এর আজিজ উল্যাহ হাফেজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

বুধবার (৮মে) বুধবার বিকালে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

নিহত আরাফাত একই এলাকার আমির উদ্দিন মোল্লা বাড়ির মো. লোকমান হোসেনের ছেলে। সে রাজমিস্ত্রীর সহকারী হিসেবে কাজ করত। তিন ভাইয়ের মধ্যে নিহত আরাফাত সবার ছোট।

স্থানীয়রা জানান, ওইদিন রাত নয়টার দিকে আরাফাত তার ভাইসহ ওই গ্রামের আজিজ উল্যাহ হাফেজের বাড়ি নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ের কাজ করতে গিয়ে অসাবধানতাবশত বৈদ্যুতিক মোটরের সুইস দিতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আরাফাতকে মৃত ঘোষণা করে।

সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন স্বপন আরাফাতের মৃত্যু বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে আরাফাত নামে এক যুবকের মৃত্যুর সংবাদ শুনেছি। আমরা তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই।

;

বিএনপির নির্বাচন বর্জনের রাজনীতি আত্মহননমূলক: পররাষ্ট্রমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনের মতো বিএনপি উপজেলা নির্বাচনও বর্জনের সিদ্ধান্তকে আত্মহননমূলক রাজনীতি বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ ড. হাছান মাহমুদ।

বুধবার (৮ মে) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিলনায়তনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকরা বিএনপির উপজেলা নির্বাচন বর্জন নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি এ কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে যারা বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত তারা দেশের সংসদ, সিটি করপোরেশন, উপজেলা এমন কি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও অংশ নিতে পারেন না। বিএনপির নেতা-কর্মীদের কাছে আমার প্রশ্ন- কোনো নির্বাচনেই যদি অংশ নিতে না পারেন, তবে আর কেন বিএনপির রাজনীতি করবেন।

উপজেলা পর্যায়ে নির্বাচন হলেও বিএনপি কেন ঢাকা শহরে লিফলেট বিতরণ করছে- এ প্রশ্নে ড. হাছান বলেন, এগুলো তাদের লোক-দেখানো কর্মসূচি। কখন যে তারা উপজেলা নির্বাচন বর্জনের লিফলেট বিতরণ করতে দূতাবাসগুলোতে চলে যায়, সেটিই দেখার বিষয়, কারণ তারা তো কথায় কথায় বিদেশি দূতাবাসে ধর্না দেয়।

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলা নিয়ে মন্তব্য চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শুধু যুক্তরাষ্ট্রে নয়, ইউরোপজুড়ে ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ নিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে, হচ্ছে। আর আমরা দেখেছি, আমাদের এখানে হিরো আলমকে বা কোনো মেয়র পদপ্রার্থীকে কেউ ঘুষি মারলেও তারা বিবৃতি দেয়, আর তাদের ওখানে বিক্ষোভ দমন করতে পুলিশ যেভাবে বলপ্রয়োগ করছে, হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হচ্ছে, শিক্ষকরাও রেহাই পাচ্ছেন না- এ নিয়ে তারা কি বলবেন সেটিই আমার প্রশ্ন।

;

সরকারের চলতি মেয়াদে ৬০ লাখ কর্মী বিদেশে পাঠানোর টার্গেট



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্তমান সরকার চলতি মেয়াদে আগামী ৫ বছরে ৬০ লাখ কর্মী বিদেশে পাঠানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে সংসদে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী।

বুধবার (৮ মে) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে সংসদ সদস্য এম. আবদুল লতিফের লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এই তথ্য জানান। এ সময় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী জানান, বঙ্গবন্ধুর কুটনৈতিক তৎপরতায় স্বাধীন বাংলাদেশে প্রাথমিকভাবে ৬ হাজার ৮৭ জন কর্মী বিদেশে পাঠানো হয়। সর্বশেষ ২০২২-২৩ সালে তা বেড়ে ১১ লাখ ২৬ হাজার ৬০ জনে উন্নীত হয়েছে। বিদেশে কর্মী প্রেরণ একটি চলমান প্রক্রিয়া। এ খাতের গুরুত্ব অপরিসীম। অধিকহারে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের জন্য নানামুখী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বের ১৭৬টি দেশে কর্মী পাঠানো হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী জানান, জনশক্তি রপ্তানীতে অসখ্য দালালচক্র দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে রয়েছে। এসব দালাল চক্র দমনের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সতর্ক রয়েছে। বিদেশগামী কর্মীরা যাতে প্রতারণার শিকার না হয় সেজন্য বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে সচেতনতামূলক বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। তাছাড়া, মন্ত্রণালয়ের পক্ষ হতে দেশের সব বিভাগ, জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে সচেতনতামূলক সভা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ চলছে। ভিসা দালাল ও মানবপাচার সংক্রান্ত কোনো গুরুতর অভিযোগ এ মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টিগোচর হলে তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাঠানো হয়।

এছাড়া প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে ২৩ সদস্যবিশিষ্ট আন্তঃমন্ত্রণালয় ভিজিলেন্স টাস্কফোর্স কমিটি (ভিটিএ) অভিযান পরিচালনা করছে। আর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকার অপরাধে জড়িত রিক্রুটিং এজেন্ট, মধ্যস্বত্ত্বভোগী ব্যক্তি ও অন্যান্য অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও অর্থ দণ্ড প্রদান করছে।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রেজাউল হক চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, কোন দেশে কত জন বৈধ কর্মী কাজ করছেন তার কোনো ডাটা বেইজ মন্ত্রণালয়ের হাতে নেই, এটা তৈরিতে কাজ চলছে। তিনি আরো জানান, বিদেশগমন ও আগমনকালে কর্মীদের সাময়িক অবস্থানের জন্য ঢাকাস্থ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সন্নিকটে ‘বঙ্গবন্ধু ওয়েজ আর্নার্স সেন্টার’ স্থাপন করা হয়েছে।

সরকারি দলের সদস্য মাহবুব উর রহমানের লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, প্রবাসে মৃত প্রতিটি কর্মীর পরিবারকে ৩ লাখ টাকা হারে আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে প্রবাসে মৃত ৬ হাজার ১৮৮ জন কর্মীর পরিবারকে ১৮৩ কোটি ৫০ লাখ ৭৭ হাজার ২৮৮ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। প্রবাসে কোনো কর্মী মারা গেলে বিমান বন্দরেই তার স্বজনের হাতে মরদেহ পরিবহন ও দাফনের জন্য ৩৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। এ বাবদ ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ৪ হাজার ১৪৩ জনকে ১৪ কোটি ৫০ লাখ ৫ হাজার টাকার চেক দেওয়া হয়েছে।

একই প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, অসুস্থ কর্মী দেশে আনা, হাসপাতালে ভর্তি এবং চিকিৎসার্থে এক লাখ টাকা পর্যন্ত আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়। ২০১২-১৩ অর্থ-বছরে ৪২৩ জন আহত ও অসুস্থ কর্মীকে ৩ কোটি ৩৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। প্রবাসে অস্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরণকারী কর্মীর মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ, বকেয়া বেতন, ইন্স্যুরেন্স ও সার্ভিস বেনিফিট আদায়ের ব্যবস্থা নেওয়া ও ওয়ারিশদের নিকট বিতরণ; ক্ষতিপূরণ, বকেয়া বেতন, ইন্স্যুরেন্স ও সার্ভিস বেনিফিট হিসেবে ২০২২-২৩ অর্থ-বছরে এক হাজার ৪৬১ জন প্রবাসী কর্মীর অনুকূলে ৯৪ কোটি ৭১ লাখ ৩১ হাজার ৮১৬ টাকা আদায় করে তাদের পরিবারকে দেওয়া হয়েছে।

;