বিক্ষোভে অচল রাজধানী!
ঢাকা: একদিকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও অন্যদিকে পরিবহন খাতের মালিক শ্রমিকদের অঘোষিত ধর্মঘটে পুরো রাজধানী হয়ে পড়েছে অচল। বাস চাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর থেকেই উত্তাল রাজধানী ঢাকা। শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনই রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে অবস্থান নিচ্ছে বিচারের দাবিতে।
কিন্তু বুধবার (১ আগস্ট) এই বিক্ষোভে নতুন মাত্রা যোগ করেছে পরিবহন মালিকরা। সকাল থেকেই পাওয়া যাচ্ছে না কোনো গণপরিবহন। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে অফিসগামী মানুষ ও শিক্ষার্থীরা। বলা হচ্ছে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা অঘোষিতভাবে ধর্মঘট পালন করছেন। মাইলের পর মাইল হাঁটছেন সাধারণ মানুষরা।
রাজধানীর শাহবাগ, ফার্মগেট, মিরপুর, নিউমার্কেট, ধানমন্ডি, কাকলী, বিমানবন্দরসড়কে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আজও সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা এসব সড়কে অবস্থান নিয়েছে। বিভিন্ন স্থানে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা পরিবহন ভাংচুরও করছেন। একদিকে শিক্ষার্থীদের অবস্থান অন্যদিকে রাস্তায় পাবলিক বাস না থাকায় অচল হয়ে পড়েছে পুরো শহর। সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে নগরীতে বের হওয়া মানুষজন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা নৌমন্ত্রীর পদত্যাগ করাসহ নানা ধরনের স্লোগান দিয়ে যাচ্ছে রাস্তায়। তাদের অন্যান্য স্লোগানগুলোর মধ্যে অন্যতম কিছু স্লোগান হলো, ‘আমার ভাই কবরে, ঘাতক কেন বাহিরে,’ ‘জাস্টিস ফর দিয়া’, ‘মা তুমি ভেবো না আমরা ঘরে ফিরবো না।’
ঢাকা পলিটেনিক ইনস্টিটিউটের তোফায়েল অাহমেদ বলেন, নৌমন্ত্রীর পদত্যাগ চাই। তার পদত্যাগ ছাড়া রাজপথ ছাড়াবে না বলেও জানান তিনি।
পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের অঘোষিত ধর্মঘটে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষ।
সাধারণ যাত্রী বলছেন, বাস চাপায় প্রতি মাসেই মানুষ মারা যাচ্ছে। সম্প্রতি আহত ছাত্র পায়েলকে হানিফ বাসের শ্রমিকরা নদীতে ফেলে দিয়ে মেরে ফেলল। রাজীব মারা গেলো। রোজিনা নিহত হলো। এতে বিন্দু বিন্দু করে ক্ষোভ জমেছিলো শিক্ষার্থীদের মনে। যার বহি:প্রকাশ হয়েছে এখন। কিন্তু বাস মালিকরা ইচ্ছা হলো আর বাস রাস্তায় নামানো বন্ধ করে দিলো এটা কি করে হতে পারে! অর্থ্যাৎ কেউ প্রতিবাদ করতে পারবে না। মানুষ পরিবহন শ্রমিকদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন।
রাজধানীর পান্থপথ সিগনাল ব্লক করে বিক্ষোভ করছে ২ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও গ্রীন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পান্থপথ সিগন্যালে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ করছে। এ ঘটনায় কলাবাগান টু কারওয়ান বাজারের এই রাস্তা টা বন্ধ হয়ে যায়। সিগন্যালে দুই পাশের রাস্তায় যানবাহন আটকে থাকতে দেখা যায়।
শিক্ষার্থী আরাফাত জানায়, তাদের পূর্ব ঘোষিত নয় দফা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের বিক্ষোভ চলবে।
ছবি: সুমন শেখ ও মেহেদি