রোববারের মধ্যে দাবির বাস্তবায়ন চায় ইলিয়াস কাঞ্চন
ঢাকা: নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি আগামী রোববার থেকে বাস্তাবায়নের কার্যক্রম শুরু করার আহ্বান জানিয়েছন নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন।
শুক্রবার (৩ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পূর্বনির্ধারিত সংগঠনটির মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্যকালে তিনি এ দাবি করেন। এসময় সংগঠনটির কেন্দ্রীয় ও আঞ্চলিক নেতৃবৃন্দ এবং এ আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বিভিন্ন সংগঠন অংশগ্রহণ করে।
মনববন্ধন থেকে পরিবহন ধর্মঘট চলছে বলে দাবি কেরন নিসচা চেয়ারম্যান। এ বিষয়ে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, একদিকে পরিবহন ধর্মঘট চলছে, অন্যদিকে ছাত্রদের বাসায় যেতে বলছেন, তাহলে কোনটা চলবে?
তিনি বলেন, ‘সড়ক পরিবহন আইন’ নামের যে আইনটি করা হচ্ছে, তার নামেই সমস্যা বলে মন্তব্য করেছেন এ চিত্র নায়ক। তার মতে, এ আইনের নাম হতে হবে‘সড়ক নিরাপত্তা ও নিরাপদ সড়ক আইন’। তা নাহলে এর মাধ্যমে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের সুবিধাই দেয়া হবে।
জানা গেছে, সড়ক পরিবহন আইনের একটি খসড়া আইন মন্ত্রণালয়ের যাচাই-বাছাইয়ের পর সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আগামী সংসদ অধিবেশনে আইনটি পাশ করা হতে পারে বলে জানয়েছেন, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, “আমাদের সন্তানরা যাতে সন্তুষ্ট হয় সে ব্যবস্থা করবেন। তাদের যে দাবিগুলো আপনারা মেনে নিয়েছন, এর প্রেক্ষিতে যে নির্দেশনা আপনার দিয়েছেন, আজকে শুক্রবার হয়তো সম্ভবনয়, শনিবারও সম্ভব হবে বলে মনে হয়না। কিন্তু রোববার থেকে যেন দেখতে পাই আপনার সেই কাজগুলোতে হাত দিয়েছেন। প্রত্যক বিভাগ যদি তাদের কর্মকাণ্ডগুলো আগামী রোববার থেকে শুরু করে দেয়, তাহলে আমার সন্তানদের উদ্দেশ্যে বলবো, তোমরা অবশ্যই ঘরে ফিরে যাবে। বাবা-মায়ের কাছে থাকবে এবং প্রয়োজনে আবার যদি এমন কোন অসুবিধা হয় তাহলে আবার তোমাদের সঙ্গে থেকে আমরা রাজপথে নামবো।”
নিসচা চেয়ারম্যান বলেন, “গত ২৪টি বছর থেকে এ নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন করে আসছি। আজ সেই আন্দোলনের দাবিতে আমার সন্তানেরা রাস্তায় নেমেছে। তারা সরকারকে যে দাবি দিয়েছে, তার যৌক্তিতা রয়েছে। আমরা এর সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত। এ দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়া সরকার মেনে নিয়েছে। এখন এর বাস্তবায়ন চাই।”
বিমানবন্দর সড়কে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর শিক্ষার্থীরা ৯ দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ চালিয়ে আসছে।
শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি- ১. বেপরোয়া চালককে ফাঁসি দিতে হবে এবং এই শাস্তি সংবিধানে সংযোজন করতে হবে। ২. নৌপরিবহনমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীদের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। ৩. শিক্ষার্থীদের চলাচলে এমইএস ফুটওভারব্রিজ বা বিকল্প নিরাপদ ব্যবস্থা নিতে হবে। ৪. প্রত্যেক সড়কের দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকায় স্পিড ব্রেকার দিতে হবে। ৫. সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্র-ছাত্রীদের দায়ভার সরকারকে নিতে হবে। ৬. শিক্ষার্থীরা বাস থামানোর সিগন্যাল দিলে থামিয়ে তাদের বাসে তুলতে হবে। ৭. শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ৮. রাস্তায় ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল এবং লাইসেন্স ছাড়া চালকদের গাড়ি চালনা বন্ধ করতে হবে। ৯. বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া যাবে না।