সাভা‌রে প্রশংসায় ভাসছে 'পুলিশ'



জাহিদুর রহমান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

 

সাভার: লাঠিপেটা বা জল কামান নয়, আন্দোলনকারীদের মাঝে মিশে গিয়েও যে নাগরিক জীবনে স্বস্তি ফেরানো যায়, সেই উদাহরণটাই ফের সামনে নিয়ে এলো ঢাকা জেলা পুলিশ।

পুলিশ জনতা, জনতাই পুলিশ- এই চেতনা নিয়ে জেলা পুলিশের এই ভূমিকা এখন প্রশংসিত হচ্ছে জেলার সর্বত্র। যে কারণে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ঢাকা - আরিচা মহাসড়কে হয়রানির শিকার হতে হয়নি কোনো সড়ক ব্যবহারকারীকে। পুলিশের সদয় আর মমতাময় ভূমিকাই সামাল দিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের।

অনেকেই বলছেন, পুলিশের এ ধরনের ভূমিকা অপ্রীতিকর পরিস্থিতিকে দ্রুত সহনীয় করতে পারে। যার জন্যে প্রয়োজন পু‌লিশ বা‌হিনীর প্রতি সঠিক নির্দেশনা।

স্থানীয় বাসিন্দা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রোকসানা জামান বলেন, 'শিক্ষার্থীদের টানা ষষ্ঠ দিনের আন্দোলনে পরিবহন চলাচল সীমিত হলেও সাভারবাসীকে স্বস্তি‌তে রেখেছে পুলিশের ভূমিকা। যার বড় কৃতিত্ব ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমান।'

শাহ মিজান শাফিউর রহমান ব‌লেন, 'কোনো উষ্কানির ফাঁদে পা দেওয়া নয়, নয় কঠোর কোনো ব্যবস্থা। সব সময় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে পরিস্থিতি 'কোমলভাবে' মোকাবিলা করার। অারও বলা হয়েছে, 'ওরা আমাদের সন্তান। সড়কে থাকা শিক্ষার্থীদের প্রতি মানবিক ও শিশুবান্ধব আচরণের বিষয়েও সচেতন করা হয়েছে। প্রথমে আমরা মনে করেছি ওরা আমাদের সন্তান। আমার টিম সেটাই দেখিয়েছে।'

তিনি অারও বলেন, 'নিরাপদ সড়কের দাবি আমাদেরও। সড়কে নিরাপত্তা দিতে গিয়ে আমাদের অনেক সদস্য সড়কে প্রাণ দিয়েছেন।আমরা সড়কে বেঘোরে কাউকে মরতে দিতে পারি না। সরকারও তাদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়েছে। কিন্তু দাবি আদায় করতে হবে শান্তিপূর্ণভাবে। নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনকে কেউ যাতে বিতর্কিত করতে না পারে, কেউ যাতে রাজনৈতিকভাবে ফায়দা নিয়ে জনজীবনে অস্বস্তি সৃষ্টি করতে না পারে- সে ব্যাপারে আমরা বেশ সজাগ।'

পুলিশ সুপারের এই বক্তব্যের সত্যতা মেলে সাভারের সড়কে। সেখানে শিক্ষার্থীদের মিছিলের মাঝে ঢুকে কাঁধে হাত রেখে হাঁটতে দেখা যায় সাভার মডেল থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) ফরহাদুজ্জামান ভূইয়াকে। এসময় তা‌দের বাড়াবাড়ি না করে অসহিংস আন্দোলন বজায় রাখার ব্যাপারে সচেষ্ট দেখা যায়।

মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পুলিশের ৩৪ ব্যাচের কর্মকর্তার এক‌টি ছবি এখন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ভাইরাল। জুয়েল নামে এক ব্য‌ক্তি তার ফেসবুক ওয়া‌লে এই ছবিটি শেয়ার করে লিখেছেন, 'সাভারের মতো শান্তির জায়গা আর কোথাও আছে? এখানে পুলিশ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ তো করছেই না, বরং তাদের হাতে হাত মিলিয়ে শা‌ন্তিপূর্ণভা‌বে অান্দোলন চালিয়ে য‌ওয়ার পরামর্শ দি‌চ্ছেন। সাভারের পুলিশ প্রশাসনকে দেখে সারা দেশের পুলিশদের শিক্ষা নেওয়া উচিত।'

এসআই ফরহাদুজ্জামান ভূঁইয়া ব‌লেন, 'আমি ডিউটিতে ছিলাম। আমাদের প্রতি ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমান স্যারের নির্দেশনা ছিল, ওদের অনুভূতিকে আগে সন্মান দেওয়া। আবার দেখতে হবে কোমলমতি এই শিক্ষার্থীদের অনুভূতিকে ব্যবহার করে কেউ যাতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃ‌ষ্টি করতে না পারে। স্যারের নির্দেশ মেনে আমরা কাজ করছি।কখন কে ছবি তুলেছে তাও খেয়াল করিনি।ছবিটি  ফেসবুকে ভাইরাল হবে- এটাও ভাবি নি।'

   

কুবিতে শিক্ষকদের মৌন মানববন্ধন



কুবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
কুবিতে শিক্ষকদের মৌন মানববন্ধন

কুবিতে শিক্ষকদের মৌন মানববন্ধন

  • Font increase
  • Font Decrease

সাম্প্রতিক সময়ের বিভিন্ন ঘটনার প্রতিবাদে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা মৌন মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।

রোববার (১২ মে) বিকাল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই মৌন মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা।

মৌন মানববন্ধনে শিক্ষকরা 'প্রতিবাদের ভাষা হোক বুদ্ধিবৃত্তিক ও রুচিবোধের পরিচায়ক', 'শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি নিরসনে সকলে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করুন', 'গবেষণার প্রণোদনা অব্যাহত থাকুক', 'শিক্ষা ও গবেষণার পথ সুপ্রসন্ন হোক, 'অপরাজনীতি বন্ধ হোক' , 'সেশনজট মুক্ত ও শান্তিময় ক্যাম্পাস আমাদের কাম্য', '২৮ এপ্রিল ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক', 'শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্পর্ক হোক সৌহার্দপূর্ণ ও সম্মানের', 'তালা সংস্কৃতির অবসান হোক', 'প্রাণের কুবিতে তালা সংস্কৃতির এটাই হোক শেষ চর্চা', 'দাবি আদায়ে শিক্ষার্থীরা জিম্মি কেন', 'এগিয়ে যাবে সবসময়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়', 'মানসম্পন্ন শিক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমে লিডিং বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকুক' লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে দাঁড়ান।

এই মৌন মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন- লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. রশিদুল ইসলাম শেখ, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোসা. শামসুন্নাহার, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. বনানী বিশ্বাস, অধ্যাপক ড. মুহম্মদ হাবিবুর রহমান, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামাল হোসাইন, ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শারমিন সুলতানা, ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. জাহিদ হাসান, একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুহাম্মদ সজীব রহমান, মার্কেটিং বিভাগের প্রভাষক আবু ওবায়দা রাহিদ, আইসিটি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আমেনা বেগম, আইসিটি বিভাগের প্রভাষক কাশমি সুলতানাসহ আরও অনেকে।

উল্লেখ্য, গত ২৮ এপ্রিল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কার্যালয়ে প্রবেশে বাধা প্রদানের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-উপাচার্য ও ছাত্রলীগের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়। এরপর শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দরা মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি, উপাচার্যের কুশপুত্তলিকা ঝুলানোসহ নানা কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে উপাচার্য-কোষাধ্যক্ষের পদত্যাগ চেয়ে।

;

রাজশাহীতে কোরবানির জন্য প্রস্তুত সাড়ে ৪ লাখ পশু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসবগুলোর একটি ঈদ-উল-আযহা। ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে কোরবানির জন্য এ বছর রাজশাহী অঞ্চল থেকে ৪ লাখ ৬৬ হাজার ১৯৬টি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

এ অঞ্চলের গরু ও ছাগল পালনকারীরা জানিয়েছেন, এ বছর তাদের পশু সংখ্যা চাহিদার চেয়েও বেশি হয়েছে। এসব পশু রাজশাহীর পাশাপাশি অন্যান্য জেলাগুলির চাহিদাও মেটাতে পারে। তবে বর্তমান রাজনৈতিক প্রচার ও গরমের প্রকোপে জনজীবন কষ্ট পাচ্ছে, যার প্রভাবে পশুর হাটগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতার উপস্থিতি কম হচ্ছে। এ বছর রাজশাহীর কৃষকরা বিশেষ যত্ন নিয়ে পশুগুলোকে লালন-পালন করেছেন।

জানা গেছে, কোরবানিকে কেন্দ্র করে পশুর মালিক, ব্যবসায়ী ও কোরবানি দাতাদের মধ্যে হিসাব-নিকাশ শুরু হয়ে গেছে। সাপ্তাহিক হাট, পাড়া-মহল্লায় গরু ব্যবসায়ীদের আনাগোনাও বেড়েছে। শুধু তাই নয়, একটু কম দামের আশায় আগে থেকে অনেকেই পশুর বায়না করে রাখছেন। তবে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের দাবি-পশু খাদ্যের দামের প্রভাব পড়বে গরুর হাটে।

রাজশাহী প্রাণিসম্পদ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর এখন পর্যন্ত কোরবানির জন্য পশু প্রস্তুত রয়েছে ৪ লাখ ৬৬ হাজার ১৯৬টি। এর মধ্যে গরু রয়েছে ৮৩ হাজার ৩৬৫টি, মহিষ রয়েছে ৩ হাজার ৭৬৯টি ও ছাগল রয়েছে ৩ লাখ ৪২ হাজার ৭৫৩টি। তবে সংশ্লিষ্টদের দাবি, প্রতিবছরের ন্যায় এবারও স্থানীয় চাহিদার তুলনায় পশু বেশি রয়েছে।

খামারিরা জানান, তারা নিয়মিত ভেটেরিনারি পরিষেবা, সঠিক খাদ্য ও যত্নের মাধ্যমে পশুগুলিকে সুস্থ রাখার চেষ্টা করেছেন। এই উদ্যোগ কোরবানির পশুর মান উন্নত করতে এবং ক্রেতাদের মন জয় করতে সাহায্য করেছে।

নগরীর বুধপাড়া এলাকার বাসিন্দা সাইদুল ইসলাম প্রতিবছর নিজ বাড়িতে দুই থেকে তিনটি ষাঁড় পালন করের ঈদুল আজহায় বিক্রির জন্য। তিনি জানান, এবার দুটি ষাঁড় পালন করেছেন। দুই বছর আগে দেড় লাখ টাকায় গরু দুটি কিনেছিলেন। গত ঈদে বিক্রি না করে এবার বিক্রি করার অপেক্ষায় আছেন। একেকটা ষাড়ের দাম প্রায় আড়াই লাখ টাকা করে হতে। এখনো বাজার জমে না ওঠায় বিক্রির জন্য নেয়া হয়নি হাটে।

রাজশাহী সপুরা অ্যাগ্রো ফার্মের মালিক আব্দুস সালাম বলেন, গবাদি পশুর খাবারের দাম প্রতি মাসেই বাড়ছে। বাড়তি খরচে কৃষকদের উপর চাপ সৃষ্টি করছে। ইতোমধ্যে আবহাওয়া এবং বাজারের অনিশ্চয়তার সঙ্গে লড়াই করে যাচ্ছেন অনেকেই। মানুষ দেশি পশু কোরবানি করতে পছন্দ করেন। কোরবানিযোগ্য পশুও পর্যাপ্ত। তাই বাইরে থেকে গরু আমদানি না করা হলে খামারিরা ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবেন। তবে আমার গরু এবার আগেই বিক্রি হয়ে গেছে ৭০টা। আর ২০টা মত আছে, এগুলোও হয়ে যাবে। দামাদামি চলছে দু’একদিনে হয়ে যাবে। এবার ভালোই দাম পেয়েছি, দেরি হলে চিন্তা বাড়ে, তাই আগেই বিক্রি করে দিয়েছে। হয়তো আর কিছুদিন থাকলে আর একটু দাম পেতাম, তবে খারাপ দাম পাইনি। গরুর দাম অনেক বাড়তি।

রাজশাহী সিটি হাটের ইজারাদার আতিকুর রহমান কালু বলেন, সপ্তাহে রোববার ও বুধবার সিটি হাট বসে। কোরবানির হাট শুরু হতে দেরি আছে। তবে কোরবানির পশু কেমন হাটে উঠছে বলা সম্ভব নয়। কোরবানির যে গরু আসার কথা তা এখনো আসেনি। হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতি বেড়েছে। ঈদের ৭ থেকে ১০ দিন আগে জমে উঠবে এই বাজার।

প্রাণী স্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তায় জোর দিয়ে, রাজশাহী অঞ্চলের কৃষি বিভাগ এবং পশু সম্পদ বিভাগ সক্রিয়ভাবে পশুর খামারগুলো নিয়মিত পরিদর্শন করেছে। তারা খামারি ও পশুপালকদের সচেতন করেছেন যেন তারা অবৈধ ঔষধ বা স্টেরয়েডের ব্যবহার এড়িয়ে চলেন।

রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জুলফিকার মো. আখতার হোসেন বলেন, রাজশাহীতে গতবারের তুলনায় কোরবানির পশুর চাহিদা বাড়েনি। কিন্তু বাড়তি প্রায় ৭০ হাজার বেশি পশু লালন-পালন হয়েছে। কোরবানির আগে এই সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে যাবে। তবে এবার উৎপাদন খরচ বেশি, তাই দামও কিছুটা বেশি হবে।

সার্বিক বিষয়ে রাজশাহী জেলা প্রশাসক (ডিসি) শামীম আহমেদ বলেন, পশুর জোগান বেশি থাকায় এবার ঈদে গবাদিপশু পালনকারী খামারি ও ক্রেতা উভয়ের জন্যই একটি ভালো পরিবেশ বজায় থাকবে। কৃষক ও খামারিরা যেন কোরবানির পশুর ন্যায্য দাম পান, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে সীমান্ত অঞ্চল দিয়ে গবাদিপশু দেশে প্রবেশ রোধে বিশেষ নজর দিতে বিজিবির প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

;

ঘরে উঠলো সোনালী ধান, কৃষকদের মুখে হাসি



ছাইদুর রহমান নাঈম, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪ কম, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ)
ঘরে উঠলো সোনালী ধান, কৃষকদের মুখে হাসি

ঘরে উঠলো সোনালী ধান, কৃষকদের মুখে হাসি

  • Font increase
  • Font Decrease

সব দুশ্চিন্তার অবসান হয়ে এবার হাওরের কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। একদিকে ফলন হয়েছে ভালো, অপরদিকে আবহাওয়া ভালো থাকায় এবারের ফসল ভালো ভাবে তোলা হয়েছে। এখন চলছে ধান মাড়াই এর কাজ৷ অল্প কিছু জমি বাকি রয়েছে, তাও আজ কালের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে৷ শেষ সময়ে আবহাওয়া কিছুটা বিরূপ থাকলেও তা বড় ধরনের কোন সমস্যার সৃষ্টি করেনি। ফলে কৃষকরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন৷

কিশোরগঞ্জের হাওর অঞ্চল সহ সবখানেই এখন ধান শুকানোর ধুম। নাওয়া খাওয়া ভুলে এখন চলছে ধান ঘরে তোলার চেষ্টা৷ আবহাওয়া ভালো থাকায় এবছর ফলন হয়েছে ভালো। এরিমধ্যে ৯৬ ভাগ ধান কাটা শেষ৷ বাকিগুলো কয়েকদিনের মধ্যে কাটা শেষ হবে। এখন চলছে পুরোদমে ধান মাড়াই এর কাজ৷ রোদের আসায় রাস্তায় চলছে ধান মাড়াই৷ হাওর এলাকার রাস্তা, স্কুল, বাড়ির বারান্দায়, মাঠে এখন ধান শুকানোর কাজ চলছে। বাতাশে ধানের মিষ্টি ঘ্রাণ ছড়াচ্ছে৷ পরিবারের সবাই এখন শ্রমিক হয়ে কাজ করছে।

কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, চলতি বছর জেলায় ১ লাখ ৬৭ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে ১ লাখ ৪ হাজার হেক্টর আবাদ হয়েছে হাওরে। এতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১২ লাখ ৫৩ হাজার ৬২৫ টন ধান। যা বিক্রি হবে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকায়।

হাওরাঞ্চলে বোরো মৌসুমের ধান কাটা-মাড়াইয়ের শেষদিকে উৎসব মুখর পরিবেশে এখন সেই ধান রাত জেগে সিদ্ধ করে সকাল থেকে শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক কৃষাণীরা। রাত-দিন পরিশ্রমের পরেও কোন ক্লান্তি নেই তাদের। উৎপাদিত ফসলের বাম্পার ফলন ও দাম আশানুরূপ হওয়ায় খুশি কৃষকরা।

নিকলী মজলিশপুরের কৃষক আলী আহাদ বলেন, দুদিন আগেও দে চিন্তা ছিলো, এখন তা নাই। স্বপ্নের ধান এখন হাতে চলে আইলো৷ আর কয়ডা দিন রোদ থাহলে সব ধান ঘরে নিয়ে আসতে পারবাম।'

কটিয়াদী গচিহাটার কৃষক মরম মিয়া বলেন, বাড়ির সবাই মিইল্লা ধান কাডাত নামছি৷ শেষমেশ ধান কাডা শেষ হয়লো৷ রাত কি দিন এক মনে কইরা কাম করছি। এহন আর চিন্তা নাই।'


কৃষকরা পুরো সড়কে ধান শুকানোর জন্য বাড়ি থেকে সিদ্ধ ধান বস্তায় বড়ে বাইসাইকেলে করে এনে রাস্তার উপর ঢালছেন। আর কৃষাণীরা সে ধান পা দিয়ে আলগা করে দিচ্ছেন। তিব্র গরমে তাপপ্রবাহ রোদে সোনালী ধানে পা দিচ্ছেন কৃষাণীরা। অনেকেই হাট-বাজারে বিক্রির পাশাপাশি বাড়ি থেকেও বিক্রি করছেন তাদের উৎপাদিত ফসল।

জেলার ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম ও নিকলী হাওর ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন সড়ক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও খেলার মাঠ দখল করে ধান শুকানোর ধুম পড়েছে। প্রচণ্ড রোদেও নেই কৃষক কৃষাণীদের কোনো ক্লান্তি বরং ধান শুকাতে পেরে স্বস্তির হাসি দেখা দিয়েছে তাদের  চোখে-মুখে। ধান ও খড় শুকানোর কাজে খুবই ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। সকাল থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত ধান শুকানোর কাজ করছেন তাঁরা। দ্রুত ধান শুকাতে মাঠের ঘাসের ওপর বিছানো হয়েছে ছোট-বড় পলিথিন। আর সেই পলিথিনে শুকানো হচ্ছে ধান। কেউ ধান উল্টিয়ে দিচ্ছেন, কেউ ধানের আবর্জনা পরিষ্কার করছেন। অনেকেই তাদের উৎপাদিত ফসল রোদে শুকিয়ে হাটে তোলার প্রস্ততি নিচ্ছেন। সবমিলিয়ে প্রখর রোদ আর বৃষ্টির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে ধান ঘরে তোলা ও বাজার জাত করার কাজ। অবসর নেই কারও। অস্বস্তির রোদই যেন তাঁদের স্বস্তি এনে দিয়েছে।

এ বছর কিশোরগঞ্জের ইটনা, অষ্টগ্রাম, মিঠামইন হাওরসহ নিকলী, বাজিতপুর, তাড়াইল, করিমগঞ্জ, কটিয়াদী এবং উজান এলাকার অন্যান্য উপজেলায়ও বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। ধানের দামও ভালো। মাড়াইস্থলে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে সাড়ে আটশ থেকে সাড়ে নয়শ টাকায়।

কিশোরগঞ্জের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুস সাত্তার বলেন, ধান কাটা প্রায় শেষ। এবছর আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলন ভালো হয়েছে৷ তাই স্বাভাবিকভাবেই কৃষকরা খুশি।

;

৬৯ হাজার রোহিঙ্গা পাসপোর্ট নবায়নে সৌদির তাগিদ: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীনের পর বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে যাওয়া ৬৯ হাজার রোহিঙ্গা নাগরিকের পাসপোর্ট নবায়ন করতে তাগিদ দিয়েছে সৌদি সরকার বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

রোববার (১২ মে) দুপুরে রাজধানীর নিকুঞ্জে হোটেল লা মেরিডিয়ানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সৌদি আরবের উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে এ বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা নাগরিকদের পাসপোর্ট নবায়নের বিষয়ে সাংবাদিকদের সৌদি সরকারের তাগিদের কথা জানান। এসময় তিনি বলেন, বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে ১৯৭৪ সালের দিকে সৌদি আরবে যাওয়া ৬৯ হাজার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পাসপোর্ট নবায়ন করবে বাংলাদেশ।

এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সৌদি সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের একটি চুক্তি হয়েছিল। কারণ, ১৯৭৪ সালের পর ৬৯ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশ থেকে বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে দেশটিতে যায়। নিয়ম অনুযায়ী তাদের ওই দেশে কেউ কাগজপত্র ছাড়া থাকতে পারে না। সৌদি আরবে অবস্থান করা ৬৯ হাজার রোহিঙ্গার বাংলাদেশি পাসপোর্টের নবায়ন নেই। আমাদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে ওই সব রোহিঙ্গাদের তারা বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না। আমরা রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট নবায়ন করে দিব। এ বিষয়ে আমরা স্লো যাচ্ছি কেন কিংবা আমাদের কোনো অসুবিধা আছে কি-না সেটা দেখার জন্য তারা এসেছিলেন। এছাড়াও সৌদি আরবের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আমাদের উভয় দেশের সুবিধা অসুবিধা নিয়ে আলাপ হয়েছে।

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সৌদি আরব কিন্তু ৬৯ হাজার রোহিঙ্গার কাউকে ফেরত পাঠাবে না। আবার তারা রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বও দেবে না। তবে কীভাবে থাকবে? সেজন্য তাদের কিছু ডকুমেন্টস প্রয়োজন। সে সববিষয়ে সরাসরি কথা বলতে তারা এসেছিলেন।

তিনি আরও বলেন, সৌদিতে থাকা ৬৯ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে দেশটিতে গিয়েছিল। সুতরাং আমরা শুধু তাদের পাসপোর্ট রিনিউ করে দিব। তাদের নাম-ঠিকানা পাসপোর্টে যেমন আছে তেমনি থাকবে।

সৌদি আরবের প্রতিনিধিদল উভয় দেশের মধ্যে বন্দী বিনিময় চুক্তির বিষয়ে প্রস্তাব করেছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অনেক দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দী বিনিময় চুক্তি রয়েছে। সৌদি যদি এই চুক্তি করে তবে ভাল হবে। বাংলাদেশ থেকে তাদের সিকিউরিটি গার্ডের জন্য আনসার পাঠানোর কথা বলেছি। এ বিষয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবেন।

;