বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় দৃঢ়চিত্তের ডিজিটাল বাংলাদেশ  



প্রফেসর ড. সাজ্জাদ হোসেন

  • Font increase
  • Font Decrease

শোকাবহ অগাস্ট মাসে গোটা জাতি বিনম্র শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারকে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে স্বাধীনতার বিরোধী শক্তি, যার ফলে বাঙালি জাতি এক অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হয়।

জাতি হিসাবে ঠিক কতটা ক্ষতির মুখে পড়েছিলাম আমরা সেই কাল রাতে, তা হয়তো পরিমাপ করা সম্ভব হবে না। তবে জাতির পিতার নেতৃত্ব, দূরদর্শিতা ও সাহসী পদক্ষেপের কথা সম্পর্কে চিন্তা করলে আমরা অনুধাবন করতে পারবো কেন তাকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি সম্বোধন করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী কঠিন সময়ের এক পরীক্ষিত বন্ধু রাশিয়া। যুদ্ধের সময় যখন আমেরিকার মত পরাশক্তি প্রকাশ্যে আমাদের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে, তখন ভারত ও রাশিয়ার মত বন্ধুদের সহায়তায় ও সমর্থন পেয়েছি আমরা। যুদ্ধ পরবর্তী সময়েও বাংলাদেশকে হেয় করার পরিকল্পনা ছিল আমেরিকার, যা বঙ্গবন্ধু সুকৌশলে এড়িয়ে গিয়েছেন।

বাংলাদেশে নিযুক্ত তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত ভি এফ পাপোভের সাথে এক কথোপকথনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, মার্কিন সরকারের কাছ থেকে পাঁচ বছরের জন্য মোটা অঙ্কের সাহায্যের প্রস্তাব তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন। মূলত রাজনৈতিক শর্তের শৃঙ্খলে আটকা পড়ার আশঙ্কায় তিনি মার্কিনদের সাহায্য গ্রহন করেননি। পাপোভকে বঙ্গবন্ধু আরো বলেন, “আমি প্রয়োজনে আরও তিন থেকে পাঁচ বছর দুঃখ-কষ্ট সহ্য করব। কিন্তু কোনো ধরনের রাজনৈতিক শর্তসাপেক্ষ সাহায্য নেব না।” একটি উন্নত ও স্বাবলম্বী জাতি গঠনের জন্য তার প্রত্যয় এতোটাই দৃঢ় ছিল।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/12/1534083103552.jpg

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর এক আধুনিক, স্বনির্ভর জাতি গড়ে তোলার যে স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেখেছিলেন, তা আর কেউ দেখতে সক্ষম হয়নি। এমনকি সেই সময়ের উন্নত দেশগুলোও বাংলাদেশের মাঝে কোন আশার আলো দেখতে পাননি। সদ্য স্বাধীন হওয়া যুদ্ধবিধ্বস্ত এক দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার মত দক্ষতা ছিল বঙ্গবন্ধুর মাঝে, যার ফলে হেনরি কিসিঞ্জারের ভাষায় “তলাহীন ঝুড়ির দেশ” আজ পারমাণবিক যুগে প্রবেশ করেছে, মহাশূন্যে সফলভাবে উৎক্ষেপণ করেছে নিজস্ব স্যাটেলাইট। স্বাধীনতার মাত্র ৪৭ বছরের মাঝে বাংলাদেশের এই অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত উন্নয়ন সত্যিই বিস্ময়কর।

আজকের এই উন্নয়নের জন্য বঙ্গবন্ধুর অবদান অনস্বীকার্য। পরিতাপের বিষয় এই যে, বর্তমানে আমরা যে সকল উন্নয়নের মাঝ দিয়ে যাচ্ছি তা হয়তো আরো অনেক বছর আগেই অর্জন করা সম্ভব হতো যদি বঙ্গবন্ধু আরো দীর্ঘ সময় ধরে আমাদেরকে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হতেন।

চিন্তা করলে অবাক হতে হয় যে, যুদ্ধবিধ্বস্ত এক দেশের নেতৃত্ব দেওয়ার সময় কিভাবে বঙ্গবন্ধু ভবিষ্যতের পৃথিবীকে কল্পনা করতে সক্ষম হতেন! এমন নাজুক সময়ে যখন অনেকেই ভেঙ্গে পরতেন এবং বিদেশি সাহায্যের জন্য তাকিয়ে থাকতেন, সেই সময় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার স্বনির্ভর এক জাতি গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রস্তাব দেন বাংলাদেশ যেন ভারতের আর্থ স্টেশন বা উপগ্রহ ভূকেন্দ্র ব্যবহার করে বহির্বিশ্বের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখে। তবে বঙ্গবন্ধু বিনয়ের সাথে এই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে নিজ দেশেই আর্থ স্টেশন তৈরির কাজ শুরু করেন। ১৯৭৫ সালে রাঙ্গামাটিতে উদ্বোধন করেন দেশের প্রথম আর্থ স্টেশন বেতবুনিয়া উপগ্রহ ভূকেন্দ্র।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/12/1534083125159.jpg

বিশ্বের ৫৭তম জাতি হিসাবে মহাশূন্যে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে বাংলাদেশ। জাতির পিতার নামে দেশের প্রথম স্যাটেলাইটের নামকরণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু -১। দেশের ইন্টারনেট সেবা, ডাইরেক্ট-টু-হোম ডিশ সেবাসহ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতে অবদান রাখবে দেশের প্রথম এই স্যাটেলাইট। বিদেশি স্যাটেলাইট ভাড়া করে আমাদেরকে বছরে প্রায় ১৪ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে হয়। এই বিপুল পরিমান অর্থ বাঁচানো সম্ভব হবে বঙ্গবন্ধু -১ এর মাধ্যমে।

এছাড়া অব্যবহৃত ট্রান্সপন্ডার আশেপাশের দেশগুলোকে ভাড়া দিয়ে বছরে ৫০ মিলিয়ন ডলার অর্জন করা সম্ভব। সেই সাথে বিশ্বের ৩৩তম দেশ হিসাবে পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন দেশে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। রূপপুর পারমাণবিক চুল্লি থেকে ২০২৪ সালের মাঝে জাতীয় গ্রিডে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ করা সম্ভব হবে। সবচেয়ে বড় কথা, এই স্যাটেলাইট এবং পারমাণবিক চুল্লি থেকে অর্থনৈতিক উপকার যতটা পাওয়া যাবে, তার থেকে বেশি অর্জন করা গিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্মান ও স্বীকৃতি। এই অর্জনগুলো আমাদের জাতির জন্য গৌরবোজ্জ্বল মুকুট হয়ে থাকবে এবং আমাদের তরুণ সমাজকে প্রযুক্তি নির্ভর জাতি গঠনে উদ্বুদ্ধ করবে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/12/1534083150174.jpg

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দূরদর্শী ও সাহসী পদক্ষেপের কারণে স্বাধীনতার ৪৭ বছরের মাঝে মহাকাশে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছি আমরা। রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রবেশ করেছি পারমাণবিক যুগে। মাঝখানে দীর্ঘ একটি সময় আমরা এক অন্ধকার সময় পার করেছি, যার ফলে দুর্নীতিগ্রস্থ হয়েছিল দেশের বিশাল একটি অংশ। অবশেষে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ পুনরায় দৃঢ়চিত্তের এগিয়ে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার আধুনিক রূপান্তর ডিজিটাল বাংলাদেশ।

অর্থনৈতিক দিক থেকে বাংলাদেশ এক অবিশ্বাস্য সফলতা অর্জন করেছে। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের বাজেটের পরিমান কি হারে বৃদ্ধি পেয়েছে তা পর্যবেক্ষণ করলেই আমরা দেখতে পারবো “তলাবিহীন ঝুড়ি” থেকে এক স্বনির্ভর দেশে রূপান্তরিত হওয়ার এক গল্প। ১৯৭২ সালে আমাদের প্রথম বাজেটের পরিমান ছিল মাত্র ৭৮৬ কোটি টাকা। ১৯৭৪-৭৫ অর্থবছরের বাজেট ছিল ১০৮৪.৩৭ কোটি টাকা, যা বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটের পরিমান হয়েছে ৪,০০,২৬৬ (চার লক্ষ দুইশত ছেষট্টি) কোটি টাকা।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/12/1534083284224.jpg

বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বের ফলে আধুনিক প্রযুক্তির পথে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বর্তমানে ইন্টারনেট অব থিংসের ফলে বিশ্ব প্রবেশ করতে চলেছে নতুন এক বৈপ্লবিক যুগে, যার নাম দেওয়া হয়েছে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব (4th Industrial Revolution)। উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এই প্রযুক্তিগত বিপ্লবে প্রবেশ করার জন্য বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য উত্তরসূরি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য পুত্র কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক ভিসনারি উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয় যে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন; তা থেকেই বোঝা যায় যে আমরা এখন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের আধুনিক উন্নত সোনার বাংলা গড়ে তোলার খুব কাছে চলে এসেছি।

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার কিছুদিন আগে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগের সাথে অতীতের অন্য কোন যুগের তুলনা চলে না। ফলে কৃষি সভ্যতায় পৌঁছাতে যেখানে আমাদের লেগেছে হাজার বছর, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শিল্পবিপ্লবে পৌঁছাতে লেগেছে শত বছর আর সেখানে কয়েক দশকের মাঝে আমরা চতুর্থ শিল্পবিপ্লব বা ইন্টারনেট অব থিংসের যুগে প্রবেশ করতে চলেছি।

বাঙালি অত্যন্ত পরিশ্রমী জাতি। কঠোর পরিশ্রমের ফলেই আমরা সীমাহীন বাঁধার মুখে পড়েও অর্থনৈতিক দিক থেকে বিশ্বের ৩৩ তম রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রাইস ওয়াটারহাউস কুপারসের সমীক্ষা অনুযায়ী ২০৫০ সালের মাঝে বাংলাদেশ হতে চলছে পৃথিবীর ২৩তম অর্থনৈতিক শক্তি। বর্তমান সরকারের সদিচ্ছার ফলেই এতদূর এগিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/12/1534083327318.jpg

মোবাইল প্রযুক্তির দিক থেকেও এক নতুন যুগের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। পৃথিবী যখন ফোরজি বা চতুর্থ প্রজন্মের প্রযুক্তিতে প্রবেশ করছিল তখন আমরা সবেমাত্র থ্রিজিতে প্রবেশ করেছিলাম। কিন্তু এখন অতি স্বল্প সময়ের মাঝে আমরা ফোরজি প্রযুক্তিতে প্রবেশ করে ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে ফাইভজির পথে এগিয়ে যাচ্ছি। এতো দ্রুত সময়ে এই যুগান্তকারী পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধু দৌহিত্র সজিব ওয়াজেদ জয়ের মত দূরদর্শী বিশেষজ্ঞ থাকার ফলে।

ডিজিটাল বাংলাদেশের মূল ভিত্তি হিসাবে কাজ করছে থ্রিজি ও ফোরজির মত অত্যাধুনিক দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা। দেশের ইউনিয়ন পর্যায়ে ফাইবার অপটিকসের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে গেছে, যার ফলে দেশের গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের কাছেও উন্নত বিশ্বের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠাগার উন্মুক্ত হয়ে গিয়েছে। যার ফলে শিক্ষার্থীদের কাছে আরো বেশি বিজ্ঞানমনস্ক এবং গবেষণামুখী হয়ে গড়ে ওঠার সুযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের উন্নত ইন্টারনেট সেবার মাধ্যমে আমাদের তরুণ সমাজ আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞান চর্চার মনোনিবেশ করতে পারবে, ফলে দেশ ও জাতি এক নবযুগে প্রবেশ করবে। উন্নত ইন্টারনেট সেবার মাধ্যমে যুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটবে দেশের স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষাক্ষেত্রে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/12/1534083437649.jpg

মানুষের হাতের মুঠোয় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে যাবে। ডাক্তার দেখানোর জন্য লম্বা লাইনে আর অপেক্ষা করতে হবে না, ই-মেডিসিনের মতো সেবার মাধ্যমে ঘরে বসেই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে রোগী সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন। এই উন্নয়নের ধারা বজায় রাখার লক্ষ্যে ফাইভজির মত অত্যাধুনিক প্রযুক্তির জন্য দেশকে প্রস্তুত করার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। জ্ঞানবিজ্ঞানের নতুন যুগে প্রবেশের জন্য শিক্ষার্থীদেরকে আরো বেশি গবেষণামুখী হতে হবে। আমাদের মেধাবী শিক্ষার্থীরা আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর জ্ঞানচর্চা করলে জাতি হিসাবে আমাদের উন্নয়ন কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না।

সুখি সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। জনগণের প্রাণের দাবি পদ্মা ব্রিজ ও মেট্রোরেলের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এই প্রজেক্ট দুটি সম্পন্ন হলে দেশের যাতায়াতব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন দেখা দিবে। মানুষের জীবনমানে বৈপ্লবিক উন্নয়ন দেখা দিবে। সেই সাথে সমুদ্রসীমা জয় আমাদের অন্যতম বড় অর্জন। প্রায় বাংলাদেশের সমপরিমান সমুদ্র অঞ্চল বিজয়ের ফলে সামুদ্রিক খনিজ সম্পদ আহরণ, গবেষণাসহ বিভিন্ন দিক থেকে দেশের অর্জন ও উপার্জন বৃদ্ধি করা সম্ভব।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/12/1534083412319.jpg

আধুনিক, স্বনির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের যে স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যা দেখেছিলেন তা আজ আর শুধু স্বপ্ন নয় বরং বাস্তবতা। বর্তমান সরকারের আন্তরিক সহায়তায় দেশের প্রতিভাবান তরুণ প্রজন্ম আমাদেরকে এক নতুন যুগে প্রবেশ করাতে চলেছে। এই বৈপ্লবিক উন্নয়নের পথ যেন বাধাগ্রস্থ না হয়, স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির চক্রান্তে যে এই উন্নয়নের গতি শ্লথ না হয় সেই ব্যাপারে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। অন্যথায় আমরা অন্ধকারের চোরাবালিতে নিমজ্জিত হবো। পাকিস্তানের মতো একটি পশ্চাৎপদ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবো। শোকের মাসে আমাদের অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে প্রতিজ্ঞা করতে হবে যে আমরা আমাদের গর্ব তরুণ সমাজকে সাথে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দৃঢ়চিত্তে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাকে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর উন্নত বাংলাদেশে পরিণত করবো।

প্রফেসর ড. সাজ্জাদ হোসেন, ডিপার্টমেন্ট অব কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ

 

   

ময়মনসিংহে পিকআপ চাপায় মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলায় পিকআপ ভ্যানের চাপায় আতিক রহমান (৬০) নামের এক মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আবুল মুনসুর নামে এক শিক্ষক আহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে ময়মনসিংহ -ফুলবাড়িয়া সড়কের উপজেলার দশমাইল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত আতিক রহমান উপজেলার বালিয়ান ইউনিয়নের বৈদ্যবাড়ী গ্রামের আব্দুল জব্বারের ছেলে।

ফুলবাড়িয়া থানার ইনচার্জ (ওসি) রাশেদুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ময়মনসিংহ থেকে মোটরসাইকেল করে দুইজন ফুলবাড়িয়া ফিরছিলেন।
এসময় ময়মনসিংহ-ফুলবাড়িয়া সড়কের দশমাইল এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা ময়মনসিংহগামী মাছের পোনাবাহী একটি দ্রুতগতির পিকআপ ভ্যান মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেল আরোহী আতিক রহমান মারা যান। মোটরসাইকেল চালক আবুল মুনসুর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

ওসি রাশেদুজ্জামান আরও বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। এ ঘটনায় ঘাতক পিকআপ জব্দ করা হয়েছে, তবে চালক পালিয়ে গেছে। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

;

কেসিএমসিএইচ'র সঙ্গে বেক্সিমকো এলপিজির অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষর



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কর্মীদের উন্নত স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার লক্ষ্যে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি করেছে বেক্সিমকো এলপিজি।

এই চুক্তির অধীনে, খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বেক্সিমকো এলপিজির সব কর্মীর জন্য বিশেষ ছাড়ে তাদের অন্তঃবিভাগ ও বহির্বিভাগের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করবে। এছাড়া অফিসের পরিচয় পত্র দেখিয়ে কর্মচারীদের পরিবারের সদস্যরাও বিশেষ ছাড়ে চিকিৎসা সেবার সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালটির পরিচালক ডা. মোস্তফা কামাল ও ডা. এম এ আলী। আর বেক্সিমকো এলপিজির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন বেক্সিমকো এলপিজির মংলা প্ল্যান্টের প্ল্যান্ট ম্যনেজার আবু তাহের মোহাম্মদ ফারুক, সিসিও এম মুনতাসির আলম এবং অ্যাডমিন জিএম আসাদ-উজ-জামান।

;

ভাইয়ের কাঁধে চড়ে বলীখেলা দেখল ছোট্ট দুর্জয়!



সীরাত মঞ্জুর, স্টাফ করেপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চতুর্দিকে হাজার হাজার মানুষ। চলছে ঢোলের মাতম। মাঝখানে উঁচু মঞ্চের দিকে সবার চোখ। বিপরীতে দর্শক সারিতে দেখা মিললো ভিন্ন কিছুর! ছোট্ট এক শিশুকে নিজের কাঁধে চড়িয়ে বলীখেলা দেখাচ্ছেন পঞ্চাশোর্ধ্ব নারায়ন। মূলত ছোট্ট মামাতো ভাই দুর্জয়ের ইচ্ছে পূরণ করতে তাকে কাঁধে করে বলীখেলা দেখাতে নিয়ে আসেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক জব্বরের বলীখেলার ১১৫তম আসরে।

দুর্জয়ের বয়স ৭ বছর। এবার প্রথম নয়, আগেও সে বেশ কয়েকবার এই নারায়নের কাঁধে চড়েই বলীখেলা দেখতে আসে। দুর্জয় বার্তা২৪.কমকে বলে, ‘আমি বলীখেলা দেখতে এসেছি। ভাইয়ার কাঁধে চড়ে দেখেছি। গতবারও ভাইয়া আমাকে নিয়ে এসেছেন। খুব ভাল লাগছে।’

নগরীর হাজারী গলি থেকে দুর্জয় দত্তকে নিয়ে এসেছেন ফুতাতো ভাই নারায়ণ। তিনি বলেন, ‘ও ছোট হওয়ায় একলা দেখতে আসতে পারে না। তাই, আমি ছোট ভাইকে আনন্দ দিতে এবং তার ইচ্ছে পূরণ করতে এবারও নিজের কাঁধে চড়িয়ে বলীখেলা দেখাতে নিয়ে এসেছি। আমি প্রতিবছর দুর্জয়কে নিয়ে আসি। অন্যান্য বার মঞ্চ এলাকায় ঢুকতে কষ্ট হত। পুলিশকে বলে এবার কোনো রকম অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করেছি। পুলিশ আমাদের সহযোগিতা করেছেন। তবে, এবার মঞ্চ আরেকটু উঁচু হলে দূর থেকে দেখতে সুবিধা হত।’

এবারের বলীখেলার ফাইনালে ১১ মিনিট শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ের পর স্বেচ্ছায় হার মানেন রাশেদ। বিজয়ী ঘোষণা করা হয় বাঘা শরীফকে। তাঁদের দুজনই কুমিল্লার। আর সীতাকুণ্ডের রাসেলকে হারেয়ে এবারও তৃতীয় হন খাগড়াছড়ির সৃজন বলী।

এদিন বিকেল সাড়ে চারটার দিকে নগরীর লালদীঘি বলীখেলা প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা নবীন-প্রবীন মিলে প্রায় ৮৪ জন বলী অংশ নেন। এর আগে বেলুন উড়িয়ে বলীখেলার ১১৫ তম আসর উদ্বোধন করেন অতিথিরা। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রেলপথ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ও রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। উদ্বোধক চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন। বিশেষ অতিথি বলীখেলার স্পন্সর প্রতিষ্ঠান এনএইচটি স্পোর্টস কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানসীর।

মূলত ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে দেশের যুবকদের সংগঠিত করতে ১৯০৯ সালে চট্টগ্রামের বকশীর হাটের ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর চালু করেছিলেন বলীখেলা। এরপর, ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রতি ১২ বৈশাখ চট্টগ্রাম শহরের লালদীঘি ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়েছে জব্বারের বলীখেলা। যদিও করোনা মহামারীর কারণে ২০২০-২০২১ সালে বলীখেলার আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। পরের বছর ২০২২ সাল থেকে আবার নিয়মিত অনুষ্ঠিত হচ্ছে জব্বারের বলীখেলা। এ বছর জব্বারের বলীখেলার ১১৫তম আসর বসেছে।

;

সাজেকে সড়কে নিহত ৬ জনের বাড়ি ময়মনসিংহে, এলাকায় শোকের মাতম



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাঙামাটির সাজেকের সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৯ জনের মধ্যে ৬ জনের বাড়িই ময়মনসিংহে। এদের মাঝে ৫ জন ঈশ্বরগঞ্জের ও একজন গৌরীপুর উপজেলার। নিহতরা হওয়া সবাই নির্মাণ শ্রমিক ছিলেন বলে জানা গেছে।

এর আগে বুধবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সাজেকের নব্বই ডিগ্রি এলাকায় সাজেক-উদয়পুর সীমান্ত সড়কে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।

ঘটনার সময় শ্রমিকবাহী মিনি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাহাড়ের ১০০ ফুট খাদে পড়ে ৯ জন নিহত হন। আহত হন আরো ৮ জন। এদিকে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের খবর পরিবারে এসে পৌঁছালে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

নিহতরা হলেন, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামের রিয়াছত আলী ভূইয়ার ছেলে এরশাদুল (৪২), তারুন্দিয়া ইউনিয়নের গিরিধরপুর গ্রামের শহীদুল্লাহ'র ছেলে শাহ আলম (২৮), একই ইউনিয়নের শ্রীফুরজিথর গ্রামের মো. চাঁন মিয়ার ছেলে তোফাজ্জল হোসেন (২১), মো. হেলাল উদ্দিনের ছেলে নয়ন মিয়া (২০), মো. নজরুল ইসলামের ছেলে মোহন মিয়া (১৭)। গৌরীপুর উপজেলার মইলাকান্দা এলাকার আব্দুল জব্বারের ছেলে তপু হাসান (১৭)।

এদিকে, বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মরদেহ বাড়িতে না পৌঁছালেও পরিবারে শোকের মাতম চলছে। শুধু তা-ই নয়, এমন মর্মান্তিক খবরে এলাকাতেও নেমে এসেছে শোকের ছায়া। নিহতের খবর শুনে গত রাত থেকেই আশেপাশের লোকজনসহ দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসছে মানুষজন।

তারুন্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ রানা বলেন, সাজেকের দুর্ঘটনায় নিহত ৯ জনের মধ্যে ৪ জনের বাড়ি আমার ইউনিয়নে। এই ঘটনায় আমি নিজেও খুবই মর্মাহত।

বড়হিত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আজিজুল হক ভুইয়া মিলন বলেন, আমার ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামের রিয়াছত আলী ভূইয়ার ছেলে এরশাদুল সাজেক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে। শুনেছি মরদেহ নিয়ে বাড়ির দিকে ফিরছে।

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুল ইসলাম প্রিন্স বলেন, নিহতদের দাফন-কাফনের জন্য উপজেলা প্রশাসন এবং উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে থেকে প্রতি পরিবারে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এছাড় পরবর্তীতে বিধি মোতাবেক নিহতদের পরিবারে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে'।

গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন চন্দ্র রায় বলেন, ওই সড়ক দুর্ঘটনায় মইলাকান্দা ইউনিয়নের একজন মারা গেছেন। আরেকজন আহত হয়েছেন। তাদের মরদেহ নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হয়েছেন।

;