নির্বাচনের আগেই ডিসি পদে বড় রদবদল

  • ইসমাঈল হোসাইন রাসেল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদে বড় ধরনের রদবদল হতে পারে। মূলত মেয়াদ দুই বছর অতিক্রম করায় এবং ‘পারফরম্যান্স’ ভালো না হওয়ায় কয়েকটি জেলায় নতুনদের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।

সূত্র জানিয়েছে, মাঠ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে রদবদলের প্রস্তুতি নিচ্ছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে বিভিন্ন পদের জন্য ফিটলিস্টে থাকা ২০৬ জনের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পর প্রস্তাবটি প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে মন্ত্রণালয়। তবে নির্বাচনকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়া আগেই এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে চায় মন্ত্রণালয়।

বিজ্ঞাপন

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রশাসনে রদবদল এবং কর্মকর্তাদের কর্মস্থল পরিবর্তন একটি রুটিন ওয়ার্ক। কিন্তু জাতীয় নির্বাচনের আগে ডিসি পদে রদবদল হলে তা সবার দৃষ্টি কাড়বে। কারণ ডিসিদের রিটার্নিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। আবার এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনও তাদের অবস্থান পরিস্কার করছে না। ঐতিহ্যগতভাবে ডিসিরাই সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করেন। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভিন্নতাও আছে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে চলতি বছরে দু‘দফায় ৩৩ জনকে নতুন ডিসি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। যার মধ্যে কয়েকটি জেলায় নতুন এবং কয়েকটি জেলায় রদবদল করা হয়েছে। বাকি জেলাগুলোতেও নতুন ডিসি নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সাধারণত সরকারের উপ-সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। জেলা পর্যায়ে ডিসি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন।

নতুন ডিসি নিয়োগ দেওয়া সেসব জেলায়- ঢাকা, ময়মনসিংহ, যশোর, রংপুর, চাঁদপুর, কুমিল্লা, বান্দরবান, নেত্রকোনা, সাতক্ষীরা, শরীয়তপুর, দিনাজপুর, চট্টগ্রাম, সিলেট, ঠাকুরগাঁও, রাঙ্গামাটি, কক্সবাজার, ঝিনাইদহ, ভোলা, কুড়িগ্রাম, নরসিংদী, হবিগঞ্জ, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, নোয়াখালী, মানিকগঞ্জ, ফেনী, খাগড়াছড়ি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নীলফামারী, শেরপুর, খুলনা, সুনামগঞ্জ ও বান্দরবান।

ডিসি নিয়োগের বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘ইতোমধ্যে ফিটলিস্টে থাকা ২০৬ জনের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। এখন শুধু নিয়োগের অপেক্ষা।’

তবে সঠিক কত জনকে  নতুন ডিসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে তা পরিস্কার করেন নি তিনি। তবে ডিসি পদে রদদল রুটিন কাজ বলে জানান এই কর্মকর্তা।

কবে নাগাদ নতুনদের নিয়োগ দেওয়া হতে পারে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘এ বিষয়ে সঠিকভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে শিগগিরই নিয়োগ দেওয়া হবে। আমরা ইতোমধ্যে বেশ কিছু কাজ এগিয়ে নিয়েছি।’

গত জুলাই মাসে তিনদিনব্যাপী ডিসি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে মাদকনির্মূল, সন্ত্রাসদমন, খাদ্যে ভেজাল রোধ, অনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ, সরকারি সেবা নিশ্চিত করা, বাল্যবিয়ে রোধ, সুশাসন প্রতিষ্ঠা, গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়ন, সামাজিক বৈষম্য কমানো, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নসহ ২৩টি বিষয়ে ডিসিদের নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। এমনকি আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের জন্য ডিসিদের সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এছাড়াও ওই সম্মেলনে- আইসিটি আইনের ৫৭ ধারার অপপ্রয়োগ বন্ধে আলোচনা, পশুর হাটে অস্থিরতা বন্ধে নির্দেশনা এবং নদীদখল ও দূষণরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ডিসিদের নির্দেশ দেওয়া হয়।

ডিসিরা মূলত, জেলার সাধারণ প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন এবং ম্যাজিস্ট্রেট ও কালেক্টরের দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি সরকারের বিশেষ কর্মসূচি এবং চলমান উন্নয়ন কাজ তদারকি করেন।