ফিরে যেতে রোহিঙ্গাদের নানা শর্ত

  • মুহিববুল্লাহ মুহিব, ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

কক্সবাজার: মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও স্থানীয় মগদের নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা এখন প্রায় ১২ লাখ। এসব রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে দু’দেশ ইতিমধ্যে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করেছে। এরপর কয়েকদফা দু’দেশের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এসবের মাঝে এক বছর পরে এসেও ফিরে যেতে নানান শর্ত দিচ্ছেন শঙ্কিত রোহিঙ্গারা। শঙ্কা দেখা দিয়েছে গোটা প্রত্যাবাসন কার্যক্রম নিয়েও।

ইতিমধ্যে নাগরিকত্ব প্রদানসহ নানান শর্ত দিচ্ছেন রোহিঙ্গারা। তারা বলছেন, মিয়ানমারের নাগরিকদের যে পরিচয়পত্র দেওয়া হয়। ঠিক তাদেরকেও সেই পরিচয়পত্রই দিতে হবে। অন্যথায় তারা ফিরে যাবে না।

বিজ্ঞাপন

কুতুপালং ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নারগিস বেগম বলেন, ‘আমরা এসেছি এক  বছর পার হতে চলেছে। এতোদিন পর হলেও আমরা নিজ দেশে ফিরতে চাই। তবে আমাদের কোথায় নিয়ে যাবে সেটা নিয়ে শঙ্কায় আছি। আমাদের নাগরিকত্ব দিতে হবে। ফেলে আসা জমি জমা সব ফিরিয়ে দিতে হবে।

টেকনাফের রোহিঙ্গা মাঝি জাফর আলম বলেন, ‘আমাদেরকে মংডুতে নিয়ে যেতে হবে। সেখানে আমাদের জমিসহ সব কিছুই রয়ে গেছে। আমরা আবারও এগুলো ফেরত পেলে চলে যাব।’

রোহিঙ্গা যুবক মো. ফারুক বলেন, ‘আমাদের উপর যে অত্যাচার করা হয়েছে, এসবের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় আমরা ফিরে গেলে তারা আবারও আমাদের মা-বোনের উপর নির্যাতন করার সাহস পাব।

সে আরও বলেন, ‘আমাদের জমি-জমা যাবতীয় আমরা যা হারিয়েছি, সেসব মিয়ানমার সরকার কাছ থেকে আমাদের ফিরিয়ে দিতে হবে।’

বালুখালী ক্যাম্পের রোহিঙ্গা কামাল হোসেন বলেন, ‘আমাদের সব কিছু ফিরিয়ে দিতে হবে। আর আমাদের উপর কোনো ধরনের নির্যাতন হবে না তা লিখিতভাবে বলতে হবে। তাহলে আমরা ফিরে যাব।’

তিনি বলেন, ‘অন্যথায় একবার যাব আবার নির্যাতনের মুখে চলে আসতে হবে- সেটা আমরা আর চাই না। আমরা ফিরে গেলে সবকিছু নিয়ে যাব।’

এবিষয়ে জানতে চাইলে রোহিঙ্গা প্রতিরোধ কমিটির নেতা মাহমুদুল হক চৌধুরী বার্তা ২৪.কমকে বলেন, ‘১৯৯২ সালেও এরকম একটি ফাঁদ পেতেছিল মিয়ানমার। সেইবারও রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার নামে প্রতারণা করেছে তারা। সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে সরকারকে।’

তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার প্রত্যাবাসনের নামে কোনো ধরনের পাঁয়তারা করতে যাতে না পারে, সেজন্য আন্তর্জাতিকভাবে সমঝোতার ব্যবস্থা করা উচিত সরকারের। তা না হলে মিয়ানমার ১৯৯২ সালের মতো আবার প্রতারণার আশ্রয় নেবে।’

ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম আজাদ বার্তা ২৪.কমকে বলেন, রোহিঙ্গারা যাই বলুক না কেন। তারা ফিরে যেতে চাই। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে অনেকদূরও এগিয়েছে বাংলাদেশ। তাই এতে শঙ্কার কোন কিছু নেই।