বিশ্বব্যাপী ইমেজ হারাচ্ছে বাংলালিংক ও ভিওন 

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

 

বিশ্বব্যাপী ইমেজ হারাচ্ছে বাংলালিংক ও এর মূল কোম্পানি ভিওন। মূলত ভুল ডিজিটাল রূপান্তর প্রকল্পই প্রতিষ্ঠানটিকে ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে। একটি ডিজিটাল রূপান্তর প্রকল্প ভুল হয়ে গেল কি ঘটতে পারে তার একটি জ্বলন্ত উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলালিংক ও ভিওন।   

বিজ্ঞাপন

ডিজিটাল রূপান্তর করতে গিয়ে কোম্পানিটি বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী দুই হাজার জনবল ছাঁটাই করেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশেই ছাঁটাই করা হয়েছে ৮০০ কর্মীকে। এতসব উদ্যোগ নিয়েও বছরের পর বছর বাংলালিংক বাংলাদেশে লাভের মুখও দেখছে না। আবার ভিওনের যেসব কর্তাব্যক্তিরা ডিজিটাল রূপান্তরের মাধ্যমে কোম্পানিকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে চেয়েছিল সেইসব শীর্ষ কর্তারা সম্প্রতি কোম্পানি থেকে বিদায় নিয়েছে। 

আয়ে হতাশার কারণে হাজার হাজার মানুষের চাকরি চলে যাওয়া এবং গত মার্চে সিইও’র হঠাৎ চলে যাওয়াতে অপারেটরটি (আগে যা ভিম্পেলকম নামে বেশি পরিচিত) নাটকীয় পুনর্গঠনের ঘোষণা করে। সেই সাথে তারা কোম্পানির ডিজিটাল স্ট্রাটেজি দায়িত্বে থাকা ক্রিস্টোফার শেফারসহ জৈষ্ঠ্য নির্বাহীদেরকে বিদায় করেন। 

বিজ্ঞাপন

প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পর্যায়ে এই নড়াচড়ায় কোম্পানির ইউরোএশিয়া প্রধান পিটার চেরনিশভ, ইউক্রেনের সিইও কিভিস্টার, ভিয়নের কর্পোরেট চিফ মার্ক ও পাবলিক অ্যাফেয়ার্স অফিসার ম্যাকগ্যানও বিদায় নেন।  

ভিওন বলছে, তারা শেফারের বিকল্প কাউকে খুঁজছেন, তবে তবে চেরনিশভ অথবা ম্যাকগ্যানের নয়। কোম্পানির ব্যাপক পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে এর সকল অপারেটিং ইউনিট এখন থেকে সরাসরি ভিওনের চিফ অপারেটিং অফিসার কেজেল মর্টিন জনসেনের কাছে রিপোর্ট করবেন। এছাড়া বিলাইন কাজাকস্তানের সিইও আলেকজান্ডার কোমারভ সিইও কিভিস্টারের অতিরিক্ত দায়িত্ব নেবেন।

কোম্পানির সিইও জিন ইয়েভস শার্লিয়ারের পদত্যাগের পরেই সর্বশেষ এই ঝড় আসে কোম্পানিতে। মূলত কোম্পানির চিরাচরিত অপারেটিং মডেল থেকে সরে আসার কারণেই শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বিষন্নতা তৈরি হয়। মার্চে উরসুলা ভিয়নের নির্বাহী সভাপতি হিসেবে যখন দায়িত্ব নেন, তখন শার্লিয়ার বিদায় নেন।   

জানুয়ারি থেকে মার্চ কোয়ার্টারে বিভিন্ন জয়েন্ট ভেঞ্চার ও এসোসিয়েটসে ভিওনের লোকসানের পরিমান যখন ১০৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যায়। অথচ একই সময়ে বিগত বছরে লোকসান ছিল মাত্র ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। কোম্পানির এই অগ্রগতি সাধিত হয়, যখন ২০১৭ সালে কোম্পানি প্রায় ২,০০০ জনবল ছাঁটাই করে, যা প্রতিষ্ঠানের মোট কর্মীর ৫ শতাংশ। বছরের প্রথমার্ধে কোম্পানির আয় কমে যায় ১.৪ শতাংশ (একই সময়ে গেল বছরের তুলনায়) টাকার অংকে যা ২.২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোম্পানির শেয়ারমূল্য যখন ১৫ শতাংশে দাঁড়ায়, তখন কোম্পানি তার প্রায় এক কোয়ার্টারের মূল্য হারায়। মার্চে যাত্রা শুরুর পর গত বছরের শেষ নাগাদ বিশ্বে ভিওনের একটি নতুন মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ৮.৩ মিলিয়ন গ্রাহক তৈরি করে।      

ভিওন ডেটা ম্যানেজমেন্ট প্ল্যাটফর্ম, নিউ লুক বিজনেস সাপোর্ট সিস্টেম (বিএসএস), এন্টারপ্রাইজ সাপোর্ট সিস্টেম, নেটওয়ার্ক ভার্চুয়ালাইজেশন ইনিশিয়েটিভসহ বছরের প্রথমার্ধে তার স্ট্রাটেজিক বিনিয়োগের কোনো হালনাগাদ তথ্য দেয়নি। 

জেমস ক্রাউসা নামে একজন সিনিয়র বিশ্লেষক বলেন, এটি ২০১৭ সালের তৃতীয় ও চতুর্থ কোয়ার্টারে ফলাফল উপস্থাপনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। সর্বশেষ ব্যবস্থাপনা পর্যায়ে পুনর্গঠন কোম্পানিকে একটি রুগ্ন প্রতিষ্ঠানে তৈরি করতে পারে। নি:সন্দেহে কোম্পানিকে ডিজিটালাইজড করতে শেয়ারের চলে যাওয়া একটি খারাপ সংবাদ।