২০১৯ সালে হারিয়ে যেতে বসেছে স্মার্টফোনের যে ১০ টি ফিচার
২০১৮ সালটা ছিলো স্মার্টফোন জগতের অন্যতম বর্ণিল বছর। এই বছরে কোন প্রযুক্তিতা বাদ থাকেনি?হাই মেগাপিক্সেল ক্যামেরা, ইনডিসপ্লে ক্যামেরা এমনকি পেছনে ১৬ ক্যামেরার ফোনের ডিজাইনও প্যাটেন্ট করে ফেলেছে অনেক কোম্পানি। বছরের শেষে বের হলো ফোল্ডিং ফোন। কিন্তু প্রযুক্তি দৌড়ে হারিয়ে যেতে বসেছে অনেক কিছু যা এতদিন ছিলো সব স্মার্টফোনে ইউজারদের ফোনে।
আসুন জেনে নেই সেই ১০ টি জিনিস কি কিঃ
১)৫ ইঞ্চি স্ক্রিনঃ
এই বছর হারিয়ে গিয়েছে ৫ ইঞ্চি স্ক্রিন। গ্রাহকদের হ্যান্ডি ও ইউজারদের সুবিধা বিবেচনায় এই স্ক্রিন সাইজ টি রিলিজ করা হয়েছিলো। কিন্ত ২০১৮ সালে রিলিজ হওয়া কোন ফোনেই দেখা যায়নি এই স্ক্রিন সাইজ। প্রায় সব ফ্ল্যাগশিপ ফোনে ছিলো ৫.৫ থেকে ৬.৫ এমনকি ৬.৯ স্ক্রিন সাইজের ফোনও নিয়ে এসেছে অনেক কোম্পানি।
২)এইচডি ডিসপ্লেঃ
৫ ইঞ্চি স্ক্রিনের সাথে কোম্পানি গুলো সুচতুর ভাবে লুকিয়ে ফেলেছে এইচডি ডিসপ্লে । মূলত স্ক্রিন সাইজ বড় ও র্যাশিও এর জন্য নতুন করে স্ক্রিন প্যানেল তৈরি করায় এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। এখন বেশির ভাগ মিড রেঞ্জের ফোনে দেয়া হয় এইচডি প্লাস ডিসপ্লে। অনেক ফোনে ইউটিউব বা সাধারণ ভিডিও দেখতে গেলে ৭২০ পিক্সেল এর উপরেই সাপোর্ট করেনা। তাই বিগ স্ক্রিন হলেও অনেক ফোনে ব্যবহারকারীরা দেখতে পাবেন না ১০৮০ পিক্সেল এর ভিডিও। তাই কেনার সময় দেখে নিনি আপনার স্ক্রিন ১০৮০ পিক্সেল সাপোর্ট করে কিনা।
৩)প্রচলিত স্ক্রিন বেজেলঃ
ফোনকে বেজেললেস করতে এই বছরের প্রতিযোগীতা ছিলো চোখে পরার মত। তাই এই বছরের রিলিজ হওয়া ফোন গুলোতে বেজেল এর পরিমান কমিয়ে না হয়েছে সর্বনিম্ন পর্যায়ে। অনেক সময় স্ক্রিন বডি র্যাশিও ছিলো ৯৪% । তাই এ বছর হারিয়ে গিয়েছে স্ক্রিন বেজেল
৪)প্লাস্টিক ও পলিকার্বনেট ব্যাকপ্যানেলঃ
এই বছর বেশিরভাগ ফোন রিলিজ করা হয়েছে প্লাস্টিক ও পলিকার্বনেট ব্যাক প্যানেল ছাড়া। ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোন গুলো রিলিজ করা হয়েছে মেটাল ব্যাক প্যানেল দিয়ে আর প্রিমিয়াম কোয়ালিটির ফোন গুলো রিলিজ হয়েছে গ্লাস ব্যাক প্যানেলে।
৫)রিয়ার সিংগেল ক্যামেরাঃ
শুধুমাত্র গুগল পিক্সেল থ্রি ও স্যামসাং এর কিছু মিডরেঞ্জ ফোন বাদে সব ফোনেই ছিল মিনিমাম দুটি রিয়ার ক্যামেরা। ছবিতে ডিএসএলআর ইফেক্ট আনার জন্য প্রায় সব ফোনে ব্যবহার করা হয়েছে ডেপথ লেন্স ও সেন্সর।
৬)৩০০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারিঃ
ফোন গুলোর ফিচার ও ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় সব ফোনেই দিতে হয়েছে ৩০০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি। তাই এই বছর ৩০০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি দেখা যায়নি কোন ফোনে।
৭)ফিজিক্যাল ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরঃ
এই বছর খুব ধুম ধারাক্কা করে রিলিজ হয়েছে ইনডিসপ্লে ফিঙ্গার প্রিন্ট সেন্সর যা মূলত সরিয়ে দিয়েছে ফিজিক্যাল ফিঙ্গার প্রিন্ট সেন্সরের জায়গাকে। প্রযুক্তিটি নতুন হলেও এটি ফিজিক্যাল ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর বাটন থেকে ব্যায়বহুল নয়। তাই খরচ কমাতে অনেকেই দারস্থ হয়েছে এই প্রযুক্তির কাছে তবে এইবছর বেশিরভাগ ফোনেই ছিলো ফেসআনলক প্রযুক্তি যা স্মার্টফোন তৈরির খরচ কমানোর পাশাপাশি ফোনকেও করেছে সুরক্ষিত। তাই আগামী বছর হয়ত আর কোন ফোনে দেখা যাবেনা ফিজিক্যাল ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর ।
৮)৩ জিবি র্যাম ফোনঃ
৪ জিবি র্যামের ফোন এখন পুরাতনই বলা চলে । ২০১৮ সালে বের হওয়া ফোন গুলোর প্রায় সব গুলোতেই ছিল ৬ জিবি র্যাম স্থাপনের ট্রেন্ড। যা শেষ পর্যন্ত গিয়ে ঠেকেছে আসুসের ১২ জিবি র্যামের ফোনে। তাই ৩ জিবি র্যামের ফোন এখন শুধু পুরনো না কয়দিন পর হয়ত আর প্রযুক্তি তালিকা থেকেই বাদ পড়ে যাবে।
৯)হেডফোন জ্যাকঃ
এই বিষয়টি ছিলো প্রায় সব মিউজিক প্রেমিদের জন্য একটা হৃদয়বিদারক সংবাদ। মূলত নিজেদের কতৃত্ব বজায় রাখতেই স্মার্টফোন থেকে ৩.৫ মিমি জ্যাক সরানোর সিদ্ধান্ত নেয় স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। যা শুরু করেছিলো অ্যাপল। তবে সেই পালে হাওয়া লাগিয়েছে হুয়াওয়ে এবং ওয়ানপ্লাসও। তবে স্যামসাং এর এস সিরিজে এখনো পাওয়া যাবে হেডফোন জ্যাক।
১০)এক্সপেন্ডেবল মেমোরীঃ
মেমোরিকার্ডের বাজারে বলা চলে এক প্রকাস ধ্বস চলছে স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর এই সিদ্ধান্তের কারণে। সব ফোনেই উপেক্ষা করা হয়েছে এই ফিচারকে যা করতে গিয়ে ইন্টারনাল স্টোরেজ বাড়ানোর সিদ্ধান্তের দিকে নজর দিয়েছে কোম্পানি গুলো। তবে এটা করার পেছনে গ্রাহক স্বার্থটাই বেশি দেখেছে কোম্পানি গুলো। তথ্যের নিরাপত্তা ও দ্রুত কাজ সম্পাদনের জন্য এই কাজ করেছে কোম্পানি গুলো । তবে স্যামসাং এখনো এই এক্সপেন্ডেবল মেমোরি ফিচার ধরে রেখেই কাজ করছে