ই-কমার্স নিয়ে আবারো ভুল বুঝাবুঝি, সময় চাইলেন সংশ্লিষ্টরা
বাজেটে ই কমার্স নিয়ে আবারো ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে বলে জানালেন খাত সংশ্লিষ্টরা। বিষয়টি আমলে নিয়ে অনলাইনে পণ্য ও সেবা বিক্রয়কে জাতীয় ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা ২০১৮ ও বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশিত সংজ্ঞা অনুযায়ী সংজ্ঞায়িত করে আলাদা সার্ভিস হিসাবে বিবেচনা করা এবং নতুন সেবা কোড বরাদ্দ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে এই খাতের জাতীয় সংগঠন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)
মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এ বিষয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে সংগঠনটি।
সম্মেলনে জানানো হয়, ইতিমধ্যে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন প্রতিনিধি বৃন্দ এনবিআর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় , আইসিটি বিভাগ , এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাথে একাধিকবার বৈঠক করে বাজেটে ই-কমার্স এর সংজ্ঞা পরিবর্তন, ভুল সংশোধন এবং অনলাইন মার্কেটপ্লেসের উপর আরোপিত ভ্যাট অব্যাহতি সহ বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা পেশ করেছেন। ই-ক্যাব এর প্রস্তাবনার উপর সম্মতি জানিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং আইসিটি বিভাগ থেকে দুটি অফিসিয়াল চিঠিও এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ভারতে ই-কমার্সের উপর কোন ভ্যাট নেই উল্লেখ করে শমী কায়সার বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশেই ই-কমার্সের উপর ভ্যাট নেই। বাংলাদেশেও এই খাতটি একদমই নতুন। যখন এই খাত টি মাত্র দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে তখন এমন ধরনের সিদ্ধান্ত ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নকে বাঁধা গ্রস্ত করবে।
ই-কমার্স খাতে ভ্যাট সরকারের ডিজিটাল সেবা খাত বিকাশে বাধাগ্রস্ত করবে উল্লেখ করে ই-ক্যাব সেক্রেটারি মোহাম্মাদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বেলেন, আমরা সরকারের রাজস্ব বাড়ানোর উদ্যোগের সঙ্গে এক মত। কিন্তু তাই বলে বৃহত্তর স্বার্থে স্বল্প মেয়াদী আয়ের বিনিময়ে নয়।
এ কারণেই আমরা ই-কমার্সের সংজ্ঞাকে পরিষ্কার করতে চাই। যাদের ফিজিক্যাল কোনও স্টোর নেই, কেবল অনলাইনেই পণ্য বিক্রি করেন শুধু সেসব প্রতিষ্ঠানকেই ভ্যাটের আওতামুক্ত রাখার দাবি জানাই। কেননা অনলাইন ব্যবসায় করেন তারা বাজার থেকে পণ্য কেনার সময়ই একদফা ভ্যাট দিয়ে থাকেন। এরপরও যদি পুনরায় তাদেরকে ভ্যাট দিতে হয় তবে তাদেরকে দুই দফা কর দিতে হবে। আর এই করভার কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভোক্তার ওপর গড়াবে। অর্থাৎ অনলাইনে পণ্য মূল্য বেড়ে যাবে। তখন কেউ অনলাইনে কেনা-কাটা করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন।
তিনি জানান, ই-ক্যাব আগামী তিন বছরে সারাদেশে আরও ১০ লক্ষ কর্মসংস্থান তৈরির লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে ই-কমার্সের সঙ্গে প্রায় ৫০ হাজার উদ্যোক্তা সরাসরিভাবে জড়িত। ই-কমার্সের উপর প্রস্তাবিত ভ্যাট তাদের সবার জন্যই একটা মারাত্মক ঝুঁকির ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে। শুধু উদ্যোক্তাদের এই খাতে আসলেই চলবে না, গ্রাহকদেরও নিয়ে আসতে হবে। নতুন করে এই খাতের উপর প্রস্তাবিত ভ্যাট উদ্যোক্তা-গ্রাহক উভয়কেই এ খাত থেকে দূরে সরিয়ে দিবে।
ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সারের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ: আব্দুল ওয়াহেদ তমাল, অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল হক সহ ই-ক্যাব কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য ও পরিচালকবৃন্দ ।