দেশে ফাইভ জি’র সফল পরীক্ষা চালাল রবি ও হুয়াওয়ে
বাংলাদেশ সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান রবির সহায়তায় দেশে প্রথমবারের মতো ফাইভ জি প্রদর্শন করলো প্রযুক্তি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে।
বুধবার (২৫ জুলাই) রাজধানীর প্যানপ্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ফাইফ জি প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
এই অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য, ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে ফাইভ জি ইকোসিস্টেম কিভাবে কাজ করবে সেটা দেখানো হয়। এছাড়াও বাংলাদেশের অর্থনীতি ও মোবাইল ফোন অপারেটরদের রূপান্তরে ফাইভ জি’র ব্যবহার প্রদর্শন করা হয়। পরবর্তী প্রজন্মেও এই তারহীন প্রযুক্তি মানুষের প্রতিদিনের জীবনধারা পরিবর্তন করতে সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। চালকবিহীন গাড়ি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি, বিগ ডাটা, ইন্টারনেট অব থিংকস, স্মার্ট সিটি এবং নেটওয়ার্ক তৈরিতে ফাইভ জি গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা পালন করবে।
ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
আরও উপস্থিত ছিলেন, আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার, রবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, হুয়াওয়ের সাউথ-ইস্ট এশিয়া অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট জেমস উ এবং হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ঝ্যাং জেং জুন।
অনুষ্ঠানে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘যখনই কোনো নতুন প্রযুক্তি আসে, আমি সেটা ব্যবহার করতে চাই। প্রযুক্তিপ্রেমী হিসেবে এটা আমার অভ্যাস। যদিও আমরা ইতোমধ্যে দেশে ফোর জি চালু করছি, কিন্তু আমরা ইতোমধ্যেই ফাইভ জি নিয়ে আলোচনা শুরু করে দিয়েছি। বাংলাদেশই প্রথম দেশ যেখানে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ১জি থেকে ফোর জি চালু করতে পেরেছে। প্রযুক্তিগত দিক থেকে বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ এক সময় বেশ পিছিয়ে ছিল। এখন আমরা কোথায় আছি দেখুন!
তিনি বলেন, গত পাঁচ বছরের মধ্যে ইন্টারনেটের মূল্য ৯৯ শতাংশ কমাতে আমি রেগুলেটরদের ওপর চাপ দিয়েছি। এখন বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশে ইন্টারনেটের মূল্য সবচেয়ে কম। অন্য কোনো দেশ এত দ্রুত পরবর্তী প্রজন্মের ইন্টারনেট চালু করতে পারেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত ফেব্রুয়ারি মাসে আমরা দেশে ফোর জি চালু করেছি। ইতোমধ্যে আমরা ফাইভ জি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছি। আমার লক্ষ্য বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশেই প্রথম ফাইভ জি চালু করা। আমি চাই বাংলাদেশ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাক। যদি দেশের মানুষ ভোট দিয়ে আমাদের আবারও ক্ষমতায় আনে তবে আমরা বাংলাদেশে ফাইভ জি চালু করবো। নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশে ফাইভ জি প্রদর্শনের জন্য হুয়াওয়েকে ধন্যবাদ।’
হুয়াওয়ের সাউথইস্ট এশিয়া অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট জেমস উ বলেন, ‘আইসিটি খাতে বাংলাদেশের ব্যাপক প্রবৃদ্ধিতে আমি সব সময়ই উল্লসিত, যা এই অঞ্চলের মানুষের সংযুক্ত করার জন্য একটি সত্যিকারের উদাহারণ হিসেবে থাকবে। ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে হুয়াওয়ে তাদের সহযোগী হিসেবে পাশে পেয়েছে টেলিকম ক্যারিয়ার অংশীদার, স্থানীয় অংশীদার এবং বাংলাদেশের আইসিটি বিভাগকে।
অনুষ্ঠানে রবি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ফাইভ জি’র মতো নতুন নতুন প্রযুক্তির সহায়তা ছাড়া ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব না। একটি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য ফাইভ জি আবারও আমাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আবাসন, যাতায়ত, শিপিং এবং অন্যান্য খাত নিয়ে চিন্তা করার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে।