খালেদার মুক্তি ও প্রার্থীর জনপ্রিয়তা দেখে মনোনয়ন দেবে বিএনপি
জনপ্রিয়তা দেখে এমপি মনোনয়ন প্রদানে মনোযোগী বিএনপি। তার সঙ্গে বড় করে দেখা হচ্ছে 'খালেদার মুক্তি' ইস্যুকে। সংসদ সদস্যরা নির্বাচন করবেন খালেদার মুক্তির জন্য। মনোনয়ন নিতে যাওয়া বিএনপির কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জনপ্রিয়তা দেখে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে ঠিক তেমনি খালেদার মু্ক্তি আন্দোলনও মুখ্য বিবেচনায় রয়েছে দলটির। এ কারণে আগে যারা একাধিকবার এমপি ছিলেন তাদেরকে আবারও দলে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। ভোটারদের কাছে গ্রহণযোগ্যতাও ক্লিন ইমেজধারী বিবেচনা করা হচ্ছে একাদশ সংসদ নির্বাচনে।
নোয়াখালী-৬ থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক সংসদ সদস্য ফজলুল আজিম বলেন, খালেদার মুক্তি তাদের প্রধান চাওয়া হচ্ছে। স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা চান খালেদা জেল থেকে বের হোক। আর এই প্রত্যাশায় তিনি নিজেও মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর ও মেঘনা নদী ঘেরা দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হয়েছিলেন। তার বিজয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে স্থানীয় বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে সাক্ষাৎকার দিতে যাচ্ছেন তিনি। মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়ার সময়ও তার কয়েকশ নেতাকর্মীর ভিড় দেখা গেছে।
মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকারে তৃতীয় দিন পার করছে বিএনপি। পাশাপাশি তাদের দুইটি জোটের শরিকদের সঙ্গে আসন বণ্টন নিয়ে আলোচনাও চলছে।
সিলেট ১ আসনে আগে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান। এবার সেখানে প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ইনাম আহমদ চৌধুরী ও সাবেক এমপিপুত্র মুক্তাদির আহমেদ মনোনয়ন চাচ্ছেন।
ইনাম আহমদ চৌধুরী বলেন,- মানুষের চাওয়া এখন একটাই খালেদা জিয়ার মুক্তি। সেই মুক্তির জন্য আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি। জনগণ কারাগার থেকে খালেদা জিয়াকে বের করতেই ভোট দেবে। সেক্ষেত্রে তিনি নিজেকে যোগ্য মনে করছেন বলে জানান এ মনোনয়ন প্রত্যাশী।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান জানান, জনপ্রিয়তা দেখেই এবার মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। গণতন্ত্র উদ্ধারে সারাদেশে মানুষের জোয়ারকে আন্দোলনের অংশ মনে করে বিএনপি। জনপ্রিয়দের মনোনয়ন দিলে আন্দোলন বেগবান হবে। বিএনপি জোট সরকার গঠন করতে পারবে।
বিএনপির দলীয় সূত্র জানায়, আগে যারা সংসদ সদস্য হিসেবে নিজেকে জনপ্রিয় হিসেবে প্রমাণ দিয়েছেন তাদের আলাদাভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে। যাতে তারা আবারও এমপি হতে পারেন।
২০০৮ সালে স্বতন্ত্র হয়েও জনপ্রিয়তায় এগিয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন নোয়াখালী-৬ আসনের প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফজলুল আজিম।
একথা উল্লেখ করে প্রকৌশলী আজিম বলেন, বিএনপির হাইকমান্ডের সিগন্যাল তিনি পেয়েছেন বলেই এমপি মনোনয়নপত্র নিয়ে সাক্ষাৎকার দিতে যাচ্ছেন। ছোট দুএকটি বিবাদছাড়া তার এলাকার বিএনপি এখন ঐকবদ্ধ। স্থানীয়রা চাচ্ছেন আবারও সংসদ সদস্য হিসেবে এলাকার উন্নয়নে ভূমিকা রাখি।
২০০৮ সালে বিএনপির যখন ব্যাপক আসন হারিয়ে পরাজিত হয় তখনও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হয়েছিলেন। এর পেছনে তার ক্লিন ইমেজ ও ভোটারদের কাছে গ্রহণযোগ্যতাকে উল্লেখ করেন তিনি। এবার বিএনপি তার মনোনয়নের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে।
বিএনপির আরেকজন সিনিয়র নেতা জানান, ঢাকার ভেতরের আসনগুলোতে বিএনপির একাধিক শক্ত প্রার্থী রয়েছেন। পাশাপাশি নবীন অনেকে জনপ্রিয় প্রার্থী পাওয়া পাচ্ছে। তবে হাইকমান্ড এক্ষেত্রে ঝুঁকি নেবে না। যারা বিপুল ভোটে আগে এমপি হয়েছিলেন তাদের দিকেই মনোযোগ বেশি।
সিরাজগঞ্জ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী একজন এমপি জানান, এমপি যদি জনবান্ধব না হয়। সমস্যা ঠিক না করতে পারে তাহলে তাকে ক্লিন ইমেজ বলা যাবে না।