‘মাশরাফি হীরার টুকরা, সোনার ছেলে, মাশরাফিকে ভোট দেবেন’
মাশরাফি বিন মর্তুজাকে হীরার টুকরা, সোনার ছেলে উল্লেখ করে তার জন্য ভোট চেয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে নিজ বাসভবন সুধাসদন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন জেলার নির্বাচনী জনসভায় সংযুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জনগণের সম্পদ লুটপাট করে অগাধ সম্পদের মালিক হয়েছে। মানিলন্ডারিং, অস্ত্র চোরাকারবারি, এতিমের অর্থ আত্মসাৎ— এরকম বিভিন্ন পথে তারা টাকা কামাই করেছে। তাই জনগণকে বলব, জনগণের অর্থ তারা আত্মসাৎ করেছে। কাজেই এই অর্থওয়ালার অর্থ আবার জনগণের কাছে পৌঁছাক। অর্থওয়ালার অর্থ নেন, নৌকা মার্কায় ভোট দেন। এটাই জনগণকে বলতে হবে। যারা অর্থশালী, তাদের অর্থ নেন আর নৌকা মার্কায় ভোট দেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটাই জনগণকে বলতে হবে— যারা অর্থশালী, তাদের অর্থ নেন; আর নৌকা মার্কায় ভোট দেন। কারণ নৌকা মার্কায় ভোট না দিলে দেশে শান্তি আসবে না। গণতন্ত্র হবে না, উন্নতি হবে না। আর ওরা কোথায় কী চক্রান্ত করবে, সেগুলো খুঁজে বের করতে হবে। এটা নড়াইলে শুধু না, সবাইকে বলছি। আমার কাছে তাদের এই ধরনের চক্রান্তের অনেক তথ্য এসেছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী আমরা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে উদযাপন করব। আর যেসব মেগা প্রজেক্ট নিয়েছি, সেগুলো বাস্তবায়ন করে আর্থসামাজিক উন্নয়ন করব।
নৌকার প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিয়ে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। এসময় নড়াইল-২ আসনের নৌকার প্রার্থী মাশরাফি বিন মর্তুজা সুধাসদনে ছিলেন শেখ হাসিনার পাশেই। আরেক প্রার্থী নড়াইল-১ আসনের কবিরুল হক মুক্তি নেতাকর্মীদের নিয়ে উপস্থিত ছিলেন ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের জায়গায়।
মাশরাফিকে নিয়ে নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাশরাফি হীরার টুকরা, সোনার ছেলে, ক্রিকেট খেলোয়াড়। তার নেতৃত্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আমরা হারিয়েছি। আপনারা মাশরাফিকে ভোট দেবেন। মাশরাফি তার পায়ের ব্যথার জন্য নড়াইলে যেতে পারেনি। তাকে আমার কাছে রেখেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, এর আগে নড়াইলের দুটি আসন থেকে আমি নির্বাচন করেছিলাম। এবার নড়াইল-১ আসনে বিএম কবিরুল হক মুক্তিকে ও নড়াইল-২ আসনে মাশরাফিকে দিয়ে নির্বাচন করাচ্ছি। আপনারা উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন। নড়াইল দুটি সিটই আমাকে উপহার দেবেন।
ভিডিও কনফারেন্সে মাশরাফি বলেন, আমাকে নৌকা মার্কায় মনোনয়ন দেয়ায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর সম্মান ও সমবেদনা প্রদর্শন করি। আমার পায়ের ব্যথার জন্য নড়াইলে আসতে দেরি হচ্ছে। আমি অচিরেই এসে সবার সঙ্গে যোগাযোগ করে নৌকায় ভোট চাইবো।
তিনি আরও বলেন, নড়াইলবাসী আমার জন্য নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ।
বৃহস্পতিবার ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে শুরুতে আওয়ামী লীগ সভাপতি সংযুক্ত হন রাজশাহী জেলায়। সেখানে তিনি নৌকা ও শরিক জোটের প্রার্থীকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। এসময় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রাজশাহী-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী, রাজশাহী ২-আসনের মহাজোট প্রার্থী ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহী-৩ আসনের আয়েন উদ্দিন, রাজশাহী-৪ আসনের ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, রাজশাহী-৫ আসনের ডা. মনসুর রহমান ও রাজশাহী-৬ আসনের শাহরিয়ার আলম নৌকায় ভোট চান।
এছাড়াও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, জেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারও ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে রাজশাহীর প্রতিটি আসনের নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
এরপর একে গাইবান্ধা ও জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গেও ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে যুক্ত হন শেখ হাসিনা। এসব জেলার বিভিন্ন আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদেরও তিনি বিজয়ী করার আহ্বান জানান ভোটারদের প্রতি।