বাংলাদেশে প্রথম রেল ও রেলস্টেশন



কাজী মাহবুবুর রহমান, কন্ট্রিবিউটর
১৮৬২ সালে স্থাপিত জগতি স্টেশন

১৮৬২ সালে স্থাপিত জগতি স্টেশন

  • Font increase
  • Font Decrease

সভ্যতার ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে জর্জ স্টিফেনসনের নাম। ঊনিশ শতকের গোড়া থেকেই তার অক্লান্ত প্রচেষ্টার ফলে ১৮২৫ সালে যুক্তরাজ্যে সর্বপ্রথম চালু হয় পাবলিক রেল যোগাযোগ। স্টকটন থেকে ডার্লিংটন পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই ধাতব রেললাইন তৎকালীন যোগাযোগ ব্যবস্থার বাজারে বিশ্বব্যাপী সাড়া ফেলে দেয়। স্টিফেনসনের এই আবিষ্কার ইংল্যান্ডের সীমানা অতিক্রম করে ছড়িয়ে পড়ে আমেরিকা ও জার্মানিতে। তারপর ইতালি, ফ্রান্স ও সুইডেনেও জনপ্রিয়তা পায় রেল যোগাযোগ।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/08/1562587777258.jpg
জর্জ স্টিফেনসন

 

মজার ব্যাপার হলো, আমেরিকা ও জার্মানীর মতো উন্নত রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্থাপনে ব্রিটিশ শাসিত বাংলাও পিছিয়ে ছিল না। ঊনিশ শতকের মাঝামাঝি ব্রিটিশ সরকারের সহযোগিতায় ঔপনিবেশিক বাংলায় রেলওয়ে স্থাপনের জন্য যুক্তরাজ্যে প্রাথমিকভাবে চিন্তা-ভাবনা ও পরিকল্পনা হতে থাকে। এরূপ পরিকল্পনার মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল রাজনৈতিক, ভৌগোলিক ও কৌশলগত সুবিধাদিসহ বাণিজ্যিক স্বার্থ বিবেচনা। ভারতের ভাইসরয় লর্ড ডালহৌসি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পরিচালক পর্ষদের কাছে ভারতবর্ষে রেলওয়ে স্থাপন কাজ শুরু করার জন্য অনেকগুলি প্রস্তাব পাঠান।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/08/1562587853529.jpg
স্টকটন থেকে ডার্লিংটন রেলরুট

 

এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৮৪৪ সালে আর.এম স্টিফেনসন কলকাতার কাছাকাছি হাওড়া থেকে পশ্চিম বাংলার কয়লাখনি সমৃদ্ধ রানীগঞ্জ শহর পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের জন্য ইস্ট ইন্ডিয়া রেলওয়ে কোম্পানি গঠন করেন। বলার অপেক্ষা রাখে না, এর পুরোটাই ছিল উপমহাদেশের মাটিতে ব্রিটিশ শাসনকে মজবুত করার একটি নতুন পদক্ষেপ।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/08/1562587946064.jpg
ভাইসরয় লর্ড ডালহৌসি

 

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/08/1562588081589.jpg
আর.এম স্টিফেনসন

 

ইস্ট ইন্ডিয়া রেলওয়ে কোম্পানি গঠন করার পরেও প্রয়োজনীয় অনুমোদন পেতে ও সরকারের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনে বেশ কয়েক বছর লেগে যায়। ইতোমধ্যে ১৮৫০ সালে গ্রেট ইন্ডিয়ান পেনিনসুয়েলার রেলওয়ে নামক কোম্পানি মুম্বাই থেকে থানা পর্যন্ত ৩৩ কিমি দীর্ঘ রেললাইন স্থাপন করতে থাকে। লাইনটি উদ্বোধন করা হয় ১৬ এপ্রিল ১৮৫৩ সালে। এটিই ছিল ব্রিটিশ ভারতে রেলওয়ের প্রথম যাত্রা। ইস্ট ইন্ডিয়া রেলওয়ে কোম্পানি কর্তৃক নির্মিত হাওড়া থেকে হুগলি পর্যন্ত ৩৮ কিমি রেললাইনের উদ্বোধন হয় ১৮৫৪ সালে এবং এর মাধ্যমে চালু হয় বাংলার প্রথম রেললাইন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/08/1562588200589.jpg
গ্রেট ইন্ডিয়ান পেনিনসুয়েলার রেলওয়ে

 

বর্তমান বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমারেখার মধ্যে রেললাইন স্থাপনের কাজ শুরু করার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে ব্রিটিশ আমলেই বিবেচনা করা হয়েছিল। ১৮৫২ সালে কর্নেল জে.পি কেনেডি গঙ্গা নদীর পূর্বতীর ধরে সুন্দরবন হয়ে ঢাকা পর্যন্ত রেললাইন বসানোর প্রস্তাব দেন। কিন্তু এর মধ্যেই ১৮৫৪ সালে ব্রিটিশ সরকার বার্মা দখল করে। বার্মাকে সরাসরি ভারতের সঙ্গে সংযুক্ত করার রাজনৈতিক এবং কৌশলগত কারণেই কলকাতা ও বার্মার রাজধানী রেঙ্গুনের মধ্যে দ্রুত যোগাযোগের প্রশ্নটি প্রকট হয়। ফলে বাংলাদেশে রেললাইন বসানোর আগেই ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সাথে বার্মাকে যুক্ত করতে নির্মিত হয় রেঙ্গুন-কলকাতা রেলরুট।

তারপর ১৮৬২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে কলকাতা থেকে রাণাঘাট পর্যন্ত রেলপথ উদ্বোধন করে। পরবর্তীতে এই লাইনকেই বর্ধিত করে ১৮৬২ সালের ১৫ নভেম্বর বর্তমান চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে কুষ্টিয়ার জগতি পর্যন্ত ৫৩.১১ কিমি ব্রডগেজ রেললাইন শাখা উন্মোচন করা হয়। এটাই ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম রেললাইন।

সে সময় কুষ্টিয়া ছিল প্রান্তিক স্টেশন, কিন্তু ১৮৬৭ সালে পদ্মা ভাঙনের কারণে তা স্থানান্তরিত হয় গড়াই নদীর পাড়ে এবং পরবর্তী বছরে আদি কুষ্টিয়া স্টেশন পরিত্যক্ত হয়। কুষ্টিয়া থেকে পদ্মার পাড়ে অবস্থিত অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর গোয়ালন্দ পর্যন্ত ৭৫ কিমি দীর্ঘ রেললাইন উদ্বোধন করা হয় ১ জানুয়ারি ১৮৭১ সালে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/08/1562588406536.jpg
নির্জন জগতি স্টেশন

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/08/1562588450941.jpg

 

ইতিহাসমতে, বাংলাদেশের সর্বপ্রথম রেলওয়ে স্টেশন হলো কুষ্টিয়ার জগতি স্টেশন। অথচ এই ঐতিহাসিক স্টেশনে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি কখনো। সংস্কার না থাকায় পুরাতন বিল্ডিংগুলো ধসে পড়েছে। সরকারি জায়গাগুলোও বেহাত হয়ে গেছে। ১৮৬২ সালে স্থাপিত হবার পর জগতি এই অঞ্চলের মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্য ও ওঠা-নামার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিল। স্টেশনটি ইঞ্জিনের জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল ছিল। দুই পাশে দুটি বড় ইঁদারা আর দিঘি আজও রয়ে গেছে। লোকজনের ভিড় সামাল দিতে একসময় সেখানে ২৬ জন রেলওয়ে কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োজিত ছিল। এখন সেখানে মাত্র ৩ জন রয়েছে। লোকবলের অভাবে এখন স্টেশনের কার্যক্রমও ভেঙে পড়েছে। সংস্কারের অভাবে সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে গেছে। যাত্রীরাও সুযোগ সুবিধার অভাবে জগতিমুখী হচ্ছে না।

এদিকে যাতায়াতের জন্য রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা জনপ্রিয় হয়ে উঠলেও অযত্নে অবহেলায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী কুষ্টিয়ার জগতি স্টেশন।

   

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;

৪ লাখ বছর আগে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

  • Font increase
  • Font Decrease

৪ লাখ বছর আগে রাশিয়ার সাইবেরিয়া থেকে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু হয়েছিল বলে নতুন এক গবেষণা থেকে জানা গেছে। এখান থেকে যাত্রা শুরু করে এই গোত্রের মানুষ পরে উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায়।

নতুন এক গবেষণা জানাচ্ছে, সাইবেরিয়ায় নতুন একটি এলাকার সন্ধান পাওয়া গেছে, যেখানে ৪ লাখ ১৭ হাজার বছর আগে হোমিনিনস (Hominins) গোত্রের মানুষের উপস্থিতি ছিল। এই গোত্রের মানুষ ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বাস করতেন। সেখান থেকে তারা উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায় বলে জানিয়েছেন চেক প্রজাতন্ত্রের এক গবেষক।

১৬ এপ্রিল চেক অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের গবেষক জন জেনসেন এক সংবাদ সম্মেলন করে নতুন এ তথ্য প্রকাশ করেন। গবেষণাবিষয়ক সংবাদ সাময়িকী নিউ সায়েন্সটিস্ট এ বিষয়ে একটি খবর প্রকাশ করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে জন জেনসেন বলেন, আমরা আগে যে ধারণা করতাম, তারও আগে থেকে হোমিনিনস গোত্রের মানুষ সাইবেরিয়ার ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বসবাস করতেন। ৪ লাখ ১৭ বছর আগে থেকেই তারা এই এলাকায় বসবাস করতে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের অবস্থান ছিল উত্তর অক্ষাংশে।

তিনি বলেন, আরেকটি আদিম গোত্রের মানুষের সন্ধান পাওয়া যায়, যারা আর্কটিক অঞ্চলে বাস করতেন। ৪৫ হাজার বছর আগে তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

 

;