ইন্ডাস্ট্রি ও ব্যক্তিজীবন নিয়ে নাসিরুদ্দিন শাহ্’র প্রথাবিরোধী যত ভাবনা



যাকওয়ান সাঈদ, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
নাসিরুদ্দিন শাহ্

নাসিরুদ্দিন শাহ্

  • Font increase
  • Font Decrease

নাসিরুদ্দিন শাহ্ একজন বলিউড অভিনেতা। নানাসময়ে তিনি নানামুখী সাহসী বক্তব্যের মধ্যদিয়ে একটি বিতর্কিত অবস্থায় নিজেকে উপস্থাপন করে থাকেন। ফলে তার ব্যাপারে উপমহাদেশের মানুষদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখতে পাওয়া যায়। অনেকের মনে তার জন্য রয়েছে অসামান্য ভালোবাসা, আবার অনেকের কাছেই তিনি ঘৃণার পাত্র।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/20/1563613235548.jpg
তরুণ বয়সে নাসিরুদ্দিন শাহ্ ◢

 

কিছুদিন আগেও এই অভিনেতা ভারতের লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিস্তর আলাপ-আলোচনার পাত্র হয়ে উঠেছিলেন। সেই সময়কালে ভারতের একটি নামকরা দৈনিক পত্রিকার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “মানুষ স্যোশাল মিডিয়া ব্যবহার করে কেন বলতে পারেন? মূলত সে স্ক্রিনে তার নিজের নামটা একটু দেখতে চায়। এটা তাদের কাছে একটা আকর্ষণীয় ব্যাপার। আমি নিজেও স্বপ্ন দেখতাম, অভিনেতা হয়ে নিজের নামটা পর্দায় দেখতে পাব। আসলে যেইসব লোকেদের কাজবাজ নাই, তারাই মূলত স্যোশাল মিডিয়া থেকে এই সুযোগটা নিয়ে থাকে। অন্য লোকদের ব্যাপারে তারাই বিরূপতা তৈরি করতে চায়, ঘৃণা অথবা অশ্লীলতা ছড়ায়, এগুলোই তাদের কাজ।

নাসিরুদ্দিন শাহ্ সর্বদাই চলমান বলিউড ইন্ডাস্ট্রির অর্থহীন সিনেমাসমূহকে প্রশ্নের মুখোমুখি রাখতে চেষ্টা করেছেন। মূলত তাকে, এবং ওম পুরি নামক আরেকজন অভিনেতাকে বলিউডের সবচেয়ে শক্তিশালী নন-কমার্শিয়াল অভিনেতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

কমার্শিয়াল সিনেমার ব্যাপার তিনি মন্তব্য করেছিলেন, “কমার্শিয়াল সিনেমাগুলো একটা বৃহৎ সংখ্যক সনাতনী ধ্যানধারণাকে সমাজে চালু রাখতে সাহায্য করে, যেগুলো আসলে পরিবর্তন হওয়া উচিত। দুঃখজনকভাবে এখানকার টেলিভিশন সিরিজগুলোও এই ধরনের চিরক্ষতিকর বিষয়গুলোর সঙ্গেই জড়িয়ে আছে। এগুলো সেই পুরান আমলের নারীবিদ্বেষী প্রেক্ষাপটগুলোকেই প্রচার করছে। যেমন একজন মহিলা সর্বদাই তার স্বামীর পেছনে পেছনে চলছে, অথবা স্বামীর পায়ের ওপরে শুয়ে আছে, অথবা ‘মেরে তুলসি তেরে আগান কি’ জাতীয় কথা বলে বলে তার স্বামীর অপেক্ষা করছে। এই জাতীয় রাবিশ আর পশ্চাদমুখী পরিবার প্রথাগুলো কোনোভাবেই এই বর্তমান দুনিয়ার সঙ্গে মানানসই না।

কমার্শিয়াল সিনেমার প্রতি এধরনের মনোভাব পোষণ করা ছাড়াও নাসিরুদ্দিন নতুন সিনেমা, অর্থাৎ চিন্তাশীল নতুন চলচ্চিত্রকারদেরকে গুরুত্ব দিতে ভীষণভাবে তৎপর থাকেন। এবং তিনি নিজে ‘ইউটিউব জেনারেশন’-এর চলচ্চিত্রকারদের দ্বারা অভিভূত হতে চান, এমনটাই ব্যক্ত করেন।
এই প্রসঙ্গে তার বক্তব্যটি এমন, “আমি এইসব চলচ্চিত্রকারদের মধ্যে আশা খুঁজে পাই। কেননা তারা চলচ্চিত্র নির্মাণ করছে কোনো প্রকার প্রডিউসারের সঙ্গে বসাবসি ব্যতিরেকে। তারা বাজেট অথবা হলগুলো থেকে কী পরিমাণ টাকা রিটার্ন আসলো, এসব চিন্তা থেকে মুক্ত।

বলিউডের বিরাট বাজেটের সিনেমাগুলোর ব্যাপারে তিনি একপ্রকার হাস্যরসই করে থাকেন। সম্প্রতি কোলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকার সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “লক্ষ করবেন, হয় বলিউডে বিরাট বিরাট বাজেটের ছবিগুলো হচ্ছে, আর নয়তো হচ্ছে স্বল্প বাজেটের ইন্ডিপেন্ডেট ছবি। মাঝামাঝি কিছু নেই। আর বড় ছবিগুলো একের পর এক শুধু ব্যর্থ হচ্ছে। কিন্তু তাতে কি বলিউডের শিক্ষা হচ্ছে? এক ডজন অভিনেতাকে নিয়ে আরো বড় বড় ছবি বানিয়ে যাবে তারা, এন্ড হোপফুলি দে উইল কিপ লুজিং মানি।

নাসিরুদ্দিন শাহ্ পারিবারিক জীবনকেও সমাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন। এবং বর্তমান ভারতের সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতিতে তিনি নিজের পরিবারকে নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেন। তিনি মুসলিম পরিবার থেকে আসলেও তার স্ত্রী একজন হিন্দু পরিবার থেকে আসা মানুষ, কাজেই তার সন্তানদের পক্ষে একটি নির্দিষ্ট ধর্মের পরিচয়ে নিজেদেরকে উপস্থাপন করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।
এপ্রসঙ্গে নাসিরুদ্দিন বলেন, “আমি আমার বাচ্চাদেরকে নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকি। কেননা, এই ইতর জনগণ আগামীকালকে যদি তাদেরকে ঘিরে ধরে জিজ্ঞাসা করে, তোমরা হিন্দু নাকি মুসলিম, সেক্ষেত্রে তাদের কোনো উত্তর দেওয়ার থাকবে না।” নাসিরুদ্দিনের ভিভান শাহ এবং ইমাদ শাহ নামে দুইজন পুত্র সন্তান আর হীবা শাহ নামে একজন কন্যা সন্তান রয়েছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/20/1563613579950.jpg
পরিবারের সদস্যদের সাথে নাসিরুদ্দিন শাহ্ ◢

 

স্ত্রী রত্না পাঠক সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমাদের সম্পর্কটা এক ধরনের কেমিস্ট্র, যা মূলত দুইজন অভিনয়শিল্পীর মধ্যে সুন্দর বিবেচনাবোধ হিসেবে বিরাজ করে, এবং যখন সম্ভব হয় একে অন্যকে সাহায্য করে।

নাসিরুদ্দিন শাহ্ রত্না পাঠকের ব্যাপারে অনেক বেশি কৃতজ্ঞ, তার কিছু কথায় এধরনের অভিব্যক্তি প্রকাশ পায়। যেমন তিনি বলেন, “সে আমাকে চমৎকারভাবে সাহায্য করে, ঠিক ততটা সাহায্য আমিও তাকে করতে পারি না। প্রায় প্রত্যেকটা বিষয়ে আমি তার মতামতের ওপর ভরসা করে চলি, এমনকি আমার সিনেমার কাজগুলোর ক্ষেত্রেও। তার মতামত আমার জন্য বিরাট সুফল বয়ে আনে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/20/1563614014136.jpg
নাসিরুদ্দিন শাহ্ এবং ওম পুরি ◢

 

আজ ২০ জুলাই, এই বরেণ্য অভিনয় শিল্পীর জন্মদিন। নিচে তার বিখ্যাত কয়েকটি উক্তি বা কোটেশন উল্লেখ করা যাক। এর আগে, তার ব্যাপারে আমাদের কিছু বিষয় জেনে নিলে ভালো। ফুটনোট আকার ওই বিষয়গুলো প্রথমে উল্লেখ করা যাচ্ছে—

• সিনেমায় আসার আগে নাসিরুদ্দিন শাহ্ একজন শক্তিশালী থিয়েটার অভিনেতা ছিলেন। ১৯৭৭ সালে এই মর্মে তিনি ‘মটলি প্রডাকশন’ নামে একটি নাট্যদল গড়ে তুলেছিলেন। সেখানে তার সহযোগী ছিলেন অভিনেতা বেঞ্জামিন গিলানি এবং মার্কিন বংশোদ্ভুত অভিনেতা টম অল্টার।

• তার সিনেমা-জীবনের ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল ১৯৭৫ সালে। সিনেমার পর্দায় প্রথম কাজ হিসেবে ‘নিশান্ত’ নামের একটি ছবিতে তিনি খুব ছোট একটি রোল করেছিলেন।

• জীবনের ২০ বছর বয়সেই তিনি প্রথম বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু এই বিয়ে টিকেছিল মাত্র এক বছর। তার প্রথম স্ত্রীর নাম মানারা সিক্রি।

• নাসিরুদ্দিন শাহ্ কখনোই অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে এক পর্দায় অভিনয় করেননি।

• তিনি দিল্লির ‘ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা’ থেকে অভিনয়ের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন।

• এই পর্যন্ত তিনি একশোটিরও বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন।

• ১৯৫০ সালের ২০ জুলাই তিনি ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের বরাবাঁকি নামক একটি স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আলে মোহাম্মদ শাহ, আর মাতার নাম ফাররুখ সুলতান।

• তিনি ১৯৭১ সালে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কলা বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন।

• ভারতীয় চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য তিনি ভারত সরকার কর্তৃক দেশটির চতুর্থ সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী’ লাভ করেছেন, এর সময়কাল ছিল ১৯৮৭। আর ২০০৩ সালে তিনি ‘পদ্মভূষণ’ সম্মাননাও অর্জন করেন, এটি ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা।

নাসিরুদ্দিন শাহ্’র বিখ্যাত ২৭টি উক্তি

১. আপনি হাসতে পারা আর কাঁদতে পারার পারদর্শিতার ওপরেই শুধু ভরসা রাখতে পারেন না, আর ভাবতে পারেন না যে এটাই অভিনয়ের একমাত্র নিহিত অর্থ। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আমাদের দেশে কান্নাকেই সর্বদা ভালো অভিনয় হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

২. ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি এখনো মনে করে, আপনি একজন অভিনেতা নিয়ে আসবেন আর তাতেই একটা ফিল্ম তৈরি হয়ে যাবে। একথাও অনেকাংশে সঠিক বটে, কিন্তু এমন কিছুকে আমি কখনোই সম্মতি দেব না।

৩. আমি পরবর্তীকালে ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছিলাম যে, একজন প্রথাবিরুদ্ধ অভিনেতা তাদের তৃতীয় বা চতুর্থ চয়েজ হিসেবে থাকে। এবং একমাত্র তখনই তাকে কাস্ট করা হয়, যখন তারকা অভিনেতারা সেই পার্টে অভিনয় করতে অনীহা প্রকাশ করে।

৪. মাসালা সিনেমাতে অভিনয় করার জন্য আপনার প্রয়োজন হবে একটা দেখতে-শুনতে ভালো শরীর। আর জানতে হবে কিভাবে পোশাক পরতে হয়, কিভাবে নাচতে হয়, কিভাবে মারামারি করতে হয়, বা কিভাবে হাসি-কান্নার অভিনয় করতে হয়। কিন্তু একজন মানুষ হয়ে ওঠার পক্ষে দরকারি জীবনদর্শন এবং চিন্তাচেতনার সঙ্গে আপনার কোনো বোঝাপড়া করতে হবে না। কেননা মাসালা সিনেমাগুলো এগুলোর কোনোটাই ধারণ করে না।

৫. বলিউডে কিছুই পরিবর্তন হয়নি। সবকিছু এখানে তেমনই আছে, পঞ্চাশ বছর আগেও যেমনটা ছিল। হয়তো ফটোগ্রাফি আর এডিটিংটা ভালো হয়েছে, কিন্তু বিষয় বা সারাংশ সেই সত্তরের দশকে যেমন ছিল, আজও তেমনই ছেলেমানুষি রয়ে গেছে।

৬. এখানে প্রতিভা কিংবা সহজাত ক্ষমতা বলতে কিছু নেই। এখানে যা আছে তা প্রতিভার ঘাটতি বা অভাব। প্রতিভার অভাব পরিলক্ষিত হয় তখন, যখন কেউ তার নির্দিষ্ট স্থানে থাকে না।

৭. আমি কখনোই আমার চুল রঙ করার সিদ্ধান্ত নিইনি। কেননা এতে করে, একজন পুরুষকে মোটেও কমবয়স্ক লাগে না। বরং, আমার মনে হয়, পুরুষের মুখের বয়সচিহ্ণগুলো আরো স্পষ্ট হয়, যখন আপনি চুল রঙ করেন।

৮. সামহাউ, হলিউড ফিল্মগুলো আমার মধ্যে যেভাবে কাজ করে, হিন্দি সিনেমাগুলো মোটেও তেমনটা করে না। সেই পাঁচ বা ছয় বছর বয়সে আমি দেখতে পেয়েছিলাম, মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ধরনেই এই দুই ঘরানার সিনেমার মধ্যে তফাৎ রয়েছে।

৯. স্বতন্ত্র সত্তা তার নিজস্ব পথকেই শুধু গ্রহণ করে। আমার বাবা তার চিন্তানুযায়ী সবচেয়ে উৎকৃষ্ঠ পন্থায় আমাকে গাইড করতে চেয়েছিলেন, এবং এটা কাজ করেনি। আমি আমার চাওয়া পথেই গিয়েছি।

১০. বোম্বের মাটিতে আমার পদার্পণটি খুব ভাগ্যমণ্ডিত ছিল। বোম্বেতে তখনই সবেমাত্র সিরিয়াস সিনেমার গোড়াপত্তন ঘটতে চলেছিল।

১১. মানুষ ভাবে আমি মজা করছি, যখন আমি বলি আমার ফেভারিট অভিনেতারা হলেন শাম্মি কাপুর আর দারা সিং।

১২. ফাইনালি আমি অনুধাবন করেছি যে, দেখতে ভালো হওয়াও গুরুত্বপূর্ণ।

১৩. আমি প্রত্যেকটা প্রজেক্টে যাই সমান উৎসাহ আর সমান আশাবাদ নিয়ে। কিন্তু সেসবের কোনো কোনোটা ফলে, আর কোনো কোনোটা বিফলে।

১৪. আমি মনে করি না, কারো জীবনকে পাল্টে দেওয়ার শক্তি সিনেমার আছে।

১৫. পড়াশোনাকে বাদ দেওয়ার জন্যে অভিনয়কে পেশা হিসেবে বেছে নেবেন না।

১৬. আমি স্কুলে শেক্সপিয়ার পড়াতে চাই। কিন্তু, সমস্যা হলো, যদি আমি আমার পদ্ধতি প্রয়োগ করি তাহলে তারা আমার উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহপ্রবণ হয়ে পড়বে।

১৭. থিয়েটার আপনাকে এমন একটা পৃথিবীর দিকে নিয়ে যাবে যেখানে আপনার কল্পনাশক্তি আরো শাণিত হবে, আপনার অভিমতগুলো আরো শক্তিশালী হবে, আর এভাবে অভিনয়কে উপভোগ করা আপনার পক্ষে আরো সহজ হবে।

১৮. থিয়েটারের সবচেয়ে সুন্দর সংজ্ঞাটা আমি ফেলে এসেছি, সেটা হলো, ‘একজন অভিনেতা, একজন দর্শক।’

১৯, রাজনৈতিকভাবে ত্রুটিপূর্ণ লোকদেরকে আমি পছন্দ করি। এবং পছন্দ করি, যারা খুব যাচ্ছেতাই।

২০. আমি এই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির কোনো কিছুর কাছেই ঋণী না। আমি তাদেরকে নিয়ে আমার ক্যারিয়ার শুরু করিনি। তারা আমার কাছে আসে, যখন তাদের একজন অভিনেতা প্রয়োজন হয়, যে ভালো ভালো বিষয় ডেলিভারি দিতে পারে।

২১. সবাই সন্তুষ্টি বিষয়টা নিয়ে অনেক কথা বলে। এখানে মূলত এমন একটা কিছু আছে, যেটাকে অর্থনৈতিক সন্তুষ্টি বলা যায়।

২২. আমি আমার বাচ্চাদেরকে গাইড করতে গিয়ে এই ভুল করিনি যে, তাদেরকে আমার পছন্দসই পথে চলতে হবে। আমি তাদেরকে তাদের নিজস্ব পথ খুঁজে নেবার স্বাধীনতা দিয়েছিলাম। আমার তাদের প্রতি বিশ্বাস আছে, এবং তারা এটার মূল্য রাখবে।

২৩. আমি সমালোচনাকে সমাদর করি। আমি তাদেরকে পছন্দ করি যারা আমাকে বলে, আমার কাজ তাদের পছন্দ হয়নি এবং কেন পছন্দ হয়নি। কাউকে প্রশংসা করার চাইতে সমালোচনা করাটা অধিক খাটুনির ব্যাপার।

২৪. ব্যর্থতা মানে হলো একজন মানুষ তার কাজ খুঁজে পায়নি। কারণ সে জানে না, তার কী কাজ। বেশিরভাগ অভিনেতার ব্যর্থ হবার পেছনে এটাই কারণ যে, তারা জানে না তাদের কী কাজ।

২৫. এরকম বিশ্বাস করা নিতান্ত বোকামি যে, থিয়েটারে আপনার পারফর্ম করা মানে সেটা একটা বিশেষ ব্যাপ্ত ঘটনা। ভালো অভিনয় মানে ভালো অভিনয়, সেটা মঞ্চে হোক আর সিনেমায় হোক।

২৭. একজন অভিনেতার মধ্যে থাকা নানামুখী আবেগ-অনুভূতির বৈচিত্রকে খুঁজে নিতে পারাই তার কাজ।

   

বৃষ্টি নাকি ধান, কী প্রার্থনায় দেশ?



কবির য়াহমদ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর, বার্তা২৪.কম
বৃষ্টি নাকি ধান, কী প্রার্থনায় দেশ?

বৃষ্টি নাকি ধান, কী প্রার্থনায় দেশ?

  • Font increase
  • Font Decrease

‘পথের কেনারে পাতা দোলাইয়া করে সদা সঙ্কেত/ সবুজে হদুদে সোহাগ ঢুলায়ে আমার ধানের ক্ষেত/ ছড়ায় ছড়ায় জড়াজড়ি করি বাতাসে ঢলিয়া পড়ে/ ঝাঁকে আর ঝাঁকে টিয়ে পাখিগুলে শুয়েছে মাঠের পরে/ কৃষাণ কনের বিয়ে হবে, তার হলদি কোটার শাড়ী/ হলুদে ছোপায় হেমন্ত রোজ কটি রোদ রেখা নাড়ি/ কলমী লতার গহনা তাহার গড়ার প্রতীক্ষায়/ ভিনদেশী বর আসা যাওয়া করে প্রভাত সাঁঝের নায়।’ পল্লীকবি জসীম উদদীনের ‘ধান ক্ষেত’ কবিতার অপূর্ব চিত্রায়ন কৃষকের শ্রম-ঘাম আর প্রকৃতির তরফে। কাব্যে-পঙক্তির বিমূর্ত চিত্র মূর্ত হয়েছে বিস্তীর্ণ মাঠে। কিষান-কিষানির বুক ভরা আশার সার্থক রূপায়ন হতে চলেছে এ-মৌসুমে।

এখন ভরা বৈশাখ। এ-সময়টা বোরো ধানের। বোরো ধান দেশের খাদ্যচাহিদার অন্তত ৫৫ শতাংশ মিটিয়ে থাকে। দেশের হাওরভুক্ত ৭টি জেলা সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাওরে এই বোরোর চাষ বেশি হয়ে থাকে। এই ধান অতিবৃষ্টি, বন্যা ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত না হলে দেশের খাদ্যচাহিদায় ঘাটতি পড়ে না। তাই এই ধান চাষ থেকে শুরু করে ঘরে ফসল তোলা পর্যন্ত অনুকূল আবহাওয়া, বিশেষ করে রোদের উপস্থিতি অতি জরুরি। বর্তমানে সে পরিস্থিতি চলছে।

সিলেট অঞ্চলের মানুষ বলে এই অঞ্চলের মানুষের চাওয়া-পাওয়া, হতাশা-উচ্চাশার সঙ্গে আমি পরিচিত। তাদেরকে উদাহরণ হিসেবে টানছি। তাদের সঙ্গে থেকে জেনেছি, বোরো মৌসুমে নির্বিঘ্নে ঘরে ফসল তোলা কতটা জরুরি। গবাদি পশুর খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে জরুরি খড় সংরক্ষণও। তীব্র রোদ এখানে সমস্যার নয়, এটা বরং আনন্দের। কারণ এই রোদ গা পোড়ালেও বুক ভরা আশার সার্থক বাস্তবায়নের পথ দেখায়। দেশের যে খাদ্যচাহিদা, যে খাদ্যনিরাপত্তা সেটা এই বোরো ধানের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। তাই চাষ থেকে শুরু করে প্রতিটি পর্যায়ে দরকার হয় প্রকৃতির সহায়তা। এবার এখন পর্যন্ত সে সহায়তা আছে, যদিও এ মাসের শুরুর দিকে একবার ঝড়বৃষ্টিসহ শঙ্কার কালমেঘ হাতছানি দিয়েছিল। সেটা আপাতত দূরে সরেছে।

কিষান-কিষানির দরকার এখন তীব্র রোদ। তারা এটা পাচ্ছে। দেশে তীব্র তাপদাহ। এখানেও এর ব্যতিক্রম নয়। তবু তারা এই রোদের প্রার্থনায় রয়েছে। বৃষ্টি এখন তাদের কাছে দুর্যোগ-সম। কারণ এই বৃষ্টি এবং অতি-বৃষ্টিসৃষ্ট বন্যা তাদের স্বপ্নসাধ গুঁড়িয়ে ভাসিয়ে নিতে পারে সব। ২০১৭ সালের দুঃসহ স্মৃতি এখনও বিস্মৃত হয়নি সুনামগঞ্জের কৃষকেরা। সে বছর সুনামগঞ্জের ছোট-বড় ১৩৭ হাওরের ফসল বন্যায় এবার ভেসে গিয়েছিল। গতবার কৃষক নির্বিঘ্নে ফসল ঘরে তুলেছেন। এরআগের বছর অন্তত ২০টি হাওরের ফসলহানি হয়েছিল বন্যায়।

প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল ক্ষেতের ফসল, দেশের খাদ্যনিরাপত্তা। এখানে প্রচণ্ড তাপদাহ তাই প্রভাব ফেলে সামান্যই। রোদে পুড়ে, প্রয়োজনে ছাতা মাথায় দিয়ে কিষান-কিষানিরা স্বপ্ন তোলেন ঘরে। তারা বৃষ্টির জন্যে প্রার্থনা না করে বরং রোদ আরও কিছুদিন অব্যাহত রাখার প্রার্থনায় বসেন। কৃষকেরা পরিমিত বৃষ্টি চায় চৈত্র মাসে, বৈশাখে চায় খাঁ খাঁ রোদ্দুর, কারণ এই রোদে সোনালী ধান ঘরে ওঠে। লোককথার প্রচলিত, ধান তোলার মৌসুমে ঝড়বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে ফসল রক্ষা করার জন্য হাওরবাসীরা তন্ত্রসাধক বা ‘হিরাল’ ও ‘হিরালি’-দের আমন্ত্রণ জানাতেন। তারা এসে মন্ত্রপাঠ করে ঝড়বৃষ্টি থামানোর জন্য চেষ্টা করতেন। লোকায়ত বিশ্বাস থেকে আগেকার মানুষজন এমন আচার পালন করতেন। এসবে সত্যি কাজ হতো কিনা সেটা বিতর্ক এবং ব্যক্তি-বিশ্বাসসাপেক্ষ, তবে এই হিরাল-হিরালিদের আমন্ত্রণ বলে বৈশাখে একদম বৃষ্টি চায় না হাওরের কৃষক।

হাওরপারের মানুষেরা যখন রোদ অব্যাহত থাকার প্রার্থনায়, তখন দেশজুড়ে তীব্র তাপদাহে পুড়তে থাকা মানুষেরা আছেন বৃষ্টিপ্রার্থনায়। দেশের জায়গায়-জায়গায় বৃষ্টি প্রার্থনায় ইস্তিস্কার নামাজ পড়া হচ্ছে, গণমাধ্যমে সচিত্র সংবাদ আসছে এর। কোথাও প্রবল বিশ্বাসে কেউ কেউ ‘ব্যাঙের বিয়ে’ দিচ্ছেন, এটাও বৃষ্টি প্রার্থনায়। সামাজিক মাধ্যমে গরমের তীব্রতার আঁচ মিলছে, বৃষ্টি নাকি ধান—কোনটা জরুরি এই প্রশ্নও তুলছেন কেউ কেউ। কেবল তাই নয়, বাংলাদেশের প্রচণ্ড তাপদাহ নিয়ে বিশ্বমিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে দেশের মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে প্রতিবেদন করেছে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, বিবিসি, এএফপি ও টাইমস অব ইন্ডিয়া। গণমাধ্যমগুলো বলছে, প্রচণ্ড গরমের কারণে টানা দ্বিতীয় বছর বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধের ঘোষণাও এসেছে। বৃষ্টি-প্রার্থনায় নামাজের আয়োজনের কথাও এসেছে বিশ্বমিডিয়ায়।

একদিকে প্রচণ্ড তাপদাহ, অন্যদিকে খাদ্যনিরাপত্তার প্রধান উপকরণ ধান ঘরে তোলার অনিশ্চয়তা—তবু অনেকের কাছে সাময়িক স্বস্তিই যেন মুখ্য। অথচ আর দিন দশেক বেরো আবাদ-এলাকায় বৃষ্টি না নামলে ধানগুলো ঘরে ওঠত কৃষকের। নিশ্চিত হতো খাদ্যনিরাপত্তার।

প্রকৃতির ওপর আমাদের হাত নেই, নিয়ন্ত্রণ নেই; তবু মনে করি আমাদের আকাঙ্ক্ষার প্রকাশে কৃষকদের গুরুত্ব থাকা উচিত। আমাদের চাওয়ায় হয়তো প্রকৃতির রীতি বদলাবে না, তুমুল রোদ্দুরের দেশে হঠাৎ বৃষ্টি নামবে না, তবে ধান ঘরে তোলার আগ পর্যন্ত রোদ্দুর কামনায় কৃষক স্বস্তি পাবে; ভাবতে পারবে এই দেশ আছে তাদের সঙ্গে।

কৃষকের জয় হোক। অন্তত বোরো-এলাকায় প্রকৃতি কৃষকের সঙ্গে থাকুক।

;

৫০ বছর আগে মহাকাশ থেকে তোলা পৃথিবীর ছবি আজও শ্রেষ্ঠ



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সালটা ১৯৬৮। বিশ্বব্যাপী মানুষ মেতে উঠেছিল বড়দিনের আনন্দে। তখনো জানতো না, বড়দিন উপলক্ষে তারা একটি বিশেষ উপহার পেতে চলেছে। পৃথিবী থেকে আমরা হরহামেশাই চাঁদ দেখি। অমাবস্যা-পূর্ণিমা, এমনকি পক্ষের মাঝামাঝি সময়ের বদৌলতে নানা দৃষ্টিকোণে নানা আকারের চাঁদ দেখতে পাই। তবে চাঁদ থেকে পৃথিবী দেখতে কেমন? এরকমটা হয়তো অনেকেই ভাবেন।

নাসার মহাকাশচারীরা অ্যাপোলো ৪ এ করে তখন চাঁদের চারপাশে টহল দিচ্ছে। সেখান থেকে তারা চাঁদের বাসকারীদের দৃষ্টিতে পৃথিবী কেমন হবে তার এক নমুনা জোগাড় করেন। ক্রিসমাসের কিছুদিন আগে ক্রুরা চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার সময় ব্যারেন লুনার হরিজোন থেকে একটি ছবি তোলে। সেখানে সুদূর মহাকাশ থেকে পৃথিবীর একটি সুন্দর দৃশ্য ধারণ করা হয়। চমৎকার সেই রঙিন ছবিটি সবকিছু পরিবর্তন করতে চলেছিল।

ছবিটি তুলেছিলেন মার্কিন নভোচারী বিল অ্যান্ডার্স এবং জিম লাভেল। ছবিটি ধারণ করার পর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে যান। অর্ধ শতাব্দী পার হয়ে যাওয়ার পরও এটিকে প্রকৃতির সবচেয়ে আইকনিক ছবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, এটিই মহাকাশ থেকে তোলা প্রথম রঙিন এবং উচ্চ রেজুলেশনের ছবি।

১৯৭০ সালে পরিবেশ সচেতনতা এবং এই ব্যাপারে সক্রিয়তা বাড়ানোর উদ্দেশে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে পৃথিবী দিবস প্রচারিত হওয়ার কারণে ছবিটিকে বিশেষ কৃতিত্ব দেওয়া হয়।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাইকেল প্রিচার্ড ছবিটিকে নিখুঁত দাবি করেন। তিনি বলেন, এই ছবিটি পৃথিবীর এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছিল, যা আগে কোনো ছবি করতে পারেনি। প্রকাণ্ড মহাবিশ্বে পৃথিবীর অস্তিত্ব কতটা ক্ষুদ্র গ্রহ, তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ছবিটি।

১৯৬০ সালের পরই পৃথিবী নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে শুরু করে। ষাটের দশকের শেষভাগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের মানুষ অনুধাবন করে পৃথিবীকে আজীবন একইভাবে ব্যবহার করা যাবে না। গ্রহের প্রতি আমাদের আরও অনুরাগী হতে হবে। সেই উদ্দেশে ১৯৬৯, ‘৭০ ও ‘৭১ সালে ‘ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ’, মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি’ এবং ‘গ্রিনপিস’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই ছবিটি প্রকাশের ১৮ মাস পর ২০ মিলিয়ন মার্কিন নাগরিক পৃথিবী রক্ষার আন্দোলনে রাস্তায় নামে।

পৃথিবী রক্ষা করার জন্য মানুষদের উৎসাহিত করার বেলায় ছবিটি অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। এখনো অবদি মহাকাশ থেকে পৃথিবীর পাঠানো ছবিগুলোর মধ্যে ১৯৬৮ সালে বড়দিনের আগে তোলা সেই ছবিটিকে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করা হয়।

;

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;