মব লিঞ্চিংয়ের ইতিহাস ও আমাদের মনোবৈকল্যের প্রতিচ্ছবি



শেহজাদ আমান, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
দাঙ্গাবাজ জনতার হাতে কেবল নিরপরাধ কেউ খুন হচ্ছে না, নিহত হচ্ছে মানবতা ও শুভবোধও

দাঙ্গাবাজ জনতার হাতে কেবল নিরপরাধ কেউ খুন হচ্ছে না, নিহত হচ্ছে মানবতা ও শুভবোধও

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় ছেলেধরা হিসেবে চিহ্নিত করে উন্মত্ত জনতা পিটিয়ে মেরেছে তাছলিমা বেগম রেনু নামে এক নিরপরাধ মাকে। জুলাইয়ের ২০ তারিখের এই মর্মান্তিক ঘটনায় মা-হারা করে দেওয়া হয়েছে তার ৪ বছরের শিশুকন্যা তুবাকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যারাই এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডটির ছবি বা ভিডিও দেখেছেন, তারাই আঁতকে উঠেছেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/26/1564138451031.png
◤ গণ-উন্মত্ততার নির্মম শিকার তাছলিমা বেগম রেণু ◢

 

কোনো প্রত্যন্ত গ্রামে নয়। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বুকে ঘটেছে এই বর্বরতা। অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে, এই ঘটনার আগে ও পরে, সপ্তাহখানেকের কম সময়ের ব্যবধানে, ‘ছেলেধরা সন্দেহে’ নিহত হয়েছে কমপক্ষে ৭ জন এবং আহত হয়েছে অনেকেই। তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে ৫ জন এনজিও কর্মীকে ও প্রেমপত্র দিতে গিয়ে ধরা খাওয়া এক তরুণকে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি দেওয়ার মতো হাস্যকর ঘটনাও এতে রয়েছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/26/1564138526752.png
◤ ঢাকার আমিনবাজারে ২০১১-তে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত হয় এই ছয়টি তরতাজা প্রাণ ◢

 

বাংলাদেশে গণপিটুনিতে নিরপরাধ মানুষ হত্যার মতো ঘটনা আগেও ঘটেছে অনেক। কেমন করে মানুষ ভুলতে পারবে ২০১১ সালে ঢাকার আমিনবাজারে ডাকাত সন্দেহে ছয় তরুণকে ও ২০১৫ সালে ডাকাতির অপরাধে কিশোর মিলনকে পুলিশের গাড়ি থেকে নামিয়ে পুলিশের সামনেই মিটিয়ে পারার মতো হৃদয়বিদারক ঘটনাগুলো? কিন্তু জুলাই ২০১৯-এর তৃতীয় ও চতুর্থ সপ্তাহে যে উন্মত্ত জনতার বিস্ফোরণ বাংলাদেশ দেখছে, এমন কিছুর অভিজ্ঞতা আগে লাভ করেনি দেশের মানুষ। যেন উন্মাদ হয়ে গিয়েছে পুরো দেশের মানুষ।

এসব গণপিটুনি বা মব লিঞ্চিংয়ের বেশিরভাগ ঘটনাই গুজবতাড়িত। ‘চিলে কান নিয়েছে’ শুনে বেশিরভাগ লোকজনই উন্মত্ত হয়ে আইন নিজের হাতে তুলে নিতে এগোয়। আবার, কখনো কখনো সমাজের কোনো হীন স্বার্থান্বেষী হীন চক্র সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করার জন্য অদ্ভুত ও আতঙ্কজনক গুজব ছড়িয়ে লোকজনকে উস্কে দেয়। পদ্মাসেতু নির্মাণে মানুষের মাথা ও রক্ত লাগার গুজব দিয়ে শুরু। সেই আগুনে ঘি ঢেলেছে ছেলেধরার গুজব, সেই ছেলেধরার গুজবের আগুনে হাওয়া দিয়েছে চট্টগ্রামের ইসকন-হেফাজত, সেই গুজবের সর্বশেষ পরিণতি ট্রাম্পের কাছে প্রিয়া সাহার তথ্যবিকৃতি। সবমিলে সারাদেশ এখন পাকা-গুজবের কারখানা! এধরনের ঘটনার কারণেই হয়তো দশের মানুষ আরো বেশি গুজব নির্ভর হয়ে পড়ছে, প্রভাবিত হচ্ছে গুজবে। সত্যিই এক অস্থির ও কাল্পনিক সময়ে যেন বাস করছে দেশের মানুষ।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/26/1564138749768.png
◤ গো-হত্যার অভিযোগে ভারতে অনেকবার ঘটেছে গণপিটুনিতে হত্যার ঘটনা ◢

 

শুধু বাংলাদশই নয়, এরকম ঘটনা ঘটে চলেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। তবে, তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতেই সাধারণত এই ঘটনা বর্তমানে ঘটতে দেখা দেখা যায়। যেমন, ২০০১ সাল থেকে ভারতে গরুর মাংস খাওয়া বা ‘গো-হত্যা’র অভিযোগে যেভাবে নিরপরাধ মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করছিল উন্মত্ত জনতা, তা নিঃসন্দেহে সাংবিধানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের ভিত্তিমূল। জুলাই ২০১৯-এ, দেশটির পূর্বাঞ্চলে গরু চুরির অভিযোগে পিটিয়ে মারা হয়েছে তিনজনকে। ভারতে এর আগেও 'গো রক্ষকদের' দ্বারা পরিচালিত এ ধরনের হামলায় ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং সামাজিকভাবে নিম্নবর্ণ হিসেবে বিবেচিত গোষ্ঠীর সদস্যদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা গরুকে পবিত্র প্রাণি হিসেবে মনে করে এবং গো হত্যা সেখানে অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়।

ভারতে ডাটা জার্নালিজমের ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানীয় সংস্থা ইন্ডিয়াস্পেন্ডস’র সমীক্ষা বলছে ২০১২ ও ২০১৩ সালে যেখানে দুবছরে সারা দেশে এই ধরনের মাত্র দুটো ঘটনা ঘটেছিল, সেই জায়গায় ২০১৪ সালের পর থেকে এখনো পর্যন্ত এরকম ঘটনা ঘটেছে আরো অন্তত ৯২টি।

ভারতে গত চার-পাঁচ বছরে যে সব ‘মব লিঞ্চিং’ বা গণধোলাইয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে, তার বেশির ভাগের মূলেই গরু রক্ষার ইস্যু আছে বলে জানাচ্ছে একটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/26/1564139066016.png
◤ ব্লাসফেমি বা ধর্ম অবমাননার দায়ে পাকিস্তানে মাশাল খানকে হত্যা করে উন্মত্ত, ধর্মান্ধ জনতা ◢

 

শুধু ভারত নয়, প্রতিবেশি দেশ পাকিস্তানেও এধরনের নির্মম জনতার উন্মত্ততা বা গণপিটুনির ঘটনার উদাহরণ রয়েছে। ২০১৭ সালের এপ্রিলে পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখা প্রদেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে কয়েকশ ছাত্র মাশাল খানকে ইসলাম অবমাননার অভিযোগে তার ছাত্রাবাস থেকে টেনে হিঁচড়ে নামিয়ে এনে নৃশংসভাবে পেটায় এবং পরে গুলি করে হত্যা করে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/26/1564139390550.png
◤ চার্লস লিঞ্চ, যার নাম ও নিষ্ঠুরতা থেকে লিঞ্চিং বা গণ-উন্মত্ততা শব্দের উৎপত্তি ◢

 

গণ-উন্মত্ততা বা মব লিঞ্চিংয়ের ইতিহাসটা অবশ্য পুরনো। লিঞ্চিং বা মব লিঞ্চিং শব্দটা এসেছে চার্লস লিঞ্চ নামে এক আমেরিকান নাগরিকের নাম থেকে। তিনি অষ্টাদশ শতকের লোক। ভার্জিনিয়া প্রদেশে তুলোর ক্ষেতের মালিক ছিলেন। আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ব্রিটেনের অনুগামীদের শাস্তি দিতেন। বিচারের তোয়াক্কা করতেন না। কাউকে স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধী মনে হলেই সঙ্গে সঙ্গে মারতেন ফাঁসিতে ঝুলিয়ে।

এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকায় মব লিঞ্চিং-এর সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলা হয়েছে, তা হলো এক ধরনের দলবদ্ধ হিংসার বহিঃপ্রকাশ। ন্যায়বিচারের নামে কাউকে যন্ত্রণা দিয়ে হত্যা করা। ধরে নেওয়া হয়, সেই লোকটি কোনো অপরাধ করেছে। যদিও তার বিচার হয় না। লোকটি সত্যিই অপরাধ করেছিল কিনা, তা প্রমাণ করার দায় থাকে না কারো

মধ্যযুগে জার্মানিতেও একরকমের মব লিঞ্চিং-এর ঘটনা জানা যায়। তখন কোনো বিশেষ ধরনের অপরাধীকে জনতার হাতে তুলে দেওয়া হতো। জনতা তাকে হত্যা করত। ইংল্যান্ডের কোনো কোনো জায়গায় এবং স্পেনেও ওই ধরনের শাস্তি চালু ছিল। মধ্যযুগের ইউরোপে অনেক দেশে মানুষ মনে করত ইহুদিরা বিধর্মী, পাপী। তাই জনতার হাতে তাদের অনেকে মারা পড়ত। এমন হত্যাকাণ্ড ঘটত প্রায়ই স্পেন, রাশিয়া ও পোল্যান্ডে।

মব লিঞ্চিং-এর জন্য সবচেয়ে কুখ্যাত আমেরিকা।

সেখানে একসময় তুলোর ক্ষেতে বড় সংখ্যক কৃষ্ণাঙ্গ শ্রমিক কাজ করত। তুলো চাষের অর্থনীতিই নির্ভরশীল ছিল কৃষ্ণাঙ্গদের শ্রমের ওপরে। তাদের কেউ অবাধ্য হলে বা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে জনতা পশুর মতো তাড়া করত তাকে। তারপর যন্ত্রণা দিয়ে হত্যা করত। অন্য কৃষ্ণাঙ্গদেরও শাসিয়ে রাখা হতো, তোমরাও যদি মালিকের কথা না শোনো, এরকম বীভৎস মৃত্যু আছে কপালে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/26/1564139736292.png
◤ ১৮ শতকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিনা বিচারে এভাবেই ধরে ধরে ঝুলিয়ে দেওয়া হতো কৃষ্ণাঙ্গ ক্রীতদাসদের ◢



ইতিহাসবিদদের ধারণা, ১৮৮১ থেকে ১৯৬৮-র মধ্যে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৪৭৪৩ জনকে মব লিঞ্চিং করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩৪৪৬ জন কৃষ্ণাঙ্গ। দক্ষিণের ১২টি প্রদেশে ১৮৭৭ থেকে ১৯৫০-এর মধ্যে এইভাবে মারা হয়েছে ৪০৮৪ জনকে। বাকি ৩০০ জন মরেছে অন্যান্য প্রদেশে।

আমেরিকার দক্ষিণের রাজ্যগুলোতেই একসময় কৃষ্ণাঙ্গ দাসদের দিয়ে তুলো চাষ করানো হতো। এখনো সেখানে বর্ণবৈষম্য বেশি। মব লিঞ্চিং-এর ঘটনাও সেখানেই বেশি। উন্মত্ত জনতার এমন আচমকা বিস্ফোরণের মানসিকতা নিয়ে গবেষণা হয়েছে অনেক, এখনো হচ্ছে। অনেকেই অনেক ধরনের কারণ চিহ্নিত ও বর্ণনা করেছেন। তবে মব ভায়োলেন্সের কারণ হিসাবে কয়েকটি বিষয়ে তাঁরা একমত।

প্রথমত, দেশের এক বড় অংশের মানুষ প্রচলিত বিচার ব্যবস্থায় আস্থা রাখে না। তাদের মতে, কোর্টে গেলে বৃথা সময় নষ্ট হবে। অপরাধীরা টাকার জোরে বা প্রভাব খাটিয়ে ছাড়া পেয়ে যাবে ঠিক। এই ভাবনা থেকে আইন হাতে তুলে নেওয়ার মানসিকতা সৃষ্টি হয়।

দ্বিতীয়ত, কোনো ধর্ম বা বর্ণের মানুষকে অপরাধী বলে ধারাবাহিকভাবে প্রচার করা হয়েছে জনতার মধ্যে। তাতে দেশের এক বড় অংশের মানুষ বিশ্বাসও করেছে। ফলে সেই সম্প্রদায়ের মানুষকে দেশের যে কোনো দুর্গতির জন্য দায়ী ভাবছে অনেকে। তাদের কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে প্রমাণ ছাড়াই বিশ্বাস করে ফেলছে।

তৃতীয়ত, আর্থিক ও সামাজিক বিপর্যয়ের মধ্যে মানুষ বড় একা হয়ে পড়েছে। সে চাইছে কোনো একটা গোষ্ঠীতে যোগ দিতে। সেই গোষ্ঠীর কাজকর্মকে নির্বিচারে সমর্থন করছে। তাদের হয়ে নানা হিংসাত্মক ঘটনায় অংশ নিচ্ছে।

চতুর্থত, জনতা ব্যক্তিরা এরূপ আচরণ করে যে তাদের কোনো প্রকার দায়িত্ববোধ আছে বলে মনে হয় না। দায়িত্ববোধের অভাব থাকায় জনতাভুক্ত ব্যক্তিরা অন্যের সুবিধা-অসুবিধা, অধিকার, অনুভূতি প্রভৃতি কোনো কিছুর তোয়াক্কা করে না৷ এজন্য জনতা মারপিট, ভাঙচুর, লুটতরাজ, অগ্নি-সংযোগ প্রভৃতি অসামাজিক কাজে সহজেই লিপ্ত হয়।

পঞ্চমত, জনতাভুক্ত ব্যক্তিরা নিজেদেরকে অসীম ক্ষমতার অধিকারী মনে করে। তারা মনে করে তাদের অসাধ্য কিছু নেই ৷ তাদের বাধা দিতে পারে এমন কোনো শক্তিও তারা স্বীকার করে না৷ তাই অনেক সময় দেখা যায় জনতা নিরস্ত্র হয়েও সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে ৷

ষষ্ঠত, জনতার মাঝে প্রতিটি ব্যক্তিই ভাবে সে যে আচরণ করছে তার জন্য সে একা দায়ী নয়, বরং গোটা জনতারূপ গোষ্ঠীই দায়ী| ব্যক্তি মনে করে সে তো একা করছে না। সবাই যে কাজটি করেছে তাতে সে অংশ নিচ্ছে মাত্র৷ কাজেই সে বিশ্বাস করে কৃতকর্মের জন্য তাকে কোন ঝুঁকি বহন করতে হবে না৷ তাছাড়া সে মনে করে ভিড়ের মধ্যে তাকে চিনবেই বা কে৷ নাম-ধাম, পরিচয় গোপন থাকার সুযোগ যেখানে রয়েছে সেখানে উচ্ছৃঙ্খল হতে বাধা কোথায়?

এইরকম গোষ্ঠীর মধ্যে ঢুকলে মানুষ ব্যক্তিগত স্বভাব-চরিত্র, রুচি, যুক্তিবোধ হারিয়ে ফেলে কিছুক্ষণের জন্য। হয়তো দেখা যাবে, যে লোকটা একটা কুকুরকেও কখনো ঢিল ছুঁড়ে মারেনি, সেই দাঙ্গার সময় মানুষ খুন করছে ঠান্ডা মাথায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মব ভায়োলেন্সে অংশগ্রহণকারীদের কোনো শাস্তি দেওয়া হয় না। প্রথমত অত লোককে শাস্তি দেওয়া এমনিতেই মুশকিল। তার ওপরে এই সব ক্ষেত্রে মানুষের সেন্টিমেন্ট কাজ করে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, গণধোলাইয়ে অংশগ্রহণকারীদের কড়া শাস্তি দিয়ে মানুষের কাছে বিরাগভাজন হতে চায় না কোনো সরকারও।

তবে, আশার কথা হলো, এসব মব লিঞ্চিং বা সমষ্টিগত উন্মত্ততার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় প্রতিটি দেশের শান্তিকামী, সুস্থ চিন্তাধারণার মানুষগণ। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম নয়। বর্তমানে দেশে বিরাজমান গুজবের মহামারি ও জনতার উন্মত্ততার বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে দেশের জনগণ। গড়ে উঠছে সামাজিক প্রতিরোধ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও কঠোর ও সতর্ক অবস্থান গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি স্পষ্ট ঘোষণা করেছেন, গুজব সৃষ্টি করবে ও আইন নিজের হাতে তুলে নিবে যারা, তাদেরকে কোনোরকম ছাড় দেওয়া হবে না। ধীরে ধীরে কমে আসছে এই নৃশংস ঘটনা। তবে, দেশের নাগরিকেরা চায় এসব গণ-নিষ্ঠুরতার সুষ্ঠু ও ত্বরিৎ বিচার করে করে অপরাধীদের দ্রুত শাস্তির ব্যবস্থাটি দেখতে। আর, যখন এধরনের কোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি যখন আর হবে না, তখনই বলা যাবে জাতি হিসেবে আমরা আসলেই সভ্য, সহিষ্ণু ও আধুনিক হতে পেরেছি।

   

বৃষ্টি নাকি ধান, কী প্রার্থনায় দেশ?



কবির য়াহমদ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর, বার্তা২৪.কম
বৃষ্টি নাকি ধান, কী প্রার্থনায় দেশ?

বৃষ্টি নাকি ধান, কী প্রার্থনায় দেশ?

  • Font increase
  • Font Decrease

‘পথের কেনারে পাতা দোলাইয়া করে সদা সঙ্কেত/ সবুজে হদুদে সোহাগ ঢুলায়ে আমার ধানের ক্ষেত/ ছড়ায় ছড়ায় জড়াজড়ি করি বাতাসে ঢলিয়া পড়ে/ ঝাঁকে আর ঝাঁকে টিয়ে পাখিগুলে শুয়েছে মাঠের পরে/ কৃষাণ কনের বিয়ে হবে, তার হলদি কোটার শাড়ী/ হলুদে ছোপায় হেমন্ত রোজ কটি রোদ রেখা নাড়ি/ কলমী লতার গহনা তাহার গড়ার প্রতীক্ষায়/ ভিনদেশী বর আসা যাওয়া করে প্রভাত সাঁঝের নায়।’ পল্লীকবি জসীম উদদীনের ‘ধান ক্ষেত’ কবিতার অপূর্ব চিত্রায়ন কৃষকের শ্রম-ঘাম আর প্রকৃতির তরফে। কাব্যে-পঙক্তির বিমূর্ত চিত্র মূর্ত হয়েছে বিস্তীর্ণ মাঠে। কিষান-কিষানির বুক ভরা আশার সার্থক রূপায়ন হতে চলেছে এ-মৌসুমে।

এখন ভরা বৈশাখ। এ-সময়টা বোরো ধানের। বোরো ধান দেশের খাদ্যচাহিদার অন্তত ৫৫ শতাংশ মিটিয়ে থাকে। দেশের হাওরভুক্ত ৭টি জেলা সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাওরে এই বোরোর চাষ বেশি হয়ে থাকে। এই ধান অতিবৃষ্টি, বন্যা ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত না হলে দেশের খাদ্যচাহিদায় ঘাটতি পড়ে না। তাই এই ধান চাষ থেকে শুরু করে ঘরে ফসল তোলা পর্যন্ত অনুকূল আবহাওয়া, বিশেষ করে রোদের উপস্থিতি অতি জরুরি। বর্তমানে সে পরিস্থিতি চলছে।

সিলেট অঞ্চলের মানুষ বলে এই অঞ্চলের মানুষের চাওয়া-পাওয়া, হতাশা-উচ্চাশার সঙ্গে আমি পরিচিত। তাদেরকে উদাহরণ হিসেবে টানছি। তাদের সঙ্গে থেকে জেনেছি, বোরো মৌসুমে নির্বিঘ্নে ঘরে ফসল তোলা কতটা জরুরি। গবাদি পশুর খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে জরুরি খড় সংরক্ষণও। তীব্র রোদ এখানে সমস্যার নয়, এটা বরং আনন্দের। কারণ এই রোদ গা পোড়ালেও বুক ভরা আশার সার্থক বাস্তবায়নের পথ দেখায়। দেশের যে খাদ্যচাহিদা, যে খাদ্যনিরাপত্তা সেটা এই বোরো ধানের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। তাই চাষ থেকে শুরু করে প্রতিটি পর্যায়ে দরকার হয় প্রকৃতির সহায়তা। এবার এখন পর্যন্ত সে সহায়তা আছে, যদিও এ মাসের শুরুর দিকে একবার ঝড়বৃষ্টিসহ শঙ্কার কালমেঘ হাতছানি দিয়েছিল। সেটা আপাতত দূরে সরেছে।

কিষান-কিষানির দরকার এখন তীব্র রোদ। তারা এটা পাচ্ছে। দেশে তীব্র তাপদাহ। এখানেও এর ব্যতিক্রম নয়। তবু তারা এই রোদের প্রার্থনায় রয়েছে। বৃষ্টি এখন তাদের কাছে দুর্যোগ-সম। কারণ এই বৃষ্টি এবং অতি-বৃষ্টিসৃষ্ট বন্যা তাদের স্বপ্নসাধ গুঁড়িয়ে ভাসিয়ে নিতে পারে সব। ২০১৭ সালের দুঃসহ স্মৃতি এখনও বিস্মৃত হয়নি সুনামগঞ্জের কৃষকেরা। সে বছর সুনামগঞ্জের ছোট-বড় ১৩৭ হাওরের ফসল বন্যায় এবার ভেসে গিয়েছিল। গতবার কৃষক নির্বিঘ্নে ফসল ঘরে তুলেছেন। এরআগের বছর অন্তত ২০টি হাওরের ফসলহানি হয়েছিল বন্যায়।

প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল ক্ষেতের ফসল, দেশের খাদ্যনিরাপত্তা। এখানে প্রচণ্ড তাপদাহ তাই প্রভাব ফেলে সামান্যই। রোদে পুড়ে, প্রয়োজনে ছাতা মাথায় দিয়ে কিষান-কিষানিরা স্বপ্ন তোলেন ঘরে। তারা বৃষ্টির জন্যে প্রার্থনা না করে বরং রোদ আরও কিছুদিন অব্যাহত রাখার প্রার্থনায় বসেন। কৃষকেরা পরিমিত বৃষ্টি চায় চৈত্র মাসে, বৈশাখে চায় খাঁ খাঁ রোদ্দুর, কারণ এই রোদে সোনালী ধান ঘরে ওঠে। লোককথার প্রচলিত, ধান তোলার মৌসুমে ঝড়বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে ফসল রক্ষা করার জন্য হাওরবাসীরা তন্ত্রসাধক বা ‘হিরাল’ ও ‘হিরালি’-দের আমন্ত্রণ জানাতেন। তারা এসে মন্ত্রপাঠ করে ঝড়বৃষ্টি থামানোর জন্য চেষ্টা করতেন। লোকায়ত বিশ্বাস থেকে আগেকার মানুষজন এমন আচার পালন করতেন। এসবে সত্যি কাজ হতো কিনা সেটা বিতর্ক এবং ব্যক্তি-বিশ্বাসসাপেক্ষ, তবে এই হিরাল-হিরালিদের আমন্ত্রণ বলে বৈশাখে একদম বৃষ্টি চায় না হাওরের কৃষক।

হাওরপারের মানুষেরা যখন রোদ অব্যাহত থাকার প্রার্থনায়, তখন দেশজুড়ে তীব্র তাপদাহে পুড়তে থাকা মানুষেরা আছেন বৃষ্টিপ্রার্থনায়। দেশের জায়গায়-জায়গায় বৃষ্টি প্রার্থনায় ইস্তিস্কার নামাজ পড়া হচ্ছে, গণমাধ্যমে সচিত্র সংবাদ আসছে এর। কোথাও প্রবল বিশ্বাসে কেউ কেউ ‘ব্যাঙের বিয়ে’ দিচ্ছেন, এটাও বৃষ্টি প্রার্থনায়। সামাজিক মাধ্যমে গরমের তীব্রতার আঁচ মিলছে, বৃষ্টি নাকি ধান—কোনটা জরুরি এই প্রশ্নও তুলছেন কেউ কেউ। কেবল তাই নয়, বাংলাদেশের প্রচণ্ড তাপদাহ নিয়ে বিশ্বমিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে দেশের মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে প্রতিবেদন করেছে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, বিবিসি, এএফপি ও টাইমস অব ইন্ডিয়া। গণমাধ্যমগুলো বলছে, প্রচণ্ড গরমের কারণে টানা দ্বিতীয় বছর বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধের ঘোষণাও এসেছে। বৃষ্টি-প্রার্থনায় নামাজের আয়োজনের কথাও এসেছে বিশ্বমিডিয়ায়।

একদিকে প্রচণ্ড তাপদাহ, অন্যদিকে খাদ্যনিরাপত্তার প্রধান উপকরণ ধান ঘরে তোলার অনিশ্চয়তা—তবু অনেকের কাছে সাময়িক স্বস্তিই যেন মুখ্য। অথচ আর দিন দশেক বেরো আবাদ-এলাকায় বৃষ্টি না নামলে ধানগুলো ঘরে ওঠত কৃষকের। নিশ্চিত হতো খাদ্যনিরাপত্তার।

প্রকৃতির ওপর আমাদের হাত নেই, নিয়ন্ত্রণ নেই; তবু মনে করি আমাদের আকাঙ্ক্ষার প্রকাশে কৃষকদের গুরুত্ব থাকা উচিত। আমাদের চাওয়ায় হয়তো প্রকৃতির রীতি বদলাবে না, তুমুল রোদ্দুরের দেশে হঠাৎ বৃষ্টি নামবে না, তবে ধান ঘরে তোলার আগ পর্যন্ত রোদ্দুর কামনায় কৃষক স্বস্তি পাবে; ভাবতে পারবে এই দেশ আছে তাদের সঙ্গে।

কৃষকের জয় হোক। অন্তত বোরো-এলাকায় প্রকৃতি কৃষকের সঙ্গে থাকুক।

;

৫০ বছর আগে মহাকাশ থেকে তোলা পৃথিবীর ছবি আজও শ্রেষ্ঠ



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সালটা ১৯৬৮। বিশ্বব্যাপী মানুষ মেতে উঠেছিল বড়দিনের আনন্দে। তখনো জানতো না, বড়দিন উপলক্ষে তারা একটি বিশেষ উপহার পেতে চলেছে। পৃথিবী থেকে আমরা হরহামেশাই চাঁদ দেখি। অমাবস্যা-পূর্ণিমা, এমনকি পক্ষের মাঝামাঝি সময়ের বদৌলতে নানা দৃষ্টিকোণে নানা আকারের চাঁদ দেখতে পাই। তবে চাঁদ থেকে পৃথিবী দেখতে কেমন? এরকমটা হয়তো অনেকেই ভাবেন।

নাসার মহাকাশচারীরা অ্যাপোলো ৪ এ করে তখন চাঁদের চারপাশে টহল দিচ্ছে। সেখান থেকে তারা চাঁদের বাসকারীদের দৃষ্টিতে পৃথিবী কেমন হবে তার এক নমুনা জোগাড় করেন। ক্রিসমাসের কিছুদিন আগে ক্রুরা চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার সময় ব্যারেন লুনার হরিজোন থেকে একটি ছবি তোলে। সেখানে সুদূর মহাকাশ থেকে পৃথিবীর একটি সুন্দর দৃশ্য ধারণ করা হয়। চমৎকার সেই রঙিন ছবিটি সবকিছু পরিবর্তন করতে চলেছিল।

ছবিটি তুলেছিলেন মার্কিন নভোচারী বিল অ্যান্ডার্স এবং জিম লাভেল। ছবিটি ধারণ করার পর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে যান। অর্ধ শতাব্দী পার হয়ে যাওয়ার পরও এটিকে প্রকৃতির সবচেয়ে আইকনিক ছবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, এটিই মহাকাশ থেকে তোলা প্রথম রঙিন এবং উচ্চ রেজুলেশনের ছবি।

১৯৭০ সালে পরিবেশ সচেতনতা এবং এই ব্যাপারে সক্রিয়তা বাড়ানোর উদ্দেশে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে পৃথিবী দিবস প্রচারিত হওয়ার কারণে ছবিটিকে বিশেষ কৃতিত্ব দেওয়া হয়।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাইকেল প্রিচার্ড ছবিটিকে নিখুঁত দাবি করেন। তিনি বলেন, এই ছবিটি পৃথিবীর এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছিল, যা আগে কোনো ছবি করতে পারেনি। প্রকাণ্ড মহাবিশ্বে পৃথিবীর অস্তিত্ব কতটা ক্ষুদ্র গ্রহ, তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ছবিটি।

১৯৬০ সালের পরই পৃথিবী নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে শুরু করে। ষাটের দশকের শেষভাগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের মানুষ অনুধাবন করে পৃথিবীকে আজীবন একইভাবে ব্যবহার করা যাবে না। গ্রহের প্রতি আমাদের আরও অনুরাগী হতে হবে। সেই উদ্দেশে ১৯৬৯, ‘৭০ ও ‘৭১ সালে ‘ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ’, মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি’ এবং ‘গ্রিনপিস’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই ছবিটি প্রকাশের ১৮ মাস পর ২০ মিলিয়ন মার্কিন নাগরিক পৃথিবী রক্ষার আন্দোলনে রাস্তায় নামে।

পৃথিবী রক্ষা করার জন্য মানুষদের উৎসাহিত করার বেলায় ছবিটি অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। এখনো অবদি মহাকাশ থেকে পৃথিবীর পাঠানো ছবিগুলোর মধ্যে ১৯৬৮ সালে বড়দিনের আগে তোলা সেই ছবিটিকে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করা হয়।

;

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;