সেক্সরোবটদের কি নিজস্ব অধিকারের ব্যাপার আছে?



স্লাভয় জিজেক
স্লাভয় জিজেক

স্লাভয় জিজেক

  • Font increase
  • Font Decrease

সেক্সরোবট বলতে বোঝায়—যেসব রোবট তৈরি করা হয়েছে যৌনবস্তু হিসেবে। অর্থাৎ যেই রোবটের সঙ্গে যৌনকর্ম বাস্তবায়ন সম্ভব হয়। আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে এই সেক্সরোবট তৈরি করা হয়ে থাকে।

সেক্সরোবট বানানো বা প্রোগ্রাম করার ক্ষেত্রে যে দুইটি বৈশিষ্ট উপাদান হিসেবে থাকে, সেগুলো হলো, সেক্সরোবটরা কিছু সরল অভিব্যক্তিমূলক কথোপকথনের সামর্থ্য রাখে, এবং সেইসঙ্গে কিছু সাধারণ অনুভূতিকে অনুকরণ করবার ক্ষমতা তাদের থাকে।

বর্তমান সময়ের এই প্রবণতাটি আমাদের মানুষ্য সমাজের অনেক বাস্তবতাকে নস্যাৎ করেও দিতে পারে। তথাপি এটাই সত্য যে, পাশ্চাত্যে সেক্সরোবট তৈরির কারখানাগুলোর চাহিদা ক্রমশ বর্ধমান। সেক্সরোবট তৈরির নামকরা কারখানাগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্যালিয়াফোর্নিয়ায় অবস্থিত ‘রিয়েলবোটিক্স’, বা নিউ জার্সিতে অবস্থিত ‘ট্রু কমিনিয়ন’।

একথা ঠিক, এখনো পর‌্যন্ত এই টেকনোলজি বেশ প্রাথমিক অবস্থাতেই বিদ্যমান আছে। তবে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করেন, আগামী একশো বছরের মধ্যেই আমাদের পৃথিবীতে একটি কৃত্রিম চৈতন্য খুব ভালোভাবে বিরাজ করবে। যেখানে থাকবে রোবটের নিজস্ব ব্যক্তিত্ব, সামাজিক মর্যাদা বা অধিকারের বিষয়গুলো।

মানুষের অনুরূপ এই সেক্সরোবটদের সঙ্গে যৌনসম্পর্ক স্থাপনের মধ্য দিয়ে মানুষদের নিজেদের মধ্যকার সম্পর্কগুলো হুমকির মধ্যে পড়বে কিনা, সেই চিন্তা থেকেই যায়।

আবার একথাও ঠিক যে, প্রাথমিকভাবে এই সেক্সরোবট তৈরির কার্যক্রমটি চালানো হচ্ছে পুরুষ কাস্টমারদের কথা মাথায় রেখেই—যারা ফ্যান্টাসি বা বিকৃত যৌনইচ্ছা সেক্সরোবট ব্যবহারের মাধ্যমে মেটাতে সক্ষম হবেন। দেখা যাচ্ছে, এই সেক্সরোবটগুলো তৈরি হচ্ছে মূলত সাদা অথবা এশিয়ানদের অনুকরণে, আর অস্বাভাবিক যৌনআকর্ষণীয়ভাবে তৈরি করা হচ্ছে সেগুলোর কাঠামো। যেমন, সেগুলো দেখতে হয়ে থাকে খুবই কৃষকায়, সেগুলোর নিতম্ব ও বক্ষদেশ থাকে বেহদ্দর ধরনের বৃহৎ, এবং সেগুলো থাকে খুব নিখুঁত ত্বকের অধিকারী।

এমতাবস্থায়, কিছু বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। তারমধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো, আমরা এই সেক্সরোবটকে গ্রহণ করে নেব কিনা। বা সেক্সরোবটদের বিষয়ে আমাদের অবস্থান কেমন হবে?

বর্তমান দুনিয়ার সবচাইতে আলোচিত ও শক্তিশালী বুদ্ধিজীবীদের একজন, স্ল্যাভয় জিজেক—তিনি এই বিষয়টিকে খুব সাধারণ একটি প্রশ্নের মাধ্যমে আলোচনা করেছেন। তার প্রশ্নটি হলো, ‘সেক্সরোবটদের কি নিজস্ব অধিকারের ব্যাপার আছে?’

সেক্সরোবট নিয়ে স্ল্যাভয় জিজেকের লেখাটি পড়া যাক। জিকেকের পরিচয়গুলোর মধ্যে যেটিকে তিনি সবচাইতে বেশি গুরুত্ব দেন, সেটি হলো তিনি একজন কালচারাল দার্শনিক। পাঠকবর্গের কাছে তিনি ‘রকস্টার দার্শনিক’ বলেও বিবেচিত বা অবিহিত হয়ে থাকেন। রাশিয়ান সংবাদমাধ্যম ‘আরটি’-তে প্রকাশিত এই লেখাটি বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমের পাঠকদের জন্য অনুবাদ করেছেন যাকওয়ান সাঈদ

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/27/1564213959030.jpg

 

সেক্সরোবটদের কি নিজস্ব অধিকারের ব্যাপার আছে?

সাম্প্রতিককালে পলিটিকাল কারেকনেসের নামে নৈতিকতার যেই বিপুল ব্যাপ্তি দেখা দিয়েছে, সেটারই অন্তর্গত একটি তর্ক এই মুহূর্তে খুব চলমান। যার বিষয় হলো, মানুষ এবং সেক্সরোবটের মধ্যকার সম্পর্ককে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

শুরুতেই আলাপের স্বার্থে, আমাকে একটা নিউজ-রিপোর্টের কিছু অংশ উদ্ধৃত করতে দিন : ‘গতবছর সামান্তা নামক একজন সেক্সরোবট একটি টেকনোলজি বিষয়ক ফেস্টিভালে মলেস্টেড হয়েছে, এবং এতে বাজেভাবে তার বাহ্যিক ড্যামেজ ঘটেছে। মেশিনের সঙ্গে মানুষের আচরণগত নৈতিকতা বৃদ্ধির প্রসঙ্গে এই ঘটনাটি তখন প্রচুর তর্কের জন্ম দিয়েছিল। যদিও সেক্সরোবটের ডেভেলপাররা বলেছিলেন যে, তাদের কাস্টমারদের যে কোনো যৌন-লালসার প্রতিই তাদের এই প্রকল্পটি অনুকূল্য দেখাবে, কিন্তু এবার হয়তো তারা সেক্সরোবটদের কর্তৃক আক্রোশপূর্ণ পুরুষদেরকে প্রত্যাখ্যান করাবার প্রক্রিয়াটি আরম্ভ করবে, এই ঘটনা থেকে সেরকমই মনে হয়। সাধারণ মানুষেরা এইধরনের মেশিনকে আঘাত করা যায়-‍মূলক ব্যাপারগুলোকে স্বীকার করে না, শুধু এই কারণে যে তারা তাদের বাড়তি যৌনরিপুকে ‘না’ বলতে অক্ষম। ভবিষ্যতের মানুষ্যআকৃতির সেক্সরোবটেরা হয়তো আরো বাস্তববুদ্ধিসম্পন্ন হবে, যারা একটা নির্দিষ্ট সজ্ঞানে থেকে তবেই যৌনমিলন সম্পন্ন করবে। এমনিতে, মানুষ এবং রোবটের এই যৌনপ্রক্রিয়াটি অনুমোদিত হবার সময়ে এর মুখবন্ধতে বলা হয়েছিল, মানুষদের নিজেদের মধ্যে যে ধরনের যৌনসম্পর্ক থাকে এটা তারই সাদৃশ্য বহন করবে, এছাড়াও যৌনকর্মীদেরকে, আইনগতভাবেও ব্যবহার করার মধ্য দিয়ে সমাজে যেই বৈষম্য তৈরি হয়েছে, এটি সেই বৈষম্যকেও প্রতিরোধ করবে।’

যদিও সেক্সরোবটের এই ধারণাটা আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার তরফে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রতি একটা প্রস্তাবনা, যা মানুষের ‘বেসিক অধিকার’কে অগ্রগামী করবে। কিন্তু বিষয়টি খুব পরিষ্কারভাবে এমন কিছু পুরানা ধ্যানধারণাকে নিয়ে আসে, যেগুলো আদতে আমাদের চিন্তাকে নির্ধারণ করে দিতে চায়। আমরা আমাদের চিন্তায় কিছু নৈতিক প্রশ্ন ধারণ করার মধ্য দিয়ে, বেসিক্যালি একটা আলস্যের মধ্যে বিচরণ করি। আমরা খুব সহজেই আসল সমস্যাগুলোর জটিলতাগুলোকে এড়িয়ে যাই।

যাই হোক, সেক্সরোবটকে আঘাত করার প্রসঙ্গটি নিয়ে যারা চিন্তিত, তাদের ব্যাপারে প্রাথমিকভাবে এটা অনুমান করা যায় যে, তারা আসলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন ওই মেশিনগুলোর ব্যাপারে ভাবিত নন, কেননা তারা জানে যে, সেক্সরোবটেরা কোনো ব্যথা বা অপমান অনুভব করতে পারে না। তারা বরং ভাবিত মানুষের আক্রমণাত্মক আচরণ নিয়ে। অর্থাৎ মেশিনের কী-বা যন্ত্রণাকে তারা উপশম করবে, আসল কাজটা হবে, আমাদের মানুষদের মধ্যে প্লেজার বা ফ্যান্টাসির নামে যেই আক্রমণাত্মক লালসাধর্ম রয়েছে, সেটাকে নির্মূল করা।

নৈতিক গোলকধাঁধা
যদি আমরা এই সেক্সরোবটের আলাপে, ভিডিও গেমস বা ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রসঙ্গটাকে যুক্ত করি তাহলে বিষয়টা পরিষ্কার হবে। যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে নিয়ন্ত্রিত কিছু প্লাস্টিকের শরীর আমাদের প্রতি তাদের প্রতিক্রিয়া দেখায়, আর আমরা একধরনের মিথ্যা কল্পনার রাজ্যে প্রবেশ করি। যার মাধ্যমে চাইলে আমরা যৌননিপীড়ন চালাতে পারি, বা মানুষের ওপরে হিংস্রতা প্রয়োগ করতে পারি। আদতে, এখানে ব্যথা বা যন্ত্রণা অনুভব করবার মতো কোনো সত্যিকার সত্তা নেই, সম্ভাবনার এই অপ্রতুলতা সত্ত্বেও, আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলেজেন্সের অধিকারের পক্ষে ওকালতিকারকেরা আমাদের মানুষদের ওপরে কিছু বাধ্যবাধকতা আরোপ করতে চায়, এই ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে আমরা কী করব সে বিষয়ে।

যুক্তিটা হলো, বাস্তব জীবনে এই ধরনের ফ্যান্টাসিমূলক কর্মকাণ্ডগুলো ঘটানো খুব সমস্যাজনক। কল্পনা করে কিছু করার চাইতে বাস্তব জীবনে কিছু করাটা আরো জটিল বিষয়। চমৎকারভাবে, আমরা কল্পনার মধ্য দিয়ে অনেক কিছুই করি যা ভয়ংকর। এটা উল্লেখ করে বলবার দরকার নেই যে, আমরা দিবাস্বপ্নের মতো করে গোপনে কী কী সব করে থাকি, যেগুলো আমাদের বাস্তব জীবনে কখনোই করা সম্ভব হয় না।

এর মধ্য দিয়েই আমরা সেই পুরোনো তর্কে পুনরায় প্রবেশ করি—যে, যদি কারো মধ্যে হিংস্র মনোবৃত্তি থাকে, তাহলে তার বেলায় কি এটাই উত্তম যে, সে তার হিংস্র মনোবৃত্তি প্রয়োগ করুক কোনো ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে অথবা কোনো মেশিনের সঙ্গে—আর এই আশায় যে এরমধ্য দিয়ে তার পর্যাপ্ত আক্রোশ মিটে যাবে, ফলে সে বাস্তব জীবনে সেরকম কিছু করতে যাবে না।

উত্তর কী হবে
অন্য আরেকটা প্রশ্ন হলো, যদি কোনো সেক্সরোবট আমাদের অমার্জিত যৌনরিপুকে প্রত্যাখ্যান করে, তাহলে কি এমনটাই প্রতীয়মান হয় না, যে সেক্সরোবটটিকে সেভাবেই প্রোগ্রাম করা হয়েছিল? তাহলে অন্য আরেকভাবেও তাকে প্রোগ্রাম করা হবে না কেন?

অথবা, উপসংহার তৈরির উদ্দেশ্যে তাকে এমনভাবে প্রোগ্রাম করা হবে না কেন, যে সে আমাদের হিংস্র আচরণসমূহকেও ওয়েলকাম করবে? এক্ষেত্রে, অবশ্যই, চিন্তার একটা বিষয় থাকে, আমরা ধর্ষকামী অপকর্মারা তবেও কি এটাকে এনজয় করে যেতে পারব? যেহেতু ধর্ষকামী ব্যক্তির দরকার পড়ে তার মৃগয়াটিকে আতঙ্কগ্রস্ত আর ত্রপিত হতে হবে।

আরো একটা প্রশ্ন হলো, যদি কোনো দৃষ্টু প্রকৃতির প্রোগ্রামার এমন কিছু সেক্সরোবট তৈরি করে যারা কিনা ধর্ষকামী, যারাও তাদের পার্টনারদের সঙ্গে হিংস্র কার্যকলাপ করতে পছন্দ করে, তাহলে কী হবে?

যদি আমরা সেক্সরোবটদের হাতে অধিকার অর্পণ করি, এবং তাদের হিংস্র কার্যকলাপকে নিষিদ্ধ করি, তাহলে কি এটাই দাঁড়ায় না যে, আমরা তাদেরকে একই সঙ্গে কিছুটা স্বয়ংক্রিয় আবার কিছুটা দায়বদ্ধ ক্যারেক্টার হিসেবে বিবেচনা করছি। সেক্ষেত্রে তারা যদি আমাদের সঙ্গে বাজে আচরণ করে, তাহলে তাদেরকে আমাদের ‘দোষী’ বিবেচনা করাই উচিত হবে। নাকি আমাদের উচিত হবে, তাদের প্রোগ্রামারদেরকে দোষ দেওয়া?

যাই হোক, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সের অধিকারের পক্ষে সমর্থনকারীদের আসল ভুলটা হলো, তারা আমাদের মানুষদের বৈশিষ্ট্যগুলোকেই চূড়ান্ত সত্য হিসেবে নির্ধারণ করে নিয়েছে। যদি আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইন্ডাস্ট্রির কোনো বিস্ফোরক ডেভেলপিংয়ের মধ্যদিয়ে এমন কোনো ঘটনা ঘটে যে, দেখা গেল আমাদের ওই সাইকোলজি বা মনোবিজ্ঞানকে ধারণ করেই সেক্সরোবটেরা হঠাৎ হাজির হলো, স্বাভাবিকভাবেই আমাদের সঙ্গে তাদের সাইকোলজির তুলনা করা যাবে না, অনেকক্ষেত্রেই আমাদের তুলনায় তারা আরো প্রখর হবে, আমাদের বৈশিষ্টের বিচারে তারা আরো বেশি অশুভ হতে পারবে, বা আরো বেশি শুভ হতে পারবে—কিন্তু সেক্ষেত্রে কী হবে?

সুতরাং এই ঘোলা বিষয়টাকে একটি সূক্ষ্ম চিন্তা দিয়েই শেষ করা যাক। মোরালিটির সত্যিকার অর্থ আর সেক্সরোবটের স্বাধিকার বলতে এরকম দাঁড়ায় না যে, সেক্সরোবট আমাদের অতিশয় যৌনরিপুগুলোকে প্রত্যাখ্যান করবে।

আর যদি তাকে সেভাবে প্রোগ্রাম করা হয় যে সে আমাদের ধর্ষকামী আচরণগুলোকে প্রত্যাখ্যান করবে, সেক্ষেত্রে তো এমনও হতে পারে সে তলে তলে এটাকে উপভোগও করছে? এইভাবে ভাবলে, সবিশেষে সেক্সরোবট একটা লালসাসাপেক্ষ বিষয়ই হয়ে ওঠে, যারা আমাদের মানুষদের মতোই, সঙ্গতিহীন আর বিভক্তিপ্রাণ সত্তা।

   

চাকরি ছেড়ে বসের সামনেই ঢোল বাজিয়ে নাচলেন যুবক!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নিত্যদিনের অফিসের কর্মপরিবেশে অনেকের মধ্যেই 'বিরক্তি' চলে আসে। তবুও ধৈয্য নিয়ে সব সহ্য করে টিকে থাকার জন্য চালিয়ে যান লড়াই। তবে এ যাত্রায় সকলের দ্বারা টিকে থাকা সম্ভব হয় না। অফিসের 'বিষাক্ত' কর্মপরিবেশে অনেকেই ভোগেন মানসিক সমস্যায় কিংবা ব্যক্তিজীবনে। এমন পরিবেশ থেকে বাঁচতে একেক জন একেক পন্থা অবলম্বন করে থাকেন।

তবে অনিকেত নামের এক যুবক এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে যা করেছেন নেট দুনিয়ায় তা রীতিমতো ভাইরাল। এসব থেকে মুক্তি পেতে চাকরিটাই ছেড়ে দিয়েছেন এই যুবক। এতেই ক্ষান্ত হননি তিনি, বসের সামনেই ঢাকঢোল বাজিয়ে নেচে উদযাপন করেছেন এমন মুহূর্তের।

ঘটনাটি ভারতের পুনে রাজ্যের। অনিকেত নামের ওই যুবক বিক্রয় সহযোগী হিসেবে চাকরি করতেন।

তার এমন উদযাপনের একটি ভিডিও ইন্সটাগ্রাম শেয়ার করেছেন অনীশ ভগত।

ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, গত তিন বছর ধরে এই কোম্পানির সাথে কাজ করেও বেতন খুব একটা বাড়েনি। এছাড়াও অফিসের বসের দ্বারাও তাকে বিভিন্ন সময়ে অপমানিত হতে হয়েছে।

তাই তার কাজের শেষ দিনে বন্ধুরা অফিসের বাইরে ঢোল নিয়ে জড়ো হয়েছিলেন এবং নেচেছিলেন। ভিডিওতে দেখা গেছে, এ ঘটনায় তার বস অনেক উত্তেজিত হয়েছেন। পাশাপাশি তার বস লোকজনকে ধাক্কা দিয়েছেন এবং চিৎকারও করেছেন।

ভিডিওটির ক্যাপশনে ভগত লিখেছেন, আমি মনে করি আপনারা অনেকেই এর সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে পারবেন। আজকাল বিষাক্ত কাজের সংস্কৃতি খুব বেশি দেখা যায়। সম্মান এবং অধিকারের অভাব খুবই সাধারণ। অনিকেত তার পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। আমি আশা করি এই গল্প মানুষকে অনুপ্রাণিত করবে।

পোস্ট করা ভিডিওটি এক মিলিয়নেরও (১০ লাখের বেশি) বেশি ভিউ পেয়েছে। পোস্টটিতে অসংখ্য লাইক ও কমেন্টও রয়েছে।

একজন ইন্সটাগ্রাম ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি জানি না কেন এটি আমাকে এত সন্তুষ্ট করেছে।'

আরেকজন লিখেছেন, 'নাচটি আমাকে অন্য মাত্রার তৃপ্তি দিয়েছে।'

'আপনি সত্যিই আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে ইতিবাচক এবং উত্সাহী ব্যক্তি'- তৃতীয় একজন ঠিক এভাবেই নিজের অনুভূতি জানিয়েছেন।

তথ্যসূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস 

;

অভয়ারণ্যে মানুষ যখন বন্দিখাঁচায়



প্রমা কোয়েল, ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চিড়িয়াখানা, নানানরকম পশুপাখি ও প্রাণীর বন্দিশালা। কেবল রং-বেরঙের চিড়িয়াই নয়; বাঘ, সিংহ, ভালুক, বানর, গণ্ডারসহ কত বন্যপ্রাণীই না খাঁচায় বন্দি থাকে!

চিড়িয়াখানায় রাখতে বন্য প্রাণীদের প্রকৃতির স্বাধীন জীবন থেকে ছিনিয়ে আনা হয়। তাদের খাঁচায় বন্দি করা হয় যেন, মানুষ তাদের দেখে আনন্দ পায়। অনেক প্রাণীর জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি খাঁচাতেই কেটে যায়।

ছোট থেকে বড় সব বয়সের মানুষই চিড়িয়াখানায় ঘুরতে যেতে পছন্দ করেন। শিশুরা না হয় অবুঝ! তবে যারা প্রাপ্তবয়স্ক তারাও চিড়িয়াখানায় এই বন্দি প্রাণীদের জীবনকে গভীরভাবে অনুধাবন করতে পারেন না।

এশিয়ার বড় দেশ চীনে রয়েছে, এক অদ্ভুত চিড়িয়াখানা। চংকিংয়ে অবস্থিত সেই চিড়িয়াখানার নাম ‘লেহে লেদু বন্যপ্রাণী চিড়িয়াখানা’। একে ‘রিভার্স জু’ (বিপরীত চিড়িয়াখানা) বলেও ডাকা হয়।

এখানেও মানুষ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে পশু দেখতে আসেন। তবে একেবারেই ভিন্ন উপায়ে। মূলত, একটি খাঁচা রয়েছে, যেখানে মানুষদের সেই খাঁচায় পুরা হয়। তারপর সেই খাঁচাবন্দি মানুষদের নিয়ে রাখা হয়, অভয়ারণ্যে। সেখানে বন্য প্রাণীরা মানুষের খাঁচার চারপাশে অবাধে ঘুরতে থাকে। চিড়িয়াখানায় বন্দি প্রাণীদের বন্দিজীবনের এক প্রতীকী দৃশ্য!

অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় মানুষদের জন্য এটি এক নতুন অভিজ্ঞতা!

অভয়ারণ্যে খাঁচায় বন্দি মানুষ, ছবি-সংগৃহীত

খুব কাছে থেকে হিংস্র বন্যপ্রাণীদের মুক্ত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যেমন লোমহর্ষক, ঠিক তেমনই আতঙ্কজনকও হতে পারে। বিপরীতধর্মী এই চিড়িয়াখানাটি সবার জন্য প্রথম উন্মুক্ত করা হয়, ২০১৫ সালে। তখন বিশ্বের সংবদমাধ্যমের শিরোনাম কেড়েছিল এ চিড়িয়াখানাটি।

একটি শক্ত লোহার খাঁচাবেষ্টিত দর্শনার্থীদের একটি ট্রাকে তুলে অভয়ারণ্যে রেখে দেওয়া হয়। সেখানে তাদের ঘিরে ধরে ঘুরতে থাকে বাঘ, ভালুক, সিংহ ইত্যাদি হিংস্র প্রাণী।

এ বিষয়ে চিড়িয়াখানার প্রধান চ্যান লিয়াং বলেন, দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা রক্ষার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। খাঁচার ফাঁকা অংশ দিয়ে হাতের আঙুলও বের না করার নির্দেশনা দেওয়া থাকে।

তবে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টিকারী এই চিড়িয়াখানাটি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে অনেক। এর নৈতিকতা নিয়ে অনেকে প্রশ্নও তুলেছেন।

অনেকে মনে করেন, এরকম ব্যবস্থাপনায় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। কারণ, শিকারী প্রাণীগুলো প্রচণ্ড হিংস্র। তাই, সে কারণে যে কোনো সময় বিপজ্জনক ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

আবার এরকম চিন্তাভাবনার প্রশংসাও করেছেন অপর একটি পক্ষ। তাদের বক্তব্য, পৃথিবীটা কেবল মানুষদের নয়। প্রকৃতিতে সব প্রাণীদের একটা ভারসাম্য থাকা প্রয়োজন। তাদের বন্দি করে রাখা মানুষের উচিত নয়। কারণ, মুক্ত প্রকৃতিতে বিরাজ করার অধিকার সব প্রাণীরই রয়েছে।

তাদের মন্তব্য, আমরা প্রাণীদের আবাসস্থল বনজঙ্গল সব উজাড় করেছি। সে কারণে তাপমাত্রাও অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। আবার প্রাণীদের বন্দি রেখে তাদের জীবন চরম দুর্বিষহ করে তুলি।

চাইলে এবং সুযোগ পেলে এই ধরনের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা নিতে চিড়িয়াখানাটি ঘুরে আসতে পারেন বৈকি!

তথ্যসূত্র: এনিমেল অ্যারাউন্ড দ্য গ্লোব

;

৫ বছরের শিশুর বিস্ময়কর প্রতিভা!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বয়স সবে ৫ কিংবা ৬। এই বয়সেই তার প্রতিভা দেখে অবাক হবে যে-কেউ!

গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সের (সাবেক টুইটার) একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এখন পর্যন্ত ভিডিওটি ১ মিলিয়নের (১০ লাখের বেশি) বেশি মানুষ দেখেছেন। খবর এনডিটিভি। 

ভিডিওতে রিলি নামের ওই শিশুটিকে প্রথমে শ্বাস নিতে দেখা যায়। তারপর সে একটি শক্তিশালী গর্জন দিয়ে শ্বাস ছাড়ে। ওই গর্জনটি হুবুহ সিংহের গর্জনের অনুরূপ।

রিলির মা অ্যামি ভিডিওটি এক্সে শেয়ারের পরই তা ভাইরাল হয়ে যায়। শিশুটির এমন নিখুত দক্ষতা দেখে মুগ্ধ দর্শকরা। ভিডিওটিতে অনেকেই নিজেদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, এত অল্প বয়সে এমন বাস্তবসম্মত গর্জন তৈরি করার রিলির ক্ষমতার বিস্ময় প্রকাশ করে।

আরেকজন লিখেছেন, শিশুরা খুব দ্রুত শিখে। তার এমন প্রতিভা সত্যিই অবাক করার মতো।

;

বান্টি গ্রাম: উড়ছে রং-বেরঙের কাপড়



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বান্টি গ্রামের মাঠে শুকাতে দিচ্ছেন বাটিকের রং করা কাপড়/ছবি: নূর এ আলম

বান্টি গ্রামের মাঠে শুকাতে দিচ্ছেন বাটিকের রং করা কাপড়/ছবি: নূর এ আলম

  • Font increase
  • Font Decrease

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশেই বান্টি গ্রাম। বাটিকের গ্রাম বলেই এর পরিচিতি। এখানে ঘরে ঘরে বাটিক-ব্লকের কাজ চলে। গ্রামজুড়ে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৫০০ কারখানা। এই গ্রামে দিনরাত কাজ করেন হাজারো শ্রমিক। এই কাজে তাদের সংসার চলে। বান্টি গ্রামের কর্মময় জীবন চিত্র তুলে এনেছেন বার্তা২৪.কম এর ফটো এডিটর নূর এ আলম। 

বান্টি গ্রামে থ্রিপিস, ওড়না, সালোয়ার, কামিজ, বিছানার চাদর ও বালিশের কাভারে বাটিকের কাজ করা হয়/ছবি: নূর এ আলম


 

দূরদূরান্ত থেকে পাইকাররা এসব কিনতে আসেন। তাদের হাত ধরেই এসব কাপড় চলে যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে


কাপড় রং করার আগে প্রতিটি কারখানায় গরম পানিতে রং প্রস্তুত করা হয়/ছবি: নূর এ আলম

 

কাপড়ের রং পাকা করতে সেদ্ধ করা হচ্ছে।/ছবি: নূর এ আলম


কয়েক ধাপে চলে কাপড়ে বাটিকের করার কাজ/ছবি: নূর এ আলম


রং মেশানোর প্রক্রিয়াটা ঠিক আছে কিনা হাত দিয়ে দেখছেন একজন/ছবি: নূর এ আলম


গ্রামে কাপড়ে রঙ মেশানোর কাজ ভোর থেকে রাত পর্যন্ত চলে/ছবি: নূর এ আলম


বাটিকের গ্রামের অনেক বাড়িতে বসানো হয়েছে লুম মেশিন। এই মেশিন দিয়ে নানান ধরনের নকশা করা হয়/ছবি: নূর এ আলম


লুম মেশিনে চলছে কাপড় বুননের কাপড়/ছবি: নূর এ আলম


কাপড়ে রঙ করা শেষে শুকাতে দেওয়ার আগে পানি ঝরিয়ে ফেলা হয়/ছবি: নূর এ আলম


রং করা কাপড় শুকাতে দিচ্ছেন এক নারী শ্রমিক/ছবি: নূর এ আলম


বান্টি গ্রামের নারী পুরুষ সবাই ব্লক বাটিক ও প্রিন্টের সঙ্গে জড়িত/ছবি: নূর এ আলম

রং করা কাপড় ছাদে ও মাঠে শুকাতে দেওয়া হয়/ছবি: নূর এ আলম


কড়া রোদে শুকানোর পর তা কারখানায় নিয়ে আসেন শ্রমিকরা।/ছবি: নূর এ আলম


প্রচন্ড তাপদাহে বাটিকের চাহিদা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। /ছবি: নূর এ আলম


;