ট্রুডোকে মেলানিয়ার চুমু : বিশ্বজুড়ে আলোড়ন শরীরী ভাষার বিশ্লেষণ



ফিচার ডেস্ক, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
এই সেই আলোড়ন সৃষ্টিকারী ছবি

এই সেই আলোড়ন সৃষ্টিকারী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/27/1566911386705.jpg

ফ্রান্সের বিয়ারিটজে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলোর সম্মেলন জি-সেভেন। তবে, সম্মেলনের বিষয়বস্তু বা বিশ্বনেতাদের সিদ্ধান্তের চেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফাস্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের ‘চুমু-কাহিনী! ছবিতে দেখা গেছে, স্বামীর হাত ধরা অবস্থায় মার্কিন ফার্স্টলেডি মেলানিয়া ট্রাম্প কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে চুমু খাচ্ছেন। ওই সময় ডোনাল্ড ট্রাম্প চোখ নিচু করে রেখেছেন। চেহারাও বেশ বিমর্ষ। এই বিষয়টিই আলোড়ন তুলেছে বিশ্বজুড়ে, ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, মেলানিয়া-ট্রুডোর চুমুর ছবিটি ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। টুইটারে এটি নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনাও। ছবিটি নিয়ে একেকজন নিজের মতো করে ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, ছবিতে ট্রলও করা হচ্ছে ট্রাম্পের বিমর্ষ চেহারা নিয়ে।

ছবিতে দেখা যাচ্ছে, মোহনীয় ভঙ্গিতে ট্রুডোকে চুমু খাচ্ছেন বা খেতে যাচ্ছেন মেলানিয়া। ওই মুহূর্তে মার্কিন ফার্স্টলেডির ভঙ্গিতে অনেকেই ট্রুডোর প্রতি তার মুগ্ধতা খুঁজে পেয়েছেন।

এ নিয়ে এক টুইটার ব্যবহারকারী লিখেছেন, জাস্টিন ট্রুডোকে দেখে মনে হচ্ছে জি-৭ সম্মেলনে কেবল মেলানিয়াকে খুঁজে পেয়েছেন। এর সঙ্গে তিনি ‘হ্যাসট্যাগ মেলানিয়ালাভসট্রুডো’ যোগ করে দিয়েছেন।

আরেকজন লিখেছেন, ‘মেলানিয়া যখন স্বামীকে পিছনে রেখে ট্রুডোকে চুমু খাচ্ছেন, তখন সবাই তাদের দিকে তাকিয়ে হাসছে।’

লোনি লাভ নামের এক কমেডিয়ান লিখেছেন, ‘সব ধরনের ঝুঁকি নিতে এক পায়ে খাঁড়া মেলানিয়া।’

আরেকজন লিখেছেন, ‘মেলানিয়াকে দোষ দেওয়া যায় না! ট্রুডোর আবেদনই এমন।’

ডিয়ান ওবায়দাল্লাহ নামে আরেকজনের আইডি থেকে লেখা হয়েছে, ছবি দেখে মনে হচ্ছে মেলানিয়াও কানাডায় পালিয়ে যাওয়ার জন্য একটি বিমানের কথা ভাবছেন।

অন্য এক টুইটার ব্যবহারকারী লিখেছেন, ট্রুডোর ব্যক্তিত্বই এমন; পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তির হাত ধরেও তাকে চুমু খেতে মন চায়!

বিশ্বনেতা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের একসাথে পেয়ে স্বাভাবিকভাবেই কর্মব্যস্ত হয়ে উঠেছিল ফটোগ্রাফারদের ক্যামেরাগুলো। সামিটের ইতি টানতে আয়োজিত এই ‘ফ্যামিলি ফটো’ সেশনে ট্রুডোর প্রতি মার্কিন ফার্স্ট লেডির এই ‘হৃদ্যতাপূর্ণ উষ্ণতা’ যেন অত্যন্ত বিশেষ একটি মুহূর্ত। গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এমন কূটনৈতিক আয়োজনে এ ধরনের ছবি যে একটা ফ্রেমবন্দি হবে, তা কেউ ধারণাও করেননি। দুজনের উষ্ণতাপূর্ণ চাহনি আর আচরণ যেন আরো অনেক কিছুই প্রকাশ করে।

মেলানিয়া আর ট্রুডোর এই ভঙ্গিমা নিয়ে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে তাদের শরীরী ভাষা। যেমনটা তাদের আচরণের ব্যাখ্যা খোঁজার চেষ্টা করেছেন বিখ্যাত শরীরী ভাষা বিশেষজ্ঞ প্যাটি উড। আসুন দেখা যাক কী ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি—

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/27/1566912171604.jpg
মার্কিন শারীরী ভাষা বিশেষজ্ঞ প্যাটি উড


হাত ধরে থাকা: ট্রুডো আর মেলানিয়ার মুখের দিকেই বেশিরভাগ মানুষ তাকিয়ে থাকলেও নিচে কিন্তু মেলানিয়া ঠিকই ধরে রেখেছেন স্বামীর হাত। এটা দুজনের মধ্যকার আবেগপূর্ণ ভালোবাসা প্রকাশ করে। স্ত্রীর হাতের কয়েকটি আঙ্গুল ট্রাম্প এমনভাবে ধরে রয়েছেন যেন তিনি স্ত্রীর আঙুলগুলোকে ওপরের দিকে টানছেন। ট্রাম্প তার বুড়ো আঙুল দিয়ে ধরেছেন মেলানিয়ার হাত। কিন্তু মেলানিয়ার বুড়ো আঙুল ট্রাম্পের হাত জড়িয়ে নেই। কাজেই এখানে দুজন হাত ধরে আছেন দেখা গেলেও আসলে কিভাবে ধরে আছেন তা বুঝতে হবে। আর এ ধরার প্রক্রিয়াটি সময়ের সাথে বদলেছে। আরো দেখতে হবে, অন্যান্য জুটিদের হাত ধরা আর তাদেরটা ধরার মধ্যে পার্থক্যটা কী।

ট্রাম্পের সঙ্গে মেলানিয়ার অবস্থান: জুটি হিসেবে তাদের অবস্থানটাও বিবেচ্য। ট্রাম্পের সাথে মেলানিয়ার শারীরিক সংস্পর্শ নেই। যদিও দুজনের হাত স্পর্শ করে রয়েছে। দুজনের পুরো হাতের অবস্থান দেখে বোঝা যায়, ট্রাম্পের হাত মূলত মেলানিয়ার হাতের ওপর নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে।

ট্রুডো এবং মেলানিয়ার অবস্থান: ট্রুডো ও মেলানিয়ার দূরত্ব ৮ ইঞ্চির মতো হবে। কাজেই তারা খুব কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছেন। এই দূরত্বের মধ্যে অন্তরঙ্গতা তৈরি হতে পারে। ১২ থেকে ১৪ ইঞ্চি দূরত্ব থাকলেই সৃষ্টি হতে পারে অন্তরঙ্গতা। মেলানিয়া ট্রুডোকে চুমো না খেয়ে সরে যেতে চাইছেন না। সাধারণত এ ধরনের অভ্যর্থনামূলক আচরণের ক্ষেত্রে নারীদের নিম্নাংশ এবং বুক কিছুটা দূরে থাকে। এই ভঙ্গিকে বলা হয় ‘সোশাল আর্ক’। এ জাতীয় সামাজিক অভ্যর্থনার সময় মূলত দেহের যৌন স্পর্শকাতর অংশগুলোকে দূরে রাখতে হয়।

মেলানিয়ার মোহনীয় দৃষ্টি: মেলানিয়া কিভাবে ট্রুডোর দিকে তাকিয়ে আছেন, সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ইউরোপিয়ান নারী-পুরুষরা পারস্পরিক অভিবাদন জানাতে পরস্পরকে চুমু খেতে পারে। এ সময় সাধারণত মেয়েদের দু চোখ বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু ছবিতে মেলানিয়ার চোখ বন্ধ নেই। এমনকি ট্রুডোর চোখের পাতার অবস্থান দেখেও বোঝা যায় তাদের চোখ বন্ধ নেই। তবে, দৃষ্টির ভঙ্গিটা কিন্তু বেশ মোহনীয় মেলানিয়ার। আসলে মেলানিয়া সুখানুভূতি নিয়ে তাকিয়ে আছেন। তিনি ট্রুডোকে চুমু খেতে আন্তরিকভাবে ইচ্ছুক। কাজটি করতে মেলানিয়ার মুখ প্রস্তুত, তার গলা উঁচু হয়ে উঠেছে। তার ঠোঁট চুম্বনের জন্যে প্রস্তুত। আর চাহনি তো কথাই নেই। দুজনের এই ছবি কোনো রোমান্টিক উপন্যাসের প্রচ্ছদ হতে পারে।

ট্রাম্পের অভিব্যক্তি: ছবি দেখে বোঝা যাচ্ছে, মেলানিয়া ট্রুডোকে একটা আবেদনময়ী চুমু দিতে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু স্বামীর হাত ধরে থেকেই তিনি কাজটি করতে চলেছেন। কিন্তু তার এমন আচরণ স্বাভাবিকভাবেই ট্রাম্পকে প্রভাবিত করেছে। রীতিমতো জনতার মঞ্চে মেলানিয়া ঠিক এ কাজটি করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। তাই, এটা বুঝে ক্ষোভের সাথেই নিচে তাকিয়ে ট্রাম্প।
ট্রাম্পের চিবুক খেয়াল করুন। তার ঠোঁটের দিকে তাকান। চোখ দুটো বন্ধ, ভ্রুজোড়া দেখলে বোঝা যায় তার মধ্যে টেনশন কাজ করছে। তার চোখে এবং মুখে কিছু তীর্যক ভাঁজ পড়েছে যা আসলে ক্ষোভের প্রকাশ করে।

তবে উডের এই পর্যবেক্ষণের সঙ্গে একমত নন আরেক শরীরী ভাষা বিশারদ জুডি জেমস। তার মতে, দাম্পত্য জীবনে যথেষ্ট সুখী ট্রাম্প আর মেলানিয়া। ওই ছবিতে ভিন্ন কোনো বার্তা পাওয়ার সুযোগ নেই।
জুডি জেমসের মতে, ক্যামেরার যে ‘অ্যাংগেল’ থেকে ছবিটি তোলা হয়েছে, সেটাই আসলে হইচই ফেলেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

   

বৃষ্টি নাকি ধান, কী প্রার্থনায় দেশ?



কবির য়াহমদ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর, বার্তা২৪.কম
বৃষ্টি নাকি ধান, কী প্রার্থনায় দেশ?

বৃষ্টি নাকি ধান, কী প্রার্থনায় দেশ?

  • Font increase
  • Font Decrease

‘পথের কেনারে পাতা দোলাইয়া করে সদা সঙ্কেত/ সবুজে হদুদে সোহাগ ঢুলায়ে আমার ধানের ক্ষেত/ ছড়ায় ছড়ায় জড়াজড়ি করি বাতাসে ঢলিয়া পড়ে/ ঝাঁকে আর ঝাঁকে টিয়ে পাখিগুলে শুয়েছে মাঠের পরে/ কৃষাণ কনের বিয়ে হবে, তার হলদি কোটার শাড়ী/ হলুদে ছোপায় হেমন্ত রোজ কটি রোদ রেখা নাড়ি/ কলমী লতার গহনা তাহার গড়ার প্রতীক্ষায়/ ভিনদেশী বর আসা যাওয়া করে প্রভাত সাঁঝের নায়।’ পল্লীকবি জসীম উদদীনের ‘ধান ক্ষেত’ কবিতার অপূর্ব চিত্রায়ন কৃষকের শ্রম-ঘাম আর প্রকৃতির তরফে। কাব্যে-পঙক্তির বিমূর্ত চিত্র মূর্ত হয়েছে বিস্তীর্ণ মাঠে। কিষান-কিষানির বুক ভরা আশার সার্থক রূপায়ন হতে চলেছে এ-মৌসুমে।

এখন ভরা বৈশাখ। এ-সময়টা বোরো ধানের। বোরো ধান দেশের খাদ্যচাহিদার অন্তত ৫৫ শতাংশ মিটিয়ে থাকে। দেশের হাওরভুক্ত ৭টি জেলা সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাওরে এই বোরোর চাষ বেশি হয়ে থাকে। এই ধান অতিবৃষ্টি, বন্যা ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত না হলে দেশের খাদ্যচাহিদায় ঘাটতি পড়ে না। তাই এই ধান চাষ থেকে শুরু করে ঘরে ফসল তোলা পর্যন্ত অনুকূল আবহাওয়া, বিশেষ করে রোদের উপস্থিতি অতি জরুরি। বর্তমানে সে পরিস্থিতি চলছে।

সিলেট অঞ্চলের মানুষ বলে এই অঞ্চলের মানুষের চাওয়া-পাওয়া, হতাশা-উচ্চাশার সঙ্গে আমি পরিচিত। তাদেরকে উদাহরণ হিসেবে টানছি। তাদের সঙ্গে থেকে জেনেছি, বোরো মৌসুমে নির্বিঘ্নে ঘরে ফসল তোলা কতটা জরুরি। গবাদি পশুর খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে জরুরি খড় সংরক্ষণও। তীব্র রোদ এখানে সমস্যার নয়, এটা বরং আনন্দের। কারণ এই রোদ গা পোড়ালেও বুক ভরা আশার সার্থক বাস্তবায়নের পথ দেখায়। দেশের যে খাদ্যচাহিদা, যে খাদ্যনিরাপত্তা সেটা এই বোরো ধানের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। তাই চাষ থেকে শুরু করে প্রতিটি পর্যায়ে দরকার হয় প্রকৃতির সহায়তা। এবার এখন পর্যন্ত সে সহায়তা আছে, যদিও এ মাসের শুরুর দিকে একবার ঝড়বৃষ্টিসহ শঙ্কার কালমেঘ হাতছানি দিয়েছিল। সেটা আপাতত দূরে সরেছে।

কিষান-কিষানির দরকার এখন তীব্র রোদ। তারা এটা পাচ্ছে। দেশে তীব্র তাপদাহ। এখানেও এর ব্যতিক্রম নয়। তবু তারা এই রোদের প্রার্থনায় রয়েছে। বৃষ্টি এখন তাদের কাছে দুর্যোগ-সম। কারণ এই বৃষ্টি এবং অতি-বৃষ্টিসৃষ্ট বন্যা তাদের স্বপ্নসাধ গুঁড়িয়ে ভাসিয়ে নিতে পারে সব। ২০১৭ সালের দুঃসহ স্মৃতি এখনও বিস্মৃত হয়নি সুনামগঞ্জের কৃষকেরা। সে বছর সুনামগঞ্জের ছোট-বড় ১৩৭ হাওরের ফসল বন্যায় এবার ভেসে গিয়েছিল। গতবার কৃষক নির্বিঘ্নে ফসল ঘরে তুলেছেন। এরআগের বছর অন্তত ২০টি হাওরের ফসলহানি হয়েছিল বন্যায়।

প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল ক্ষেতের ফসল, দেশের খাদ্যনিরাপত্তা। এখানে প্রচণ্ড তাপদাহ তাই প্রভাব ফেলে সামান্যই। রোদে পুড়ে, প্রয়োজনে ছাতা মাথায় দিয়ে কিষান-কিষানিরা স্বপ্ন তোলেন ঘরে। তারা বৃষ্টির জন্যে প্রার্থনা না করে বরং রোদ আরও কিছুদিন অব্যাহত রাখার প্রার্থনায় বসেন। কৃষকেরা পরিমিত বৃষ্টি চায় চৈত্র মাসে, বৈশাখে চায় খাঁ খাঁ রোদ্দুর, কারণ এই রোদে সোনালী ধান ঘরে ওঠে। লোককথার প্রচলিত, ধান তোলার মৌসুমে ঝড়বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে ফসল রক্ষা করার জন্য হাওরবাসীরা তন্ত্রসাধক বা ‘হিরাল’ ও ‘হিরালি’-দের আমন্ত্রণ জানাতেন। তারা এসে মন্ত্রপাঠ করে ঝড়বৃষ্টি থামানোর জন্য চেষ্টা করতেন। লোকায়ত বিশ্বাস থেকে আগেকার মানুষজন এমন আচার পালন করতেন। এসবে সত্যি কাজ হতো কিনা সেটা বিতর্ক এবং ব্যক্তি-বিশ্বাসসাপেক্ষ, তবে এই হিরাল-হিরালিদের আমন্ত্রণ বলে বৈশাখে একদম বৃষ্টি চায় না হাওরের কৃষক।

হাওরপারের মানুষেরা যখন রোদ অব্যাহত থাকার প্রার্থনায়, তখন দেশজুড়ে তীব্র তাপদাহে পুড়তে থাকা মানুষেরা আছেন বৃষ্টিপ্রার্থনায়। দেশের জায়গায়-জায়গায় বৃষ্টি প্রার্থনায় ইস্তিস্কার নামাজ পড়া হচ্ছে, গণমাধ্যমে সচিত্র সংবাদ আসছে এর। কোথাও প্রবল বিশ্বাসে কেউ কেউ ‘ব্যাঙের বিয়ে’ দিচ্ছেন, এটাও বৃষ্টি প্রার্থনায়। সামাজিক মাধ্যমে গরমের তীব্রতার আঁচ মিলছে, বৃষ্টি নাকি ধান—কোনটা জরুরি এই প্রশ্নও তুলছেন কেউ কেউ। কেবল তাই নয়, বাংলাদেশের প্রচণ্ড তাপদাহ নিয়ে বিশ্বমিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে দেশের মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে প্রতিবেদন করেছে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, বিবিসি, এএফপি ও টাইমস অব ইন্ডিয়া। গণমাধ্যমগুলো বলছে, প্রচণ্ড গরমের কারণে টানা দ্বিতীয় বছর বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধের ঘোষণাও এসেছে। বৃষ্টি-প্রার্থনায় নামাজের আয়োজনের কথাও এসেছে বিশ্বমিডিয়ায়।

একদিকে প্রচণ্ড তাপদাহ, অন্যদিকে খাদ্যনিরাপত্তার প্রধান উপকরণ ধান ঘরে তোলার অনিশ্চয়তা—তবু অনেকের কাছে সাময়িক স্বস্তিই যেন মুখ্য। অথচ আর দিন দশেক বেরো আবাদ-এলাকায় বৃষ্টি না নামলে ধানগুলো ঘরে ওঠত কৃষকের। নিশ্চিত হতো খাদ্যনিরাপত্তার।

প্রকৃতির ওপর আমাদের হাত নেই, নিয়ন্ত্রণ নেই; তবু মনে করি আমাদের আকাঙ্ক্ষার প্রকাশে কৃষকদের গুরুত্ব থাকা উচিত। আমাদের চাওয়ায় হয়তো প্রকৃতির রীতি বদলাবে না, তুমুল রোদ্দুরের দেশে হঠাৎ বৃষ্টি নামবে না, তবে ধান ঘরে তোলার আগ পর্যন্ত রোদ্দুর কামনায় কৃষক স্বস্তি পাবে; ভাবতে পারবে এই দেশ আছে তাদের সঙ্গে।

কৃষকের জয় হোক। অন্তত বোরো-এলাকায় প্রকৃতি কৃষকের সঙ্গে থাকুক।

;

৫০ বছর আগে মহাকাশ থেকে তোলা পৃথিবীর ছবি আজও শ্রেষ্ঠ



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সালটা ১৯৬৮। বিশ্বব্যাপী মানুষ মেতে উঠেছিল বড়দিনের আনন্দে। তখনো জানতো না, বড়দিন উপলক্ষে তারা একটি বিশেষ উপহার পেতে চলেছে। পৃথিবী থেকে আমরা হরহামেশাই চাঁদ দেখি। অমাবস্যা-পূর্ণিমা, এমনকি পক্ষের মাঝামাঝি সময়ের বদৌলতে নানা দৃষ্টিকোণে নানা আকারের চাঁদ দেখতে পাই। তবে চাঁদ থেকে পৃথিবী দেখতে কেমন? এরকমটা হয়তো অনেকেই ভাবেন।

নাসার মহাকাশচারীরা অ্যাপোলো ৪ এ করে তখন চাঁদের চারপাশে টহল দিচ্ছে। সেখান থেকে তারা চাঁদের বাসকারীদের দৃষ্টিতে পৃথিবী কেমন হবে তার এক নমুনা জোগাড় করেন। ক্রিসমাসের কিছুদিন আগে ক্রুরা চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার সময় ব্যারেন লুনার হরিজোন থেকে একটি ছবি তোলে। সেখানে সুদূর মহাকাশ থেকে পৃথিবীর একটি সুন্দর দৃশ্য ধারণ করা হয়। চমৎকার সেই রঙিন ছবিটি সবকিছু পরিবর্তন করতে চলেছিল।

ছবিটি তুলেছিলেন মার্কিন নভোচারী বিল অ্যান্ডার্স এবং জিম লাভেল। ছবিটি ধারণ করার পর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে যান। অর্ধ শতাব্দী পার হয়ে যাওয়ার পরও এটিকে প্রকৃতির সবচেয়ে আইকনিক ছবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, এটিই মহাকাশ থেকে তোলা প্রথম রঙিন এবং উচ্চ রেজুলেশনের ছবি।

১৯৭০ সালে পরিবেশ সচেতনতা এবং এই ব্যাপারে সক্রিয়তা বাড়ানোর উদ্দেশে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে পৃথিবী দিবস প্রচারিত হওয়ার কারণে ছবিটিকে বিশেষ কৃতিত্ব দেওয়া হয়।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাইকেল প্রিচার্ড ছবিটিকে নিখুঁত দাবি করেন। তিনি বলেন, এই ছবিটি পৃথিবীর এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছিল, যা আগে কোনো ছবি করতে পারেনি। প্রকাণ্ড মহাবিশ্বে পৃথিবীর অস্তিত্ব কতটা ক্ষুদ্র গ্রহ, তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ছবিটি।

১৯৬০ সালের পরই পৃথিবী নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে শুরু করে। ষাটের দশকের শেষভাগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের মানুষ অনুধাবন করে পৃথিবীকে আজীবন একইভাবে ব্যবহার করা যাবে না। গ্রহের প্রতি আমাদের আরও অনুরাগী হতে হবে। সেই উদ্দেশে ১৯৬৯, ‘৭০ ও ‘৭১ সালে ‘ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ’, মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি’ এবং ‘গ্রিনপিস’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই ছবিটি প্রকাশের ১৮ মাস পর ২০ মিলিয়ন মার্কিন নাগরিক পৃথিবী রক্ষার আন্দোলনে রাস্তায় নামে।

পৃথিবী রক্ষা করার জন্য মানুষদের উৎসাহিত করার বেলায় ছবিটি অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। এখনো অবদি মহাকাশ থেকে পৃথিবীর পাঠানো ছবিগুলোর মধ্যে ১৯৬৮ সালে বড়দিনের আগে তোলা সেই ছবিটিকে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করা হয়।

;

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;