শেখ হাসিনার পেনাল্টি মিস হবে না



এরশাদুল আলম প্রিন্স, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি ও গণতান্ত্রিক বাম জোটের নেতা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম-ছবি: শাহরিয়ার তামিম।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি ও গণতান্ত্রিক বাম জোটের নেতা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম-ছবি: শাহরিয়ার তামিম।

  • Font increase
  • Font Decrease

সবচেয়ে বড় বাণিজ্য হলো এমপিগিরি

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আমার নেতৃত্বেই প্রথম মিছিল হয়েছিল

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর প্রথম প্রতিবাদ করেছিলাম আমি

নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তদারকির সরকার চাই


মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি ও গণতান্ত্রিক বাম জোটের অন্যতম নেতা। তুখোড় ছাত্রনেতা ও ডাকসুর সাবেক সভাপতি। দেশের সাম্প্রতিক রাজনীতি, নির্বাচন, ছাত্র রাজনীতি, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী রাজনৈতিক উত্থান পতনের ইতিহাসের নানা দিক নিয়ে সম্প্রতি মুখোমুখি হয়েছিলেন ‘বার্তা২৪’ এর।

সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এরশাদুল আলম প্রিন্স।

বার্তা: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কমিউনিস্ট পার্টির প্রস্তুতি ও ভাবনা সম্পর্কে কিছু বলবেন কি?

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম: সত্য কথা বলতে দেশ আজ নানা দিক থেকে গভীর সংকটে। হয়তো রাজনৈতিক সংকটটা দৃশ্যমান বেশি এবং মানুষ এটা নিয়ে বেশি আলোচনা করে। কিন্তু আমি যখন সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলি, তখন দেখি, তারা নির্বাচন নিয়ে চিন্তা করে বটে, কিন্তু তারা আরও বেশি চিন্তিত তাদের ন্যূনতম মজুরি নিয়ে। গার্মেন্টসের শ্রমিকদের দাবি, তাদের ন্যূনতম মজুরি হতে হবে ১৬ হাজার টাকা। কিন্তু সরকারি ঘোষণা দেয়া হলো এর অর্ধেক। যদি ন্যূনতম প্রয়োজনের অর্ধেক মজুরি দেয়া হয়, তাহলে সরকারি সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনও যা পায় তার অর্ধেক হওয়া উচিত?

দেশের উন্নয়ন ও জিডিপি অনেক দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে-এ রকম একটি হিসাব আমাদের সামনে তুলে ধরা হয়, কিন্তু আমাদের মোট সম্পদ বাড়ছে ঠিকই, কিন্তু সেই সঙ্গে বৈষম্যের হার বাড়া এ কথাই প্রমাণ করে যে এ সম্পদ সবার মধ্যে সমবন্টন হচ্ছে না। আমরা দেখতে পাচ্ছি, অর্থনীতির মধ্যে লুটপাটের ধারা বহুদিন ধরেই চলছে। এর একটি অশুভ প্রভাব আমাদের অর্থনীতি, সমাজ এমনকি রাজনীতির ভেতরেও অনুপ্রবেশ করেছে। রাজনীতিতেও এখন সবকিছু কেনা-বেচা ও লেনদেনের বিষয় হয়ে গেছে। নমিনেশন বাণিজ্য, ভোট বাণিজ্য, সিট বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য, অবসর বাণিজ্য, বদলি বাণিজ্য। কোথায় বাণিজ্য নেই?

আর সবচেয়ে বড় বাণিজ্য হলো ‘এমপিগিরি’। আমাদের রাজনীতি বাণিজ্যিকীকরণ ও দুর্বৃত্তায়ন দ্বারা আক্রান্ত হয়ে পড়েছে।

আমাদের ফিরে যেতে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়। আমাদের বামপন্থিদের ভিশন হলো- ভিশন মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১।

ইলেকশন নিয়ে আমরা আইয়ুব খানের আমল থেকেই সংগ্রাম করেছি। ‘এক লোক, এক ভোট’, ‘সার্বজনীন ভোটাধিকার দিতে হবে, দিতে হবে’। সে ভোট আদায় হলো, ভোটে জনগণ রায় দিলো। কিন্তু ভোটের সেই রায় কার্যকর করতে না দেওয়ায় আমাদের অস্ত্র হাতে সংগ্রাম করে রায় কার্যকর করতে হলো।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Sep/25/1537858657948.jpg

বার্তা : রাজনীতির এ বাণিজ্যিকীকরণ কীভাবে হলো?

মুজাহিদুল: মুক্তিযুদ্ধের যে চিন্তা ও ধারা ছিল সেখান থেকে দেশকে সম্পূর্ণ উল্টো দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পুঁজিবাদি লুটেরা ধনিক শ্রেণি এখন ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণ করছে। যখন বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা দেশ স্বাধীন করলাম এবং তিনি সরকার গঠন করলেন, তারপর থেকেই অবস্থা পরিবর্তন হতে থাকে। তার আগে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিতো মধ্যবিত্ত শ্রেণি। দলটির নেতৃত্ব এখন মধ্যবিত্তের হাতে নেই। দুর্ভাগ্যজনকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা এখন সম্পদ আহরণের উৎস হয়ে গেছে। আর বিএনপির জন্মই হয়েছে লুটেরা ধনিক শ্রেণির স্বার্থ রক্ষার জন্য।

বার্তা : সুষ্ঠু নির্বাচনের ধারাবাহিকতা আমরা কেন ধরে রাখতে পারলাম না?

মুজাহিদুল: জনগণ চাক বা না চাক যে কোনও ভাবেই ক্ষমতায় যাওয়ার মানসিকতাই সুষ্ঠু নির্বাচনের ধারাবাহিকতা নষ্ট করেছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে নীতি-মতাদর্শগত বিরোধ নেই সেটা আমি বলবো না। তবে মূল বিরোধ হলো লুটপাটের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্ব।

বার্তা : সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ঐক্য প্রক্রিয়াকে কীভাবে দেখছেন?

মুজাহিদুল: সম্প্রতি যে ঐক্য হয়েছে তা আসলে বিদ্যমান দ্বিদলীয় কাঠামোর মধ্যেই ঘোরপাক খাচ্ছে। এর মাধ্যমে বরং আসল বিকল্পের সংগ্রামটিকে দুর্বল করা হচ্ছে। আমরা বামপন্থীরা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে গিয়ে বিকল্প শক্তি গড়তে চাই। সে লক্ষ নিয়ে আমরা অগ্রসর হচ্ছি। আর নতুন ঐক্য প্রক্রিয়াটি এখনো প্রসেসে। বিএনপি ও বিএনপির সঙ্গে যে ২০ দল তাদের সঙ্গে নিয়ে একটি সরকারবিরোধী জোট গঠন করা হচ্ছে। সেটা তারা করুক। কিন্তু আমরা মনে করি, এক দু:শাসন নামিয়ে আরেক দু:শাসন ক্ষমতায় বসিয়ে আসল সমস্যার সমাধান হবে না। ফুটন্ত কড়াই থেকে বাঁচতে জ্বলন্ত চুলায় ঝাপ দিলে কোনো কাজ হবে না। বিপদ সরিয়ে আপদ আনলে কাজ হবে না। আমাদের মু্ক্তিযুদ্ধের ধারায় অগ্রসর হতে হবে।  

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Sep/25/1537858673584.jpg

বার্তা : আওয়ামী লীগতো মুক্তিযু্দ্ধের পক্ষের শক্তি। তাদের সাথে ঐক্য করার কথা ভাবছেন কি?

মুজাহিদুল: আওয়ামী লীগের ইতিহাসে অনেক উত্থান-পতন। একসময় ভাসানীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ছিল। যখন সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্ব নিলেন তখন দলটি ডানপন্থী হয়ে গেলো। আবার বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এটি ধীরে ধীরে মধ্য-বামপন্থী ধারায় আসলো। সেখান থেকে আবার ডান ও মধ্য-ডান অবস্থাতে ফিরে এসেছে।

মোশতাক বঙ্গবন্ধুকে পরামর্শ দিয়েছিল সমাজতন্ত্র বাদ দিয়ে পুঁজিবাদের পথ ধরতে, ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দিয়ে বাজার অর্থনীতির পথ ধরতে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু মোশতাকের কথা শোনেননি। মোশতাকের পরামর্শ ছিল সমাজতন্ত্র বাদ দিয়ে বাজার অর্থনীতি চালু করা। আমি সবিনয়ে আওয়ামী লীগের কাছে জিজ্ঞেস করতে চাই, আওয়ামী লীগ এখন বঙ্গবন্ধুর নীতিতে চলছে না মোশতাকের নীতিতে? বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আমার নেতৃত্বে প্রথম মিছিল হয়েছিল। প্রথম প্রতিবাদ করেছিলাম আমি। অনেক নেতাই সেদিন মোশতাকের মন্ত্রিসভায় যোগ দিয়েছিল। এরপর সামরিক শাসনের মাধ্যমে দেশ মুক্তিযুদ্ধের ধারা থেকে সরে গেলো। এরপর আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় এসেছে, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের মূল ধারায় দেশকে ফিরিয়ে নিয়ে যায়নি। ধর্ম নিরপেক্ষতায় প্রত্যাবর্তন করতে পারেনি। জামায়াতে ইসলামকে এখনও নিষিদ্ধ করা হয়নি। এসব নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি খেলা করছে।

অনেকে আমাদের বলে, আপনারা কি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে সমদূরত্বের নীতিতে চলেন? না, আমরা আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে দূরত্ব মেপে আমাদের দলের নীতি ঠিক করি না। তারাই আমাদের থেকে দূরত্ব মেপে নীতি ঠিক করে। কাজেই কাছে আসার সুযোগ কম। কারণ, আওয়ামী লীগের শ্রেণি চরিত্র বদলে গেছে। আগে ছিল মধ্যবিত্তের নেৃতৃত্বে পরিচালিত দল, এখন হয়েছে লুটেরা ধনিক শ্রেণি দ্বারা পরিচালিত দল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা শুধু মুখে বললে হবে না। গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা মানতে হবে।

বার্তা : নির্বাচনকালীন সরকারের কোনো ফর্মুলা কি আপনাদের আছে?

মুজাহিদুল: আমরা এরশাদের বিরুদ্ধে যখন লড়াই করি, তখন তিন জোটের রূপরেখা প্রণিত হয়। সেটা ড্রাফট করার দায়িত্ব আমরা ওপরই ছিল। প্রথম ড্রাফটে  বলেছিলাম যে আগামী তিনটা নির্বাচন তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করতে হবে।  শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া- দুজনেই এতে আপত্তি করলেন। তাই ওটা রাখা হয়নি। আমরা চেয়েছিলাম নির্বাচনের ওপর মানুষের বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে। কিন্তু এখন পর্যন্তও মানুষ বিশ্বাস করে, দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব না।

সরকার থেকে বলা হলো, অক্টোবরের মাঝামাঝি নির্বাচনকালী সরকার গঠন করা হবে। কিন্তু সংবিধানে নির্বাচনকালীন সরকার বলতে কিছু আছে কি? নাই। সরকার বলছে, নির্বাচনকালীন সরকারের কাজ হবে ‘রুটিন কাজ’। কিন্তু সংবিধানে ‘রুটিন কাজ’ বলে কিছু নেই। সরকার বলছে, শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে। কিন্তু সংবিধানে আছে নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। তাই সব কিছুই একটা প্রহসন। আমি এটাকে বলি ঐন্দ্রজালিক প্রহসন। আমরা নিরপেক্ষ তদারকির সরকার চাই। আজ্ঞাবহ কমিশনকে সরিয়ে দিতে হবে। সংসদ বহাল রেখে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনেক জটিলতা সৃষ্টি করবে। আমরা বলেছি, সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা চালু করতে হবে। যে দল যতো শতাংশ ভোট পাবে ততো শতাংশ সিট পাবে। না ভোট দেয়ার সুযোগ দিতে হবে। নির্বাচনে সাম্প্রদায়িকতার ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। নির্বাচনের খরচ রাষ্ট্র চালাবে। নির্বাচন কমিশন সব তদারকি করবে। সব সরকারি খরচে হবে। প্রজেকসন মিটিং হবে। সেখানে প্রার্থীরা কথা বলবেন। অনেক দেশেই এ সিস্টেম আছে।

বার্তা: ইভিএম নিয়ে আপনাদের অবস্থান কী?

মুজাহিদুল: নাসিম সাহেব কয়েকদিন আগে বলেছেন, মেসি-রোনাল্ডো পেনাল্টি মিস করতে পারে, কিন্তু শেখ হাসিনার পেনাল্টি মিস হবে না। পেনাল্টি যাতে মিস না হয়, সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। শোনা যায়-এটা অনুসন্ধান করে দেখতে হবে-সংসদে আইন পাস হওয়ার আগেই ও নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেয়ার আগেই চার হাজার টাকার ইভিএম কেনার জন্য এলসি খুলে দেয়া হয়েছে। কে এই এলসি খুললো? এখানে কি কি লেনদেন হয়েছে? এসব যোগসূত্র খুঁজে দেখতে হবে। এসব ইঞ্জিনিয়ারিং কলাকৌশল থেকে বের হতে হবে। সামরিক শাসনের সময়ও এসব কলা কৌশল প্রয়োগ করা হয়েছে। 

বার্তা: আপনি তুখোড় ছাত্রনেতা ও ডাকসুর সভাপতি ছিলেন। ছাত্র রাজনীতির ইতিবাচক পরিবর্তন কীভাবে আসতে পারে?

মুজাহিদুল: ছাত্র রাজনীতি আসলে অবদমিত। ছাত্র রাজনীতি হচ্ছে যেটা আমরা গণজাগরণ মঞ্চে দেখেছি, যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে যে প্রতিবাদ হয়েছে সেখানে এবং সাম্প্রতিক নিরাপদ সড়কের জন্য কিশোর বিদ্রোহও এর উদাহরণ। কিন্তু সাধারণ ছাত্রদের এ জাগরণকে দমন করে রেখেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে দখল করে রাখা এক ধরনের মাস্তান ও ক্যাডার বাহিনী। মিছিল না করলে, নেতার পেছন পেছন না ঘুরলে হলে সিট দেয়া হবে না-এসব চলছে। ছাত্র রাজনীতির নামে টেন্ডারবাজি-চাদাবাজি, লোকজনকে ধরে নিয়ে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় করা হচ্ছে। যদি ছাত্র নির্বাচন হয় তবেতো এসব হবে না। তাই নির্বাচনও হচ্ছে না। এর সাথে যুক্ত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটা অশুভ অংশ। দু:খের বিষয় শিক্ষকদের একটা অংশও এর সাথে জড়িয়ে পড়েছে। দেশে সব নির্বাচন হচ্ছে, কিন্তু ছাত্র নির্বাচন হচ্ছে না। ছাত্রসংসদের জন্য ফি দিতে হচ্চে ছাত্রদের। কিন্তু ছাত্রসংসদ নেই। সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নেই ২৮ বছর। অথচ, দরকার বছর বছর নির্বাচন। কিন্তু সেটি হচ্ছে না।

বার্তা: জনগণের উদ্দেশ্যে বিশেষ বক্তব্য আছে কি?

মুজাহিদুল: আমি বলতে চাই, দেশকে আমাদের স্বপ্নের মতো করে, মনের মতো করে গড়ে তুলতে হলে অনেক কিছু করতে হবে। আমি সবিনয়ে  দর্শকদের বলতে চাই-মনে রাখবেন জমি বর্গা দেয়া যায়, কিন্তু স্বার্থ কখনো বর্গা দেয়া যায় না। যার যার স্বার্থ নিয়ে নিজে নিজের সংগঠন, সমিতি এগুলো গড়ে তুলুন। ‍কৃষকরা কৃষকের সংগঠন গড়ে তুলুন, শ্রমিকরা শ্রমিকের সংগঠন গড়ে তুলুন। ছাত্ররা ছাত্রদের। নিজেরা সক্রিয় হয়ে মাঠে নামেন। আপনার স্বার্থ আপনাকেই আদায় করে নিতে হবে। গ্যালারিতে বসে খেলা দেখলে হবে না। জনগণের প্রকৃত বিকল্প শক্তিকে চিহ্নিত করে তাদেরকে সামনে নিয়ে আসার জন্য ব্যবস্থা করেন। তাহলেই আমরা সবাই মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে দেশ গড়তে পারবো।

বার্তা: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ

মুজাহিদুল: বার্তা২৪ কেও অনেক ধন্যবাদ

 

   

স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালের পথে খালেদা জিয়া



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালের পথে খালেদা জিয়া

স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালের পথে খালেদা জিয়া

  • Font increase
  • Font Decrease

স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। 

বুধবার (১ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তাকে বহনকারী গাড়িটি গুলশানের বাসভবন থেকে রওয়ানা হয়।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের প্রেস উইং কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার।

তিনি জানান, মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কিছু জরুরি স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় গুলশান-২ এর বাসভবন ফিরোজা থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন তিনি।

;

‘শুধু বিএনপি নয়, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় মানুষ আবারও জেগে উঠেছে’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শুধু বিএনপি নয়, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে দেশের মানুষ আবারও জেগে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, শুধু ডান আর বাম নয় সব পন্থির মানুষই সরকারের হাত থেকে মুক্তি চায়।

বুধবার (১ মে) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহান মে দিবস উপলক্ষে শ্রমিক দলের সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশ আজ দানবের কবলে পড়ে তছনছ হয়ে গেছে। যা বুঝেও না বুঝার ভান করে সরকার। শুধু ডান বা বাম নয় সব পন্থির মানুষ সরকারের হাত থেকে মুক্তি চায়।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, সরকারের অপরাধ, দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে। দেশটাকে তামাশায় পরিণত করেছে। তারা গণতন্ত্রের লেবাস পরে। শুধু বিএনপি নয়, সব গণতান্ত্রিক মানুষ আবারও জেগে উঠছে। তারা আন্দোলনের বিপ্লব করবে এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন মির্জা ফখরুল।

;

বিএনপিতে ভাঙন আওয়ামী লীগ চায় না: ওবায়দুল কাদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপিতে ভাঙন আওয়ামী লীগ চায় না বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তারা (বিএনপি) নিজেরা নিজেদের ভাঙনের জন্য দায়ী হবে।

বুধবার (০১ মে) বিকেলে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে শ্রমিক লীগ আয়োজিত সমাবেশ ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সম্পর্কে ভিতরের অনেক কথা শোনা যায়। নেতাদের কারও সঙ্গে কারও মিল নাই। যাকে পছন হয় না তাকে বলে সরকারের এজেন্ট। নেতায় নেতায় ঝগড়া করে একে অন্যকে দোষ দেয়। বিএনপিকে আমরা ধ্বংস করতে চায় না, বিএনপির ভাঙন আমরা চাই না। তারা নিজেরা নিজেদের ভাঙনের জন্য দায়ী হবে। ঘরে এতো শত্রু, বিএনপির ধ্বংসের জন্য বাইরের শত্রুর প্রয়োজন হবে না।

বিএনপি নেতাদের লজ্জা শরম নাই উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ বলেছেন, একসময় মনে করতাম বাংলাদেশ আমাদের জন্য বোঝা। আজ বাংলাদেশের যে উন্নয়ন, অগ্রগতি এটা দেখে আমি লজ্জা পাচ্ছি। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী দেখতে পায়, আর বিএনপি কালো চশমা পরেছে, তারা দেখতে পায় না।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি বিদেশিদের কাছে নালিশ করে, কার কাছে নালিশ করবেন? যাদের কাছে নালিশ করতেন তাদেরও বেসামাল অবস্থা। এখন আমেরিকায় আরব বসন্ত। ৪০টা বিশ্ববিদ্যালয় ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ করছে। পিছনের দরজা দিয়ে সমাবেশে উপস্থিত হয়। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী চীন সফরে গেছে কয়দিন আগে, সে সময় সাংবাদিকেরা জিজ্ঞেস করলো আপনাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন এতো প্রতিবাদ? তখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, এটা গণতন্ত্রের অংশ। প্রফেসরকে লাঠিপেটা, কি নির্যাতন কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে, কি যে বর্বরতা। তখন ভাবতে অবাক লাগে, এই দেশ নাকি গণতন্ত্রের প্রবক্তা, মানবাধিকারের কথা বলে।

শ্রমিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আদমজীর মত জোট মিল যাদের হাতে বন্ধ হয়েছে, শ্রমিক হত্যার রক্ত যাদের হাতে এই দেশ তাদের ক্ষমা করবে না। শেখ হাসিনা শ্রমিকবান্ধব প্রধানমন্ত্রী। আজকে শ্রমিকের ওপর কোন নির্যাতন নাই। বঙ্গবন্ধু আন্দোলন করেছেন, শ্রমিকের আন্দোলন করেছেন। নুরু মিয়ার রক্ত ৬ দফা আন্দোলনকে স্বাধীনতা আন্দোলনে পরিণত করেছে।

শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, শ্রমিকদের অধিকার দিবসে আমি বলবো আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। নেত্রী যা করেছে ভবিষ্যতে আরও করবেন। নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করে শত্রুতা সৃষ্টি করবেন না।

;

নির্বাচনী পর্যবেক্ষণে আ. লীগকে আমন্ত্রণ জানাল বিজেপি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি ও প্রচারণা দেখানোর জন্য আওয়ামী লীগকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে দেশটির ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। সাতটি ধাপে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

বুধবার (০১ মে) আওয়ামী লীগের উপদফতর সম্পাদক সায়েম খান এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, ভারতে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় আছে বিজেপি। অন্যদিকে, বাংলাদেশে পরপর চারটি জাতীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশভাবে জয়লাভ করে ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। এই সময়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে যুগান্তকারী উন্নয়ন হয়েছে। এই উন্নয়ন পুরো পৃথিবীকে অবাক করেছে।

সায়েম খান জানান, ভারতের ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগকে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ গণতন্ত্র ভারত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি যে আস্থাশীল এবং আওয়ামী লীগকে যে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও তাদের প্রকৃত বন্ধু মনে করে, এই আমন্ত্রণ সেই ইঙ্গিতই বহন করে।

তিনি জানান, বিজেপির নির্বাচনী প্রস্তুতি ও প্রচারণা পর্যবেক্ষণের জন্য আওয়ামী লীগকে পাঠানো আমন্ত্রণপত্রে তারা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একজন প্রতিনিধি প্রেরণের জন্য অনুরোধ করেছে। এই আমন্ত্রণের প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি হিসেবে দলের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং সংসদ সদস্য ড. সেলিম মাহমুদকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ভারত সফরে মনোনীত করেছেন।

আরও জানান, এই সফরটি মূলত পাঁচ দিনের। ১ মে থেকে ৫ মে পর্যন্ত। এই সফরে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধির সঙ্গে বিজেপির সিনিয়র নেতাদের বৈঠক রয়েছে। দিল্লির বাইরে বিজেপির নির্বাচনী প্রচারণা সরেজমিনে দেখানোর জন্য বিজেপি আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিকে ছত্রিশগড়ে নিয়ে যাবেন। ভারতের নির্বাচন ১৯ এপ্রিল শুরু হয়েছে, যা ১ জুন পর্যন্ত চলবে। ৪ জুন ভোটের ফলাফল ঘোষিত হবে।

;