সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে জেগে ওঠার শপথে শুরু হলো গণসঙ্গীত উৎসব



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে জেগে ওঠার শপথে শুরু হলো গণসঙ্গীত উৎসব

সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে জেগে ওঠার শপথে শুরু হলো গণসঙ্গীত উৎসব

  • Font increase
  • Font Decrease

 

‘সাম্প্রদায়িকতা ও শ্রেণি-বৈষম্যের বিরুদ্ধে জেগে ওঠো বাংলাদেশ’-স্লোগানে শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকালে চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গনে শুরু হলো তিন দিনব্যাপী চতুর্থ জাতীয় গণসঙ্গীত উৎসব। সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির অনিরুদ্ধ মুক্ত মঞ্চে জাতীয় সঙ্গীত ও উৎসব সঙ্গীত ‘আমারই দেশ সব মানুষের’ গানের মধ্যে দিয়ে উৎসবের শুরু হয়। প্রমা অবন্তীর পরিচালনায় ওডিসি অ্যান্ড ট্যাগোর ডান্স মুভমেন্টের শিল্পীরা উদ্বোধনী নৃত্য পরিবেশন করেন।

উৎসব উদ্বোধক সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. অনুপম সেন বলেন, আমাদের অনেক উন্নয়ন হয়েছে কিন্তু সম্পদ অল্প কয়েকজনের হাতে কুক্ষিগত হচ্ছে। এটা সঠিক নয়। দুর্নীতি হচ্ছে। এরকম হলে আমাদের পরিণতি দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর মত হবে। তারা স্বাধীন হয়েছে কিন্তু উপরে উঠতে পারেনি এখনো। তাই মানুষকে জাগাতে হবে। গণসংগীত বিশ্বের শক্তিশালী শিল্পমাধ্যম। গণসংগীত মানুষকে জাগায়। অগ্নিবীণার গান মানুষকে জাগিয়েছিল। আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় বিশ্বের কয়েকটি দেশে যখন চক্রান্ত হচ্ছিল তখন বাংলাদেশ কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছিল। এভাবে আবার জাগতে হবে। গণসঙ্গীত অতীতের মত আমাদের পথ দেখাবে।

উদ্বোধনী পর্বে বক্তব্য রাখেন উৎসব উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি, লেখক ও গবেষক গোলাম কুদ্দুছ বলেন, ‘যখন সমাজ ভালো থাকে না, দেশ আক্রান্ত হয় অপশক্তির দ্বারা তখন বুক টান টান করে দাঁড়ানোর শক্তি যোগায় যে সংস্কৃতি তার অন্যতম প্রধান উপকরণ গণশক্তি। এই বাংলাদেশে সকল আন্দোলনে গণশক্তি শক্তি যুগিয়েছে। সকলের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সাহসী ভূমিকা নেয়। একসময় গণসঙ্গীত শক্তিশালী ধারায় থাকলেও মাঝে কিছুটা বিরতি ছিল। সে প্রেক্ষিতে ২০০৭ সালে আবার পুনর্জাগরণ। সকল দল ও শিল্পীদের আবার যুক্ত করতে জাতীয় গণসঙ্গীত উৎসবের আয়োজন শুরু।’


চট্টগ্রামের পর সকল বিভাগীয় শহরে উৎসবের আয়োজন করতে চান জানিয়ে গোলাম কুদ্দুছ আরও বলেন, ‘পঁচাত্তরের পর আমাদের সংবিধান থেকে একে একে সকল মূলনীতিকে বাদ দিয়ে দেশকে একাত্তর পূর্ব পরিস্থিতিতে নেয়ার চেষ্টা করেছে। আমরা আবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। এ পথে যেতে হবে বহুদূর। এখনো নববর্ষ উদযাপনে বাধা আসে। সকল ধর্মের মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে পারিনি। হয়ত কেউ না খেয়ে মরেনি কিন্তু ঘুষ দুর্নীতি লুটপাট অনেক বেড়েছে। এটা স্বীকার করতেই হবে। সরকারকে আরো কঠোর হস্তে এসব দমন করতে হবে। জনবিরোধী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে প্রয়োজন সাংস্কৃতিক জাগরণ। অশুভ শক্তিকে বাংলাদেশ থেকে বিনাশ করতে হবে। এতে অন্যতম প্রাণশক্তি হবে গণসঙ্গীত। পূর্ব পুরুষের রক্তের ঋণ শোধ করতে ত্যাগ স্বীকারের কোনো বিকল্প নেই।’

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আবৃত্তিশিল্পী আহকাম উল্লাহ বলেন, ‘ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এদেশে গণসঙ্গীতের যাত্রা শুরু। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গণসঙ্গীত সংগ্রামের প্রেরণা হয়েছে। গণসঙ্গীতের মাধ্যমে আমরা জোট বাঁধছি, তৈরি হচ্ছি। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ আমরা ফিরিয়ে আনবই।

সংস্কৃতিজন ও উৎসব উদযাপন পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. একিউএম সিরাজুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রাম অঞ্চলে হরি প্রসন্ন পাল, ফনি বড়ুয়া, রমেশ শীলসহ সারাদেশে বহু সঙ্গীতজ্ঞ গণসঙ্গীতে অবদান রেখেছেন। গণসঙ্গীতের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের চেতনা সাধারণ মানুষের মাঝে ধ্বনিত হয়েছিল। আশা করি গণসঙ্গীতের এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।

স্বাগত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও উৎসবের প্রধান সমন্বয়কারী মানজার চৌধুরী সুইট বলেন, ‘চট্টগ্রামের সকলের সহযোগিতায় এ আয়োজন করতে পেরে আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সাংস্কৃতিক আন্দোলনই আমরা চালিয়ে যাচ্ছি। অসাম্প্রদায়িক একটি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামই ছিল মুক্তিযুদ্ধ। সম্প্রদায়গত ঐক্যের বাণী সবার অন্তরে গাঁথা থাকুক।’

শুভেচ্ছা বক্তব্যে উৎসবের যুগ্ম সমন্বয়কারী শিল্পী শ্রেয়সী রায় বলেন, ‘গণসঙ্গীত আমাদের প্রাণের কথা বলে, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের কথা বলে। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামে প্রথমবার চট্টগ্রামে আয়োজন করায় আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’

চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার মোসলেম উদ্দিন শিকদার বলেন, ‘এ উৎসবের মধ্যে সারাদেশের সাংস্কৃতিক কর্মীদের মেলবন্ধন হবে। উৎসবের মধ্যে গণসঙ্গীতের নব জাগরণ সৃষ্টি হবে এই প্রত্যাশা করি।’

সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি শিল্পী কাজী মিজানুর রহমান বলেন, আজ গণসঙ্গীত শিল্পীদের মনে পড়ছে। আর মনে পড়ছে গণসঙ্গীত পরিষদের প্রতিষ্ঠাতাদের। সকলের প্রচেষ্টায় আজ এ আয়োজন। সবাই মিলে সারাদেশে আমরা গণসঙ্গীতকে ছড়িয়ে দিতে চাই।

শুক্রবার উৎসবের সকালের অধিবেশনে লালন সাঁইজীর গান পরিবেশন করে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী চট্টগ্রাম, কাজী নজরুল ইসলামের সাম্যের গান পরিবেশন করবে নজরুল সঙ্গীত শিল্পী সংস্থা চট্টগ্রাম। এরপর একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন ঢাকার শিল্পী আবিদা রহমান সেতু।

শুক্রবার বিকেলে দলীয় সঙ্গীতে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী গান পরিবেশন করে খুলনার বাংলাদেশ গণশিল্পী সংস্থা, আব্দুল লতিফের গান পরিবেশন করবে দিনাজপুরের দল ভৈরবী, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়-রজনীকান্ত সেন ও অতুলপ্রসাদের দেশের গান পরিবেশন করবে রাজশাহীর দল জয়বাংলা, বর্ণবাদ বিরোধী গান পরিবেশন করবে বরগুনার দল মাটিয়াল, সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী গান পরিবেশন করবে নোয়াখালীর দল বিশ্বভূবন, ফকির আলমগীরের গান পরিবেশন করবে ঢাকার দল ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠী, ভূপেন হাজারিকার গান পরিবেশন করবে ঢাকার দল উঠোন, শ্রেণি-সংগ্রাম ও সমসাময়িক বিষয়ের গান পরিবেশন করবে চট্টগ্রামের দল সৃজামি সাংস্কৃতিক অঙ্গন এবং অজিত রায়ের গান পরিবেশন করবে চট্টগ্রামের অভ্যুদয় সংগীত অঙ্গন।

শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটায় একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন রংপুরের শিল্পী রূপু মজুমদার, ঠাকুরগাঁও এর জ্যোতিষ চন্দ্র বর্মন, ঢাকার ফকির সিরাজ, কাজী মিজানুর রহমান, আরি রহমান ও প্রলয় সাহা এবং চট্টগ্রামের ফারহানা রহমান কান্তা। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করবে চট্টগ্রামের ওরিয়েন্টাল স্কুল অব ডান্স। শনিবার ও রোববারও দিনব্যাপী এভাবে নানা কর্মসূচির আয়োজন থাকছে।

   

নেটিজেনরা বলছে ‘আগুন টিজার’, ফার্স্ট ডে ফার্স্ট শো দেখবে তুফানের!



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
‘তুফান’-এর নতুন পোস্টারে সুপারস্টার শাকিব খান

‘তুফান’-এর নতুন পোস্টারে সুপারস্টার শাকিব খান

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র দাবদাহের পর ক’দিন ধরে আবহাওয়া অনেকটা শীতল! তুমুল বৃষ্টির সাথে পরশু বছরের প্রথম বৈশাখী ঝড়ও দেখেছে দেশবাসী! কিন্তু এরইমধ্যে নতুন তুফানের পূর্বাভাস দিলেন জনপ্রিয় নির্মাতা রায়হান রাফী! এমনকি সবাইকে করলেন সতর্ক!

না, নির্মাতা রাফী হঠাৎ আবহাওয়াবিদ বনে যাননি! তিনি নাটকীয় কায়দায় নিজের পরিচালিত আসন্ন ছবি ‘তুফান’-এর পূর্বাভাস দিলেন! যে ছবির লুক প্রকাশ করে আগেই দর্শকের মধ্যে তুমুল আগ্রহ তৈরী করেছেন রাফী। ছবিতে নব্বই দশকের গ্যাংস্টারের চরিত্রে সুপারস্টার শাকিব খানকে নিয়ে উন্মাদনা চোখে পড়ার মতো!

‘তুফান’-এর প্রথম পোস্টারে সুপারস্টার শাকিব খান

তারকাবহুল এই ছবিটি নিয়ে আজ মঙ্গলবার নতুন আপডেট দিলেন রাফী। দুপুরে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে রাফী হঠাৎ লিখেন,“আবহাওয়া কেমন আজ বাহিরে? তুফান আসবে নাকি?” এমন স্ট্যাটাসের পর কারো আর বুঝতে বাকি থাকে না যে, ‘তুফান’ এর নতুন কিছু আসছে!

এমন স্ট্যাটাসের ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই বিষয়টি আরো পরিস্কার হলো! রাফী ‘তুফান’-এ শাকিবের আরো একটি দুর্দান্ত লুক প্রকাশ করে সবাইকে সতর্ক করে লিখেছেন, ‘বাংলার আকাশে বাতাসে এক ভয়ঙ্কর তুফানি ঝড়ের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে! সবাইকে নিরাপদ দূরত্বে দরজা জানালা বন্ধ করে ঘরের ভেতরে অবস্থান করার জন্য সতর্ক করছে তুফান কর্তৃপক্ষ! আজ যেকোনো সময় আসতে পারে ভয়ংকর কোনো ঝড়।’

‘তুফান’-এর নতুন পোস্টারে সুপারস্টার শাকিব খান

শেয়ার করা পোস্টারে লেখা ‘তুফানি টিজ লোডিং’! নাটকীয় কায়দায় পুরো বিষয়টি উপস্থাপন করায় দর্শকও মজা পেয়েছে। ইতোমধ্যে সেখানে বহু মানুষের মন্তব্য! সবাই জানিয়েছেন, অপেক্ষায় আছেন সেই তুফানি ঝড়ের!

সেই অপেক্ষা আর বেশিক্ষণ স্থায়ী করেননি নির্মাতারা। ২০ মিনিট আগেই প্রকাশ পেয়েছে ‘তুফান’ সিনেমার প্রথম টিজার। আর তা দেখার জন্য এরইমধ্যে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে নেটিজেনরা। যারা এরইমধ্যে দেখে ফেলেছেন তারা টিজার নিয়ে একবাক্যে বলেছেন, ‘আগুন টিজার’, ফার্স্ট ডে ফার্স্ট শো দেখবে তুফানের!

‘তুফান’-এর টিজারে সুপারস্টার শাকিব খান ও জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী

‘তুফান’-এর টিজারে মাত্র দুটি সংলাপ। সুপারস্টার শাকিব খানের মুখে শোনা যায়, ‘পূর্বের কথা মোতাবেক, এখন থেকে পুরো দেশ তুফানের হাতে তুলিয়া দেব। সে যা চাইবে, পাইবে। যা করিতে চাইবে করিবে। তাহাকে কোন কিছুতেই বাঁধা দেয়ার এখতিয়ার কেউ রাখিতে পারিবে না। আর এর ব্যত্যয় ঘটিলে... (হাহাহাহাহা)।’

এই সংলাপের পেছনে বাজতে থাকে তুফান-এর টাইটেল গানের মুখটুকু। এরপর সব শান্ত। ধীর স্থির মুখে চঞ্চল চৌধুরীর সংলাপ, ‘তুফান, খুব ভয় পাইছি রে (হিহিহিহিহি)।’

ব্যাস, এতোটুকুতেই ভক্তদের মধ্যে আগ্রহ তৈরী করেছে ‘তুফান’ ছবিটি।

‘তুফান’-এ অভিনয় করছেন মিমি চক্রবর্তী ও মাসুমা রহমান নাবিলা

আলফা আই, চরকি এবং ভারতীয় এসভিএফ এর যৌথপ্রযোজনায় নির্মিতব্য ছবিটির শুটিং চলছে গেল মাস থেকেই। প্রথম দফায় ভারতে হয়েছে শুটিং। সেইসব শুটিং মুহূর্তের কিছু ছবিও ইতোমধ্যে নেট দুনিয়ায় ভাইরাল! ‘তুফান’-এ আরও অভিনয় করেছেন মিমি চক্রবর্তী, মাসুমা রহমান নাবিলা, মিশা সওদাগর প্রমুখ। আসন্ন ঈদুল আযহায় প্রেক্ষাগৃহে সিনেমাটি মুক্তির কথা রয়েছে।

;

‘অবশ্যই এই ছবিটি নিয়ে আমি আরও লিখবো’ কটাক্ষের জবাবে ভাবনা



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
(বাঁমে) গরুর এই ছবি নিয়েই সমালোচনা, অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা (ডানে)

(বাঁমে) গরুর এই ছবি নিয়েই সমালোচনা, অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা (ডানে)

  • Font increase
  • Font Decrease

ঠিক পাঁচ দিন আগে ফেসবুকে পোস্ট করা একটি ছবির জন্য বাজেভাবে কটাক্ষের শিকার হচ্ছেন মেধাবী অভিনয়শিল্পী আশনা হাবিব ভাবনা। একটি পিকআপ ভ্যানে কয়েকটি গরুর ছবি পোস্ট করে ভাবনা সেই পোস্টে লিখেছিলেন, ‘আমার কান্নার শব্দ কি শোনা যায় তোমার শহরে!’

এটি পোস্ট নিয়েই তার দিকে নানা ধরনের কটাক্ষে তীর আসতে থাকে। শুধু নেটিজেনদের বাজে মন্তব্য পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকেনি বিষয়টি। এ নিয়ে যখন কিছু গণমাধ্যম নেতিবাচক খবর প্রকাশ করে তখন সেই সমালোচনার জোয়ার আরও তিব্র হয়। ট্রোলাররা ছবিটির ব্যাখ্যা এভাবে করেন, যেন ভাবনা গরু জবাই কিংবা গরুর মাংস খাওয়ার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতেই ছবিটি পোস্ট করেছেন।

আশনা হাবিব ভাবনা

ফলে অনেকেই ভাবনাকে হিপোক্রেট বলছেন। ভাবনা ও তার পরিবারের গরুর মাংস-প্রীতি সংক্রান্ত পুরনো নানা ইন্টারভিউ খুঁজে বের করে তারা বলছে, সে নিজেই এতোদিন গরুর মাংস খেয়ে এখন এসেছে উপদেশ দিতে। কেউ কেউ আবার বলছে, ভাবনা নিজেকে ‘পশুপ্রেমী’ প্রমাণ করতে গিয়ে নিজের কথাতেই ধরা খেয়েছেন!

প্রথমদিকে চুপ থাকলেও আজ বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়েছেন ভাবনা। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি মাঝে মাঝেই ছবি তুলতে পছন্দ করি। যখন কোনো দৃশ্য আমাকে ভাবতে বাধ্য করে, সেটা মাঝে মাঝে ফেসবুকেও শেয়ার করি। আমার একটি ছবি, যেখানে দেখা যাচ্ছে একটি পিকআপ ভ্যানে রোদে দাঁড়িয়ে একটি গরু, তার চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে পানি। সে দিন ছিলো তীব্র দাবদাহ, গরমে দীর্ঘ সময় থাকার ফলে অবলা প্রানীটি ভীষণ ভাবে কাঁদছিলো। বোবা প্রাণের কান্না আমাকে ছুঁয়ে যাচ্ছিল। ছবি তুলে আমার অনুভূতি প্রকাশ করি আমি। ছবিটির ক্যাপশন দিয়েছি ‘আমার কান্নার শব্দ কি শোনা যায় তোমার শহরে!’ ব্যাস এতটুকুই! তারপর কিছু মানুষ শুরু করলেন আমাকে হেয় করা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখতে শুরু করলেন, আমি চামড়ার ব্যবসায়ী! আমি নিজে একটা গাভী! আমাকে লাথি মারতে মারতে ইন্ডিয়া পাঠানো উচিত! আরও কত নোংরা নোংরা কথা!”

আশনা হাবিব ভাবনা

ভাবনার ভাষ্য, ‘আমি কোথাও লিখিনি গরুর মাংস খাই না বা বলিনি আপনারা গরুর মাংস খাবেন না। একটা প্রাণীর কান্না দেখে যে কেউ কেঁদে উঠতে পারেন এটাই স্বাভাবিক। আর আমি প্রকৃতিপ্রেমী বা প্রাণীপ্রেমী কি না সেটার প্রমাণ আমি কোথাও দেবো না। আমার ফেসবুকের একটি পোস্টেই তো আর প্রমাণ হবে না আমি কে?’

সবশেষে ভাবনা লেখেন, ‘অবশ্যই এই ছবিটি নিয়ে আমি আরও লিখবো, হয়তো কোন কবিতায় বা গল্পে বা অন্য কোথাও অথবা আমার পরবর্তী ক্যানভাসে। শিল্পীর বেদনা গুরুত্বপূর্ণ, ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। আমার দিকে ছুড়ে দেওয়া সব তীর আমি সাদরে গ্রহণ করলাম।’

আশনা হাবিব ভাবনা

ভাবনার এই ব্যাখ্যায় কারও কারও বোধোদয় হয়েছে বটে। কিন্তু অনেকেই এখনও তার সমালোচনায় মেতে আছে। তবে তারাও বিষয়টিকে উপলব্ধি করে সহজভাবে নেবেন বলে প্রত্যাশা এই অভিনেত্রীর।

;

দেখে নিন মেট গালা ২০২৪ মাতানো নারী তারকাদের ছবিগুলো



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
মেট গালায় শাকিরা, জেনিফার লোপেজ, কার্ডি বি, আলিয়া ভাট, আরিয়ানা গ্রান্ডে ও জেনি

মেট গালায় শাকিরা, জেনিফার লোপেজ, কার্ডি বি, আলিয়া ভাট, আরিয়ানা গ্রান্ডে ও জেনি

  • Font increase
  • Font Decrease

মে মাসের প্রথম সোমবার অর্থাৎ গতকালই নিউ ইয়র্কের ‘মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্ট’-এ বসেছিল ‘মেট গালা’র আসর। উপস্থিত ছিল হলিউডের প্রথমসারির তারকারা। তাদের মধ্যে উজ্জ্বল হয়ে ওঠেন বলিউড তারকা আলিয়া ভাট। মেট গালার জন্য আলিয়ার গর্জিয়াস ভারতীয় ট্র্যাডিশনাল লুক নি:সন্দেহে ‘আউট অফ দ্য বক্স’। অনুষ্ঠান হোস্ট করেন প্রখ্যাত গায়িকা জেনিফার লোপেজ এবং হলিউড অভিনেত্রী জেন্ডায়া। দেখে নিন মেট গালা ২০২৪ মাতানো নারী তারকাদের ছবিগুলো...

লাল ক্ল্যাসি গাউনে চিরচেনা শাকিরা
স্টাইল আইকন জেনিফার লোপেজ বরাবরের মতো স্ট্যানিং সিলভার হেবি অ্যাম্বিলিশমেন্ট নেটের গাউনে
‘স্পাইডার’ম্যান খ্যাত অভিনেত্রী জেন্ডায়া যেন নীল পাখি
২৩ ফুট লম্বা আঁচলের শাড়িতে হলিউড তারকাদেরও পেছনে ফেলে দিয়েছেন ভারতীয় সুন্দরী আলিয়া ভাট
কোরিয়ার ‘ব্ল্যাক পিংক’ তারকা জেনি হাজির হন নীল কোমর খোলা শর্ট গাউনে
তারুণ্যের ক্রেজ গায়িকা আরিয়ানা গ্রান্ডের অফ হোয়াইট পোশাকে ছিমছাম লুক সবাই পছন্দ করেছে
ক্ল্যাসিক ক্রিম রঙের অফ সোল্ডার গাউনে বিখ্যাত নারী উদ্যোক্তা ও মডেল কাইলি জেনার
কার্দাশিয়ান পরিবারের বড় কন্যা কিম বরাবরের মতোই তার ঢেউ খেলানো কোমরের যাদুতে মাত করেছেন। এবার পরেছিলেন উলের টপের সঙ্গে সিলভার গাউন
কিমের ছোট বোন সুপারমডেল ক্যান্ডেল জেনার কালো সিকুয়েন্সের পোশাকে মোহনীয়
মেট গালায় এবারের থিম ‘দ্য গার্ডেন অফ টাইম’। সে কথা বোঝা যাচ্ছে সুপারমডেল গিগি হাদিদের সাদা ফুলেল পোশাকে
বিলিয়নিয়ার গায়িকা রিয়ান্না বোধ হয় এবারের থিমকে একটু বেশিই পাত্তা দিয়েছেন। আস্ত ফুলের বাগান সেজে হাজির তিনি। নজর কেড়েছে বক্ষবন্ধনীতে দেয়াল ঘড়ির মোটিফ
বিশ্বের শীর্ষ নারী র‌্যাপার কার্ডি বি পরেছেন বিশাল ঘেরের কালো গাউন। তবে নজর কেড়েছে তার নেইল স্টাইল, পাগড়ি বাঁধা চুল আর সবুজ ডায়মন্ডের গয়না
বিশ্ববিখ্যাত নারী র‌্যাপার নিকি মিনাজের হলুদ পোশাকজুড়ে ফুটে আছে বাহারি ফুল
ফুলেল গাউনে খুব মিষ্টি লাগছে সুপারস্টার গায়িকা কেটি পেরিকে
ফেদার আর লেসের ডিজাইন করা কালো গাউনে আবেদনময়ী গায়িকা ডুয়া লিপা
বন্ধুদের সঙ্গে মডেল টুইগ ও জনপ্রিয় গায়ক এড শিরান
ভারতীয় ধনকুবের মুকেশ আম্বানির বড় কন্যা নারী উদোক্তা ইশা আম্বানিও উপস্থিত হন মেট গালায়। রাহুল মিশ্র’র ডিজাইন করা বিশাল টেলওয়ালা বাহারি রঙের গাউনটি নেটিজেনরা খুব পছন্দ করেছে
;

মেট গালায় মানব-ঈশ্বরী আলিয়া, ১৯৬৫ ঘণ্টায় তৈরি ২৩ ফুট লম্বা আঁচলের শাড়িটি



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
মেট গালায় এমন সাজে উপস্থিত হন আলিয়া ভাট

মেট গালায় এমন সাজে উপস্থিত হন আলিয়া ভাট

  • Font increase
  • Font Decrease

এ যেন রূপকথার পাতা থেকে উঠে আসা রাজকন্যা। স্বপ্নের মতো সাজ। ‘মেট গালা ২০২৪’-এর সাদা-সবুজ কার্পেটে বলিউড অভিনেত্রী আলিয়া ভাটের সাজ যেন এমনই কিছু বিশেষণের জন্ম দিল। মে মাসের প্রথম সোমবার অর্থাৎ গতকালই নিউ ইয়র্কের ‘মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্ট’-এ বসেছিল ‘মেট গালা’র আসর। উপস্থিত ছিল হলিউডের প্রথমসারির তারকারা। তাদের মধ্যে উজ্জ্বল হয়ে ওঠেন বলিউড তারকা আলিয়া। মেট গালার জন্য আলিয়া ভাটের গর্জিয়াস ভারতীয় ট্র্যাডিশনাল লুক নিসন্দেহে ‘আউট অফ দ্য বক্স’।

গত বছর মেট গালায় প্রথম বারের জন্য ডাক পেয়েছিলেন আলিয়া। সাদা পোশাকে পরির সাজে হাজির হয়েছিলেন তিনি। এ বার অন্য রূপে ধরা দিলেন তিনি।

মেট গালায় এমন সাজে উপস্থিত হন আলিয়া ভাট

যেন এক মানব-ঈশ্বরী

মেট গালায় এবারের থিম ‘দ্য গার্ডেন অফ টাইম’। আর সেই ভাবনাকেই মাথায় রেখে দুর্দান্ত কিছু ‘আউট অফ বক্স’ লুক ক্রিয়েট করেছেন তারকারা। আর সবার মাঝেই আলাদাভাবে নজর কেড়েছেন আলিয়া ভাট। মেট গালায় শাড়ির সাজে ধরা দিলেন আলিয়া ভাট। তাকে যে শাড়ির সাজে অপরূপ দেখতে লাগছিল, সে কথা তো বলাই বাহল্য।

মেট গালা রেড কার্পেটে আলিয়া ভাট

ভারতের অন্যতম খ্যাতিসম্পন্ন ফ্যাশন ডিজাইনার সব্যসাচী মুখার্জির ডিজাইন করা এই শাড়িতে ছিল ২৩ ফুট লম্বা আঁচল, যা সকলের নজর কেড়েছে। ‘দ্য গার্ডেন অফ টাইম’ থিমটিকে ফ্যাশনের এক অপরূপ ভাষায় বিশ্লেষণ করেছিলেন তিনি। কথা স্বীকার করতে আপত্তি নেই যে, আলিয়ার লুকে বহাল রয়েছে ভারতীয় সংস্কৃতির ছোঁয়া। মেট গালার সবুজ কার্পেটে আলিয়া-সব্যসাচীর হাত ধরে ভারতীয় ফ্যাশনের মুকুটে যোগ হল আরেকটি নয়া পালক।

মেট গালায় এমন সাজে উপস্থিত হন আলিয়া ভাট

কালার প্যালেটে প্রকৃতির ছোঁয়া

ডিজাইনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মিন্ট গ্রিন এই শাড়িটি ছিল হ্যান্ড ক্রাফটেড। সম্পূর্ণ শাড়িজুড়ে অপূর্ব কারুকার্য করা হয়েছিল। বিশেষ ভাবে নজর কেড়েছিল চমৎকার ফ্লোরাল মোটিফ। ১৯২০-এর ফ্রিঞ্জ ডিটেলিং স্টাইল ফুটে উঠেছিল আলিয়ার শাড়িতে। এটির কালার প্যালেটে ছিল পৃথিবী, আকাশ এবং সমুদ্রের রঙের ছোঁয়া, যা প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ ছাড়া আর কিছুই নয়!

মেট গালায় আলিয়া ভাট

শাড়িটি তৈরি করতে কত সময় লেগেছিল?

১৬৩ জন কারিগর মিলে প্রায় ১৯৬৫ ঘণ্টা ধরে এই শাড়িটি তৈরি করেছিলেন, যার সৌন্দর্য মুহূর্তেই মন ছুঁয়ে গিয়েছিল প্রত্যেকের। আলিয়ার শাড়ির উপরে স্টোন ওয়ার্ক এবং অন্যান্য এমবেলিশমেন্ট ছিল দেখার মতো। আর এর সঙ্গে জুড়ে দেওয়া লম্বা ট্রেইন লুকে দিয়েছিল ড্রামাটিক এফেক্ট।

শাড়িটির সঙ্গে ব্রালেট স্টাইল করেছিলেন আলিয়া ভাট। আর এই ব্রালেটের ব্যাকে বো ডিটেলিং ও স্টোল এমবেলিশমেন্ট সবাইকে মুগ্ধ করেছিল। সঙ্গে রয়েছে গোলাপী এবং সবুজ রঙের ফুল, পুঁতির ট্যাসেল। এগুলিও কিন্তু হাতেরই কাজ। এই শাড়ির অন্যতম আরেক আকর্ষণ হল সামনের দিকে থাকা রাফলড প্লিট।

আলিয়া শাড়িটি পরেছিলেন একটি বাস্টিয়ার ব্লাউজের সঙ্গে। যাতে রয়েছে প্লাঞ্জিং সুইটহার্ট নেকলাইন, রাফলড হাতা। ব্লাউজেও রয়েছে সূক্ষ্ম হাতের কাজ। সেখানেও স্টোনের কাজ লক্ষণীয়।

মেট গালায় আলিয়ার গয়না ও সাজে ছিল বিশেষত্ব

আলিয়ার সাজগোজ

অভিনেত্রীকে শাড়ি ড্রেপ করেছিলেন ডলি জৈন। লুকটি স্টাইল করেছিলেন লক্ষ্মী লেহর ও আনাইতা শ্রফ অদাজনিয়া। এদিন আলিয়ার জুয়েলারিও ছিল দেখার মতো। সব্যসাচীর ‘বেঙ্গল রয়্যাল কালেকশন’-এর জুয়েলারিতে সেজে উঠেছিলেন তিনি। গয়না হিসেবে সব্যসাচী বেছে নেন একটি মাং টিকা। মাথায় ছিল একটি ব্যান্ড, স্টেটমেন্ট কানের দুল, হাই হিল ও আংটি।

মেট গালায় আলিয়া ভাট

মেকআপেও ছিল বিশেষত্ব। আলিয়ার চোখে সোনালি রঙের স্যাজো, গালে রুজ, ফুশিয়া গোলাপী ঠোঁট, বিমিং হাইলাইটার, মাস্কারা। আর সাজের ফাইনাল টাচ ছিল মেসি হেয়ার। সব মিলিয়ে যেন স্বপ্নে দেখ রাজকন্যে তিনি। রাহা-র মা, রণবীর কাপুরের বউের সৌন্দর্যের কাছে হার মানেন একাধিক হলি-তারকাও। সবমিলিয়ে আলিয়াকে যে এদিন এক প্রাচীন অপরূপা ঈশ্বরীর মতো দেখাচ্ছিল, সে কথা বলাই বাহুল্য!

;