পাথর শ্রমিকদের বোবা কান্না

  ‘শ্রমিকের জয়গান কান পেতে শোন ঐ’


মশাহিদ আলী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
পাথর শ্রমিকদের বোবা কান্না, ছবি: নূর এ আলম

পাথর শ্রমিকদের বোবা কান্না, ছবি: নূর এ আলম

  • Font increase
  • Font Decrease

সিলেটের সীমান্তবর্তী গোয়াইনঘাট উপজেলা জাফলং। যেখানে ভ্রমণে এসে প্রতিদিন আনন্দ পায় হাজার হাজার পর্যটক। সেই পর্যটন এলাকার মানুষের বোবাকান্না শুনে না কেউই। নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের অন্য কোনো কর্মসংস্থান না থাকায় স্থানীয় লোকজন পিয়াইন নদী থেকে বালু এবং পাথর উত্তোলন ও পাথর ভাঙার কাজ করে সংসার চালান। কিন্তু তাদের সংসারে বর্তমানে নুন আনতে পান্তা ফুরায়। আন্দোলন সংগ্রাম করেও পাচ্ছেন না ফল।

এমন অসহায়ত্বের কথা প্রকাশ করে ৭৫ বছর বয়সী পাথর শ্রমিক সুনামগঞ্জের আলতু মিয়া বলেন, টাকার অভাবে চিকিৎসাও করতে পারি না, অনেক সময় না খেয়েও আমাদের দিন কাটাতে হয়। পরিবারের খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হয়। আর শ্রমিক দিবস যে আসলে কি তা আমরাও বুঝি না। আমরা কিভাবে খেয়ে বাঁচবো সে চিন্তায় থাকি।যে সময় মানুষ আন্দোলন করে আমরা তখন যাই।কিন্তু আন্দোলন করে কোনো লাভ হয় না।

তিনি বলেন, ৩০ বছর ধরে জাফলংয়ে বসবাস। পেশায় তিনি পাথর শ্রমিক। পাঁচ সদস্যের পরিবারে একমাত্র উপার্যনকারী। ছেলে-মেয়ের পড়ালেখার খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে।

পিয়াইন নদী থেকে তোলা পাথর, সেই পাথর ভাঙার কাজ করে সংসার চালান অনেক শ্রমিক/ছবি: নূর এ আলম


সকাল পেরিয়ে দুপুরের খরতাপে মাথা থেকে কপাল চুইয়ে মুখ গড়িয়ে পড়ছিল ৬৯ বছরের নিজাম উদ্দিনের ঘাম। ক্লান্ত হয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন তিনি। কাজের ফাঁকে কথা হয় তাঁর সাথে প্রতিবেদকের।

তিনি জানালেন, বর্তমানে তাদের পরিস্থিতি খুব খারাপ যাচ্ছে। এক ট্রাক এলসি পাথর ভাঙতে পারলে ১২০০ টাকা পান। এখন একদিন হোক বা ৩দিন হোক যে কয়দিন সময় যাক ওই টাকার উপরে একটা টাকাও কেউ দেবে না।

তিনি বলেন, মে দিবস বা শ্রমিক দিবসে আন্দোলন করে ছার আনা আমাদের লাভ বা কোনো কিছু আমরা পাইনি। আমদের মজুরিও বাড়ছে না। এক টাকা বাড়েনি। বরং আমাদের লস(ক্ষতি) হচ্ছে। আগে এলসি পাথর ভাঙতে পারলে ১৬০০ টাকা নিয়ে ঘরে ফিরতে পারতাম। এখন সেই পাথর ভেঙ্গে ১২০০ টাকা নিয়ে ফিরতে হচ্ছে। যদি পাথর কোয়ারি খুলে দেয়া হতো তাহলে এমন অভাব অটনটনে দিন কাটাতে হতো না। শুধু আলতু মিয়া ও নিজাম উদ্দিন নয়, এমন আরও অনেক শ্রমিকের দিন পাত যাচ্ছে কষ্টে।

পাথরের স্তুপ, ছবি: নূর এ আলম


সরেজমিনে সিলেটের জাফলংয়ে গিয়ে দেখা যায়, তীব্র গরমে নারী-পুরুষ সমান তালে কাজ করে যাচ্ছেন ক্রাশার মিলে। অনেকেই নতুন কাজের সন্ধানে ছুটে যাচ্ছেন দিকবিদিক। জাফলং বিজিবি ক্যাম্পের পাশে কয়েকটি ক্রাশার মিল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে মেশিন ও যন্ত্রপাতিতে মরিচিকা ধরেছে। আর পিয়াইন নদী থেকে ছোট ছোট নৌকা দিয়ে বালু সংগ্রহ করে সেখানেও পাথর খুঁজে বেড়ান কিছু সংখ্যক শ্রমিকেরা।

জানা যায়, ২০১২ সালে জাফলংয়ের পিয়াইন নদীসহ ১৫ কিলোমিটার এলাকাকে ‘পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা’ (ইসিএ) ঘোষণা করা হয়। ২০১৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত এ সংক্রান্ত গেজেটে বলা হয়, ‘অপরিকল্পিতভাবে যেখানে-সেখানে পাথর উত্তোলন ও নানাবিধ কার্যকলাপের ফলে সিলেটের জাফলং-ডাউকি নদীর প্রতিবেশ ব্যবস্থা সংকটাপন্ন, যা ভবিষ্যতে আরও সংকটাপন্ন হবে বলে প্রতীয়মান হয়েছে। ইসিএভুক্ত এলাকায় যান্ত্রিক বা ম্যানুয়াল কিংবা অন্য কোনো পদ্ধতিতে পাথরসহ অন্য যেকোনো খনিজ সম্পদ উত্তোলন নিষিদ্ধ।’ কেবল জাফলং আর শাহ আরেফিন টিলা নয়, এমন চিত্র সিলেটের প্রায় সবগুলো পাথর কোয়ারি এলাকার। পরিবেশ বিপর্যয় ঠেকাতে ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর সিলেটের জাফলং, ভোলাগঞ্জ, শাহ আরেফিন টিলা, বিছনাকান্দি ও লোভছড়া–এই পাঁচ কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ করে খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।

 

পাথর শ্রমিক হিসেবে কাজ করে দিন ১০০ থেকে ৪০০ টাকা করে পান শ্রমিকরা, ছবি: নূর এ আলম


এর আগে ২০১৪ সালে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) দায়ের করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলোতে যন্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে উচ্চ আদালত।

জাফলং ক্রাশার মিলে কাজ করেন ষাটোর্ধ্ব রহিমা বেগম। তিনি বলেন, সারাদিন কাম-কাজ করে দুই থেকে আড়াইশ টাকা পাই।কিন্তু বর্তমানে যেভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের যে দাম এই টাকা দিয়ে নুন আনতে পান্তা ফুরায়। তবুও কাজ করতে হয়।কাজ না করলে ঘরে না খেয়ে মরতে হবে।

রেখা গোয়ালা বলেন, কোনো দিন ১০০ টাকা আর কোনো দিন ৪০০ টাকা পাই। এসব টাকায় পর্তায় পড়ে না। এতো কষ্ট করেও বাচ্চা-কাচ্চাদেএ মুখে হাসি ফুটানো যায় না। তার চেয়ে কোয়ারি খুলে দিলে খেয়ে বাঁচতে পারতাম।


এছাড়াও আরও কয়েকজন শ্রমিক জানান,নদী থেকে পাথর তোলা বন্ধ হওয়ার পর থেকে অভাব অনটনে চলছে তাদের জীবনযাত্রা। কাজ না পেয়ে অনেকেই অপরাধের সাথে জড়িত হচ্ছে। সিলেট ছাড়াও অন্যান্য জেলার যারা শ্রমিক ছিলেন তারাও এলাকায় গিয়ে কাজের সন্ধান করছেন। আমরা না খেয়ে মরলেও কারো কোনো কিছু আসে যায় না।

এ বিষয়ে পিয়াইন পাথর উত্তোলন ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি সহসভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান লিলু বলেন, কোয়ারী সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা এখন মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। না আমরা চলতে পারছি, না আমাদের বাচ্চা-কাচ্চা চলতে পারতেছে। কোয়ারিগুলো বন্ধ থাকায় এখানকার শ্রমিকদের অভাব অনটন ও অনাহারে দিনপার করতে হচ্ছে। কিছু শ্রমিক কাজের জন্য ঢাকায় গার্মেন্টসে ছুটতেছে। যারা ক্ষুদ্র সম্বল নিয়ে ব্যবসায় শুরু করেছিল তাদের অবস্থা খুবই খারাপ। এখন তারা ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে ঘুরতেছে।

প্রধানমন্ত্রীসহ খনিজ মন্ত্রণালয়সহ সবার কাছে একটাই আবদেন আমাদের কথা ও ছেলে-মেয়েদের কথা চিন্তা করে পাথর কোয়ারি খুলে দিলে আমরা দু-বেলা দুমুঠো ভাত খেয়ে বাঁচতে পারবো।

এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.তৌহিদুল ইসলাম বলেন, মহামান্য সুপ্রিম কোর্টে বেশ কয়েকটি রিট রয়েছে। তাছাড়া এ বিষয়গুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দেখভাল করছেন।

   

সংবাদপত্র শিল্পকে জনগুরুত্বপূর্ণ শিল্প হিসেবে ঘোষণার দাবি



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সংবাদপত্র শিল্পকে জনগুরুত্বপূর্ণ শিল্প হিসেবে ঘোষণা এবং সংবাদপত্র, টেলিভিশন, অনলাইনসহ সকল গণমাধ্যমের ওপর আরোপিত কর সহনীয় করার আহ্বান জানিয়েছে এফবিসিসিআই’র প্রেস ও মিডিয়া বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটি।

মঙ্গলবার (২১ মে) সকালে মতিঝিলে অবস্থিত এফবিসিসিআই আইকনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম। এতে সভাপতিত্ব করেন কমিটির চেয়ারম্যান এবং এফবিসিসিআই’র সাবেক পরিচালক এম. শোয়েব চৌধুরী। ডিরেক্টর ইন-চার্জ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই’র পরিচালক মো. রাকিবুল আলম (দিপু)।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই’র সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, স্বাধিকার আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা অপরিসীম। আমাদের ব্যবসা, বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে দেশের গণমাধ্যম। আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রেস ও মিডিয়াকে আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। এজন্য সংবাদপত্র শিল্পের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি গণমাধ্যম কর্মীদের বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে গণমাধ্যম মালিকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

সংবাদ মাধ্যমের চ্যালেঞ্জ সমূহ চিহ্নিতকরণ এবং সমাধানে এই শিল্পের সব অংশীজনকে স্ট্যান্ডিং কমিটিতে সম্পৃক্ত করে সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন তৈরির তাগিদ দেন এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী। সংবাদ মাধ্যমের মালিক, সংবাদকর্মী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনা করে নীতিমালায় প্রয়োজনীয় সংশোধন আনার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।

স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান এম. শোয়েব চৌধুরী বলেন, অন্যান্য শিল্পের মতো সংবাদ মাধ্যমকেও ব্যবসা করে টিকে থাকতে হয়। কাজেই অন্যান্য খাতের ন্যায় সংবাদ মাধ্যমকেও কিছু সুযোগ-সুবিধা দেওয়া উচিত। কাগজ, কালি, ছাপার যন্ত্রাংশের ওপর আরোপিত কর কমিয়ে আনা দরকার। টেলিভিশনের ব্যান্ডউইথের ওপরও বিদ্যমান কর কমানো প্রয়োজন। সম্পূরক বাজেটে প্রেস ও মিডিয়ার জন্য বিশেষ বরাদ্দ রাখাসহ এই শিল্পকে জনগুরুত্বপূর্ণ শিল্প হিসেবে ঘোষণার আহ্বান জানান তিনি।

সংবাদ মাধ্যমের সংকট দূর করতে কমিটির উদ্যোগে একটি কৌশলপত্র তৈরি করে তথ্যমন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট নীতি নির্ধারক এবং অংশীজনদের নিয়ে শিগগিরই সেমিনার আয়োজন করা হবে বলেন জানান কমিটির ডিরেক্টর ইন-চার্জ মো. রাকিবুল আলম (দিপু)। এজন্য কমিটির সদস্যদের সুনির্দিষ্ট মতামত লিখিত আকারে জমা দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে- সংবাদ মাধ্যমের জন্য কর সহনীয় করা, সহজ শর্তে ঋণ প্রাপ্তি নিশ্চিত করা, গণমাধ্যমকর্মীদের বেতন-বোনাস ও আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত, এ খাতে ব্যবহৃত উপকরণ ও যন্ত্রাংশ প্রাপ্তি সহজিকরণ, ক্রোড়পত্র ও বিজ্ঞাপন প্রাপ্তিতে পত্রিকা সমূহের সম-অধিকার নিশ্চিতকরণ, সরকারের কাছে বিজ্ঞাপন বাবদ প্রাপ্ত বিল দ্রুত পরিশোধ করাসহ বেশকিছু প্রস্তাব তুলে ধরেন কমিটির সদস্যরা। সেই সাথে, বেসরকারি খাতের সাথে সংবাদ মাধ্যমের সম্পৃক্ততা বাড়াতে এফবিসিসিআই’র উদ্যোগে প্রতি ৩ মাস পর পর সংবাদপত্র ও টেলিভিশনের মালিক, সম্পাদকসহ, ও গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে নিয়মিত সৌজন্য সভা আয়োজনের আহ্বান জানান তারা।

পাশাপাশি, সংবাদ মাধ্যমে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশে উৎসাহ ও অপসাংবাদিকতাকে নিরুৎসাহিত করা ও সচেতনতা বাড়ানোর বিষয়ও মুক্ত আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব পায়।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে এফবিসিসিআই’র পরিচালক হাফেজ হাজী হারুন-অর-রশিদ, মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর সাবেক প্রেস সচিব একেএম শামীম চৌধুরী, এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের বোর্ড অব গভর্নরসের (পিডিবিএফ) সদস্য বোরহান উদ্দিন আহমেদ, দ্য ব্লেজার বিডি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী রাজিব ইউ. এ. চপল, এফবিসিসিআই’র ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স বিভাগের প্রধান জাফর ইকবাল এনডিসি, কমিটির কো-চেয়ারম্যান আক্কাস মাহমুদ, মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জিটু, তাওহিদা সুলতানা, এজাজ মোহাম্মদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

  ‘শ্রমিকের জয়গান কান পেতে শোন ঐ’

;

মাথাপিছু আয় এখন ২৭৮৪ মার্কিন ডলার: বিবিএস



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গত বছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় কিছুটা বেড়ে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৮৪ মার্কিন ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ছিল ২ হাজার ৭৪৯ ডলার। ফলে বছরের ব্যবধানে আয় বেড়েছে ৩৫ ডলার। ডলারের দাম ১০৯ টাকা ৯৭ পয়সা ধরে এই মাথাপিছু আয়ের হিসাব করা হয়েছে।

সোমবার (২০ মে) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) দেওয়া এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। 

বিবিএসে’র হিসাব অনুযায়ী, দেশে প্রথমবারের মতো টাকার অঙ্কে মাথাপিছু গড় আয় তিন লাখ টাকা ছাড়িয়েছে। সাময়িক হিসাবে চলতি অর্থবছরের মাথাপিছু গড় আয় ৩ লাখ ৬ হাজার ১৪৪ টাকা। গত অর্থবছরে (২০২২-২৩) চূড়ান্ত হিসেবে টাকায় মাথাপিছু আয় ছিল ২ লাখ ৭৩ হাজার ৩৬০ টাকা। অর্থাৎ, এক বছরে মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৩২ হাজার ৭৮৪ টাকা।

এদিকে, বিবিএস বলছে, গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি বেশি হবে। জিডিপি প্রবৃদ্ধি আগের অর্থবছরের তুলনায় চলতি বছরে কিছুটা বেড়ে ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ হবে। যেটি আগের ২০২২-২৩ অর্থবছরে ছিল ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

বিবিএসের তথ্যানুযায়ী, এ বছর বাংলাদেশের জিডিপির আকার বেড়ে দাঁড়াবে ৫০ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকা। আগের অর্থবছরে তা ছিল ৪৪ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। এ অর্থবছরে সবচেয়ে বড় ধাক্কা আসছে শিল্প খাতে। শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়াবে ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশে। আগের অর্থবছরে তা ছিল ৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

প্রবৃদ্ধির হিসাবে সবচেয়ে খারাপ কৃষি খাতে ৩ দশমিক ২১ শতাংশ, আগের অর্থবছরে তা ছিল ৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ। তবে শিল্প ও কৃষিতে কমলেও আগের বছরের তুলনায় এবার সেবা খাতের প্রবৃদ্ধি বাড়বে বলে ধারণা দিয়েছে সরকারি এ সংস্থা। তারা বলছে, সেবা খাতের প্রবৃদ্ধি বেড়ে দাঁড়াবে ৫ দশমিক ৮ শতাংশে, আগের অর্থবছরে তা ছিল ৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ। তবে, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী বিশ্ব ব্যাংকের হিসাবে এ প্রবৃদ্ধি আরও কম হবে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশে ৫.৬ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে তারা। সমাপ্ত ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ছিল ৫.৮ শতাংশ।

প্রসঙ্গত, মাথাপিছু আয় একে ব্যক্তির আয় নয়। দেশের অভ্যন্তরে আয়ের পাশাপাশি রেমিট্যান্স অর্থাৎ প্রবাসী আয়কেও অন্তর্ভুক্ত করে মোট জাতীয় আয় হিসাব করা হয়। এ আয়কে মাথাপিছু ভাগ করে দিয়ে এই হিসাব করা হয়ে থাকে।

  ‘শ্রমিকের জয়গান কান পেতে শোন ঐ’

;

সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারীদের ওপর হামলা: তিন ডিপোতে কর্মবিরতি



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারীদের ওপর হামলায় তিন ডিপোতে কর্মবিরতি

সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারীদের ওপর হামলায় তিন ডিপোতে কর্মবিরতি

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রামের অ্যালায়েন্স পোর্ট লিমিটেডের (এসএপিএল) ডিপোতে সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ডিপোতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারী ইউনিয়ন। এর অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (২১ মে) সকাল থেকে এই কোম্পানির মালিকানাধীন এসএপিএল, ইস্পাহানি ও ওসিএল ডিপোতে কাজ বন্ধ রেখেছেন সিঅ্যান্ডএফের কর্মচারীরা। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন সিআন্ডএফ কর্মচারী ইউনিয়নের (সিডিএ) সভাপতি কাজী খায়রুল বাশার মিল্টন।

সোমবার (২০ মে) রাত ১২টার দিকে এসএপিএল ডিপো কর্তৃপক্ষের লোকজনের সঙ্গে সিঅ্যান্ডএফের কর্মচারীদের মারামারির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় কয়েকজন সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারী আহত হন। এই ঘটনায় নগরীর পতেঙ্গা থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করা হয়েছে।

কর্মবিরতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু।

তিনি বলেন, ‘ডিপোগুলোতে কাজের পরিবেশ নেই। আমাদের কর্মচারীদের বসার জন্য কোনো জায়গা নেই। কাজ করতে গেলে ডিপোর লোকজন তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। সোমবার রাতে এসব বিষয় নিয়ে আমাদের কর্মচারীদের সঙ্গে ডিপো কর্তৃপক্ষের লোকজনের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ডিপোর লোকজন আমাদের কর্মচারীদের লাঠিসোঁটা নিয়ে মারধর করেন। এতে অন্তত চারজন কর্মচারী আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় কর্মচারীদের পক্ষ থেকে পতেঙ্গা থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। ডিপো মালিকদের পক্ষ থেকেও থানায় পাল্টা অভিযোগ করা হয়েছে। আমরা দু’পক্ষকে সংযত থেকে বিষয়টি সমাধান করার জন্য বলেছি।’ কাজের পরিবেশ তৈরি না হলে অন্য কন্টেইনার ডিপোগুলোও বন্ধ রাখা হবে বলে জানিয়েছেন কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু।

বাংলাদেশ ইংল্যান্ড কন্টেইনার ডিপোর্টস অ্যাসোসিয়েশন (বিকডা) সচিব রুহুল আমিন সিকদার বলেন, ‘কাস্টমস সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে এসএপিএল ডিপোতে সিএন্ডএফ কর্মচারীদের সঙ্গে ডিপো কর্তৃপক্ষের ঝামেলা হয়েছিল। তবে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ এটি আমাদের বিষয়টি জানায়নি। শুনেছি এই ঘটনায় এসএপিএলসহ তিনটি ডিপোতে কাজ বন্ধ রেখেছেন সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারীরা। যেহেতু এখনও কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের অবহিত করেনি, তাই এ বিষয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই।’ তবে ঘটনার বিষয়ে এসএসিএল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

  ‘শ্রমিকের জয়গান কান পেতে শোন ঐ’

;

কৃষিখাতে ফলন বাড়াতে অস্ট্রেলিয়ার প্রযুক্তি সহায়তা চান প্রধানমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কৃষিখাতে প্রযুক্তিগত দক্ষতা থাকায় কৃষি উৎপাদন বাড়াতে অস্ট্রেলিয়ার সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে। কারণ আমাদের জমি কমছে, আর মানুষ বাড়ছে। অস্ট্রেলিয়া এ ব্যাপারে আমাদের সাহায্য করতে পারে, কারণ অস্ট্রেলিয়া কৃষি প্রযুক্তিতে অনেক উন্নত।

মঙ্গলবার (২১ মে) বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিনেটর পেনি ওং সৌজন্য সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ কৃষি উৎপাদনে সফল হয়েছে, কারণ গত ১৫ বছরে কৃষি উৎপাদন বহুগুণ বেড়েছে। তবে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশকে উৎপাদন আরও বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

  ‘শ্রমিকের জয়গান কান পেতে শোন ঐ’

;