সুন্দরবনের রাসমেলাকে কেন্দ্র করে তৎপর হরিণ শিকারিরা



মানজারুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, খুলনা
রাসমেলায় অংশ নেওয়া পুণ্যার্থীরা, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

রাসমেলায় অংশ নেওয়া পুণ্যার্থীরা, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রতিবছর কার্তিক মাসের শেষ বা অগ্রহায়ণের প্রথম দিকে শুক্লপক্ষের ভরা পূর্ণিমায় সুন্দরবনের দুবলার চরের আলোরকোলে ৩ দিনব্যাপী রাসমেলা অনুষ্ঠিত হয়। এটি এশিয়ার সব থেকে বড় সমুদ্র মেলা। রাসমেলায় হাজার হাজার পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের আগমনে মেলা উৎসব মুখর হয়ে ওঠে।

প্রতিবারের ন্যায় এ বছরের আগামী ১০ নভেম্বর থেকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত ৩ দিনব্যাপী রাসমেলা অনুষ্ঠিত হবে। সুন্দরবনের দুবলারচরে রাসমেলাকে ঘিরে উপকূলীয় অঞ্চলে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে মেলায় যেতে পূণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের প্রস্তুতি চলছে। এ মেলাকে কেন্দ্র করে সুন্দরবন উপকূলবর্তী মানুষের মধ্যে উৎসব মুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। মেলায় যাওয়ার জন্য লঞ্চ, ট্রলার, সাম্পান, জালি বোট, স্পিড বোট ভাড়াসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি চলছে।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা পূর্ণিমার সাগরের জোয়ারে নোনা জলে স্নানের মধ্যদিয়ে পাপমোচন হয়ে মনস্কামনা পূর্ণ হবে, এ বিশ্বাসে রাসমেলায় যোগ দিলেও সময়ের ব্যবধানে এখন নানা ধর্ম ও বর্ণের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লঞ্চ, ট্রলার ও নৌকা যোগে তীর্থযাত্রী ও দর্শনার্থীরা সমবেত হয় এখানে। মেলা উপভোগ করতে অসংখ্য বিদেশি পর্যটকের সমাগম ঘটে। তবে মেলাকে সামনে রেখে চোরা শিকারি ও মৌসুমি শিকারি চক্র সুন্দরবনের হরিণ শিকারের সুযোগ নেয়। তাই তাদের আগাম তৎপরতাও শুরু হয়েছে।

সুন্দরবনের রাসমেলাকে কেন্দ্র করে তৎপর শিকারিরা
১৯২৩ সালে ঠাকুর হরিচাঁদের অনুসারী হরিভজন নামে এক সাধকের হাত ধরেই এ মেলার শুরু

 

সুন্দরবন বঙ্গোপসাগরের কুঙ্গা ও মরা পশুর নদীর মোহনায় জেগে ওঠা দুবলার চর দ্বীপের রাসমেলা সাগর কেন্দ্রিক সবচেয়ে বড় উৎসব। মেলার ইতিহাস মতে, ১৯২৩ সালে ঠাকুর হরিচাঁদের অনুসারী হরিভজন নামে এক সাধকের হাত ধরেই এ মেলার শুরু। সেই থেকে প্রতিবছর কার্ত্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে পূর্ণিমা তিথিতে শুক্লা পক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পাপমোচন ও পার্থিব জীবনের কামনা-বাসনা পূরণের লক্ষে গঙ্গা স্নানের মধ্য দিয়ে এ উৎসব পালন করে আসছে। তবে সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে সনাতনীদের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্ম-বর্ণের দেশি-বিদেশি পর্যটকদেরও মন কাড়তে সক্ষম হয়েছে উৎসবটি। জেলে ও বনজীবীসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও সুন্দরবনের দরবেশ গাজী-কালুর স্মরণে মানত দিতে যোগ দিয়ে থাকেন উৎসবে। আর তাই মেলাকে ঘিরেই প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে পর্যটক ও পূজারিদের অন্তরালে চোরা শিকারিদের হরিণ নিয়ে যত আয়োজন। অনেকের মতে হরিণ শিকার করতে না পারলে যেন মেলার আগমনই তাদের কাছে বৃথা।

বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, সুন্দরবন সংলগ্ন উপজেলার চোরা শিকারি চক্র সক্রিয় রয়েছে। সুন্দরবনে প্রবেশে কড়াকড়ির মধ্যেও রাস পূর্ণিমার মেলাকে ঘিরে শিকারিদের হরিণ নিধনের সুযোগ গ্রহণ করে। সুন্দরবন সংলগ্ন উপজেলার শিকারিরা রাসমেলার আড়ালে হরিণ শিকারের ফাঁদ, জাল, বড়শিসহ বিভিন্ন উপকরণ তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে। হরিণ শিকারি চক্র আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় পরিবেশবিদরা ধারণা করছেন, এভাবে হরিণ শিকার করলে হরিণের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।

সুন্দরবনের রাসমেলাকে কেন্দ্র করে তৎপর শিকারিরা
সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পাপমোচন ও পার্থিব জীবনের কামনা-বাসনা পূরণের লক্ষে গঙ্গা স্নানের মধ্য দিয়ে এ উৎসব পালন করে আসছে

 

অভিনব কায়দায় শিকারিরা হরিণ শিকার করে। শিকারিদের কাছ থেকে জানা গেছে, নাইলনের তৈরি ফাঁদ, জাল পেতে, স্পিং বসানো ফাঁদ, বিষটোপ, তীর, গুলি করে, কলার মধ্যে বড়শি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা ফাঁদ ও ঘাস পাতার ওপর চেতনা নাশক ওষুধ দিয়ে হরিণ নিধন করা হয়।

রাসমেলা উপলক্ষে ব্যাপক নিরাপত্তা গ্রহণ করা হলেও শ্যামনগর, কয়রা, পাইকগাছা, দাকোপ, বটিয়াঘাটা, মংলা, রামপাল, সহ উপকূলীয় এলাকার শিকারিরা মেলা শুরু হওয়ার ১০/১৫ দিন আগে জেলে বা বনজীবী সেজে বনের মধ্যে প্রবেশ করে রেখে আসে শিকার করার উপকরণ। মেলার আনন্দে মেতে ওঠা দর্শনার্থী ও নিরাপত্তা কর্মীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে এসব ফাঁদ দিয়ে হরিণ শিকারের সুযোগ গ্রহণ করে। রাসমেলার সময় হিরণ পয়েন্ট, দুর্বারচর আলোর কোলসহ বিভিন্ন চর ও সুন্দরবন সাগর মোহনায় পুর্ণার্থী, দর্শনার্থী ও পর্যটকসহ হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। এ সময় জনসমুদ্রে শিকারি চক্র মিশে গিয়ে চোখ ফাকি দিয়ে হরিণ নিধনে মেতে ওঠে। ব্যাপক নজরদারী থাকা স্বত্বেও শুধুমাত্র হরিণ শিকারের উদ্দেশ্যে এ বিশাল মেলায় দর্শনার্থীরুপে আগত শিকারিদের আটকানো অনেক সময় সম্ভব হয় না।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) খুলনার সম্পাদক এড. কুদরতই-খুদা বলেন, রাসমেলাকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর হরিণ শিকারিদের তৎপরতা বেড়ে যায়। এই সময়ে প্রচুর তীর্থযাত্রী সুন্দরবনে প্রবেশের সুযোগ পায়। তাদের ভিড়ে মিশে গিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশের জন্য তৎপর থাকে শিকারিরা। পেশাদার চোরা শিকারিরা বিভিন্ন ছদ্মবেশ ধারণ করে ইতোমধ্যেই প্রবেশ করতে শুরু করেছে বনাঞ্চলে। বন বিভাগসহ কোস্টগার্ড ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর তৎপরতাই চোরা শিকারিদের এ কার্যক্রম বন্ধ করতে পারে।

সুন্দরবনের রাসমেলাকে কেন্দ্র করে তৎপর শিকারিরা
১৯২৩ সালে ঠাকুর হরিচাঁদের অনুসারী হরিভজন নামে এক সাধকের হাত ধরেই এ মেলার শুরু

 

এ দিকে পুণ্যস্নানে নিরাপদে যাতায়াতের জন্য দর্শনার্থী ও তীর্থযাত্রীদের জন্য সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ আটটি পথ নির্ধারণ করেছে। এ সকল পথে বন বিভাগ, পুলিশ, বিজিবি ও কোস্টগার্ড বাহিনীর টহল দল তীর্থযাত্রী ও দর্শনার্থীদের জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে।

অনুমোদিত আটটি পথ হলো, বুড়িগোয়ালিনী, কোবাদক থেকে বাটুলানদী-বলনদী-পাটকোষ্টা হয়ে হংসরাজ নদী হয়ে দুবলারচর। কদমতলা হতে ইছামতি নদী, দোবেকী হয়ে আড়পাঙ্গাসিয়া-কাগাদোবেকী হয়ে দুবলার চর। কৈখালী স্টেশন হয়ে মাদার গাং, খোপড়াখালী ভাড়ানী, দোবেকী হয়ে আড়পাঙ্গাসিয়া-কাগাদোবেকী হয়ে দুবলার চর। কয়রা, কাশিয়াবাদ, খাসিটানা, বজবজা হয়ে আড়ুয়া শিবসা-শিবসা নদী-মরজাত হয়ে দুবলার চর। নলিয়ান স্টেশন হয়ে শিবসা-মরজাত নদী হয়ে দুবলার চর। ঢাংমারী অথবা চাঁদপাই স্টেশন হয়ে পশুর নদী দিয়ে দুবলারচর। বগী-বলেশ্বর-সুপতি স্টেশন-কচিখালী-শেলার চর হয়ে দুবলার চর এবং শরণখোলা স্টেশন-সুপতি স্টেশন-কচিখালী-শেলার চর হয়ে দুবলার চর।

দর্শনার্থী ও তীর্থযাত্রীদের ১০ নভেম্বর হতে ১২ নভেম্বর এ তিন দিনের জন্য অনুমতি প্রদান করা হবে এবং প্রবেশের সময় এন্ট্রি পথে নির্দিষ্ট ফি প্রদান করতে হবে। যাত্রীরা নির্ধারিত রুটের পছন্দমতো একটি মাত্র পথ ব্যবহারের সুযোগ পাবেন এবং দিনের বেলায় চলাচল করতে পারবেন। বনবিভাগের চেকিং পয়েন্ট ছাড়া অন্য কোথাও নৌকা, লঞ্চ বা ট্রলার থামানো যাবে না। প্রতিটি ট্রলারের গায়ে রং দিয়ে বিএলসি অথবা সিরিয়াল নম্বর লিখতে হবে। রাস পূর্ণিমায় আগত পুণ্যার্থীদের সুন্দরবনে প্রবেশের সময় জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা ইউপি চেয়ারম্যানের নিকট হতে প্রাপ্ত সনদপত্র সাথে রাখতে হবে। পরিবেশ দূষণ করে এমন বস্তু, মাইক বাজানো, পটকা ও বাজি ফোটানো, বিস্ফোরক দ্রব্য, দেশীয় যে কোনো অস্ত্র এবং আগ্নেয়াস্ত্র বহন থেকে যাত্রীদের বিরত থাকতে হবে। সুন্দরবনের অভ্যন্তরে অবস্থানকালীন সবসময় টোকেন ও টিকেট নিজের সঙ্গে রাখতে হবে।

সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. বশিরুল আল মামুন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, পশ্চিম বনবিভাগে অভিযান পরিচালনার জন্য বিভিন্ন টিম গঠন করা হয়েছে। তীর্থযাত্রীরা যাতে নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে তার জন্য সকল প্রকার সহযোগিতা করা হবে। রাসমেলাকে কেন্দ্র করে কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হবে। র‌্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সার্বক্ষণিক টহলে নিয়জিত থাকবে। কোনো প্রকার চোরা শিকারিরা সুযোগ পাবেনা। বনের সম্পদ ধ্বংসকারীদের কঠোর হস্তে দমন করা হবে।

   

সিলেটে কমছে নদ-নদীর পানি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম সিলেট
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সারাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে টানা কয়েকদিন সিলেট অঞ্চলে হয়েছে বৃষ্টিপাত। এরমধ্যে দেখা দিয়েছে বন্যার আশঙ্কা। টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

তবে, একদিনের ব্যবধানে সিলেটের সুরমা, কুশিয়ারা ও সারিসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে।

বৃহস্পতিবার (২ মে) রাত ৯টা পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও শুক্রবার(৩ মে) সকাল ৯টা পর্যন্ত তা কমেছে । একইভাবে পানি কমেছে কুশিয়ারার আমলশীদ পয়েন্টে ও সারি নদীর সারিঘাট পয়েন্টে ।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৃষ্টিপাত হলে নদ-নদীর পানি একটু বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে তার স্থায়ীত্ব বেশিক্ষণ হবে না।

এদিকে, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে সিলেটের কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এরমধ্যে কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, জকিগঞ্জের বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের তথ্যমতে, শুক্রবার সকাল ৬টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে ১১ দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার, দুপুর ১২টায় ১০ দশমিক ৯০সেন্টিমিটার, সিলেটে সকাল ৬টায় ৮দশমিক ২৫সেন্টিমিটার, দুপুরে ৮দশমিক ১২সেন্টিমিটার, সুনামগঞ্জে সকাল ৬টায় ৪ দশমিক ৬৯ সেন্টিমিটার, দুপুরে ৪ দশমিক ৬৪ সেন্টিমিটার, কুশিয়ারা নদীর পানি আমলশীদ পয়েন্টে সকাল নয়টায় ১২দশমিক ৫২ সেন্টিমিটার, সারি নদীর পান সারিঘাট পয়েন্টে সকাল ৬টায় ৯ দশমিক ৪৩ সেন্টিমিটার ও দুপুর ১২টা পর্যন্ত ছিলো ৯ দশমিক ১২ সেন্টিমিটার। প্রতিটি পয়েন্টে পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে সুনামগঞ্জের দিকে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এ ব্যাপারে সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাইড্রোলজি বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সত্যেন্দ্র বৈদ্য জানান, গতকাল সিলেট অঞ্চলে বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছিল। রাত থেকে দুপুর অবধি বৃষ্টিপাত না হওয়ায় নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তাছাড়া নিম্নাঞ্চলগুলোতে খুব বেশি পানির চাপ না থাকায় দ্রুত সরে যাচ্ছে।

;

৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়নসহ সাত দফা দাবি সরকারি কর্মচারিদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়নসহ সাত দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারি দাবি আদায় ঐক্য পরিষদ।

শুক্রবার (৩ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি উপস্থাপন করে সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মুখ্য সমন্বয়ক ওয়ারেছ আলী তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, বর্তমান সময়ের সাথে সংগতি রেখে বাড়ি ভাড়া, রেশনিং পদ্ধতি চালু, চিকিৎসা ভাতা, শিক্ষা সহায়ক ভাতা, যাতায়াত ভাতা ও টিফিন ভাতাদি প্রদানের দাবিতে আজকের এই সংবাদ সম্মেলন ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারি দাবি আদায় ঐক্য পরিষদের ৭ দফা দাবি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করে আমাদের সংগঠনের ব্যানারে ২০১৯ সাল থেকে সংবাদ সম্মেলন, স্মারকলিপি প্রদান, মানববন্ধন, বিভাগীয় সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছি। সর্বশেষ গত বছরের ২৬ মে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। সে সময়ে বেতন বৃদ্ধি ও ভাতাদির অসংগতি দূর করার আশ্বাসমূলক আলোচনা হয়। সে আশ্বাসের প্রেক্ষিতে মহাসমাবেশে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। কিন্তু আমাদের বেতন-ভাতাদি বৃদ্ধির সকল আশাকে নিরাশায় পরিণত করে সরকার মাত্র ৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা প্রদান করে। সরকারের এ ঘোষণায় প্রজাতন্ত্রের ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারিরা চরমভাবে হতাশ ও ক্ষুদ্ধ হয়। সরকার কর্তৃক এ ৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা বর্তমান বাজার ব্যবস্থার সাথে সামাঞ্জস্যপূর্ণ নয় ।

তিনি আরও বলেন, তাছাড়াও আমাদের সংগঠনের দাবি ছিল কর্মচারি অঙ্গণে বৈষম্য দূর করা। কিন্তু তা না হয়ে ৫ ভাগ বিশেষ সুবিধায় ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারিদের বৈষম্য আরও বৃদ্ধি হয়েছে। ১১-২০ গ্রেডের অধিকাংশ কর্মচারিদের মূল বেতন ২০ টাকার নিচে, তাদের আগামী ৪/৫ বছরেও বিশেষ সুবিধা সর্বনিম্ন ১ হাজার টাকার ঊর্ধ্বে উঠবে না। অথচ ১-৯ গ্রেডের কর্মচারিদের এ সুবিধা চক্রবৃদ্ধি হারে বৃদ্ধি পেতে থাকবে। আমরা এ ধরণের বিশেষ সুবিধা চাইনি। আমরা চেয়েছি প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারিদের মূল বেতন বৃদ্ধি করা। যাতে কর্মচারিরা পরবর্তীতে এর সুবিধা পেতে পারে ।

তিনি লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, ৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা পুনঃবিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী বর্তমান সময়ের মুদ্রাস্ফীতির সাথে সংগতি রেখে তা মূল বেতনের সাথে সংযোজন ও সকল ভাতাদি যুগোপযোগী করার জন্য সবিনয়ে অনুরোধ জানাচ্ছি। একইসাথে যথাশীঘ্র বৈষম্যমুক্ত ৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়নেরও দাবি জানাচ্ছি । কেননা দ্রব্য-মূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে পরিবারের ভরণ-পোষণের ব্যয়ভার প্রাপ্ত বেতনের অর্থ দিয়ে মাসের ১৫ দিনও চলা সম্ভব হয় না।

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে সাত দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হল:-

১। পে-কমিশন গঠন পূর্বক ৯ম পে স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে। পে-স্কেল বাস্তবায়নের পূর্বে অন্তবর্তীকালীন কর্মচারীদের জন্য ৫০% মহার্ঘ্য ভাতা প্রদান করতে হবে।

২। রেশনিং পদ্ধতি চালুসহ ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা অনুযায়ী ১০ ধাপে বেতন স্কেল নির্ধারণসহ পে-কমিশনে কর্মচারী প্রতিনিধি রাখতে হবে।

৩। সচিবালয়ের ন্যায় সকল দপ্তর, অধিদপ্তরের পদনাম পরিবর্তনসহ ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ এবং এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রনয়ণ করতে হবে।

৪। টাইম স্কেল সিলেকশন গ্রেড পূর্ণবহালসহ বেতন জ্যেষ্ঠতা পূনঃবহল, বিদ্যমান গ্রাচুইটি/আনুতোষিকের হার ৯০% এর স্থলে ১০০% নির্ধারণ ও পেনশন গ্রাচুইটি ১ টাকার সমান ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে।

৫। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের আপীল বিভাগের রায় বাস্তবায়নসহ সহকারী শিক্ষকদের বেতন নিয়োগ বিধি-২০১৯ এর ভিত্তিতে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ ও অধঃস্তন আদালতের কর্মচারিদের বিচার বিভাগীয় সহায়ক কর্মচারি হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।

৬। প্রাথমিক শিক্ষার দপ্তরী কাম প্রহরীসহ আউট সোর্সিং পদ্ধতি বাতিল পূর্বক উক্ত পদ্ধতিতে নিয়োগকৃত ও উন্নয়ন খাতের কর্মচারীদের রাজস্বখাতে স্থানান্তর করতে হবে। ব্লক পোষ্টে কর্মরত কর্মচারীসহ সকল পদে কর্মরতদের পদোন্নতি বা ৫ বছর পর পর বেতন ফেলের উচ্চতর গ্রেড প্রদান করতে হবে।

৭। বাজারমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সাথে সমন্বয় পূর্বক সকল ভাতাদি পুনঃনির্ধারণ করতে হবে। চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর ও অবসরের বয়স সীমা ৬২ বছর নির্ধারণ করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনটির সভাপতি মো.আনোয়ারুল ইসলাম তোতা বলেন, আমরা সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি যাতে করে আমাদের দাবিগুলা যেন দ্রুত বাস্তবায়ন করা হয়। আমাদের দাবি বাস্তবায়ন করা না হলে আমরা সামনের দিনগুলোতে আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবো।

;

১০ টাকার টিকিটে চোখ দেখালেন প্রধানমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সাধারণ রোগীদের মতোই ১০ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে চোখের পরীক্ষা করিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শুক্রবার (৩ মে) রাজধানীর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে যান প্রধানমন্ত্রী। তারপর লাইনে দাঁড়িয়ে নিজেই টিকিট সংগ্রহ করেন তিনি। পরে নিয়মিত চক্ষু পরীক্ষা করান।

প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এ বি এম সারওয়ার ই আলম সরকার তা নিশ্চিত করেছেন।

সরকারি হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ ঘটনা দেখে উপস্থিত অনেকেই উচ্ছ্বাস ও আনন্দ প্রকাশ করেন।

 

;

জামালপুরে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে কর্মশালা অনুষ্ঠিত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, জামালপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আজ ৩ মে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস। দিবসটি উপলক্ষ্যে জামালপুরে "মফস্বল সাংবাদিকতা নিয়ে অভিজ্ঞতা বিনিময় ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (৩ মে) সকালে জামালপুর জেলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে দিনব্যাপী এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

জামালপুর জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলীর সভাপতিত্বে কর্মশালাটি উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. শফিউর রহমান।

এসময় আজকের জামালপুর পত্রিকার সম্পাদক এম এ জলিল, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শুভ্র মেহেদীসহ আরও অনেকেই বক্তব্য রাখেন।

এ সময় বক্তারা বলেন, সবার নজর যেখানে পৌঁছেনা সাংবাদিকরা সেখান থেকে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন, তাদের সংবাদের মাধ্যমে আমরা অনেক পদক্ষেপ নিতে পারি। তাই বর্তমান সরকার যেমন দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে, তেমনি সাংবাদিকদের আধুনিক তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ হয়ে আরও স্মার্ট হতে হবে।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মাধ্যমেই দেশের প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব যার সুফল জনগণ সরাসরি ভোগ করতে পারে। জেলার বিভিন্ন উপজেলার ৫০ জন সাংবাদিক ও ক্যামেরাপার্সন দিনব্যাপী অভিজ্ঞতা বিনিময় ও কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।

;