পাটকল শ্রমিকের জানাজা সম্পন্ন, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, খুলনা
পাটকল শ্রমিক আব্দুস সাত্তারের জানাজা সম্পন্ন, ছবি: বার্তা২৪.কম

পাটকল শ্রমিক আব্দুস সাত্তারের জানাজা সম্পন্ন, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

১১ দফা দাবি আদায়ে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে মৃত্যুবরণকারী প্লাটিনাম জুট মিল শ্রমিক আব্দুস সাত্তারের (৫৮) জানাজা সম্পন্ন হয়েছে।

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় প্লাটিনাম জুট মিল গেটে বিআইডিসি সড়কে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। স্বজন ও সহকর্মীরা সাত্তারের মরদেহ পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়ায় নিয়ে যান।

জানাজায় খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক তারিকুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলনের নগর সেক্র‌েটারী মাওলানা নাসির উদ্দিন, রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক মুরাদ হোসেন, শ্রমিক নেতা সোহরাব হোসেন, কাওসার আলী মৃধা, খলিলুর রহমান, সেলিম আকন, সেলিম শিকদার, মনিরুল ইসলাম শিকদার, আবু হানিফ, শাহাজান সিরাজ, তরিকুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, মিন্টু মিয়া, স্টার জুট মিলের আবু হানিফ, তবিবর রহমান, আলমগীর হোসেন, সিরাজুল ইসলাম, লিয়াকত হোসেন, আব্দুল হামিদ, হারুন অর রশিদসহ পাটকলের শ্রমিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

এছাড়া বাদ জুম্মা রাষ্ট্রয়ত্ত পাটকলের বিভিন্ন স্থানে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এদিকে, জানাজায় অংশ নেওয়া শ্রমিকরা ঘোষণা দেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

এরআগে, বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় অনশন কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে শ্রমিক আব্দুস সাত্তার অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রথম‌ে তাকে খালিশপুর ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে খুমেক (খুলনা মেডিকেল কলেজ) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে শারীরিক অসুস্থতার কারণে শ্রমিক আব্দুস সাত্তারের মৃত্যু হয়েছে জানিয়ে তার পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান।

তিনি বলেন, মৃত শ্রমিকের পরিবারকে সব ধরনের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। এছাড়া খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও খুলনা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনশনরত শ্রমিকদের চিকিৎসার জন্য মেডিকেল টিম গঠনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

এসময় তিনি খুলনার বিভাগীয় শ্রম অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় পাটকল শ্রমিকদের অনশন প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।

বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) রাতে খুলনার বিভাগীয় শ্রম অধিদফতরের সম্মেলনকক্ষে খুলনায় পাটকল শ্রমিকদের অনশন প্রত্যাহারের বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় শ্রম প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

অনশন ও ধর্মঘটে থাকা শ্রমিকদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে কাজে ফেরার আহ্বান জানালেও শুক্রবারও চতুর্থ দিনের মতো আমরণ অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন শ্রমিকরা।

শ্রমিক নেতারা জানান, আমরণ অনশনে অংশ নিয়ে ইতোমধ্য‌ে খুলনার বিভিন্ন পাটকলের অন্তত দুই শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এদের মধ্যে ৫০ জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক খলিলুর রহমান বলেন, প্রতিদিনই শ্রমিকরা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। তবে যতই কষ্ট হোক, ১১ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন কর্মসূচি চলবে।

ক্রিসেন্ট জুট মিলের সিবিএ’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক শ্রমিক নেতা সোহরাব হোসেন বলেন, অনশন কর্মসূচিতে দুই শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছে। অনেককে খুমেকে পাঠানো হয়েছে। স্যালাইন দিয়েও অনেকে অনশনে আছেন।

উল্লেখ্য, মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ১১ দফা দাবিতে গত ১৭ নভেম্বর ৬ দিনের কর্মসূচির ডাক দেয় রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদ। গত ২৫ নভেম্বর থেকে কর্মসূচি শুরু হয়। সবশেষ ১০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় আমরণ অনশন।

   

উড়ছে রঙিন ঘুড়ি



ছাইদুর রহমান নাঈম, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চাঁদনী রাতে চারপাশ থেকে ভেসে আসে বাঁশির শব্দ। বৈশাখী রাতের বাতাস আর এ-শব্দ মিলেমিশে মুগ্ধ করে মনকে। সকাল থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যাবেলা। আকাশে দেখা মিলছে ঘুড়ির। বিশেষ করে বিকালের নীল আকাশে যেন ঘুড়ির রাজত্ব। রাতে মনে হয় আকাশে যেন বিমান খেলা করছে। নিভু-নিভু আলো জ্বলে আকাশে। কখনো মনে হবে বড় সাপ, চিল, ঈগল, ঘর উড়ছে ওখানে। কখনো মনে হবে দৈত্য-দানব আকাশে উড়ছে! আসলে এগুলো বিভিন্ন ডিজাইনের ঘুড়ি।

আবহমান বাংলার ঐতিহ্যের অংশ এই ঘুড়ির দেখা মেলে এখনো কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলায়। প্রতিদিন আকাশে দিনেরাতে দেখা যায় হরেক রকমের ঘুড়ি৷। উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় এমনি দৃশ্য দেখা যায়৷

বাংলার সংস্কৃতি থেকে হারিয়ে যেতে চলা ঘুড়ি উৎসবে সববয়সী মানুষ মেতেছেন। বিভিন্ন পাড়া, মহল্লার আকাশে এখন রঙবেরঙের ঘুড়ি। শিশু-তরুণ-যুবক এমনকি মাঝ বয়সীরাও স্বাদ নিচ্ছে ঘুড়ি উড়ানোর। শুধু দিনেই নয়, রাতের আকাশেও দেখা মিলছে ঝলমলে ঘুড়ির।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে উপজেলায় ঘুড়ি বানানোর ধুম পড়েছে। আকাশে চোখ মেললেই ঘুড়ির লড়াইয়ের দৃশ্য, চলছে কাটাকাটির খেলা। ঘুড়ির মধ্যে লাইটিং করা হচ্ছে। রাতের আকাশে অনেক রকমের আলো ঝলমল করছে। কটিয়াদী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দিন-রাত ছোট-বড় নানাবয়সী ঘুড়িপ্রেমী মেতেছেন এই ঘুড়ি উৎসবে। বর্তমানে চাহিদা বাড়ায় প্রকারভেদে দুইশ থেকে পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে এসব ঘুড়ি। প্রতিদিন আকাশে দিন-রাত্রি উড়তে দেখা যাচ্ছে- চিল, কয়রা, ঢোল, পতিঙ্গা, পাখি, পরি, বাচ, ফুল, প্রজাপতি, মানুষ ঘুড়ি, সাপাসহ রংবেরঙের ঘুড়ি।

মসুয়া ইউনিয়নের বৈরাগিচর এলাকার ঘুড়িপ্রেমী ইদ্রিস বলেন, গ্রামে ঘুড়ি তৈরিতে যুবকরা ব্যস্ত সময় পার করছে। সাধারণত যেকোনো ডিজাইনের একটি ঘুড়ির দাম একশ থেকে পাঁচশ টাকা পর্যন্ত। বাঁশ, বেত এবং বিভিন্ন রঙের প্লাস্টিক-কাগজের মোড়কে ঘুড়ি বানানো হয়। আবার কেউ ঘুড়িতে বাতি লাগিয়ে নিয়ে রাতের আকাশে উড়াচ্ছেন।

জনশ্রুতি আছে, ব্রিটিশ আমলে অভিজাত লোকদের বিনোদনের জন্য ঘুড়ি উড়ানোর আয়োজন করা হতো। ১৭৪০-এর দশকে নায়েব-এ-নাজিম নওয়াজেশ মোহাম্মদ খানের আমলে ঢাকায় ঘুড়ি উড়ানো উৎসব একটা ঐতিহ্যে পরিণত হয়। তখন থেকেই কিশোরগঞ্জের খোলা আকাশে অনেক ঘুড়ি উড়তে দেখা যায়।

;

মামুনুল হকের মুক্তি আবারও পেছাল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের আজ বৃহস্পতিবার মুক্তির কথা ছিল। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে আজ রাতে হচ্ছে না মামুনুল হকের মুক্তি।

এদিকে, কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মাওলানা মামুনুল হক মুক্তি পাবেন এমন খবরে হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা কারা ফটকের সামনে গিয়ে ভিড় জমান।

কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা জানান, আজ মামুনুল হককে মুক্তি দেওয়া সম্ভব হবে না। তার জামিনের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই চলছে।

এর আগে, গত ১১ মার্চ মামুনুল হকের মুক্তির বিষয়ে আলোচনা করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে বৈঠক করেন হেফাজত নেতারা। ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খানসহ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বৈঠকে অংশ নেন।

বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সংগঠনটির মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান দাবি করেন, মামুনুল হকের মুক্তির বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। খবর পেয়ে হেফাজতের স্থানীয় নেতাকর্মীরা রিসোর্টে গিয়ে ভাঙচুর চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। ঘটনার পর থেকে ঢাকার মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসায় অবস্থান করেন মামুনুল হক।

১৫ দিন পর ১৮ এপ্রিল ওই মাদরাসা থেকে মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় তার বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের মামলা করেন তার সঙ্গে রিসোর্টে অবরুদ্ধ হওয়া নারী। যদিও ওই নারীকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করে আসছেন মামুনুল হক। এরপর ওই মাসেই দেশের বিভিন্ন স্থানে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহসহ অর্ধশতাধিক মামলা হয়েছে। পরে সেসব মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ। গ্রেফতারের পর থেকে এসব মামলায় তিনি কারাগারে আছেন।

;

সারা দেশে বজ্রপাতে প্রাণ গেল দশজনের



বার্তা ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র তাপদাহের পর স্বস্তির বৃষ্টিতে সারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় বজ্রপাতে দশজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে কুমিল্লায় চারজন, পাবত্য জেলা রাঙামাটিতে তিনজন, কক্সবাজারে দুইজন ও খাগড়াছড়িতে একজন মারা গেছেন।

বৃহস্পতিবার (২ মে) সকাল ও বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।

কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার বরকইট ইউনিয়নের কিছমত-শ্রীমন্তপুর এলাকার সুন্দর আলীর ছেলে কৃষক দৌলতুর রহমান (৪৭), বুড়িচং উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের পাঁচোড়া এলাকার কুদ্দুস মিয়ার ছেলে কৃষক আলম হোসেন, দেবিদ্বার উপজেলার ধামতী এলাকার বাসিন্দা মোখলেছুর রহমান ও সদর দক্ষিণ উপজেলার গলিয়ারা ইউনিয়নের সূর্যপুর গ্রামের বাসিন্দা আতিকুল ইসলাম বজ্রপাতে মারা যান।

পার্বত্য জেলা রাঙামাটি সদর উপজেলার সিলেটিপাড়া এলাকার বাসিন্দা নজির হোসেন (৫০), বাঘাইছড়ি উপজেলার রুপাকারী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মুসলিম ব্লক গ্রামের লাল মিয়ার স্ত্রী বাহারজান বেগম (৫৫) ও সাজেক ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের লুইনথিয়ান পাড়ায় বেটলিং মৌজার কারবারি মিথুন ত্রিপুরার বোন তনিবালা ত্রিপুরার (২৫) মৃত্যু হয়।

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার শিলখালী ইউনিয়নের জারুলবুনিয়া এলাকার জমিরের ছেলে দিদারুল ইসলাম (৩৫) ও রাজাখালী ইউনিয়নের ছড়িপাড়া এলাকার জামালের ছেলে মো. আরমান (২৫) বজ্রপাতে মারা যান।

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় ঝোড়ো বাতাসে আম কুড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে ইয়াছিন আরাফাত (১৩) নামের এক স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডেজী চক্রবর্তী বলেন, সকালের দিকে বজ্রাঘাতে এক স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের পরিবারকে সহায়তার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

;

ধরে নিয়ে যাওয়া ১২ জেলেকে মুক্তি দিল আরাকান আর্মি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নাফনদীতে মাছ ধরতে গিয়ে উখিয়ার থাইংখালী রহমতেরবিল সীমান্ত এলাকা থেকে ১০ জন ও টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ের লম্বাবিল সীমান্ত এলাকার ২ জনসহ মোট ১২ জন বাংলাদেশী জেলেকে ছেড়ে দিয়েছে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্টি আরাকান আর্মি (এএ)।

বৃহস্পতিবার (২ মে) রাত ৮টার দিকে উখিয়ার বালুখালীর একটি সীমান্ত পয়েন্টে এসে তাদেরকে ছেড়ে দেয় আরাকান আর্মি।

১২ বাংলাদেশীকে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন।

তিনি বলেন, জেলেরা নাফনদীর বাংলাদেশ অংশে মাছ ধরতে গিয়ে অপহরণের শিকার হন। বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে তাদের ছেড়ে দিয়েছে।

এম গফুর উদ্দিন বলেন, আরাকান আর্মির সদস্যরাই আমাদের জেলেদের নিয়ে গিয়েছিল। কারণ রহমতেরবিল সীমান্তে মিয়ানমার অংশে এখন সেদেশের কোনো সরকারী বাহিনী নেই। যারা ছিলো তারা সবাই সংঘাতের সময় পালিয়ে বাংলাদেশে চলে এসেছিলো। এখন রহমতেরবিল সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের ওই এলাকাটি আরাকান আর্মির দখলেই আছে। এছাড়া বিভিন্ন সূত্রে এম গফুর উদ্দিন খবর পেয়েছেন আরাকান আর্মিই জেলেদের নিয়ে গিয়েছিল বলে জানান।

অপহরণের শিকার টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং লম্বাবিল এলাকার আব্দুল জলিল নামের এক যুবক জানান, আরাকান আর্মি আমাদের নাফনদীতে মাছ ধরার সময় ধরে নিয়ে গেছিলো। জাতীয় পরিচয় পত্র চেক করে বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর দুপুরের দিকে ছেড়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু সীমান্তের পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরে সন্ধ্যা ৮ টায় সীমান্তের নাফনদীর বাংলাদেশ অংশের বালুখালীর একটি এলাকায় ১২ জনকে ছেড়ে দিয়ে তারা চলে যায়। আমরা সবাই সুস্থ আছি।আমাদেরকে কোনো মারধর করা হয়নি।

এর আগে গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালী রহমতেরবিল সীমান্তে নাফনদী থেকে তাদেরকে ধরে নিয়ে যায়।

তারা হলেন, পালংখালী ইউনিয়নের রহমতের বিল এলাকার হোসেন আলীর ছেলে জানে আলম (৩৫), মৃত আবদুস ছালামের ছেলে আব্দুর রহিম (৪০), মৃত জালাল আহমদের ছেলে আনোয়ারুল ইসলাম (৩৭) ও সাইফুল ইসলাম (৩০), মৃত আলী আহমদের ছেলে আয়ুবুল ইসলাম (৩০), আবু তাহেরের ছেলে শাহীন (২০), গৌজঘোনা এলাকার আলী আহমদের ছেলে আবদুর রহিম (৫২), পুটিবনিয়া এলাকার মৃত মিয়া হোসেনের ছেলে ওসমান গণী (৩০), মৃত আবুল শামার ছেলে ওসমান (৩৫), আয়ুব ইসলামের ছেলে আবুল হাশিম (৩৫), টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং লম্বাবিল এলাকার রোমান আলীর ছেলে আব্দুল জলিল (৩২) ও দৈংগ্যাকাটা এলাকার হোসাইন আহমদ (৫৫)।

এদিকে ১২ বাংলাদেশী অপহৃতদের পরিবার বুধবার থেকে উৎকণ্ঠায় ছিল। যেকোনো মূল্যে অপহরণের শিকার জেলেদের অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়ে আসছিল তাদের পরিবার। এখন তাদের অক্ষত ফিরে পেয়ে খুশিতে আত্মহারা তারা।

;