করোনাভাইরাস বিস্তারের কারণ, প্রতিরোধ ও নির্মূলের উপায়

  করোনা ভাইরাস


প্রফেসর ড. মু. আলী আসগর, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে বিশাল সংখ্যক মানুষ করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে ফুসফুস প্রদাহ (নিউমোনিয়া) ব্যাধির প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। কিউরিয়াস জার্নালে প্রকাশিত গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) প্রথমে এই করোনাভাইরাসের নাম দিয়েছিল ‘‘২০১৯ নভেল করোনাভাইরাস" বা ‘‘২০১৯ - কোভ’’ এবং পরবর্তীতে গবেষকরা "২০১৯ - কোভ’’ এর সঙ্গে ২০০২- ২০০৩ সালে সংঘটিত মহামারির জন্য দায়ী ভাইরাস সার্স-কোভ (পুরো নাম সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম-কোভ) এর বেশ মিল খুঁজে পাওয়ায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই নতুন ভাইরাসটির নামকরণ করেছে সার্স-কোভ-২। ২০০২ সাল থেকে চীনে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া সার্স-কোভ নামক ভাইরাসের সংক্রমণে পৃথিবীতে ৭৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল এবং ৮০৯৮ জন সংক্রমিত হয়েছিল। সেটিও ছিল এক ধরনের করোনাভাইরাস যা বিশ্বব্যাপী মহামারি সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হয়েছিল।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে নতুন আবির্ভূত সার্স-কোভ-২ ভাইরাসটির কারণে সৃষ্ট রোগ কোভিড-১৯ নামে সুপরিচিত। ‘CO’ এর পূর্ণরূপ corona, ‘VI’ এর পূর্ণরূপ "virus" এবং ‘D’ এর পূর্ণরূপ "disease" এবং এই ভাইরাসের বাহিরের প্রোটিনের আবরণ মুকুটের সদৃশ্য হওয়ায় এর নাম করোনাভাইরাস। ধারণা করা হচ্ছে, হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানের সি ফুড মার্কেটে যেখানে অবৈধ বন্যপ্রাণীর কেনাবেচা হতো, সেখান থেকেই এ ভাইরাসটি ছড়িয়েছে। এই ভাইরাসের কারণে শ্বাসযন্ত্রের গুরুতর ও তীব্র সংক্রমণ হয়। এখন পর্যন্ত যার কোন নির্দিষ্ট নিরাময় বা প্রতিষেধক নেই। চীন ছাড়িয়ে পড়া এ মারণ ভাইরাস সারা বিশ্বব্যাপী দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে লাখ লাখ মানুষের প্রাণহানির কারণ হিসেবে দাঁড়ালে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১১ মার্চ ২০২০ তারিখে ব্যাধিটিকে একটি বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

করোনাভাইরাস প্রজাতি চারটি প্রধান ভাগে বিভক্ত- আলফা করোনাভাইরাস, বিটা করোনাভাইরাস, গামা করোনাভাইরাস, ও ডেল্টা করোনাভাইরাস। মানুষের শ্বসনতন্ত্র ও পরিপাকতন্ত্রের সংক্রমণের জন্য দায়ী উল্লেখিত চারটি প্রধান ভাগের অন্তর্ভুক্ত ৬টি করোনাভাইরাস প্রজাতি পূর্বে আবির্ভূত হয়েছিল। ২০১৯ সালে আবির্ভূত সার্স-কোভ-২ হচ্ছে মানুষের জন্য ক্ষতিকর করোনাভাইরাসের ৭ম প্রজাতি। কিউরিঅস জার্নালে প্রকাশিত গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, চীনে ২০০২ সালে আবির্ভূত করোনাভাইরাস, সার্স-কোভ এবং ২০১৯ সালে আবির্ভূত সার্স-কোভ-২ উভয়েই বিটা করোনাভাইরাসের অন্তর্ভুক্ত। সার্স-কোভ ভাইরাসের মূল উৎস বাদুড় হলেও, ন্যাচার জার্নালে প্রকাশিত গবেষকদের প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী মেটাজেনোমিক সিকুয়েনসিংয়ের মাধ্যমে শুধুমাত্র স্তন্যপায়ী প্রাণী প্যাঙ্গোলিনে সার্স-কোভ-২ সম্পর্কযুক্ত করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলো থেকে এ প্রাণীটি ব্যাপক হারে চীনে পাচার হয়ে থাকে। দেশটিতে প্যাঙ্গোলিনের গায়ের আঁশ দিয়ে ঐতিহ্যবাহী ওষুধ ও প্রাণীটির মাংসও একটি উপাদেয় খাবার বলে গণ্য করা হয়। সম্প্রতি বৈশ্বিক মহামারির কারণ এই ভাইরাসটি (সার্স-কোভ-২) ইতোপূর্বে কখনও মানবদেহে পাওয়া যায়নি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সার্স-কোভ-২ আক্রান্ত ব্যক্তির সবচেয়ে পরিচিত লক্ষণগুলো হচ্ছে- জ্বর, ক্লান্তি, শ্বাসকষ্ট ও শুষ্ক কাশি। সার্স-কোভ-২ আক্রান্ত কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে সর্দি, গলা ব্যথা, নাক কনজেশন, এবং শরীরে ব্যাথা বা ডায়রিয়া দেখা যায়। কারও স্বাদ ও ঘ্রাণ পাওয়ার অনুভূতি ভোঁতা হয়ে যেতে পারে। আক্রান্ত ছয় জনের একজন মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়ে তীব্র শ্বাস কষ্ট সহ ফুসফুস প্রদাহ (নিউমোনিয়া) ব্যাধিতে অসুস্থ হয়। বয়স্ক ব্যক্তিরা এবং যাদের উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ বা ডায়াবেটিস রোগ আছে, তাদের সার্স-কোভ-২ দ্বারা মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হওয়ার বিশাল ঝুঁকি রয়েছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, যে কোনো বয়সের লোকই নতুন এ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে।

সিএনএন হেলথ ৩১ মার্চ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, কিছু শিশুসহ ২০-৫০ বছর বয়স্ক অসংখ্য মানুষ এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। গবেষকগণের প্রাপ্ত ফলাফলে দেখা গেছে, মানবদেহে সার্স-কোভ-২ বংশবিস্তারে সময় লাগে ৫.১ দিন। যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে, আক্রান্ত হওয়ার ১১.৫ দিনের মধ্যে প্রায় ৯৭.৫% মানুষের শরীরে সার্স-কোভ-২ এর লক্ষণ প্রকাশ পায়। আক্রান্ত হওয়া থেকে ১৪ দিন পর্যন্ত কোন ব্যক্তি সংক্রমণের বিস্তার ঘটাতে পারে। সে কারণে দ্য জার্নাল এনালস অফ ইন্টারনাল মেডিসিনে প্রকাশিত এক গবেষণা অনুযায়ী, সম্ভাব্য আক্রান্ত ব্যক্তিকে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে (রোগ সংক্রমণের আশঙ্কায় পৃথক রাখা) বা সক্রিয় পর্যবেক্ষণ করা উচিত। তবে মারাত্মক ক্ষেত্রে দীর্ঘতর সময় সক্রিয় মনিটর করা প্রয়োজন। জ্বর, ক্লান্তি ও শুষ্ক কাশির মতো অন্য লক্ষণগুলো সেরে যাওয়ার পর এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুইবার করোনাভাইরাস পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এলেই কেবল তারা কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়া পেতে পারেন।

বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ দ্রুত বিস্তারের কারণ:

দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিনে প্রকাশিত এক গবেষণা অনুযায়ী, সার্স-কোভ-২ ভাইরাস এ্যারোসল অবস্থায় তিন ঘণ্টা পর্যন্ত বাতাসে ভেসে থাকতে পারে। এ্যারোসল হচ্ছে, এ্যারো (aero অর্থ বাতাস) এবং সল (sol অর্থ সলিউশন বা তরল), অর্থাৎ তরল পদার্থের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা, যা মাইক্রো-ড্রপলেট (micro-droplets) আকারে বাতাসে ভেসে থাকে। দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিনে প্রকাশিত গবেষণার তথ্য মতে, সার্স-কোভ-২ ভাইরাস প্ল্যাস্টিকের ওপরে ৭২ ঘণ্টা, স্টেইনলেস স্টিলের ওপরে ৪৮ ঘণ্টা ও পিজবোর্ডের (পুরু ও শক্ত কাগজবিশেষ) উপর ২৪ ঘণ্টা টিকে থাকতে সক্ষম। ভাইরাসটি অন্যান্য বিভিন্ন পৃষ্ঠের ওপর বেঁচে থাকতে পারে। সে কারণে এই মারণ ভাইরাস বাতাসসহ বাড়ি/ঘর/ শপ/প্রতিষ্ঠানে ব্যবহৃত জিনিষপত্র, গণপরিবহনে ব্যবহৃত আসন বা বডি পার্টসের মাধ্যমে বিস্তারে সক্ষম। ভাইরাসটি একজন থেকে আরেকজনে সংক্রমণের প্রধান মাধ্যম হাত। এই ভাইরাসটি মারাত্মক ছোঁয়াচে। আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি, কাশি ও মলের মাধ্যমে ভাইরাসটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। সার্স-কোভ-২ ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি হাঁচি বা কাশি দিলে মুখ ও নাক দিয়ে তরল ড্রপলেট নিঃসৃত করে যা ভাইরাস বহন করে। আক্রান্ত ব্যক্তির উক্ত ড্রপলেট নিকটবর্তী সুস্থ ব্যক্তি শ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণের ফলে আক্রান্ত হতে পারে। ভাইরাসটি সুস্থ ব্যক্তির ফুসফুসের বাতাস নির্গমন পথ এবং মিউকাস পর্দায় গিয়ে পৌঁছায়। বংশ বিস্তারের কারণে নতুন ভাইরাসের কপি/প্রতিলিপি মানুষের কোষে ধারাবাহিকভাবে বেশি হতে থাকে। ফলে সংখ্যায় বৃদ্ধি পেয়ে আরও বেশি মানুষের কোষ আক্রমণ করে। আক্রান্ত ব্যক্তির কাশির তরল ড্রপলেটগুলোই করোনাভাইরাসের মূল বাহক, আর এগুলো ছয়/সাত ফুট পর্যন্ত যেতে পারে।

কোভিড-১৯ প্রতিরোধের উপায়:

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ সার্স-কোভ-২ ভাইরাস প্রতিরোধে ইতোমধ্যে বেশ কিছু সুপারিশ করেছে। উন্নত কিছু দেশের সরকার প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু ব্যক্তিগণসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশের জনগণের একটি বড় অংশ কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। সকল ভাইরাসই মানুষকে আক্রান্ত না করা পর্যন্ত জীবনমৃতের মতো থেকে তারা চেষ্টা করে মানুষের দেহের কর্তৃত্ব গ্রহণে। মানুষের দেহের বাহিরে তারা জীবনবিহীন সুপ্ত অবস্থায় থাকে। তারা সংস্পর্শ, শ্বাসের মাধ্যমে মানুষের দেহে প্রবেশ করে মানুষের দেহের প্রোটিন খাদ্য হিসেবে ব্যবহারের ফলে সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং মানুষের কোষগুলোকে আক্রমণ করে। মানুষের দেহে বংশ বিস্তারের পর হাঁচি-কাশির মাধ্যমে অন্যদের সংক্রমিত করতে থাকে। মানুষের দেহই কোভিড-১৯ সহ সকল ভাইরাসের খাদ্য তথা বেঁচে থাকার উৎস। ৩১ মার্চ ইউএসএ সংবাদমাধ্যম টাইম নিউজ পেপারের তথ্য অনুযায়ী, বিশেষজ্ঞরা বলছেন বিশ্বের বর্তমান পরিস্থিতিতে মানুষদের নিরাপদে সামাজিক শিষ্টাচার/ দৈহিক দূরত্ব বা কোয়ারেন্টাইনে রেখে (অর্থাৎ আক্রান্ত মানুষ থেকে অনাক্রান্ত মানুষকে বিচ্ছিন্ন করে) এ মহামারি প্রতিরোধ সম্ভব।

ইতোমধ্যে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ও সিঙ্গাপুর ‘ফ্ল্যাটেন দ্য কার্ভ’ অগ্রাধিকার দিয়ে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সাফল্য পেয়েছে। ‘ফ্ল্যাটেন দ্য কার্ভ’ হচ্ছে সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণ এবং যে কোনো দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সীমিত সাধ্যের মধ্যে ধরে রাখার মূলনীতি। ফলে সামগ্রিকভাবে অল্প মানুষ সংক্রমিত হয় ও মৃত্যুবরণ করে। ‘ফ্ল্যাটেন দ্য কার্ভ’ নীতি অনুসরণ করে সবচেয়ে বেশি সফল হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া কারণ হিসেবে ২০১৫ সালের মার্স ভাইরাস মোকাবিলার অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো। দ্রুত সক্রিয়ভাবে ভাইরাস মোকাবিলায় বিদ্যমান স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিবরণী অনুযায়ী হাজার হাজার মানুষের কোভিড-১৯ রোগের ভাইরাসের পরীক্ষা করা, অনাক্রান্ত মানুষকে আক্রান্ত মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন রাখা, পর্যটক নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

সার্স কোভিড-১৯ ভাইরাস তিন ধরনের উপাদান দিয়ে গঠিত−আরএনএ, প্রোটিন এবং লিপিড। প্রোটিনের মাধ্যমে ভাইরাসটি মানবদেহের কোষের সঙ্গে মিশে যায়, আর এর বিস্তার ঘটায়। সেল হোস্ট এন্ড মাইক্রোব জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা অনুযায়ী, উভয় ভাইরাসের (২০০২ সালে আবির্ভূত সার্স-কোভ ও ২০১৯ সালে আবির্ভূত সার্স-কোভ-২) অ্যামাইনো এসিডের (প্রোটিনের উপাদান) মাত্রা প্রায়ই একই হলেও কিন্তু উভয় ভাইরাসের প্রোটিনের গঠনে কিছু উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। গাঠনিক এই সামান্য পার্থক্যের কারণে নতুন সার্স কোভ-২ ভাইরাসটি, পূর্বের সার্স কোভ-২ এর চেয়ে বেশি মানুষকে সংক্রমণের ক্ষমতাসম্পন্ন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

   

বরগুনায় বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটে আগুন, ৪ লাখ টাকার ক্ষতি 



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, বরগুনা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বরগুনার তালতলীতে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগে একটি বসতঘর পুড়ে গেছে। শুক্রবার (১০ মে) রাত সাড়ে ৮ টার দিকে উপজেলার নিশান বাড়িয়া ইউনিয়নের খোট্টারচর গ্রামে মনির চৌকিদারের বাড়িতে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার রাত ৮ টার দিকে হঠাৎ আগুন লাগে। খবর পেয়ে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে এসে ১ ঘণ্টার চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ অগ্নিকাণ্ডে আনুমানিক ৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাড়ির মালিক।

স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়দের সাথে কথা বলে ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।

তালতলী ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা বদিউজ্জামান বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। তবে আগুনে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।


  করোনা ভাইরাস

;

টেকনাফে মাথায় গুলি করে রোহিঙ্গা যুবককে হত্যা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার নয়াপাড়া রেজিস্টার্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাথায় গুলি করে মোহাম্মদ আলম (৪০) নামের এক রোহিঙ্গা যুবককে হত্যা করা হয়েছে।

শনিবার (১১ মে) সকাল আটটার দিকে নয়াপাড়া রেজিস্টার্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-ব্লকের বটতলীতে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত রোহিঙ্গা যুবক টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের নয়াপাড়া রেজিস্টার্ড আশ্রয়শিবিরের ই-ব্লকের ৯৭৩/৬নং শেডের বাসিন্দা ছিলেন বলে জানা গেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)মুহাম্মদ ওসমান গনি। তিনি বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

স্থানীয় রোহিঙ্গারা জানায়, আজ সকালে টেকনাফ উপজেলার নয়াপাড়া রেজিস্টার্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-ব্লকের বটতলী নামক এলাকায় রোহিঙ্গা ডাকাত কামাল গ্রুপের সদস্য শফি এবং ই-ব্লকের বাসিন্দা রোহিঙ্গা নাগরিক মোহাম্মদ আলমের (৪০) কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ডাকাত শফি উত্তেজিত হয়ে সঙ্গে থাকা অস্ত্র দিয়ে মোহাম্মদ আলমের মাথায় গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে।

  করোনা ভাইরাস

;

পুনরুজ্জীবন পাচ্ছে শ্যামাসুন্দরী খাল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
শ্যামাসুন্দরী পুনরুজ্জীবিত করতে অভিযান শুরু

শ্যামাসুন্দরী পুনরুজ্জীবিত করতে অভিযান শুরু

  • Font increase
  • Font Decrease

‘রংপুরের ফুসফুস’ বলে পরিচিত শ্যামা সুন্দরী খাল। এটি রংপুরের বুক চিড়ে প্রবাহিত হয়েছে। নগরীর সিও বাজার এলাকার ঘাঘট নদীর উৎসমুখ থেকে শুরু হয়ে খোখসা ঘাঘটের সঙ্গে মিলেছে। খাল হলেও এর দৈর্ঘ্য ১৬ কিলোমিটার; গভীরতা ৪০ ফুটেরও বেশি ছিল। জলাবদ্ধতা দূরীকরণের উদ্দেশ্যে ১৮৯০ সালে খালটি খনন করা হয়।

শ্যামা সুন্দরী ভরাট হওয়ার ফলে বর্তমানে পানির প্রবাহ নেই বললেই চলে। মানুষ এখন ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত করেছে একে। ঘরবাড়ির আবর্জনা খালে ফেলে দিচ্ছে। খালটি ভরাট হয়ে দিন দিন এর আকার সংকুচিত হচ্ছে। দূষিত পানি আর ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে পাশ দিয়ে হাঁটাও দায় হয়েছে রংপুরবাসীর।

অবশেষে সেই ঐতিহ্যবাহী শ্যামাসুন্দরী খাল পুনরুজ্জীবিত করতে অভিযান শুরু করেছ রংপুর সিটি করপোরেশন।

শনিবার (১১ মে) সকালে শ্যামাসুন্দরী খাল পরিস্কার পরিচ্ছন্নকরণ ও জনসচেতনতা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। একযোগে খালের পাঁচ কিলোমিটার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার মধ্য দিয়ে শ্যামাসুন্দরী পুনরুজ্জীবন ও সচল রাখার কার্যক্রমে ১৫ পয়েন্টে স্বেচ্ছাসেবী যুব সংগঠন বিডি ক্লিনের একহাজার সদস্যসহ সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা শাখার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা অংশ নিয়েছেন।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র মোস্তফা বলেন, পরিচ্ছন্নতার সুফল সম্পর্কে নগরবাসীকে বেশি করে সচেতন করতে সবাইকে কাজ করতে হবে। শ্যামাসুন্দরী খালের আশপাশে বসবাসরত নগরবাসীকে সচেতন হতে হবে। খাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের পর নতুন করে ময়লা ফেলা এবং পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য অবৈধ স্যুয়ারেজ সংযোগ প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে রংপুর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নিয়মিত তদারকি কার্যক্রম চলমান থাকবে। প্রয়োজনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনাসহ অন্যান্য আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনী ইশতেহারে গ্রিন সিটি এবং ক্লিন সিটি ছিল অন্যতম অ্যাজেন্ডা। এরই ধারাবাহিকতায় শ্যামাসুন্দরী খালের পাঁচ কিলোমিটার (চেকপোস্ট হতে শাপলা চত্বর) ময়লাযুক্ত মাটি পুনঃখনন ও অপসারণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শ্যামাসুন্দরী কেবল রংপুর নয়, সমগ্র দেশের জন্যই একটি বড় সম্পদ। এ সম্পদ রক্ষা করা সকলের দায়িত্ব। শ্যামাসুন্দরী খালকে পুনরুজ্জীবিত এবং সৌন্দর্যবর্ধনের যে প্রয়াস চলছে তার সফলতা এবং রংপুরের সকল নাগরিকের সহযোগিতা প্রয়োজন।

এসময় আগামী তিন মাসের মধ্যে শ্যামাসুন্দরী খাল খনন ও সংস্কারসহ আধুনিকায়নে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রজেক্ট ডিজাইন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের জন্য চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার জাকির হোসেন। আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আব্দুল বাতেন।

রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতিমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান, জেলা প্রশাসক মোবাশ্বের হাসান ও পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী চৌধুরী।

  করোনা ভাইরাস

;

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সমন্বিত পদক্ষেপ প্রয়োজন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ আহত হচ্ছে, নিহত হচ্ছে। সড়কে খালি হচ্ছে হাজারো মায়ের কোল। এসব দুর্ঘটনার সমস্যা সমাধানে সমন্বিত পদক্ষেপ প্রয়োজন।

শনিবার (১১ মে) সকালে শিল্পকলা একাডেমিতে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর ১০ম মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন মন্ত্রী।

আইনে গাড়িচালক, হেলপার, মালিক এবং বিভিন্ন ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি সবার দায়িত্ব যথাযথভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, যে যেই দায়িত্বে থাকবে তার গাফিলতি হলে কী ধরনের শাস্তি হবে, তার সবকিছুই আইনে পরিষ্কার করা হয়েছে। আমরা চাই দুর্ঘটনা কম হোক, দুর্ঘটনায় আর যেন কেউ মৃত্যুবরণ না করে। পৃথিবীর সব দেশে দুর্ঘটনা ঘটে, মানুষের মৃত্যু হয়। বাংলাদেশে যাতে সড়ক দুর্ঘটনা কমে সেজন্যই কাজ করে যাচ্ছি।

দুর্ঘটনা রোধের কারণ বের করা দরকার উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত যতটা দেখছি সড়ক দুর্ঘটনার মূল কারণ সচেতনতার অভাব। দক্ষ চালকের হাতে যাতে স্টিয়ারিং থাকে আমরা সেই ব্যবস্থা করতে যাচ্ছি। ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিষয়ে খেয়াল রাখছি। চালকদের প্রশিক্ষণের অভাবও দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। গাড়ি চালানো অবস্থায় চালকের মোবাইল ব্যবহার, অপরিকল্পিত ভঙ্গুর সড়ক, ওভার ক্রসিং, অতিরিক্ত গতি, ওভার ব্রিজের স্বল্পতা, ট্রাফিক আইন অমান্য করা, ট্রাফিক পুলিশের গাফিলতিও আমরা মাঝেমধ্যে দেখি।

মন্ত্রী বলেন, আমরা চাই দুর্ঘটনা কম হোক, দুর্ঘটনায় আর যেন কেউ মৃত্যুবরণ না করে। পৃথিবীর সব দেশে দুর্ঘটনা ঘটে, মানুষের মৃত্যু হয়। বাংলাদেশে যাতে সড়ক দুর্ঘটনা কমে সেজন্যই কাজ করে যাচ্ছি। আইনে গাড়িচালক, হেলপার, মালিক এবং বিভিন্ন ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি সবার দায়িত্ব যথাযথভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। যে যেই দায়িত্বে থাকবে তার গাফিলতি হলে কী ধরনের শাস্তি হবে তার সবকিছুই আইনে পরিষ্কার করা হয়েছে।

নিজের সড়ক দুর্ঘটনার স্মৃতি স্মরণ করে মন্ত্রী বলেন, রোড এক্সিডেন্টে আমার সব আশা স্তম্ভিত হয়েছিল। মহান আল্লাহ আমার এক রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছিলেন এবং এই রাজনীতির রাস্তা ওপেন করে দিয়েছিলেন। সেই জন্য বোধহয় আমি আজকে এ জায়গায় আসতে পেরেছি।

সমাবেশে নিসচার চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস কাঞ্চন, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

দুর্ঘটনার কারণ চিহ্নিত করে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে বিভিন্ন সময় দাবি করে আসছে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’। এ বিষয়ে সরকার ২২ অক্টোবর নিরাপদ সড়ক দিবস ঘোষণা করে, যা দেশে গুরুত্ব সহকারে পালিত হচ্ছে।

  করোনা ভাইরাস

;