অনেক স্বপ্নের আবাদ। দিনরাত মাঠে পরিশ্রম করেন আবাদের জন্য। সেই ফলনের যদি দাম না থাকে তাহলে চাষিদের হতাশার শেষ থাকে না। টমেটোর দাম নিয়ে এমনই কষ্টের মধ্যে পড়েছেন রাজশাহীর গোদাগাড়ীর চাষিরা।
কষ্টের ফলনের দাম নেই। কাঁচা টমেটো কেজি প্রতি এক টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। আর পাকা টমেটো কেজি প্রতি দুই টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এমন দামেও কখনো কখনো গ্রাহক পাচ্ছেন না চাষিরা। টমেটোর দরপতন ও টমেটো বিক্রির জন্য পাইকার ব্যবসায়ী না পাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এ অঞ্চলের টমেটো চাষিরা।
চলতি মৌসুমে টমেটো চাষিদের লোকসানের সীমা নেই। অনেক টমেটো চাষি ক্ষেত থেকে টমেটো তোলাই বন্ধ করে দিয়েছেন। চাষিদের দাবি ক্ষেত থেকে টমেটো তুলে বিক্রি করার পর যে মূল্য পাওয়া যাচ্ছে তা দিয়ে টমেটো তোলা শ্রমিকদের মজুরি হচ্ছে না। ঘর থেকে শ্রমিকদের মজুরি দিতে হচ্ছে।
গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় দুই হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ হয়েছে। গত বছর চাষ হয়েছিল দুই হাজার ৬২০ হেক্টর জমিতে।
উপজেলার পিরিজপুর গ্রামের টমেটো চাষি মাসুদ হাসান বলেন, ‘এবার ১২ বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করেছি। প্রতি বিঘা জমিতে বীজ, সার, সেচ ও শ্রমিকসহ মোট খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা করে। ১২ বিঘায় মোট খরচ হয়েছে এক লাখ ৮০ হাজার টাকা। এখন পর্যন্ত টমেটো বিক্রি করে পেয়েছি প্রায় ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা।’
‘এক বিঘায় টমেটো উঠছে ১৫ থেকে ২০ বস্তা। বস্তা প্রতি শ্রমিকরা নিচ্ছেন ৫০ টাকা করে। টমেটো বিক্রি করে শ্রমিকদের মজুরি হচ্ছে না। তারপরেও টমেটোর দাম কম, কেউ টমেটো কিনতে চাইছে না। মোকাম থেকে পাইকার আসছে না। টমেটো নিয়ে পড়েছি বিপাকে।’
আরেক টমেটো চাষি জুলফিকার বলেন, ‘দেড় বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করেছি। টমেটো বিক্রি করে মাত্র ৯ হাজার টাকা পেয়েছি। দেড় বিঘায় টমেটো চাষ করতে খরচ হয়েছে ২৩ হাজার টাকা। খরচের টাকা উঠেনি। এখন ক্ষেত থেকে টমেটো তুলে যে টাকা পাচ্ছি তা দিয়ে শ্রমিকদের মজুরি হচ্ছে না। তাই ক্ষেত থেকে টমেটো তোলা বন্ধ করে দিয়েছি।’
গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গোদাগাড়ী উপজেলায় আগাম টমেটো চাষ হয়। প্রথম দিকে ভালো দাম পাওয়া যায়। এই সময় টমেটোর দাম কম থাকে। এখন সারা বাংলাদেশে টমেটো উঠতে শুরু করেছে তাই দাম কম।’