দুপুরে মোবাইল ফোন কানে লাগিয়ে সেই যে কথা বলতে বলতে বেরিয়ে গেল তার পর থেকে আমি আমার ছেলের কোনো খোঁজ পাচ্ছি না। আমি আমার ছেলেকে বলি 'বাবা তুমি যেখানে থাকো না কেন তুমি বাড়ি ফিরে আসো’। আর তোমাকে যদি কেউ বিপদে ফেলতে আটকে রাখে কিংবা নির্যাতন করে করজোড়ে তাদের উদ্দেশ্যে বলছি ওকে ছেড়ে দিন। ওর শোকে আমাদের সব অচল হয়ে গেছে।
গত ৩ ডিসেম্বর ছেলে আবদুল্লাহ আল মামুনের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাবার কথা এভাবেই বলছিলেন সাতক্ষীরার সদর উপজেলার বল্লী আখড়াখোলা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম আলি। তিনি বলেন অনেক খুঁজেছি কিন্তু পাইনি। আপনারা আমার ছেলেটাকে একটু খুঁজে দেন।
বাবা মোসলেম আলি জানান, তার ছেলে আবদুল্লাহ আল মামুন ইফাদ মাল্টি ফুড প্রডাক্টস লিমিটেড কোম্পানির সাতক্ষীরা জেলা পরিবেশক ছিলেন। কিন্তু কোম্পানির কার্যক্রম ভালো না হওয়ায় গত ৪ এপ্রিল তিনি সে চাকরি ছেড়ে দেন। এরপর তিনি কোম্পানির কাছে পাওনা ৩ লাখ টাকার হিসাব চাইলে ইফাদের টিএসও দেবব্রত টাকা ফেরত দেবেন বলে আশ্বাস দেন। এ নিয়ে মামুন সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের কাছে একটি অভিযোগ পত্র জমা দেন। এর কিছুদিন পর টাকা চাইলে ইটাগাছার সুব্রত ও কামালনগরের আমিনুর রহমান বকুল তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়। তারা মামুনকে দেখে নেবে বলে হুমকি দেয়।
মোসলেম আলি জানান, তার ছেলে এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা থানায় একটি জিডি করেন । এরপর থেকে দেবব্রত, সুব্রত ও আমিনুর মামুনকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই হাত পা ভেঙে দেবে বলে হুমকি দিতে থাকেন।
বাবা মোসলেম আলি আরও জানান, এরই এক পর্যায়ে গত ৩ ডিসেম্বর থেকে তার ছেলে নিখোঁজ রয়েছেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন তার ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে বলে তার আশঙ্কা। আকুতি জানিয়ে তিনি তাকে ফেরত চান।
মোসলেম আলি আরও জানান, জিডি করার পরও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তার ছেলের ভাগ্যে কী ঘটেছে তা নিয়ে তিনি আতঙ্কিত। তিনি তার ছেলেকে খুঁজে পেতে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন।