কুষ্টিয়ায় সহিংসতামুক্ত নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত জেলা পুলিশ

কুষ্টিয়া, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, কুষ্টিয়া, বার্তা২৪ | 2023-08-23 16:48:59

শান্তিপূর্ণ ও সহিংসতামুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তফসিল ঘোষণার পর থেকেই জেলার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও শান্ত রাখতে কাজ করে আসছে পুলিশ সদস্যরা। প্রতীক বরাদ্দের পর অন্যান্য স্থানের তুলনায় কুষ্টিয়ার পরিবেশ একেবারেই শান্ত রয়েছে। এখন শেষ সময়ে এসে যাতে পরিবেশ ভাল থাকে ও সাধারণ মানুষ অবাধে ভোট দিতে পারেন সে লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে এ জেলার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নির্বাচনের দিনও পরিবেশ-পরিস্থিতি যাতে অনুকূলে থাকে সে জন্য কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে জেলা পুলিশ। আর গুরুত্বপূর্ণ ভোট কেন্দ্রগুলোতে বিশেষ নিরাপত্তার কথাও ভাবা হচ্ছে।

কুষ্টিয়ার ৪টি সংসদীয় আসনে এবার মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৫৬৫টি। এর মধ্যে কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনে ১২৬টি, কুষ্টিয়া-২ (ভেড়ামারা-মিরপুর) আসনে ১৫৬টি,  কুষ্টিয়া-৩ সদর আসনে ১৩৪টি ও কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনে ১৪৭টি।

জেলা পুলিশ প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, কুষ্টিয়ার নির্বাচনী পরিবেশ খুবই সুন্দর ও শান্ত আছে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা সবাই অবাধে মাঠে কাজ করতে পারছেন। তবে ভোট গ্রহণের দিন যাতে পরিবেশ ভালো থাকে সে ব্যাপারে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

বিশেষ করে সদর, দৌলতপুর ও কুমারখালীতে চরাঞ্চল রয়েছে। দুর্গম এলাকার এসব ভোট কেন্দ্রের জন্য বাড়তি ফোর্স রাখা হবে। এছাড়া সব আসনেই গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র আছে। এসব কেন্দ্রের জন্য অস্ত্রধারী পুলিশের সংখ্যা একের অধিক থাকবে। এছাড়া সাধারণ কেন্দ্রগুলোতে থাকবে একজন অস্ত্রধারী পুলিশ।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানিয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রের তালিকা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট দেওয়া হয়েছে। তারা সেইভাবে এসব কেন্দ্রগুলোতে নজরদারি বাড়াবে।

কুষ্টিয়া সদরে ১৩৪টি কেন্দ্রের মধ্যে সাধারণ মাত্র ৬৭টি। আর বাকিগুলো গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে চিহিৃত করা হয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া জেলায় সব মিলিয়ে এক হাজার ৬০০ পুলিশ সদস্য কাজ করবে। এর বাইরে থাকবে পুলিশের স্পেশাল স্ট্রাইকিং ফোর্স। প্রতিটি ইউনিয়নের জন্য একাধিক স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। তারা নিয়মিত টহল প্রদান করবে। এর বাইরে পুলিশের আলাদা মোবাইল টিমও কাজ করবে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জহিরুল ইসলাম জহির বলেন, ‘পুলিশ পেশাদারিত্ব বজায় রেখে দায়িত্ব পালন করবে। ইতিমধ্যে পুলিশ মাঠে থেকে দায়িত্ব পালন করছে। পুলিশের কঠোর নজরদারির কারণে কুষ্টিয়া জেলার সার্বিক পরিবেশ ভাল আছে।’

জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের দিন ও পরবর্তী কয়েকদিনের কথা মাথায় রেখেই নিরাপত্তা ছক সাজানো হচ্ছে। কোন কেন্দ্রকেই তারা ছোট করে দেখছেন না। প্রতিটি কেন্দ্রেই নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হবে।

এদিকে ভোটের দিন যাতে সাধারণ মানুষ ভয়ভীতি ছাড়াই কেন্দ্রে এসে ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে পারে সে জন্য পুলিশ সদস্যরা সতর্ক থাকবে। কেউ বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করলে তাদের কঠোর হাতে দমন করার ঘোষণা দিয়েছে জেলা পুলিশ।

পুলিশের পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় মাঠে সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও বিজিবি কাজ করছে। মাঠে কাজ করছে জুডিশিয়াল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা।

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত বলেন, ‘সব ধরনের কথা বিবেচনায় রেখে নিরাপত্তাবলয় গড়ে তোলা হবে। সাধারণ মানুষ যাতে ভয়ভীতিমুক্ত পরিবেশে ভোট দিতে পারে সে বিষয়টি মাথায় রেখেই কাজ করছে পুলিশ। এছাড়া নির্বাচনের দিন ও পরে যাতে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করে যাচ্ছে পুলিশের প্রতিটি সদস্য। এখন পর্যন্ত জেলার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও শান্ত রয়েছে। কেউ যাতে অশান্ত করতে না পারে সে ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে পুলিশ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর