গোপালগঞ্জে ২০১৮ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় ১০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছে অনেককে। ফলে অনিয়ন্ত্রিত সড়ক দুর্ঘটনায় উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষ ও প্রশাসনের লোকজন।
গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলায় ৩১৪ কিলোমিটার জাতীয় ও আঞ্চলিক সড়ক আছে। এর মধ্যে মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়ক আছে ১৪৫ কিলোমিটার। এ ছাড়া অন্য ছোট-বড় সড়ক আছে ১৬৯ কিলোমিটার।
মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহন, থ্রি-হুইলারসহ অবৈধ যানবাহন চলাচল, একাধিক বাঁক, সড়কের কম প্রশস্ততা, জনগণের অসচেতনতা, অপ্রাপ্তবয়স্কদের মোটরসাইকেল চালানো, চালকদের বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোসহ বিভিন্ন কারণে জেলার সড়ক-মহাসড়ক বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। প্রায় প্রতিদিনই ছোটখাটো দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে যাত্রীসাধারণ।
জানা যায়, ২০১৮ সালে গোপালগঞ্জে ছোট-বড়সহ ৭১টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২৪টি দুর্ঘটনায় ৩২ জন, কাশিয়ানীতে ২৬টি দুর্ঘটনায় ৩৭ জন, মুকসুদপুরে ১৩টি দুর্ঘটনায় ৩০ জন, কোটালীপাড়ায় চারটি দুর্ঘটনায় চারজন এবং টুঙ্গিপাড়ায় চারটি দুর্ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে সহস্রাধিক। তাদের মধ্যে অনেকেই পঙ্গু হয়ে গেছেন।
সড়ক দুর্ঘটনায় আহত সদর উপজেলার বনগ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন, ‘গোপালগঞ্জে অহরহ দুর্ঘটনা ঘটে। মহাসড়কের প্রশস্ততা কম। অদক্ষ চালক, অবৈধ থ্রি-হুইলার, নসিমন,
করিমন গাড়ি চলাচল করায় আমাদের এখানে ক্রমেই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে।’
জেলা বাস-শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. জাসু শেখ বলেন, ‘চালক ও হেলপারদের যদি নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় তাহলে দুর্ঘটনার হার কমিয়ে আনা সম্ভব। মহাসড়কে অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধ করাসহ অন্য ব্যবস্থা নেওয়া হলে সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনা যায়।’
জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান লিটন বলেন, ‘মহাসড়কে ছোট যানবাহন চলাচলের জন্য লিংক রোড প্রয়োজন। লিংক রোড তৈরি ও পথচারীরা সচেতন হলে সড়ক দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আসলাম খান বলেন, ‘অদক্ষ চালক, মহাসড়কে একাধিক বাঁক, সড়কের কম প্রশস্ততা, মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গাড়ি চালানোসহ বিভিন্ন কারণে গোপালগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে ‘
জেলা সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার মো. শরিফুল আলম বলেন, গোপালগঞ্জের ওপর দিয়ে যে মহাসড়কগুলো নির্মাণ করা হয়েছে তার আশপাশে বেশ কয়েকটি হাট-বাজার আছে। সড়কের পাশ দিয়ে লিংক রোড তৈরি করেনি। ছোট ছোট যান মহাসড়কের নিয়ম-কানুন মেনে চলে না। তাই প্রায়ই বড় বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। মহাসড়কের পাশ দিয়ে লিংক রোড তৈরি করা হলে ও জনগণ সচেতন হলে দুর্ঘটনা কমে আসবে।’