একাদশ সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জের চারটি আসনেই জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনে শাহ নেওয়াজ মিলাদ গাজী, হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) আসনে আব্দুল মজিদ খান, হবিগঞ্জ-৩ (সদর-লাখাই-শায়েস্তাগঞ্জ) আসনে অ্যাড. মো. আবু জাহির ও হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনে অ্যাড. মাহবুব আলী নির্বাচিত হয়েছেন।
নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই নিজেদের কর্মী সমর্থকরা নিজ এলাকার এমপিকে মন্ত্রী হিসেবে দেখার দাবি জানাচ্ছেন। এমপিদের গুণাবলী তুলে ধরে ব্যানার-ফেস্টুন টাঙ্গিয়েছেন। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সবচেয়ে বেশি প্রচারণা চালাচ্ছেন তারা।
হবিগঞ্জবাসীর দাবি, গত মেয়াদে হবিগঞ্জ থেকে কোনো মন্ত্রী ছিল না। এ বছর হবিগঞ্জ থেকে যে কোনো একজন এমপিকে মন্ত্রিত্ব দেওয়া হোক।
হবিগঞ্জের চারটি আসনের মধ্যে হবিগঞ্জ-৩ আসনে নির্বাচিত অ্যাড. মো. আবু জাহির মেধা, যোগ্যতা ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে মন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে সবার চেয়ে এগিয়ে বলে মনে করেন হবিগঞ্জবাসী।
হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে হবিগঞ্জের চারটি আসনেই নৌকা বিজয়ী হয়েছিল। হবিগঞ্জকে তাই বলা হয় দ্বিতীয় গোপালগঞ্জ। এবারও হবিগঞ্জের সবকটি আসনে নৌকার বিজয় হয়েছে। তিনবারের এমপি হিসেবে আবু জাহিরকে মন্ত্রী বানানোর জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।’
হবিগঞ্জ-১ আসনে দেওয়ান গাজী মো. শাহ নেওয়াজ মিলাদকেও মন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান দুই উপজেলাবাসী। নিজের পিতার অবদানের কারণেই তাকে মন্ত্রী দেয়ার আশা তাদের।
শাহ নেওয়াজ মিলাদ সম্পর্কে নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘মিলাদের মধ্যে তার বাবার অনেক গুণই রয়েছে। বাবার অসমাপ্ত কাজগুলো সম্পন্ন করতে চান তিনি।’
সিলেট বিভাগে সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত হবিগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাহবুব আলীকেও মন্ত্রী করার দাবি করছেন এলাকার জনগণ। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এ দাবি করা হচ্ছে। মাহবুব আলী পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত।
২০০১ সালে সারাদেশে আওয়ামী লীগের প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে এই আসনটি পেয়েছিল দলটি। ২০০৮ সালেও হবিগঞ্জ-৪ আসন পেয়েছিল আওয়ামী লীগ। তখন এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন মরহুম সমাজকল্যাণ মন্ত্রী এনামুল হক মোস্তফা শহিদ।
জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য মুক্তিযোদ্ধা সুকোমল রায় বলেন, ‘জনস্বার্থে পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ অ্যাড. মাহবুব আলীকে মন্ত্রী করা হলে পুরো হবিগঞ্জবাসী খুশি হবেন।’
এদিকে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একান্ত সচিব অর্থনীতিবিদ ড. ফরাসউদ্দিন। অনেকেরই ধারণা টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রিসভায় দেখা যেতে পারে তাঁকে।
ড. ফরাসউদ্দিনের মাধ্যমে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ্ এএমএস কিবরিয়াকে হারানোর ক্ষতও ঢাকতে চান হবিগঞ্জবাসী। এখন দেখার পালা শেষ পর্যন্ত তিনি মন্ত্রিত্ব পান কি-না।